somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধূসর পান্ডুলিপি (দিনা ফিরে এসো, ক্লিউপেট্রা হয়ে)

০৫ ই জানুয়ারি, ২০০৮ সন্ধ্যা ৬:১০
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লিবিয়ায় দিনগুলো সুন্দর ছিলো। আমি সুনীল সাগর দেখেছিলাম, দেখেছিলাম মরুময় পর্বতমালা। কি দেখি নাই?

আমাদের বাড়ির সামনে ছিলো ভুমধ্যসাগরের বীচ, আর পেছনে ছিলো দিগন্ত ছোয়া বিশাল পাহাড়। কেউ কোন দিন যার শীর্ষ ছুয়ে দেখেনি।

আমি যে স্কুলে পড়তাম, তাও ছিলো পাহাড়ি উপত্যকায়। আল-মার্জ শহরের নাম। আমাদের শহর থেকে ৩৫ কিঃমিঃ দূরে। আমরা কয়েকজন ছেলে মেয়ে একসাথে স্কুলে যেতাম। তার মধ্যে পোল্যান্ডের ভাই-বোন, মিশরের একটি মেয়ে, আর লিবিয়ান একটি ছেলে ছিল।

মিশরীয় মেয়েটির নাম ছিলো দিনা। আমি ক্লিওপেট্রার পাশে ছিলাম বছর গুলোতে আজ বুঝতে পেরে খুব প্রেম নিবেদন করতে ইচ্ছা করে তাকে।

দিনারা ছিলো দুই বোন। দিনার চেহারার বর্ণনা করা যায় না। স্বর্গের পরি অথবা মর্তের স্বরস্বতি দেবী যেন। ক্লাসে আমার পাশে বসতো, যখন নার্সারি আর কেজি ওয়ানে পড়েছি। সব সময় আমার লেখায়, পড়ায় যেন ছায়ার মত লেগে থাকতো সে। ব্লন্ড ছিলো। চোখ দুটো কেমন যেন মায়াময়। আমি অঙ্ক না পারলে আমাকে অঙ্ক করে দিত, বকা খেলে টিচারের কাছে সুপারিশ করতো।

ওকে নিয়ে একটা ঘটনা খুব মনে পরে। একদিন টিফিন টাইম থেকে ক্লাসে গিয়ে দেখি বেচারির সারা গায়ে পানি। হোসেন নামে একটি ছেলে তাকে ভিজিয়ে দিয়েছে। যদিও সেদিনকার মত বিচার করেছিলেন টিচার, আমি দমে যাই নি। কিসের বিচার? কান ধরে উঠবস করা কোন বিচার না।

বাবাকে বলে দিলাম। বাবা স্কুলের গভর্নিং বডিতে ছিলেন। তিনি ছেলেটাকে পরের দিন খুব করে বুঝিয়ে দিলেন এসব করতে হয় না। কিন্তু যাহা লাউ তাহাই কদু হয়ে রইল।

কেজি-২ তে ওঠার সময় দিনা তার দেশে ফিরে গেল। আমাকে একা ফেলে। মিস করা কাকে বলে তখন জানতাম না। কিন্তু এখন পাগলের মত মিস করতে শিখেছি ওকে। দিনা যদি আবার আসতে?

স্কুলের বারান্দা আর মাঠের পাশে মরুভূমির ক্লান্ত হাহাকার। স্টিলের তৈরী স্কুলটি আমার জন্য বিষময় হয়ে গিয়েছিলো। সেই শোক কাটাতে হবে কেমন করে? দিনার দেওয়া হাতে লেখা এ বি সি ডি, আর কিছু করে দেওয়া অঙ্ক সংরক্ষণ করে রেখে দিলাম। কিন্তু ১৯৯৪ সালে ফিরে দেশে ফিরে আসার সময় নিয়ে আসতে আর মনে ছিলো না।
২টি মন্তব্য ১টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×