সুখ দুঃখের ইঞ্জিন......!
ট্রেন চলছে ঝিক, ঝিক, ঝিক ........কুলাউড়া। ট্রেন শ্রীমঙ্গল ক্রস করছে। চায়ের গন্ধে মনমাতোহারা। কিছুটা ঘুম ঘুম। এমনিতেই ট্রেনে আমার ঘুম হয়না। বোধহচ্ছে শ্রীমঙ্গল স্টেশন থেকে একজন যাত্রী তথা ১০ বছরের ছেলেসহ একজন মহিলা আমার পাশের সিটে বসল। শোভনের অবস্থাতো সবার জানা আছে ! মুখোমুখি যাত্রীপ্রলাপ ! ব্যাস বকবক । আমি না ।মহিলাটি আমাকে প্রশ্নর্জিত করছে। কোথা থেকে উঠেছি?কোথায় যাবো? কি করি? নাম কি? ইত্যাদি ইত্যাদি...এক কথায় ....
কথা বলতে ইচ্ছে করছে না। তারপরও হু, হ্যাঁ করছি। হঠাৎ দেখলাম মহিলাটি'র মুখটি বিষন্ন মনে হচ্ছে। হতেই পারে। কিন্তু না এতো অশ্রুজ্বল। কিন্তু কেন?
প্রতিউত্তরে বললেন - তোমার মত আমার একটি ছেলে ছিল?
হতে পারে। মহিলা প্রায় মাঝ বয়সী। আমার টাইপের ছেলে থাকাটা স্বাভাবিক।
তিনি বললেন ছেলেটা আমার মারা গেছে? কিছু দিন আগে ও রোড এক্সিডেন্টে মরা যায়।
ভ্যারি সেড....
বেশ আফসোস হল ছেলেটি'র জন্য।
মনটা আনমোরা হয় দম নিলাম। মনে মনে ভাবলাম হয়রে নিয়তি। উনার দুঃখটা ট্রেনের চেয়ে আরো দ্রুত। ট্রেনের তো কোন দুঃখ নেই। কিন্তু....।
এ চানাচুর.... এ ....
ওদের যন্ত্রনায় কি ঘুমানো যায়! তারপরও যে কখন ঘুম চলে আসলো টেরই পেলাম না। দিলাম ঘুম।
হঠাৎ ঘুম থেকে চমকে উঠলাম। চোখ মেলে দেখি সেই মহিলাটি আমার হাত দরে বসে আছে। বিব্রতকর অবস্থা। কি করা যায়।
বললাম -হাতটা ছাড়ুন।
কিন্তু না -কে শোনে কার কথা। সত্যি একটা বিব্রতকর অবস্থ। সবাই তাক করে চেয়ে আছে।
মহিলাটি অশ্রজ্বলে শিক্ত। বললাম কাঁদছেন কেন? কাদবেন না প্লিজ?
আমাকে বললেন আমার ছেলেটা অবিকল তোমার মত ছিল আমার।
আমার মাথাটা বাড়িয়ে দিলাম। ভাবলাম মাথায় হাত ভূলিয়ে দিবেন হয়তো। কিন্তু না .......।
উনি যা বললেন তা হয়তো সবাই স্বাভাবিকভাবে মেনে নিবে না! না নেওয়টাই স্বভাবিক। সুখ দুঃখের এই ইঞ্জিনবাহী ট্রেণে কষ্টের তীব্রতাকে উর্দ্ধে তুলে রাখলেও কষ্টও লজ্জ্বা পাবে!
যাই হোক মহিলাটি আমাকে কি বললেন তা না বললে এর মর্মকথাই বৃথা যাবে। বললেন তুমি আমার কোলে বস?
আমি হতবাক। লজ্জায় আমি ত্রিমুখি হয়ে গেলাম। একদিকে বিব্রত হওয়ার শেষে অধ্যায় হয়তো পাড়ি দিয়েছি। যা হোক বুঝতে পারছি মহিলাটি পুত্রশোকে আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে পরছেন।
ট্রেন আখাউড়ায় এসে পৌছল। কিছু খাবার ও হালকা পানীয় কিনলাম। ট্রেন আবার কুমিল্রার পথে। পাশের মহিলাটিকে কিছু খাবার দিতেই নিদ্দিদায় নিলেন। আমারও ভালো লাগছে ।
হঠাৎ দেখি উনার ব্যাগ থেকে কি একটা বের করলেন। সেদিকে তেমন একটা আগ্রহ দেখালাম না। কিন্তু একি...
উনি আমাকে দুটো দরিয়ে দিলেন । আমি বললাম ঠিক আছে আপনি খান। কিন্তু আবার সেই অশ্রুজ্বল। কি যন্ত্রনায় পরলাম। যা খেতে দিচ্ছেন তা হয়তো সবাই এটাকেও স্বাভাবিকভাবে মেনে নিবে না।
আচাঁর। বোধহয় বাড়িতে তৈরি আচাঁর। আমি আচার খাব আর সবাই তাকিয়ে থাকবে তা কিহয়! কিন্তু কি আর করা। খেতে হবে।
এটাও মেনে নিলাম। কোনরকম দু'একটা খেলাম।
কুমিল্লা, লাকসাম ও ফেনিতে ক্রস করার মধ্যবর্তি সমেয় মহিলাটির কিছু দুঃখগাথাঁ কথা শোনলাম। সুখ দুঃখের এই ইঞ্জিনে কত কষ্ট নিরভে নিভৃতে কাদেঁ কেউ তাঁর খবর রাখে না। পুত্রহারা এক মায়ের প্রতি কতটুকু শ্রদ্ধা ও কতটুকু ভক্তি দেখাতে পেরেছি তা আমি জানিনা। আজ সেই মহিলাটিকে বড্ড বেশি মনে পরছে। মনে পরছে সেই শোভন চেয়ারের কথা। হয়তোবা সেখানে না বসলে সেই স্মৃতিগুলো আমার জীবনে কখনো আসতো না। সুখ দুঃখের এই ইঞ্জিনে ইঞ্জিনের কত কষ্ট, ইঞ্জিনের মানুষের কষ্ট, হরেক রকম কষ্ট এই স্টেশনগুলোতে।
আমি ভালো আছি
প্রিয় ব্লগার,
আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন
ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমার ড্রোন ছবি।
ফ্রান্সের তুলুজ শহরে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার। হ্যাসল্ট, বেলজিয়াম।
ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী ফ্রান্সের ফ্রিওল আইল্যান্ড।
রোডেসিয়াম এম রেইন, জার্মানি।
... ...বাকিটুকু পড়ুন
স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ
(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন
এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!
অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন
মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে
আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন