somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ম বিশ্বাসের রকম ফের, জামাতী নমুনা

২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১০:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি ইসলাম গ্রুপের সদস্য নই, ধর্ম নিয়ে এ ব্লগে পোস্ট দিইনি কখনও।
পরধর্ম বা অবিশ্বাসীরা বিব্রত হতে পারেন/ তাদের কুৎসিত আক্রমণের দরজা খুলে দিয়ে নিজে বিতর্কিত হবার ইচ্ছা নাই। তবে গোফ দাড়ির পক্ষে এক ধর্মনিরপেক্ষ পোস্ট দিয়েছিলাম View this link

চারপাশে ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি দেখে ব্লগ না লিখে পারছিনা। স্বধর্মের উপর আমার বিশ্বাস আছে। মৃত্যু, পরকালকে ভয় করি ভীষন। ইসলাম ধর্মের মূল কথা হল , "শান্তির কাছে আত্মসমর্পণ"। কোরআন-হাদীস অন্যান্য শাস্ত্র, গ্রন্থ পড়ে, যুগ কাল, প্রক্ষাপট, আঙ্গিক যাচাই করে কোন সমস্যার সিদ্ধান্তে উপনীত হওয়া ভীষণ দুরূহ ও দ্বায়িত্বশীল কাজ। ইসলাম ধর্মের ব্যাপারে জ্ঞানার্জন এবং ধর্ম চিকিৎসা দেয়া দীর্ষ দিনের পড়াশোনা, অভিজ্ঞতা, গবেষণার ব্যাপার। জামাতেরা এ কাজটিকই সস্তা করে ফেলেছেন দুচারটা বাংলা অনুবাদ বই পড়ে, হাদীসের সনদ পুরোপুরি না জেনে নিজেরাই ব্যাখ্যা, ফতোয়া, কোটেশান, তাফসীর দেয়ার কাজ করে।যে কোন সমস্যায় নিজেরাই হুট করে আন্দাজে সিদ্ধান্ত নিচ্ছে।বিকৃত হচ্ছে ধর্ম আর বিভ্রান্ত হচ্ছে মুসলমান।

আমার পরিচিত এক মুফতি বলতেন,
"সাধারণ মানুষের চেয়ে আলেমদের পরকালে শাস্তি হবার সম্ভাবনা বেশি, কারণ ধর্ম পালন, বিস্তার, সত্য প্রচারের গুরু দ্বায়িত্ব আলেমদেরই নিতে হয়। এতে ভুল ত্রুটি হলে বহু মানুষকে পথভ্রষ্ট করার জন্য ভয়ংকর শাস্তি ভোগ করতে হবে তাদের।"

মুফতি সাহেব নিজে মাদুর বিছিয়ে ফ্লোরিং করে ঘুমান। একবারেই সাদাসিধে জীবন যাপন করেন। আসবাব বলতে তিন ঘর ভর্তি হাজার খানেক বিভিন্ন ভাষায় লেখা ধর্ম আর ইতিহাসের বই। বই পড়া আর সংগ্রহ করা তার নেশা। উর্দু, ফারসি, আরবি ভাষায় অগাধ পান্ডিত্য, তিনি আবার হাফেজও বটে। জেলার সবচেয়ে বড় মসজিদের খতিব, মাদ্রাসায় হাদীস শাস্ত্র পড়ান।
মুফতির ভাষায়,
"সবচেয়ে বড় উপাসনাকারী সেই, যে পাপ কাজ থেকে বেচে থাকে। এটা হাজার রাকাত নফল নামায পড়ার চেয়েও উত্তম।"

ব্লগের অনেকেই প্রশ্ন তুলেছেন, "মেয়েদের চুল দেখলে ছেলেদের সমস্যা হয় কিনা?"

টিভি দেখা ছেড়ে দিয়েছি প্রায় ৯-১০ বছর হল। মাঝে মাঝে একটা শ্যাম্পু বা তেলের এডের কথা কানে আসে, "তোমার ঐ দীঘল কাল চুল দেখে পাগল আমি হবই তো!" মেয়েরা বিউটি পারলারে গিয়ে ৬/৭ হাজার টাকা দিয়ে চুল কালার, সিল্কি করছে কার জন্য? মেয়েদের কোনটা ছেলেদেল ভাল লাগে মন্দ লাগে এটা পুরুষ ব্লগারা জেনেও না জানার ভান করেন।

মুসলমানদের জন্য নির্দেশ হিসেবে বলা হয়েছে, 'তারা যেন পর নারীর দিকে দৃষ্টি না দেয়, এজন্য পুরুষদের দৃষ্টি সংযত রেখে চলতে বলা হয়েছে, প্রথম অসতর্ক দৃষ্টি মাফ, ২য় বার নেত্রপাত করলে পাপ। যে পুরুষ এভাবে নিজেকে রক্ষা করে চলবে তার অন্তরে ধর্ম বিশ্বাসের এমন আলো তৈরি করে দেয়া হবে যার অনুভূতি হবে তুলনাহীন।'

বাংলা জানা স্বশিক্ষিত জামাতের ধর্মীয় ডাক্তারদের কাছে প্রশ্ন আপনারা কি এমন কাহিনী শুনেছেন?

"নবীজীর (সাঃ) সাথে ফাতেমা (রাঃ) ছিলেন আর সামনে ছিল এক অন্ধ লোক। নবীজী ফাতেমাকে পর্দা করতে বললেন। ফাতেমা শুধালেন ,'কেন? উনি তো অন্ধ, আমাকে দেখছেন না', নবীজীর উত্তর ছিল, 'তুমি তো তাকে দেখছো!' "

আপনাদের রেফারেন্সের প্রয়োজন হলে দিব। জামাতের মেয়েদের দেখা যায় ধর্মের কথা বলে মাথায় কোন রকম কাপড় দেয় আবার ক্ষ্যাত ভাব কাটানোর জন্য সাথে জিনসের প‌্যান্ট। তাদের অনেকেই রোমিওদের বুকের রক্ত লিপস্টিক বানিয়ে ঠোটে লাগায়।
জামাতীরা আপনারা কি ভুলে গেছেন সেই মহান হাদীস?

"সকল ব্যাভিচারের শুরু/জন্মদাতা হল দৃষ্টি!"
আপনি জানেন না আপনার বন্ধু আপনার মাথায় কাপড় দেয়া ছোট বোনের সাথে কিভাবে কথা বলছে....আপনি সাধু কিন্তু আপনার বন্ধুর মনে কথা আপনি জানেন না সরল বিশ্বাসে অনুমতি দিলেন, ভাইয়া ভাইয়া ডাক শুনানোর জন্য.....হুমায়ুন আহমেদের ছোট মেয়ে শিলা সরল বিশ্বাস নিয়েই তার বান্ধবী শাওন কে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। স্থূল দৃষ্টিতে যাকে নিজের মেয়ের মত দেখার কথা সে এখন তার বান্ধবীর সৎ মা!!!

আমরা কি পুরুষ জাতির মনকে একটু চিনবোনা?
আগে ভাবতাম মেয়েরা হয়ত বুঝেতই পারেনা তাদের অসংযত অসাবধানী পোশাক পুরুষদের মানসিক সমস্যায় ফেলে দেয়। অন্তরে অনৈতিক কামনার রোগ সৃষ্টি করে। বয়স হয়ে বুঝলাম, এটা মেয়েদের একটা ইচ্ছাকৃত ফাদ, পুরুষকে ধোকায় ফেলার জন্য।

আমাদের চলনসই রুচিবোধের দিকে তাকাই। প্রচন্ড গরমে পুরুষ উপস্থাপক স্যুটেড বুটেড আর প্রচন্ড ঠান্ডার মাঝে তার পাশে ক্ষীণাঙ্গী উপস্থাপিকা গলা কাটা, হাত কাটা, পেট কাটা, পিঠ কাটা পরে কাপছে। এসব ভন্ডামি যাচাইয়ের জন্য কোন ধর্ম জ্ঞান লাগেনা।

একটা বিষয় স্বতঃ সিদ্ধ, নারীর দিকে পুরুষের দৃষ্টি আর পুরুষের দিকে নারীর দৃষ্টির ভাষা ভিন্ন। তবে উভয়ই কামনা করে এক পক্ষ আরেক পক্ষের দিকে তাকাক, মেয়েরা ছেলেদের যতই লম্পট অসভ্য বলে গালি দিকনা কেন...পুরুষের দৃষ্টি (যেটা তারা বাই ডিফল্ট কামনার দৃষ্টি হিসেবে ধরে নেয়) মেয়েদের কাছে ভীষণ কাম্য। সেটা বোরকার উপর কৌতূহলী পুরুষ দৃষ্টিকে উস্কে দেয়ার জন্য ফর্সা হাত বা মুখটা বের করে দেয়ার মাধ্যমেও হতে পারে।

শিবিরের ছেলেদের দেখেছি তারা সাধারণ মানুষের ছদ্মবেশে থাকতে পছন্দ করে। ক্লিন শেভ, টাখনুর নিচে কাপড়, স্বাভাবিকভাবেই প্রায় সবধরনের গান শুনা , মুভি দেখায় অভ্যস্ত। তাদের এক ফতোয়া,
"ইসলামী আন্দোলনের মহান স্বার্থে ছদ্মবেশ নেয়া জায়েজ আছে।"

এ পর্যন্ত যত দল মতের আলেম দেখেছি সবাই বলেছে,
"পুরুষদের জন্য দাড়ি রাখা ওয়াজিব।বাদ্য যন্ত্র সহকারে গান নিষিদ্ধ।"
জামাতীরা তাদের সুবিধা মত এসব বিষয় পুরোপুরি অস্বীকার করে, প্রয়োজনে তাদের স্বশিক্ষিত স্বঘোষিত মাওলানা মওদুদীর বাণীও তারা মানতে নারাজ। তাদের মতে এসব হল ফালতু বিষয়ে তর্ক করা।

আসল কাজ হল "ইসলামী আন্দোলন"। আরবি ব্যকরণ না জেনে ইসলামের ধর্ম পুস্তকগুলো ব্যাখ্যা, সিদ্ধান্ত নেয়া মত গুরুতর কাজ করতে তারা অভ্যস্ত। ধর্মের মর্ম বা ধর্ম না বুঝে ধর্ম পালন যে সবচেয়ে বড় অধর্ম এটা তাদের বোঝানো দায়, যখন ধর্মের মৌলিক কিছু কর্মকান্ডকে খাট করে নিজেদের দলের রাজনীতিই যখন দেশ, ধর্ম সবকিছুকে ছাড়িয়ে যায়।
সর্বশেষ এডিট : ২২ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১০:১০
২০টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×