শাফিক আফতাব
জেসিকা তুমি সত্যিই বলেছিলে : অভিশপ্ত জীবন আমাদের ;
পূর্ব পুরুষের দায় এড়াতে পারিনি আমরা,
ফলত প্রভূর পাকাধানে মই দেয়ার জন্য
মর্ত্যলোকে আমাদের এই যাতনামুখর বিপর্যস্ত জীবন।
তাই অগ্রজের বিবাহের তিন মাস দশ দিন পর প্রিয়তমার
উদর থেকে বেরিয়ে আসে দশমাস দশদিনের পরিপুষ্ট মৃত সন্তান,
সহদরার জীবন সমাজের যাঁতাকলে পড়ে অকালেই ঝরে পড়ে ধ্বংসের প্রপাতে,
বাল্যবিবাহের শিকার হয়ে আরেকজন সতীনের অনলে পুড়ে ছাড়খার,
আর আদরের কনিষ্ঠজন সন্তানহীন বন্ধ্যা জীবন যাপন করে কায়ক্লেশে,
আর চতুর এই আমি পালানোর সর্বাত্মক চেষ্টা করে ধরা খেয়েছি
অনিবার্য নিয়তীর কাছে,
নিয়তী আমাকে দিয়েছে বেবকার জীবনের যাতনা,
বেঁচে থাকার অর্থবোধক শব্দসমূহ,
নিয়তী আমাকে দিয়েছে একটি সমাজ আর একটি রাষ্ট্র ,
যেখানে মানুষগুলো পশুদের প্রতিযোগিতার চেয়ে ঢের
কঙ্কাল কিংবা পাঁজরের খাঁজ থেকে রক্তাভ মাংস ছিঁড়ে খায়,
দিনদুপুরেরই খোলা আকাশের নিচে লগ্ন হয় তারা,
পূর্বপুরুষের দায় এড়াতে পারিনি আমরা,
আমাদের পাপ ছিলো জেসিকা, আমাদের জন্মই পাপ,
তা না হলে জন্ম থেকেই কেনো দেখবো লুটপাট, রাহাজানি, দুর্ভিক্ষ ;
কেনো মানুষেরা সম্প্রীতি ভুলে যাবে ?
ভাই ভাইয়ের মাথা খাবে কেনো ?
জেসিকা তুমি সত্যিই বলেছিলে : অভিশপ্ত জীবন আমাদের ;
তুমি না এসে বরং ভালো করেছো !
এলে হয়তোবা পেটে জারজ সন্তান নিয়ে তোমাকে সরকারি সদর হাসপাতালের
নোংরা বিছানায় সিজারের জন্য চোখের জল ফেলতে হতো,
কেনো না আমার পাপের দায় তোমাকেও ক্ষমা করতোনা হয়তো,
তার চে বরং ভালো করেছো, ভালো থেকো,
আমি তো আছি, বেঁচে আছি
বেঁচে থেকে নৃবিজ্ঞানের অধ্যায় বিভাজন করছি, আর মনুষ্যজাতির
ক্রমইতিহাস খুঁজছি,
ডারউইন কি সত্যিই বলেছেন, আজকের মানুষ বান্দরের পয়দা।
২৮.০১.২০১৩