somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বোধের শান্তিময় বিবর্তন

০৭ ই জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

(লেখাটি ২০০৪ সালে শাবি-র ছোটকাগজ "আঁচড়" এ প্রকাশিত। সম্পাদকের অনুমতি না নিয়েই পোস্ট করে দিলাম, কুমিরছানার মতো।)

কতটাই বা বলা হয়া ওঠে সাদাকালোর মিশেলে? সুদূর থেকে মায়ার রথে আসা ভালোবাসার সে সংগীত কতটাই বা উগরে দেয় হৃদয়ের বর্ণমালা? বলনে, ভংগিতে, প্রতিবাদে, সঙ্গমে জীবনের অর্থময়তা কতটাই বা কাব্যিক হয়ে ওঠে? সে কোন শ্রেষ্ঠ সংগীত যা জন্মান্তর ছাপিয়ে যায়? স্বর্গীয় লালিত্যে নিরাভরণ প্রকৃতির কোন রূপমাধুরীই বা পারে এমন করে জাগাতে? জ্ঞান আর ভাবালুতার যোজনপথে কোন প্রাজ্ঞজনই শোনাবে নতুন আবিষ্কারের সুসংবাদ? যা হয়ে ওঠা হয়না- সেই মানুষ- বক্ষে ধারণ করে আছে বিশ্বচরাচরের সর্বশ্রেষ্ঠ সংগীত, কাব্য, শিল্পিত সৃষ্টি। জয়গান তাই সে মানুষেরই।

হৃদয়ের মতো এমন পবিত্র জমিন, সুতীক্ষ্ণ ধারালো অত বলবান অস্ত্র বানায় কার সাধ্যি? শত সহস্র মহাদেশ নিমিষে মুঠোয় পুরে নেয়া যায় এ অস্ত্রের বদান্যতায়। লাল নিশান উড়িয়ে, দিগবিদিক কাঁপিয়ে ছুটে আসা জনরথ কোন লাল স্বপ্নের আলপনা আঁকছে রোজ? ধমণীজুড়ে বইছে বিশ্বমানবের সে একই বর্ণময় কথকতা। বিশ্বের সকল অর্থময় সৃষ্টির দাবিদার এই পরাক্রমশালী মানুষ, তার প্রবল শক্তিশালী হৃদয়।

জাতিভেদ, বর্ণভেদ, শ্রেণীভেদ মানবতার কলংক, জঞ্জাল। শোষক-শোষিত, বাম-ডান, ক্ষমতাসীন-ক্ষমতাহীন, প্রতিবাদী-দমনকারী, জীবন্মৃত-জীবনলিপ্সু- কেন সব অদ্ভুত দ্বৈতসত্তা একই সৃষ্টির? সব বৈপরীত্বের সংযোগসেতু হোক তাই ভালোবাসা। সোনা ফলিয়ে সার্থক হোক প্রতিটি মানবজমিন। মনুষ্যসৃষ্টির প্রতিটি আঁচড়ে বেজে উঠুক সেই একই অনির্বচনীয় সুর- মানুষের স্তুতিবাক্য। নষ্ট প্রেমের মাদকতাকে নিরর্থক করে মমতার প্রলয় নাড়িয়ে দিক নিথর জীবদের। স্পর্শে, অনুভবে, দৃষ্টিতে অসংখ্যবার ধ্বনিত হোক প্রত্যাশাহীন ভালোবাসার প্রার্থনাসংগীত।

বিজ্ঞান আর বাণিজ্যের মানবিক কৌশলে কোনঠাসা দারিদ্র্য পরাজয়ের বেদনা নিয়ে আস্তাকুঁড়ে নিক্ষিপ্ত হবে। জন্মলগ্নে একটি শিশুর অভিভাবকত্বের সুসংবাদ নিয়ে স্বাগত সংগীত গাইবে প্রতিটি জীবিত প্রাণ। মানুষের আঙ্গিনা হবে দেবশিশুদের ক্রীড়াঙ্গন। একাকীত্ব আর অসহায়ত্বের গ্লানি দূর হবে উষ্ণতম ভ্রাতৃত্বের চাদরে। প্রকৃতির বিক্ষুব্ধতা হার মানবে মানববন্ধনের অনতিক্রম্য বেষ্টনীর কাছে।

রাজনীতি হোক মানুষ বাঁচানোর নীতি। সমাজতন্ত্র, ধনতন্ত্র, রাজতন্ত্র- সব তান্ত্রিকতা থেকে মোহমুক্ত হয়ে উঠুক ঠুলিপরা মানবাত্মা। ধর্ম বলবে শুধুই মানুষের কথা, ক্ষমতার প্রতিটি অঙ্গন হোক ভালোবাসার দূতদের তীর্থস্থান। আগ্রাসন আর লোভের সর্বনাশা অনল নির্বাপিত হোক মানবপ্রেমের পুষ্পবৃষ্টিতে। প্রতিটি উপাসনালয়ে স্রষ্টার মাহাত্ম্য বর্ণনার ভাষা হোক সৃষ্টির উদারতা। মানুষের অপমানের অন্য নাম দারিদ্র্য, নগ্নতা, আদিমতা। প্রেমের সলিলে নেয়ে ওঠা মনই তো শীর্ষ বিত্তবান। প্রতিযোগিতা হবে শুধুই সাহচর্যের, সান্নিধ্যের।

যে সূর্য ছাই করে দেয় জনপদ সে মাথা নত করবে মানুষ হিসেবে মানুষের ঈর্ষণীয় অহংবোধের কাছে। প্রলয়ংকরী সমুদ্র স্নেহের প্রতিরূপে ভাসিয়ে নেবে সকল দুঃখবোধ। ঘৃণা থাক অমানুষদের জন্য তোলা। শুধুই ভালোবাসা হোক পরম আরাধ্য। হৃদয়ের রসায়নে রচিত হোক স্বর্গীয় শিল্প, যা শুধু মানুষকেই শ্রেষ্ঠ ভাবতে শেখায়।


সর্বশেষ এডিট : ০৭ ই জানুয়ারি, ২০০৮ দুপুর ১:১৯
১৮টি মন্তব্য ৮টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

গাজার যুদ্ধ কতদিন চলবে?

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৮ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:২৩

২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর ইসরাইলে হামাসের হামলার আগে মহাবিপদে ছিলেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু৷ এক বছর ধরে ইসরায়েলিরা তার পদত্যাগের দাবিতে তীব্র বিক্ষোভে অংশ নিয়েছিলেন৷ আন্দোলনে তার সরকারের অবস্থা টালমাটাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্যামুয়েল ব্যাকেট এর ‘এন্ডগেম’ | Endgame By Samuel Beckett নিয়ে বাংলা ভাষায় আলোচনা

লিখেছেন জাহিদ অনিক, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৮



এন্ডগেম/ইন্ডগেইম/এন্ডগেইম- যে নামেই ডাকা হোক না কেনও, মূলত একটাই নাটক স্যামুয়েল ব্যাকেটের Endgame. একদম আক্ষরিক অনুবাদ করলে বাংলা অর্থ হয়- শেষ খেলা। এটি একটা এক অঙ্কের নাটক; অর্থাৎ... ...বাকিটুকু পড়ুন

প্রায় ১০ বছর পর হাতে নিলাম কলম

লিখেছেন হিমচরি, ২৮ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১

জুলাই ২০১৪ সালে লাস্ট ব্লগ লিখেছিলাম!
প্রায় ১০ বছর পর আজ আপনাদের মাঝে আবার যোগ দিলাম। খুব মিস করেছি, এই সামুকে!! ইতিমধ্যে অনেক চড়াই উৎরায় পার হয়েছে! আশা করি, সামুর... ...বাকিটুকু পড়ুন

পজ থেকে প্লে : কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

লিখেছেন বন্ধু শুভ, ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১৫


.
একটা বালক সর্বদা স্বপ্ন দেখতো সুন্দর একটা পৃথিবীর। একজন মানুষের জন্য একটা পৃথিবী কতটুকু? উত্তর হচ্ছে পুরো পৃথিবী; কিন্তু যতটা জুড়ে তার সরব উপস্থিতি ততটা- নির্দিষ্ট করে বললে। তো, বালক... ...বাকিটুকু পড়ুন

শিরোনামে ভুল থাকলে মেজাজ ঠিক থাকে?

লিখেছেন অনিকেত বৈরাগী তূর্য্য , ২৮ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:৫৫


বেইলি রোডে এক রেস্তোরাঁয় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা নিয়ে একজন একটা পোস্ট দিয়েছিলেন; পোস্টের শিরোনামঃ চুরান্ত অব্যবস্থাপনার কারনে সৃষ্ট অগ্নিকান্ডকে দূর্ঘটনা বলা যায় না। ভালোভাবে দেখুন চারটা বানান ভুল। যিনি পোস্ট দিয়েছেন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×