(আমার বাবা বনবিভাগে চাকুরী করতেন।অফিসের পাশেই ছিলো গহীন বন।
সেই বনে একবার হারিয়ে গিয়েছিলাম।কী অপরুপ সেই বন।সেখানে এক খুকীর সাথে দেখা। পরে গিয়ে ওকে আর পাইনি।) দশম শ্রেনীতে পড়াকালীন লিখা কবিতাটি সেই হারিয়ে যাওয়া খুকীকে।
আমরা বসেছি সেখানে দুজনে,
নিবিড় বনে পাখীর কুজনে,
ভ্রমর এসে গান গেয়ে যায়,
ফুলের ঘ্রানের সুবাস ছড়ায়
শিরশিরে বাতাস চুপিসারে আসে,
চুরকাটা লাগে তোমার পাশে,
ঝরনা পানিতে পাথর নুড়ি,
ফটিক জলে তার ছড়াছড়ি,
আহাঃ কী সুন্দর মায়াবী বনের এ অপরুপ শোভা,
আরন্যকের মাঝে নির্জনের এ ভর দুপুর কে আর দেখেছে কেবা।
পাতার ঘ্রান,ফুলের ঘ্রান,মাটির ঘ্রান আসে,
বললে তুমি ঊদাস হয়ে একটুখানি হেসে,
আবার হাঁটতে গিয়ে বললে তুমি বাঁধন তোমার লতায়,
হঠাত দেখি প্রজাপতি এক নাচ্ছে তোমার খোঁপায়।
হরহরি আসে, টুই আসে,ঘুঘু আসে ,শ্যামা,
কাঠবিড়ালী এক করছে দেখো কেমন আনাগোনা।
রোদের পর রোদ পড়েছে,ভাসছে মেঘ শাদা
এতো রোদের নাচন দেখে ,লাগছে চোখে ধাঁধাঁ।
ঝরনা পারের হলুদ ফুলটি দেখে ছুটতে গেলে যেই,
তাকিয়ে দেখি,ঝরনা পারের ফুলটি আর নেই,
ফটিক জলে নাচছে ফুল,নাজানি কোথায় যায়,
তোমার মনে বাজছে কাঁপন এই বুঝি হারায়।
ঝোঁপঝাপ পেরিয়ে,বনে বনে হারিয়ে,
আঁকাবাঁকা পথে ,অনেক বেলার পর,
অবশেষে সাঁজের বেলা,নীড়ের পাশে যেয়ে,
চেয়ে দেখি,ছোট্ট খুকী হাসছে কেমন ফুলটি হাতে পেয়ে।
অনেক দিনের পর-
একা একা পথে পথে,আপন মনে হাঁটি
বনের পাশে ,নির্জনে চুপটি করে বসি।
পাখি আসে, ফুল আসে, প্রজাপতি সব।
বনের মাঝে মিলন মেলা,বাড়ছে কলরব।
ঊদাস দুপুর বলছে আমায় অনেক দিন পরে,
আসলে বুঝি আমাদের এ শান্ত সবুজ নীড়ে,
ফড়িং আসে,ভ্রমরটাও গুনগুনিয়ে যায়,
আমরা কিন্তু সবাই আছি,সেই খুকিটি আর নাই।