somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

শহুরে বৃষ্টি~

২০ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ রাত ১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমাদের ঢাকা শহরে আজ বৃষ্টি নেমেছে। দুপুর চারটার পরই প্রকৃতি মেঘ টেনে সূর্য ঢেকে দিল। ধেয়ে এল বাতাস। বাতাসে ছুটোছুটি করছে রেন্ডি গাছের লাল, হলুদ, কমলা রঙের পাকা পাতাগুলো। ওগুলোর সাথেই পাল্লা দিচ্ছে শহরের ধুলোবালি। এই বাতাস একটা কোমল শীতল ছোঁয়া দিয়ে আমাদের শহুরে জীবনে কাল বৈশাখির আগমন বার্তা দিয়ে যায়।
ঘরের খুব কাছে থাকলে এ পরিবেশ যে ভাবে উপভোগ করা যায়, দূরে কর্মস্থল হতে সেটা যায় না। ব্যস্ত, ঘিঞ্জি এ শহরে এই পরিবেশ বৃষ্টির আতঙ্ক সৃষ্টি করে মনে। ভেজা শরীরে বাসে স্যাঁতস্যাঁতে অবস্থায় ঘন্টা ব্যপি যাত্রা কারই বা ভাল লাগে।

মূমুর্ষরোগীর কাছে আসি আসি করে মৃত্যু যেমন সব সয়মই আসে না, তেমনি এমন পরিবেশে বৃষ্টি আসি আসি করে প্রায়ই আসে না। আজ এসেছিল ধোঁকা দেয়নি। জানালা দিয়ে চেয়ে রইলাম। বাসার সামনের পিচ ঢালা রাস্তা বৃষ্টির বড় বড় ফোঁটায় ধীরে ধীরে গাঁঢ় হয়ে উঠল। বাতাসে ধুলোবালির আর খবর পাওয়া যাচ্ছে না। রেন্ডি গাছের পাতাগুলোও বিশ্রাম নিচ্ছে রাস্তার দুধারে। দোকান গুলোর সামনে পথচারীরা ভিজবার ভয়ে আশ্রয় নিয়েছে। অথচ, এদের কেউ কেউ বাসায় পৌছে গোসল করবে হয়ত। বৃষ্টিতে ভেজাটা যেমন আকর্ষণীয় তেমনি বৃষ্টি হতে গাঁ বাঁচিয়েও বৃষ্টিকে অন্য এক রূপে অনুভব করা যায়। এই রূপটিও আবার নানা ধরণের। যেমন ছাতা নিয়ে বৃষ্টিতে হাটার যেমন এক ধরনের আনন্দ আছে, ঠিক তেমনি রিক্সায় পর্দা ধরে ভ্রমনের অন্য এক আনন্দ। তবে, একমাত্র বাস ছাড়া অন্য কোন গাড়িতে বৃষ্টিকে কোন ভাবেই অনুভব করা যায় না বলে আমার বিশ্বাস।

ঘরের জানালা বন্ধ করে বৃষ্টি হতে দূরে থাকা যায় না। আমাদের পাকা দালানে বৃষ্টির প্রবেশাধিকার না রইলেও বৃষ্টির শীতল ছোঁয়া ঘরের প্রতি কোনাতেই রাজত্ব করছে। তবে রিম ঝিম বৃষ্টি বা মুশলধারের বৃষ্টি বলতে যা বুঝি সেটা একমাত্র টিনের ঘরেই মনকে নাচায়। যদি টিনের ঘর না থাকত তবে সাহিত্য কবিতার বৃষ্টি অংশ অনেকটাই হয়ত ম্লান হত। উন্নয়নের জোয়াড়ে কোন এক কালে হয়ত আর ঘরের চালে টিন থাকবে না; কিন্তু হায়! বৃষ্টিতে মনও যে আর নাচবে না।

ইংরেজীতে “mimic” বলে একটা শব্দ আছে। যার অর্থ এমন ভাবে অণুকরণ করা যে ধোকা খেতে হয়। বৃষ্টিও মাঝে মাঝে এই শহরে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেয়। একটু বৃষ্টি হলেই টিকাটুলির রাস্তা পানিতে ডুবে যায়। নিশ্চুপ রাতে যখন সেই পানি কেটে দ্রুত বেগে গাড়ি চলে আমরা চমকে উঠি হঠাৎ মুসলঅধারে বৃষ্টি এল বলে।

বৃষ্টি দেখতে গিয়ে দুটি ঘটনা খালি চোখে দেখবার বড্ড শখ আমার। একটা হল, বৃষ্টির ফোটা গুলো যখন একের পেছনে এক একটি নেমে আসে; তখন চেষ্টা করি দুটি ফোঁটাকে আলাদা আলাদা পাশাপাশি দেখতে। দ্বিতীয়টা হল পানির ফোঁটা পৃথিবীরে ফেটে পড়বার মুহূর্তটি দেখবার। পানির মাঝেই পানি দিয়ে একটা গর্ত সৃষ্টি হয়। আজ পর্যন্ত মনের মত করে কখনও দেখি নাই। তবুও, চেষ্টা করি দেখতে মনের মত করে। এ কারনেই, বৃষ্টি দেখবার আশা কখনও ফুরায় না।

রবীন্দ্রনাথের গানের ভাষায় আমিও গেয়ে যাই মনে মনে,

এমনি করে যায় যদি দিন যাক না
মন উড়েছে উড়ুক নারে
মেলে দিয়ে গানের পাখনা।
সর্বশেষ এডিট : ২১ শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৯ বিকাল ৩:৩০
১৪টি মন্তব্য ৬টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:৪৩

মন যদি চায়, তবে হাতটি ধরো
অজানার পথে আজ হারিয়ে যাব
কতদিন চলে গেছে তুমি আসো নি
হয়ত-বা ভুলে ছিলে, ভালোবাসো নি
কীভাবে এমন করে থাকতে পারো
বলো আমাকে
আমাকে বলো

চলো আজ ফিরে যাই কিশোর বেলায়
আড়িয়াল... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

চাকরি বয়সসীমা ৩৫ বৃদ্ধি কেনো নয়?

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪২



চাকরির বয়সসীমা বৃদ্ধি এটা ছাত্র ছাত্রীদের/ চাকরি প্রার্থীদের অধিকার তবুও দেওয়া হচ্ছে না। সরকার ভোটের সময় ঠিকই এই ছাত্র ছাত্রীদের থেকে ভোটের অধিকার নিয়ে সরকার গঠন করে। ছাত্র ছাত্রীদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×