somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নো সুনার হ্যাড দি হাই কোর্ট ডিক্লেয়ারড জাজমেন্ট দ্যান দি সুপ্রিম কোর্ট স্টে'ড ইট

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৭:২০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

হাই স্কুলের কমপ্লেক্স বাক্যরচনার একটা উদাহরণ ছিল এই রকম। বাক্য রচনার সূত্র হলো : প্রথমে নো সুনার, ক্রিয়া : হ্যাড, জোড়া দেয়ার পর দ্যান দিয়ে শুরু। ডাক্তার আসতে আসতেই রোগী মারা গেল। শিক্ষক আসতে আসতেই ক্লাস আওয়ার শেষ হয়ে গেল। এই বাক্যগুলোও একইভাবে গঠন করা যায়।
ইদানিং বাক্য গঠনের এই রীতিটা খুব মনে পড়ে। হাই কোর্ট বনাম সুপ্রিম কোর্ট টম অ্যান্ড জেরি গেম দেখতে দেখতে প্রতিদিন খালি এই বাক্যটার কথাই আমার মনে পড়ে। হাই কোর্ট বা সুপ্রিম কোর্টের যে কোনো রায়ের পর একটা করে টক শো দেখে ঝাল মেটাই। সেইরকম কেউ বক্তা এলে গণমাধ্যমের স্বাধীনতা, বিচারাধীন বিষয়ে মন্তব্য করার সীমাবদ্ধতা এবং কনটেমপ্ট অফ কোর্টের বিধান মনে রেখে যতটুকু বলেন ততোটুকুই আমরা শুনি। আকলমান্দ কে লিয়ে ইশারা হি কাফি। বুঝদার ব্যক্তি ইশারা করলেই কফি খেয়ে নেয়। ইশারা থেকে যতদূর বুঝি তার সার কথা হইলো :
১. সুপ্রিম কোর্ট হাই কোর্টকে তার যথাযথ সম্মানজনক স্থানে সবসময় স্থান দিচ্ছে না।
২. সুপ্রিম কোর্ট স্বাধীনভাবে কাজ করছে বলে মনে হচ্ছে না।
৩. কোর্টের বাইরে কোনো কোনো বিচারপতি সরকারি কর্মসূচিতে এমনভাবে সন্তোষ ব্যক্ত করছেন যে তা অনেককে বিস্মিত করছে।
আর অধিক কিছু বলা ঠিক হইবে না। অবশ্য ইতিমধ্যে বিচার বিভাগ স্বাধীন হয়ে গেছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কোনো নজির এ পর্যন্ত জাতি দেখে নাই। কিন্তু স্বাধীন হওয়াটা দেখেছে। দুই দুইটা পাথরে বিচার বিভাগের স্বাধীনতার কথা লিখে পর্দা সরানো হয়েছে। আমি নিজে লাইভ বিচার বিভাগের স্বাধীনতা প্রত্যক্ষ করিয়াছি। বাংলাদেশের জন্য এর বেশি স্বাধীনতা হয়তো দরকার নাই। বাংলাদেশের নিম্ন আদালতের জন্য চোখে দেখা স্বাধীনতাই কাফি।

অনেকে বলেন, এ রকম একটা পরিস্থিতিতে বিচার বিভাগ কী-ই বা করতে পারে? অনেকে বলেন, তারাও তো বাংলাদেশেরই একটা প্রতিষ্ঠান। কেউ কেউ বলেন, বিচার বিভাগ রায়ের ব্যাপারে মোর ক্রিয়েটিভ হইতে পারে। ক্রিয়েটিভ হইতে গিয়া পাকিস্তানের মতো পরিস্থিতি হউক সেইটাও হয়তো আমরা চাই না। কিন্তু টম অ্যান্ড জেরি খেলাটা ক্রিয়েটিভলি হাই কোর্ট ও সুপ্রিম কোর্টের মধ্যে না চইলা সরকার ও বিচার বিভাগের মধ্যে চললে জনগণের আস্থা আরও বেশি অক্ষুণ্ন থাকতো। বাংলাদেশের সংকটে বাংলাদেশের বিচার বিভাগ সেরাম ক্রিয়েটিভ কখনো হইছিল বইলা আমাদের জানা নাই। জিয়া ও এরশাদের সামরিক শাসন আসার পর কোনো বিচারপতি মৃদু প্রতিবাদের কথাও শোনা যায় না। বরং তারা এ যাবত খুশী মনেই মার্শাল ল' অ্যাডমিনেস্ট্রেটরদের শপথ করিয়েছেন।
গুরুত্বপূর্ণ রাষ্ট্রীয় যে কোনো ব্যাপারে তাদের ক্রিয়েটিভির কোনো নজির আমরা দেখি নাই। যে সব ব্যাপারে তারা সিদ্ধান্ত দিলে জাতি বাঁচতো, সে সব ব্যাপারে তারা কার্যত নিরবই থেকেছেন। রাষ্ট্রপতি ইয়াজউদ্দিন তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব নেয়ার পর এর বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়েছিল। সেই রিটের ভাগ্যে স্টে জুটেছে। বিচারপতি আজিজ এক সময় টু বি অর নট টু বি'র নির্বাচনে কেন্দ্রীয় চরিত্র ছিলেন। তার দুইটি সাংবিধানিক পদে থাকার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট হয়েছিল। সীতার ধ্যানে অজ্ঞান এই বিচারপিতির দুই পদে থাকা অবৈধ হয় যখন তখন রায় ঘোষণার তাত্ত্বিক গুরুত্ব ছাড়া আর কোনো গুরুত্বই নেই। সে রামও নেই সে অযোধ্যাও নেই। যে কোনো গুরুতর সাংবিধানিক বিষয়ে আমাদের কোর্টের এর বেশি ভূমিকা কেউ দেখে থাকলে আওয়াজ দিয়েন।
এখন সুপ্রিম কোর্ট ও হাই কোর্টের মধ্যে যে জাজমেন্ট ও স্টে'র ব্যাপার চলছে তা নিয়ে জাতির হতাশ হওয়া ছাড়া কোনো উপায় নাই। এই টম অ্যান্ড জেরি গেমের মধ্যেই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দায়ের করা আজম জে চৌধুরীর মামলা অবৈধ ঘোষণা করলো হাই কোর্ট। এই মামলা নিয়ে আগামী কাল বা পরশু একই রকম একটি কমপ্লেক্স বাক্য গঠিত হবে কি না আমরা জানি না, এখনও। সুপ্রিম কোর্ট এ রায় স্থগিত, বাতিল যাই করুক, সকলের চোখ এখন তাদের দিকে। এ রায়ের ওপর সরকারের দুর্নীতি বিরোধী গর্জনের বর্ষণ নির্ভর করছে। খালেদা-হাসিনার ভবিষ্যতও নির্ভর করছে। হাই কোর্ট যেভাবে রায় দিয়েছে, তাতে সাম্প্রতিক সময়ের স্মরণীয় এ রায়টির দিকে সবার দৃষ্টি কেন্দ্রীভূত হয়েছে। এখন সুপ্রিম কোর্টের অপেক্ষায় জাতি। তারা কি ক্রিয়েটিভ হবে? নাকি স্কুলে শেখা সেই পুরানা বাক্যটাই আবার আওড়াতে হবে?

১৭টি মন্তব্য ১৫টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×