somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ছেলেদের ব্রেকআপের বিভিন্ন দিক!!!!!!!!!

৩০ শে জানুয়ারি, ২০১৩ রাত ১:০৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :




১ম পর্যায়, “আমার মন মানে না…”:
এই পর্যায়টা ব্রেক আপের সবচেয়ে ইমোশনাল পর্যায়। একই সাথে গুরুত্বপূর্ণও – কেননা এই সময়ে নেয়া যে কোন সিদ্ধান্ত আলটিমেটলি জীবনের মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে।

ব্রেক আপের এ পর্যায়ে কারো ভেতর থেকে যে ইমোশনগুলো বেরিয়ে আসে তা একদমই Raw ইমোশন। অধিকাংশের ক্ষেত্রেই ইমোশনটা বেরোয় বুক ফাটা কান্না বা তীব্র মানসিক বেদনার রূপে। তবে ব্যতিক্রমী কারো কারো ক্ষেত্রে ব্রেকআপ স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয়ার প্রবণতা লক্ষ্য করা যায়। তবে যেটাই হোক না কেন, তা স্বাভাবিকের বাইরে, এর সবই আবেগের বশে।

যাদের জন্য ব্রেকআপটা কষ্টের তাদের মন মানেনা… “কেন আমিই এতো দুর্ভাগা” – এই প্রশ্ন বারবার ফিরে আসে মনে।

ব্রেক ঠিক পরপর এই তাৎক্ষণিক পর্যায়টিতে অধিকাংশ মানুষ ৩টি কাজের একটি করে:
more …


ক. নিজের ক্ষতি করে (আত্মহত্যা, ড্রাগস ইত্যাদি)
খ. যে মেয়ের সাথে রিলেশন ছিলো তার ক্ষতির চেষ্টা করে (ফেইসবুক/ইমেইল হ্যাক, নেটে বাজে ছবি ছাড়া, মোবাইল নাম্বার ম্যানিপুলেশন)
গ. যার কারণে এই ব্রেক আপ (অন্য আরেক ছেলে হতে পারে) তার ক্ষতির চেষ্টা করে। এবং আরেকটি টাইপ আছে যারা এই ৩টির একটিও করে না – They just let it go. এরা আবার ৩ প্রকার:

ক. মন খারাপ করে থাকার দল
খ. ‌’এই বেশ ভালো আছি’ বেশ ধরা দল
গ. ঘন্টায় ঘন্টায় নতুন রিলেশন আর ব্রেকআপের কারণে এদের মনে ব্রেকআপ আর নতুন করে কোন অনুভূতির জন্ম দেয় না – সেই দল (সঙ্গতঃ কারণেই এই পোস্টে তাদের কথা আলোচনা করা হয়নি)

উপর্সগ:
১. শুধু ওকে ফোন দিতে ইচ্ছে করে/দেখা করতে ইচ্ছে করে/মনে হয় এখনই গিয়ে দেখা করি – যদি জানা আছে তাতে সিদ্ধান্ত বদলাবে না।
২. নিজে থেকেই নিজের দোষ/ত্রুটি বের করে ব্রেকআপের পিছনে নিজের দোষগুলো খুঁজে বের করা – যদিও হয়তো আদতে নিজের কোন দোষই নেই।
৩. ওর রেখে যাওয়া স্মৃতি চিহ্নগুলো হাতে নিয়ে নেড়েচেড়ে দেখা… মন আরও খারাপ করা। কেউ কেউ অবশ্য এগুলো নষ্ট করে ফেলে।

কমন ডায়ালগ:
১. “আমার তো কোন দোষ ছিলো না… তাহলে কেন….?
২. “সব মেয়ে এক…” (এটা একটা বিশেষ টাইপের ছেলেরা বলে)
৩. “আমি আর কখনও রিলেশন করতে পারবো না…”

অত্যন্ত ইমোশনাল এ পর্যায়টাকে ঠিক শব্দে প্রকাশ সম্ভব নয়। যতো কম বলে শেষ করা যায় ততোই ভালো। তাই পরের পর্যায়ে চলে যাচ্ছি।

২য় পর্যায়, সান্ত্বনা:
আপনার ফ্রেন্ডকূল এবং পরিচিতরা যারা আপনার রিলেশনের ব্যাপারে জানতো তারা এ পর্যায়ে ঝাঁপিয়ে পড়বে আপনাকে সান্ত্বনা দিতে। বিশ্বাস করুন আর নাই করুন, মনে মনে আপনার বেশির ভাগ বন্ধুই (স্পেশালি যাদের রিলেশন আছে) কিন্তুই খুশি। খুশি এ জন্য যে – “যে এটলিস্ট তারা আপনার মতো এতো দুর্ভাগা না…”। এটা মানুষের আদি ধর্ম। অপরের বিপদের কথা চিন্তা করলে সচেতন বা অবচেতনভাবে আমাদের মন আনন্দ পায়।

“জাস্ট ঐ কষ্টকর পরিস্থিতিতে সে নেই” – এই চিন্তাটাই মনে আনন্দের খোরাক জোগানোর জন্য যথেষ্ট। এটা খারাপ কিছু নয়। এটা মানুষের ধর্ম। ইনফ্যাক্ট এটার কিছু ভালো দিক আছে। যেমন ধরুন, যেদিন আপনার ব্রেকআপের কথা আপনার ফ্রেন্ডরা শুনলো, পরের বার তাদের গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ডের সাথে আলোচনায় এ প্রসঙ্গটা একবার হলেও অন্ততঃ উঠবে। তখন তারা একে অপরকে প্রমিস করবে – তারা কখনও এভাবে বিচ্ছেদ ঘটাবে না। রিলেশন যে পর্যায়েই থাকুক না কেন – তারা আবারও নতুন করে অনুধাবন করবে, একে অপরকে পেয়ে তারা কতোটা লাকি। নিজেদের রিলেশনের অবস্থা নিয়ে শঙ্কিত ছিলো, এমন কাপলদের নিজেদের সমস্যা আর কিছু বলে মনেই হবে না। প্রিয় বন্ধুর ব্রেকআপের পর এ সময়টায় গার্লফ্রেন্ড/বয়ফ্রেন্ড হঠাৎ করেই একটু বেশিই সুইট হয়ে যেতে পারে – তবে এটা টেম্পোরারি। এর কোন স্থায়ী প্রভাব নেই।

যাই হোক এ পর্যায়ে ফ্রেন্ডকূল ও পরিচিতদের সান্ত্বনা আর উপদেশ বাণীতে সিক্ত হবেন আপনি -

১. “যা হয়েছে ভালো জন্য হয়েছে…” (হ তোরে কইসে!)
২. “জীবন কারো জন্য থেমে থাকে না…”
৩. “এটা ক্যারিয়ার গড়ার সময়…” (নরমালি এটা বন্ধুরা না, স্বজনেরা বলে)
৪. “নিশ্চয়ই তোমার কপালে জন্য এর চাইতেও ভালো কিছু অপেক্ষা করছে…”
৫. “থাক দোস্ত… বাদ দে…”
৬. “ফ্রেন্ডদের সাথে সময় কাটাও…”
৭. “ব্যাপার না… সব ঠিক হয়ে যাবে…”
৮. “চল বাইরে চল…”

আপনার রিলেশন সম্পর্কে আপনার ফ্রেন্ডদের আগে না বলা কিছু তথ্যও উঠে আসতে পারে এ পর্যায়ে -

১. “এমনিতেও এই রিলেশন নিয়ে তোর পরে সমস্যা হইতো…”
২. “ওর চাইতে হাজার গুণ বেটার মেয়ে তুই পাবি…” (৫ মাস আগেও “তোদের দেখে ঈর্ষা হয় বলার পর”)
৩. “এমনিতেও ওর অনেক সমস্যা ছিলো…”
৪. “আমার কেন জানি আগে থেকেই মনে হচ্ছিলো রিলেশনটা টিকবে না…”

৩য় পর্যায়, নিজেরে বুঝাই:
ব্রেক আপের এই পর্যায়টা একান্তই নিজের। নিজের জীবন, ক্যারিয়ার সব কিছুই নতুন করে শুরু করার একটা প্রত্যয় এই স্টেজে জন্মায়। এ পর্যায়ে একটা ছেলে এমন অনেক কিছুই করবে, যা সে সাধারণ অবস্থায় কখনোই করতো না। এমন অনেক কাজ সে করবে যা এইতো ক’দিন আগেও তার কাছে ছ্যাবলামি মনে হতো। এমন অনেক মানুষ যাদের সাথে দীর্ঘদিন কোন যোগাযোগ ছিলো না/ বা অনেকটা ইচ্ছে করেই এড়িয়ে গিয়েছে তাদের সাথে যোগাযোগ বাড়তে পারে। পুরো ব্যাপারটাই আসে জীবনে সামগ্রিক পরিবর্তনের একটা চিন্তা থেকে।

৪র্থ পর্যায়, বন্ধুদের সাথে সময় কাটানো:
এ পর্যায়ে সুযোগ পেলেই বন্ধুদের সাথে সময় কাটানোর একটা প্রবণতা দেখা যায়। বাসার বিভিন্ন কাজে এবং ফ্যামিলি মেম্বারদের সাথে অন্তরঙ্গতা বাড়ে। পুরো দুনিয়া কেমন একটা ‌’মায়ার চশমা’ দিয়ে ফিল্টার হয়ে চোখে এসে ধরা দেয়। মানুষের উপকার করতে ইচ্ছে করে। মানুষের সাথে একটু বেশিই নরমভাবে কথা বলার প্রবণতাও দেখা যায়।

উপসর্গ:
১. বন্ধুবান্ধবদের সাথে বের হয়ে তাদের বয়ফ্রেন্ড/গার্লফ্রেন্ডেদের মধ্যে রিলেশনের অন্তরঙ্গতা দেখে খুব প্রচন্ড ঈর্ষা ও অস্বস্তি।
২. কথায় কথায় বন্ধুদের কাছে – “ইশ ও এইটা করতো…”, “আই উইশ ও এইটা দেখতো…” বা “আমি আর ও প্রায়ই এটা করতাম…” – টাইপের কতাবার্তা।
৩. সুযোগ পেলেই মানুষকে নিজের ব্রেকআপের কথা জানানো, সহানুভূতির আশায় নয় – এটার মধ্যে কোথায় যেন ক্রেডিট নেয়ার মতো বিষয় আছে।
৪. “জীবনে অনেক কিছু দেখে ফেলেছি…” টাইপের মানসিকতা।
৫. ফেইসবুকে নিজের জীবনদর্শন তুলে ধরে স্ট্যাটাস দেয়া। কারো কারো স্ট্যাটাস দেখলে মনে হবে আর কিছুক্ষণের মধ্যেই সে আত্মহত্যা করতে যাচ্ছে।
৬. দাড়ি রাখা।

৫ম পর্যায়, আমি যেন কার আশায আশায় থাকি:
এতোদিনে আপনার ব্রেকআপের ঠিক পরপর টাটকা ক্ষত অনেকটাই শুকিয়ে গেছে। তবে পরিচিত যায়গা, পরিচিত মানুষ দেখলে বুক ফাঁকা ফাঁকা লাগে। পরিচিত জায়গা দিয়ে কোথাও যাওয়ার সময় আগের কথা মনে পড়ে। সাথে একটা ভয় কাজ করে যদি দেখা হয়ে যায় – তাহলে কি হবে? আবার মনে মনে ঠিকও করে ফেলেন দেখা হলে কি করবেন। যদিও ভয় পাচ্ছেন দেখা হওয়ার বিষয়টা চিন্তা করে, আবার কাইন্ড অফ যেন চাচ্ছেনও দেখা হোক।

৬ষ্ঠ পর্যায়, নতুন করে আবারও:

ব্রেকআপের স্মৃতি মনে আর অবশিষ্ট নেই তেমন একটা -শুধু খুব অকেশনালি মনে পড়ে। মনে মনে আপনি ঠিক করে ফেলেছেন ওর সাথে সামনে কখনও দেখা হলে (তা নতুন বয়ফ্রেন্ড সহই হোক না কেন) আপনি ওকে ওর নতুন লাইফের জন্য কনগ্র্যাচুলেট করবেন – যেন এতোটুকু মানসিক শক্তি আপনি অর্জন করেছেন।

আপনার মধ্যে মেয়ে দেখলেই আগ্রহ জন্মাচ্ছে। বন্ধুকূলকেও জানিয়ে দিয়েছেন আপনি রেডি – হয়তো খুঁজতেও বলে দিয়েছেন।

উপসর্গ:
১. অনলাইনে/ফেইসবুকে বা ফ্রেন্ডের মাধ্যমে নতুন মেয়েদের সাথে পরিচয় হওয়া মাত্র তাৎক্ষণিকভাবে রিলেশনের জন্য মনস্থির করা। (যদিও আপনি নিজেও জানেন ৯৯% চান্স যে সেটা কাজে আসবে না)
২. ডার্টি জোকস/গালি প্রিয়তা – যদিও আপনি এসবের জন্য মোটেও বিখ্যাত নন।
৩. নিজের মধ্যে সাময়িক লুইচ্চামি গ্রো করা।
৪. হঠাৎ করে আপনার মনে হচ্ছে রিলেশনে থাকা অবস্থায় জগৎটা অনেক সহজ ছিলো, সবকিছু খুব নিশ্চিৎ ছিলো – হাত বাড়ালেই আরেকটা হাতের ছোঁয়া, চাইলেই একটা কাঁধে মাথা রাখা। কিন্তু এখন রিলেশন ভেঙে যাওয়াতে জগৎটাকে অনেক কঠিন মনে হচ্ছে। আবারও নতুন করে রিলেশন, আবারও নতুন করে শুরু আদৌ হবে কিনা – ধারণাটাকে অলরেডি আপনি প্রশ্নবিদ্ধ করতে শুরু করেছেন। ঠিক প্রথম রিলেশনটার আগে যেমনটা মনে হয়েছিলো আপনার।




সংগৃহীত
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রমিক সংঘ অটুট থাকুক

লিখেছেন হীসান হক, ০১ লা মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪৮

আপনারা যখন কাব্য চর্চায় ব্যস্ত
অধিক নিরস একটি বিষয় শান্তি ও যুদ্ধ নিয়ে
আমি তখন নিরেট অলস ব্যক্তি মেধাহীনতা নিয়ে
মে দিবসের কবিতা লিখি।

“শ্রমিকের জয় হোক, শ্রমিক ঐক্য অটুট থাকুক
দুনিয়ার মজদুর, এক হও,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কিভাবে বুঝবেন ভুল নারীর পিছনে জীবন নষ্ট করছেন? - ফ্রি এটেনশন ও বেটা অরবিটাল এর আসল রহস্য

লিখেছেন সাজ্জাদ হোসেন বাংলাদেশ, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪

ফ্রি এটেনশন না দেয়া এবং বেটা অরবিটার


(ভার্সিটির দ্বিতীয়-চতুর্থ বর্ষের ছেলেরা যেসব প্রবলেম নিয়ে টেক্সট দেয়, তার মধ্যে এই সমস্যা খুব বেশী থাকে। গত বছর থেকে এখন পর্যন্ত কমসে কম... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রতিদিন একটি করে গল্প তৈরি হয়-৩৭

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ০১ লা মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৫১




ছবি-মেয়ে ও পাশের জন আমার ভাই এর ছোট ছেলে। আমার মেয়ে যেখাবে যাবে যা করবে ভাইপোরও তাই করতে হবে।


এখন সবখানে শুধু গাছ নিয়ে আলোচনা। ট্রেনিং আসছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

একাত্তরের এই দিনে

লিখেছেন প্রামানিক, ০১ লা মে, ২০২৪ বিকাল ৫:৩৬


শহীদুল ইসলাম প্রামানিক

আজ মে মাসের এক তারিখ অর্থাৎ মে দিবস। ১৯৭১ সালের মে মাসের এই দিনটির কথা মনে পড়লে এখনো গা শিউরে উঠে। এই দিনে আমার গ্রামের... ...বাকিটুকু পড়ুন

হুজুররা প্রেমিক হলে বাংলাদেশ বদলে যাবে

লিখেছেন মিশু মিলন, ০১ লা মে, ২০২৪ রাত ৯:২০



তখন প্রথম বর্ষের ছাত্র। আমরা কয়েকজন বন্ধু মিলে আমাদের আরেক বন্ধুর জন্মদিনের উপহার কিনতে গেছি মৌচাক মার্কেটের পিছনে, আনারকলি মার্কেটের সামনের ক্রাফটের দোকানগুলোতে। একটা নারীর ভাস্কর্য দেখে আমার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×