somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আরিল, আপনি আসলে কী চান?

১৫ ই জানুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১০:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঘটনার পরিপ্রেক্ষিত তো আর নতুন করে কিছু বলার নেই। কিন্তু আপনি কি বুঝতে পারছেন, এই ব্লগকে অকার্যকর করার জন্য যারা পরিকল্পনা করে এসেছিলো, তারা তাদের পরিকল্পনা সফলভাবে বাস্তবায়ন করার পথে অনেকটাই সফল হয়েছে? এবং সেটা আপনার মাধ্যমে?

মুক্তিযুদ্ধ এদেশের মানুষের কাছে সবচাইতে বড় আবেগ। সে কারণেই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা যারা করেছে (করেছে-র পর ‘ন’ বর্ণটি ইচ্ছে করেই বাদ দেওয়া হয়েছে), তারা এদেশে সবচাইতে বড় ঘৃণার বস্তু। আপনি একজন ভিনদেশি হয়ে বাংলা ব্লগিং চালুর যে উদ্যোগ দেখিয়েছেন, সেটিকে বাংলা ভাষার প্রতি আপনার শ্রদ্ধার বহিঃপ্রকাশ হিসেবেই দেখতে চাই। সেখানে কোনো ব্যবসায়িক উদ্দ্যেশ্য থাকলেও তা আমাদের কাছে মুখ্য বিষয় হয়নি কখনোই। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ জন্ম দিয়েছে যে দেশটিকে, সে দেশের মানুষের অনুভূতির প্রতি আপনি বোধহয় যথাযথ শ্রদ্ধা দেখাতে পারছেন না।

আমি ব্যক্তিগতভাবে গালাগাল করার সমর্থক নই। আমি মনে করি, তীব্র আবেগ যখন মস্তিষ্কের যৌক্তিক অংশটি দখল করে নেয়, তখন সেখানে যুক্তি থাকলেও সেটি প্রকাশ করা যায় না; বদলে তাৎক্ষণিক উত্তেজনার ফসল হিসেবে গালাগাল বেরিয়ে আসে। ভাবুন তো, আমার মাকে নিয়ে কেউ অপছন্দনীয় কিছু বললে তখন আমার পক্ষে নিজেকে কতোটুকু যৌক্তিক রাখা সম্ভব? এই গালাগাল কিন্তু তখন অপরাধের পর্যায়ে পড়ে না, এটা চরমতম আবেগের ক্ষুব্ধ রূপ। আপনি যাদেরকে ব্যান করেছেন, তাদের লেখায় আপনি শুধু কয়েকটি আপত্তিকর শব্দ দেখেছেন, কিন্তু দেখেননি এই শব্দগুলোর পেছনের আবেগ।

যৌক্তিক আচরণ যেসব ব্লগার করেননি তাদেরকে আপনি ব্যান করেছেন, ভালো কথা। কিন্তু আপনি নিজেও কিন্তু যৌক্তিক আচরণ দেখাতে সক্ষম হননি। আপনি ভালো করে লক্ষ করুন, এই ব্লগারদের আবেগের জায়গায় কীরকম নগ্নভাবে মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধীরা একের পর এক আঘাত করেছে। সেটি কি গাল দেওয়ার চাইতে বড় অপরাধ নয়? আপনি কি সেই লেখাগুলো প্রকাশ করে প্রকারান্তরে মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধীদের সমর্থন করেননি? মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধীরা যারা এখনো গালাগাল করেই যাচ্ছে, তাদের ব্যাপারে তো আপনার কোনো পদক্ষেপ চোখে পড়ছে না! গালাগালের সংজ্ঞা কি আপনার কাছে পরিষ্কার? ভদ্রলোকদের অভিধান-বহিভূর্ত শব্দগুলো কেউ বললেই গালাগাল ধরে নেন, কিন্তু অভিধানসম্মত শব্দগুলোর অশ্লীল উপস্থাপনও যে গালাগাল হতে পারে, সে সম্পর্কে কি আপনার কোনো আইডিয়া আছে? তারপর নোটিশবোর্ডে আপনি যেভাবে বলেছেন যে, তাঁরা ক্ষমা না চাইলে আনব্যান করা হবে না, সেটিই বা কতোটুকু যৌক্তিক? ব্লগাররা ক্ষমা চাইবেন কার কাছে? আপনার কাছে? কেন? আপনি কি বুঝতে পারছেন এই ক্ষমা চাওয়ার অর্থ হবে পরোক্ষভাবে উস্কানিদাতাদের কাছে নতিস্বীকার করা? ব্যান হওয়া কোনো মুক্তিযুদ্ধ-সন্তান এই কাজটি করবেন না, আমি সেটা আন্তরিকভাবেই চাই।

আমি ঘোষণা দিয়ে কলম-বিরতিতে যাইনি। যাবোও না। এভাবে মাঠ ছেড়ে দিতে ইচ্ছে হয় না। কিন্তু কিছুদিন যাবত কিছু লিখতেও ইচ্ছে করছে না। এভাবে চলতে থাকলে হয়তো একদিন ঘোষণা না দিয়েই আমাকেও চলে যেতে হবে। ভালোবাসা নিয়ে এসেছিলাম এই ব্লগে, যেতে হবে ঘৃণা নিয়ে।

আমাদের মতো দু’চারজনের যাওয়া-আসায় কোনো ক্ষতি হবে না এই ব্লগের। কিন্তু আপনাকে ঠিক করতে হবে- আপনি আসলে কী চান? মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধীদের একটি প্লাটফর্ম হিসেবে এটিকে রাখতে চান, নাকি চান সুস্থধারার ব্লগিঙের মাধ্যমে এই সাইটটিকে ভার্চুয়াল স্বাধীন মতপ্রকাশের প্লাটফর্ম বানাতে চান? মুক্তিযুদ্ধ-বিরোধীরা থাকলে এখানে সুস্থধারা যেমন সম্ভব হবে না, তেমনি স্বাধীন দেশে এই প্লাটফর্মটিও স্বাধীন থাকবে না, এটুকু বোঝা উচিত আপনার।
সর্বশেষ এডিট : ১৫ ই জানুয়ারি, ২০০৮ সকাল ১১:৩৪
১২টি মন্তব্য ৪টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কথাটা খুব দরকারী

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ৩১ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:৩৪

কথাটা খুব দরকারী
কিনতে গিয়ে তরকারি
লোকটা ছিল সরকারি
বলল থাক দর ভারী।

টাকায় কিনে ডলার
ধরলে চেপে কলার
থাকে কিছু বলার?
স্বর থাকেনা গলার।

ধলা কালা দু'ভাই
ছিল তারা দুবাই
বলল চল ঘানা যাই
চাইলে মন, মানা নাই।

যে কথাটা... ...বাকিটুকু পড়ুন

অতিরিক্ত বা অতি কম দুটোই সন্দেহের কারণ

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৩০

অনেক দিন গল্প করা হয়না। চলুন আজকে হালকা মেজাজের গল্প করি। সিরিয়াসলি নেয়ার কিছু নেই৷ জোসেফ স্টালিনের গল্প দিয়ে শুরু করা যাক। তিনি দীর্ঘ ২৯ বছর সোভিয়েত ইউনিয়নের প্রধান নেতা ছিলেন। বলা... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার

লিখেছেন শাহ আজিজ, ৩১ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৫৮



বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি

লিখেছেন শায়মা, ৩১ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৫৫


এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন

নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)

লিখেছেন অপু তানভীর, ৩১ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৭



কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×