somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ভাঙনের শব্দ শুনি

০৬ ই ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

কয়েকদিন ধরে দারুন কুফা টাইম কাটাচ্ছি। দিনকাল বিশেষ ভালো যাচ্ছে না।
একদম সর্বশেষ বাজে খবর হলো আমাকে এইবার একটা কোর্স রি-টেক করতে হচ্ছে। তারমানে আবার ক্লাস, ক্লাসটেস্ট, পি.এল. এবং সবশেষে টার্ম ফাইনাল!! এই কোর্স টাও আবার আগের কোর্স থেকে আলাদা, কারণ সিলেবাস পাল্টে গেছে। তার মানে একদম নতুন করে একটা জিনিস পড়া লাগবে। মানসিকভাবে আমি মোটামুটি প্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছিলাম যে এইবার পড়াশোনার পাট চুকে যাচ্ছে। এখন আবার শুরু করতে হবে। আরও সমস্যা হলো আমাকে এই কোর্সটা দুই ব্যাচ জুনিয়রদের সাথে নিতে হচ্ছে। যাই হোক, ভিক্ষার চাল কাঁড়া আর আকাঁড়া!
এর উপর আরেক বিপদ বাঁধিয়ে বসেছি, গতকাল সন্ধ্যায় বাসায় ফেরার পথে শাহবাগের মোড়ে মিশুকে উঠেই ছিনতাইকারীর খপ্পরে পড়লাম। দুইপাশ থেকে ৪ কি ৫ জন চেপে ধরলো। ডান পকেটে মোবাইল আর বাম হাতের ঘড়ি ছিনিয়ে নিয়েই ভো-কাট্টা। আমার অতি সাধের নকিয়া এন৭০, ঘড়িটাও অনেক দামী ছিল, বাইরে থেকে ফুপি উপহার হিসেবে নিয়ে এসেছিল। দুটোই গেল!
দুঃখে শোকে আমার পাথর হবার দশা!! কীই বা করার আছে এর পরে??
:((
ফিরে আসতে আসতে গতবছরের একটা ঘটনা মনে পড়ে গেল। আমার খুব ছোটবেলার এক বন্ধু গত বছর ছিনতাইকারীদের হাতে মারা গেছে। ধানমন্ডিতে একটা ব্যাঙ্ক থেকে টাকা নিয়ে বেরোনোর পথে ফুটপাতেই ছিনতাইকারী ধরেছিল। ছেলেটা প্রায় ৬ ফুট লম্বা, দারুন তেজী আর প্রাণবন্ত মানুষ। হাতাহাতির এক পর্যায়ে কানের নিচে ওরা গুলি করে দেয়। ঐ খানেই মারা যায় আমার বন্ধু। সেদিন সন্ধ্যা থেকেই নিউজে দেখাচ্ছিল ওর মারা যাবার খবরটা। আমি প্রথম শুনে এত ভয়ংকরভাবে চমকে গেছিলাম যে কিছুক্ষণ কথাই বলতে পারিনাই। বুকের মধ্যে একটা অদ্ভুত মোচড়ানো কষ্ট হচ্ছিলো। মাত্রই গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেছিলো ও, যে টাকাটা তুলছিল বাইরে ভর্তির টাকা সেটা‌, কদিন পরেই বিদেশ যেত মাস্টার্স করতে। এ কী ধরনের অন্যায়! ওর জানাজায় যাবার মতো সাহস আমার ছিল না, এমনিতেই আমি এরকম শোক সহ্য করতে পারি না। ওর মায়ের কষ্ট দেখার মতো শক্তি আমার মাঝে ছিল না। কতগুলো অবর্ণনীয় প্রশ্ন কুরে কুরে খাচ্ছিলো আমাকে। কী হতো যদি ও হাতাহাতি না করতো। চুপচাপ দিয়ে দিলে ওরা হয়তো ওকে মারতো না, হয়তো ও আজও বেচেঁ থাকতো! একটা মেয়েকে পছন্দ করতো ও। আমি চিনতাম একসাথে ক্লাস করার সুবাদে। একদিন বিগ বাইটে খেতে গিয়ে ওর সাথে দেখা হয়ে গিয়েছিল, গার্লফ্রেণ্ড সহ। অনেকক্ষণ গল্প করেছিলাম ঐদিন। ওদের বিয়ে হবার কথা ছিল! এই বেদনা একজন মানুষ কীভাবে সহ্য করে?
এসব দেখলে শুনলে মাঝে মাঝে মনে হয় আমরা যতই আইন করি আর বিচার করে শাস্তি দেই না কেন, এই অন্যায় আর কষ্ট আমাদের মাঝ থেকে কোনদিনই দূর হবে না। কারণ গলদ আসলে আমাদের মধ্যেই। আমরা নিজেরাই নিজেদের এভাবে করে মেরে কেটে শেষ করে দিচ্ছি।
সর্বশেষ এডিট : ০৬ ই জানুয়ারি, ২০১০ দুপুর ১:৫৬
৪টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২

কারবারটা যেমন তেমন : ব্যাপারটা হইলো কি ???



আপনারা যারা আখাউড়ার কাছাকাছি বসবাস করে থাকেন
তবে এই কথাটা শুনেও থাকতে পারেন ।
আজকে তেমন একটি বাস্তব ঘটনা বলব !
আমরা সবাই... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×