একটা সময় ছিল যখন খুব টিভি দেখতাম ।আসলে নাটক আর সিনেমা নিয়ে পড়ে থাকতাম ।মনে আছে, আমার পাঁচ বছর বয়স থেকে শুরু করে ক্লাস এইট পর্যন্ত বিটিভির প্রত্যেকটা সিনেমা আমি দেখেছি ।স্টুডেন্টরা যাতে ভাল প্রিপারেশন নিতে পারে সেজন্য স্কুলের অংক পরীক্ষার আগে সাধারণত শুক্রবার দিনটা রাখা হয় ।ঐ দিনটায় আবার বিটিভির সিনেমা দেখায় ।কালকে পরীক্ষা অথচ আমি ঠিকই সিনেমা দেখছি ।হয়ত একজন ফোন দিল, এই অংকটা কেন যেন পারতেছি না ।একটু বলে দে না ।আমি উত্তর দিলাম, এই রকম ইমপরট্যান্ট টাইমে ফোন দিস কেন? সিনেমা চলতেছে পরে কথা বলবো ।রাখি ।
এই ছিলাম আমি !রেজাল্ট ভাল ছিল বলে আব্বু আম্মুও তেমন একটা বাধা দিত না ।এটাকে তারা পড়াশোনার মাঝের রিফ্রেশমেন্ট হিসেবেই দেখতেন ।বাসায় ডিশের কানেকশন ছোটবেলা থেকেই আছে ।কিন্তু একটা জিনিস বলতেই হবে, বিটিভির সিনেমা দেখার যে আনন্দ সেটা আর কোথাও পাই নি ।সারাটা সপ্তাহ শুধুমাত্র শুক্রবারের জন্য বসে থাকা ।পরে অবশ্য শনিবার দিনও সিনেমা দেখানো শুরু হল ।
আর দেখতাম নাটক ।নাটক অবশ্য সব চ্যানেলেরই দেখতাম ।ধারাবাহিক নাটকগুলোর প্রায় প্রত্যেকটারই একটা বিশেষ দিক খুব নজরে আসতো ।মধ্যবিত্ত পরিবার ।ছেলেটা ভার্সিটিতে পড়ে ।ছেলেটা একটা মেয়েকে ভালবাসে ।ভার্সিটিরই মেয়ে ।সমবয়সী কিংবা এক বা দু বছরের জুনিয়র ।ভার্সিটিতে আগে আগে আসা কিংবা ক্লাসের পর গাছের নিচে বসে বাদাম খাওয়ার ফাঁকে দুজনের উদ্দেশ্যহীন গল্প ।একদিন হয়তো মেয়েটা জানায়, বাড়িতে বিয়ের কথা বলছে ।এইসব মানবিক টানাপোড়নের গল্প ।
নাটকগুলো দেখে ভার্সিটিতে পড়ার অনেক বড় একটা স্বপ্ন মনের মাঝে জাগলো ।মনের পলিমাটিতে রঙ্গিন ভালবাসার বীজ বুনলাম ।হৃদয়ের ভাবনায় নিজেকে কখন হারিয়ে ফেলেছি বুঝতেই পারি নি ।অবশেষে ভার্সিটিতে ভর্তি হলাম ।ভর্তির আগে যেমনটা আগ্রহ ছিল কেন যেন এখন আর এত আগ্রহ জাগে না ।ঘাসের মাঝে কেন যেন হাতের পরশ বুলাতে ইচ্ছে করে না, হারিয়ে যেতে ইচ্ছে হয় না ঐ কাঠের বনে ।কেন যেন মনে হয়, এ সৌন্দর্য দূর থেকে দেখতেই যেন বড় বেশি ভাল লাগত ।আপন করে পেলেই কেন যেন পাওয়ার মজাটা শেষ হয়ে যায় ।
আসলে কি লিখতে কি লিখছি বুঝতে পারছি না ।একটু এলোমেলো চিন্তাভাবনা আর উদ্ভট খেয়ালিপনা- আমি তো এমনই!