somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

'ক্ষতিপূরণ' আস্ত বাস , নাওয়া-খাওয়া ভুললেন থঙ্গরাজ !

০২ রা মার্চ, ২০০৮ রাত ৯:৪০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এ কেমন রঙ্গ যাদু ! থঙরাজের মাথায় হাত ।
ক্ষতিপূরণ চেয়েছিলেন । পেলেনও । তবে টাকা নয় , আস্ত একটা বাস ।

পাঁচ বছর আগের কথা । মাদুরাইয়ে সরকারি বাসের ধাক্কায় মারা গিয়েছিল থঙ্গরাজের ছেলে । সেই থেকে ক্ষতিপূরণ চেয়ে তিনি তামিলনাড়ু রাজ্য পরিবহণ নিগমের দোরে দোরে ঘুরে জুতোর সুকতলা ক্ষইয়ে ফেলেছেন । লাভ হয়নি । শেষ ভরসা আদালত । সেখানে তিনি আশ্বস্ত হলেন । ক্ষতিপূরন পাবেনই ।

কিন্তু এর পর তাঁর যে কী দুর্দশা হবে , তা তো জানতেন না ! গ্রামের মানুষ থঙ্গরাজ , পয়সাকড়ি বেশি নেই । কিন্তু দেখলেন , সরকারের অবস্থাও যে তাঁরই মতো ! এমনকী , আদালতের নির্দেশ মতো ক্ষতিপূরণও দিতে পারছে না পরিবহণ নিগম ! থঙ্গরাজও নাছোড়বান্দা । হত্যে দিয়ে পড়েছেন আদালতে । শেষ পর্যন্ত আদালত পরিবহণ নিগমকে বলে দিল, 'বেশ, নগদে না দিতে পার,তোমাদের চালু একটা বাসই দাও ওঁকে ।' এ ভাবে ছেলের মৃত্যুর জন্য 'ক্ষতিপূরণ' হিসেবে মিলল একটি সরকারি বাস !

মহা আতান্তরে পড়লেন থঙ্গরাজ । বাসটাকে নিয়ে করবেনটা কী ? সরকারের গাড়ির 'খোঁয়াড়ে'-এ যে রেখে আসবেন, সেই পয়সাটুকুও তো নেই ! অগত্যা শহর থেকে সেই বাস নিয়ে চললেন । কোনও মতে কিছু টাকা জোগাড় করে ড্রাইভার ভাড়া করলেন থঙ্গরাজ । বাস এল তাঁর গ্রামের বাড়িতে ।

কিন্তু তাতেও চিন্তা গেল না , বরং নতুন করে শুরু হল বললেই চলে । বাসটা যে চালিয়ে কিছু রোজগারের ব্যবস্থা করবেন, গরিব গ্রামবাসীর সেই ক্ষমতা নেই ।আবার ফেলে রাখলে চালু বাস তো এমনিই নষ্ট হয়ে যেতে পারে । সরকারি সম্পত্তি বলে কথা ! চোখের জল পায়ে ফেলে তিনি পাহারা দিতে লাগলেন বাসটাকে । পুত্রশোক তো ভুলেই গেলেন । নাওয়া- খাওয়াও ভুললেন । রাতে ঘুম নেই । মাথায় শুধু একটাই চিন্তা । সরকারি সম্পত্তির 'নিরাপত্তা' !

গ্রামবাসীরা তো হতবাক । কুঁড়েঘরের সামনে দাঁড়িয়ে রয়েছে পেল্লাই একটা সরকারি বাস । দল বেঁধে লোক দেখতে আসে । কেউ বা বাসের মধ্যে ঢুকে পড়ে ।

রাজ্য পরিবহণ নিগমের বক্তব্য,তাদের টাকা নেই । বছরের পর বছর লোকসান হতে হতে সবে মাত্র একটু আধটু লাভের মুখ দেখা শুরু হয়েছিল । তার মধ্যে এই বিপত্তি । কয়েকটা বাস বিভিন্ন অভিযোগে সেই সরকারি 'খোঁয়াড়ে' পড়ে আছে । তাতে দিনে ক্ষতি হচ্ছে দশ-বারো হাজার টাকা । এর মধ্যে আবার কেউ ক্ষতিপূরণ দাবি করলে তা দেওয়া যাবে কোথা থেকে ?

থঙ্গরাজের ভাগ্যটাই খারাপ । তাঁর অবস্থা সেই 'ভিক্ষে চাই না মা , কুকুর সামলাও'-এর মতো । এখন তিনি আরও ক্ষতি হওয়ার আগে 'ক্ষতিপূরণ' ফিরিয়ে নেওয়ার আর্জি জানাবেন ভাবছেন ।
সর্বশেষ এডিট : ০২ রা মার্চ, ২০০৮ রাত ৯:৪২
৬টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মুসলিম নেতৃত্বের ক্ষেত্রে আব্বাসীয় কুরাইশ বেশি যোগ্য

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:২৫




সূরাঃ ২ বাকারা, ১২৪ নং আয়াতের অনুবাদ-
১২৪। আর যখন তোমার প্রতিপালক ইব্রাহীমকে কয়েকটি বাক্য (কালিমাত) দ্বারা পরীক্ষা করেছিলেন, পরে সে তা পূর্ণ করেছিল; তিনি বললেন নিশ্চয়ই... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×