জিভালুকি সহ আরো আরো কয়েকশো জন হাওয়া।
তারপর আবার জাহাজ এলো,আবার অনেককে ধরে নিয়ে গ্যালো,
আবার,আবার,আবার
শেষবারে ধরা পরেছে আরমিলো নিজেই,সে ছিলো উপাসনা দলের মুল গায়ক।তাদেরকে জাহাজে বেধে রাখা হয়েছে।
গল্পটির দৃশ্যটি কাল্পনিক,কিন্ত ১০০ পার্শেন্ট সত্য।কারণ সে সময়ে দক্ষিণ আমেরিকার রাস্তাঘাট,ভবন,রেলরোড প্রভৃতির কাজে প্রভৃতির
কাজে দরকার অগণিত শ্রমিক কোথা থেকে আনা যায়?হ্যা,আনা যায় অসভ্য ইতরের দেশ আফ্রিকা থেকে।সেই শুরু হলো দাসের জন্য অভিযান,জাহাজে ভরে দলে দলে বন্দী কালো মানুষ কে নিয়ে আসা হলো।খাটানো হলো দাসত্বের কঠোর শৃঙ্খলে।
আরমিলোকে এখন সকাল বিকাল কাজ করতে হয় এক খামার বাড়ীতে।খামারবাড়ীর নিয়ম খুব কড়া।সকালবেলা থেকে কোজ শুরু,সন্ধ্যায় শেষ।তারপর রাতের খাবার,ও চোলাই মদের পর ভরপেট ঘুম!তার বন্ধুরা কাজ করছে রেইলরোড তৈরিতে।আরমিলোরই বরঙ কাজ কম এখানে।তার বোনটা মনে হয় কস্টে আছে,সে এখন খামারবাড়ীর মালিকের উপপত্নী।
ক্রীতদাসদের খাবারের প্লেটে ও কাপে নিত্য ব্যবহার্য সব কিছুতেই নীল রঙের একটা গোল একটা বৃত্ত আকা থাকতো যা ক্রতদাসদের প্রতীক।তাদেরকে সন্ধ্যার পর প্রচুর চোলাই মদ দেয়া হতো শ্রমের জন্য পর বিনোদনের জন্য।(আসলে মদ দেয়া হত এই কারণে যাতে তারা বিদ্রোহ না করতে পারে)
একদিন আরমিলোর নেশা হয়ে গেছে অনেক,তার সঙগীরাও টাল হয়ে পড়ে আছে আশেপাশে।ট্রাইবাল আরমিলো তার আফ্রিকাণ বাশিতে একটা করুণ সুর তুললো,তার বন্ধুরাও গ্লাস আর প্লেটে তাল দিতে লাগলো টুং টাং করে।
এভাবে প্রতি সন্ধ্যায় আরমিলো আর সঙ্গীরা এক ধরণের সঙ্গীত করতো,শাদা আমেরিকানোরা তাকে ব্যাঙগ করে ব্লুজ বলতো সেই নীল বৃত্তের দাসত্বের ট্রেডমার্কের কারণে।
দাসেদের সংগীত হতো প্রতিদিন,দাসত্বের কান্নায় ভরে থাকতো তার প্রতিটি সুর।
এই হলো আমেরিকার লোকমুখে প্রচলিত ব্লুজ মিউজিকের কাহীনি।
এছাড়াও সে সময় ব্লুজ মানে আফ্রিকানদের মিন করতো।আমেরিকানরা তাদের বলতো ব্লু ডেভিলস যার মানে হলো অতৃপ্ত আত্না,অসুখী মন,বিষন্নতা ইত্যাদী।
সর্বপ্রথম ব্লুজ উৎপত্তি হবার সময়কাল ধারণা করা হয় ১৮৭০।কিন্তু জনসমক্ষে আসে ১৯০০-১৯১৪ সালে।রাবার্ট জনসন,মাডি ওয়াটারস,ব্যাসি স্মিথ আরো অনেকে হলেন ব্লুজ আর্টিস্ট।
ব্লুজ আসলে একাটা ফিউশন মিউজিক যা পরবর্তীতে জ্যাজ মিউজিক সৃস্টি করে।ব্লুজ হচ্ছে আফ্রিকান,এমেরিকান ও ইউরোপিয়ান মিউজিকের এক অনন্য মিশ্রণ।কারণ এখানে আমেরকান ও ইউরোপিয়ান সরন্জাম,যেমন,গিটার,ভায়োলিন,পিয়ানো,হারমোনিকা,বেস প্রভৃতির ব্যভার কৃষ্ণাঙ্গরা করেছে। তবে এখানে আফ্রিকান ট্রাইবাল সংগীতের ধরণই মুল এর বৈশিস্ঠ্য।যাহোক ফিউশন ও জ্যাজ নিয়ে পরে ালোচনা করবো।
(পোস্টের ছবিটা ব্লুজ আর্টিস্ট ব্যাসি স্মিথের)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:১১