somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ব্লুজ-কালো মানুষের বেদনার নীল রক্ত রাঙানো সংগীত(মিউজিক ভাবনা২)

১৮ ই জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সময়টা ১৮৩০-১৮৭০,আফ্রিকার কোনো এক নদীর ধারে,খেলছিলো একদঙ্গল কালো কালো ছেলেমেয়ে।কিন্তু কিসের যেন ভয়ে আছে তারা। কয়েকদিন আগে এ অন্চলে কিছু সাদা দেবতা এসেছে পাহাড় সমান জাহাজে চড়ে,বাবা মা'রা গিয়েছিলো দেবতাদের স্বাগত জানাতে,ফিরে আসেনি।সবাই খুশি হয়েছে এই ভেবে যে তাদেরকে দেবতা স্বর্গে নিয়ে গ্যাছেন।কিন্তু কিছুদিন না যেতেই হাতিমুড়ো,যাভাগিলু,সুলামাকি,
জিভালুকি সহ আরো আরো কয়েকশো জন হাওয়া।
তারপর আবার জাহাজ এলো,আবার অনেককে ধরে নিয়ে গ্যালো,
আবার,আবার,আবার

শেষবারে ধরা পরেছে আরমিলো নিজেই,সে ছিলো উপাসনা দলের মুল গায়ক।তাদেরকে জাহাজে বেধে রাখা হয়েছে।

গল্পটির দৃশ্যটি কাল্পনিক,কিন্ত ১০০ পার্শেন্ট সত্য।কারণ সে সময়ে দক্ষিণ আমেরিকার রাস্তাঘাট,ভবন,রেলরোড প্রভৃতির কাজে প্রভৃতির
কাজে দরকার অগণিত শ্রমিক কোথা থেকে আনা যায়?হ্যা,আনা যায় অসভ্য ইতরের দেশ আফ্রিকা থেকে।সেই শুরু হলো দাসের জন্য অভিযান,জাহাজে ভরে দলে দলে বন্দী কালো মানুষ কে নিয়ে আসা হলো।খাটানো হলো দাসত্বের কঠোর শৃঙ্খলে।

আরমিলোকে এখন সকাল বিকাল কাজ করতে হয় এক খামার বাড়ীতে।খামারবাড়ীর নিয়ম খুব কড়া।সকালবেলা থেকে কোজ শুরু,সন্ধ্যায় শেষ।তারপর রাতের খাবার,ও চোলাই মদের পর ভরপেট ঘুম!তার বন্ধুরা কাজ করছে রেইলরোড তৈরিতে।আরমিলোরই বরঙ কাজ কম এখানে।তার বোনটা মনে হয় কস্টে আছে,সে এখন খামারবাড়ীর মালিকের উপপত্নী।

ক্রীতদাসদের খাবারের প্লেটে ও কাপে নিত্য ব্যবহার্য সব কিছুতেই নীল রঙের একটা গোল একটা বৃত্ত আকা থাকতো যা ক্রতদাসদের প্রতীক।তাদেরকে সন্ধ্যার পর প্রচুর চোলাই মদ দেয়া হতো শ্রমের জন্য পর বিনোদনের জন্য।(আসলে মদ দেয়া হত এই কারণে যাতে তারা বিদ্রোহ না করতে পারে)

একদিন আরমিলোর নেশা হয়ে গেছে অনেক,তার সঙগীরাও টাল হয়ে পড়ে আছে আশেপাশে।ট্রাইবাল আরমিলো তার আফ্রিকাণ বাশিতে একটা করুণ সুর তুললো,তার বন্ধুরাও গ্লাস আর প্লেটে তাল দিতে লাগলো টুং টাং করে।

এভাবে প্রতি সন্ধ্যায় আরমিলো আর সঙ্গীরা এক ধরণের সঙ্গীত করতো,শাদা আমেরিকানোরা তাকে ব্যাঙগ করে ব্লুজ বলতো সেই নীল বৃত্তের দাসত্বের ট্রেডমার্কের কারণে।

দাসেদের সংগীত হতো প্রতিদিন,দাসত্বের কান্নায় ভরে থাকতো তার প্রতিটি সুর।
এই হলো আমেরিকার লোকমুখে প্রচলিত ব্লুজ মিউজিকের কাহীনি।
এছাড়াও সে সময় ব্লুজ মানে আফ্রিকানদের মিন করতো।আমেরিকানরা তাদের বলতো ব্লু ডেভিলস যার মানে হলো অতৃপ্ত আত্না,অসুখী মন,বিষন্নতা ইত্যাদী।

সর্বপ্রথম ব্লুজ উৎপত্তি হবার সময়কাল ধারণা করা হয় ১৮৭০।কিন্তু জনসমক্ষে আসে ১৯০০-১৯১৪ সালে।রাবার্ট জনসন,মাডি ওয়াটারস,ব্যাসি স্মিথ আরো অনেকে হলেন ব্লুজ আর্টিস্ট।

ব্লুজ আসলে একাটা ফিউশন মিউজিক যা পরবর্তীতে জ্যাজ মিউজিক সৃস্টি করে।ব্লুজ হচ্ছে আফ্রিকান,এমেরিকান ও ইউরোপিয়ান মিউজিকের এক অনন্য মিশ্রণ।কারণ এখানে আমেরকান ও ইউরোপিয়ান সরন্জাম,যেমন,গিটার,ভায়োলিন,পিয়ানো,হারমোনিকা,বেস প্রভৃতির ব্যভার কৃষ্ণাঙ্গরা করেছে। তবে এখানে আফ্রিকান ট্রাইবাল সংগীতের ধরণই মুল এর বৈশিস্ঠ্য।যাহোক ফিউশন ও জ্যাজ নিয়ে পরে ালোচনা করবো।
(পোস্টের ছবিটা ব্লুজ আর্টিস্ট ব্যাসি স্মিথের)
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই জানুয়ারি, ২০০৮ রাত ৯:১১
১৩টি মন্তব্য ৯টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

যেভাবে শরণার্থীরা একটি দেশের মালিক হয়ে গেলো!

লিখেছেন মাঈনউদ্দিন মইনুল, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:২৬



এবার একটি সেমিনারে প্রথমবারের মতো একজন জর্ডানির সাথে পরিচয় হয়। রাসেম আল-গুল। ঘনকালো মাথার চুল, বলিষ্ট দেহ, উজ্জ্বল বর্ণ, দাড়ি-গোঁফ সবই আছে। না খাটো, না লম্বা। বন্ধুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। প্রতিটি সেশন... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিউ ইয়র্কের পথে.... ২

লিখেছেন খায়রুল আহসান, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০২


Almost at half distance, on flight CX830.

পূর্বের পর্ব এখানেঃ নিউ ইয়র্কের পথে.... ১

হংকং আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে প্লেন থেকে বোর্ডিং ব্রীজে নেমেই কানেক্টিং ফ্লাইট ধরার জন্য যাত্রীদের মাঝে নাভিশ্বাস উঠে গেল।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সামুতে আপনার হিট কত?

লিখেছেন অপু তানভীর, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৩



প্রথমে মনে হল বর্তমান ব্লগাদের হিটের সংখ্যা নিয়ে একটা পোস্ট করা যাক । তারপর মনে পড়ল আমাদের ব্লগের পরিসংখ্যানবিদ ব্লগার আমি তুমি আমরা এমন পোস্ট আগেই দিয়ে দিয়েছেন ।... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×