somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বছর ঘুরে আবার এল ঈদুল আযহা(আমার ঈদ)

১৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৯:০৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বছর ঘুরে আবার এল ঈদুল আযহা ।যাকে আমরা কুরবানীর ঈদ বলি।ঈদ মানেই আনন্দ।ছোট বেলায় কুরবানীর ঈদকে ঘিরে অন্যরকম এক আনন্দ থাকত।বিশেষ করে গরু কেনা কে ঘিরে। ঈদের ২-১ দিন আগে থেকেই ভাবতাম কখন গরু কিনব।কত বড় গরু কিনব।তাই আব্বুকে অস্থির করে দিতাম।গরুর বাজার বা হাট গুলোতে যাওয়া আমি খুব এনজয় করতাম।তারপর রাস্তায় মানুষ জিজ্ঞাসা করে -"কি ভাই গরুটা কত দিয়ে কিনলেন?"আমি মাঝে মাঝে দাম বাড়িয়ে বলতাম।মানুষ জন চোখ কপালে তুলে বলে "এই বাছুরডার এত দাম?"নানা মানুষের নানান মত।কেউ বলে আপনে জিতছেন।কেউ বলে ঠকছেন।আমার কাছে তাদের মন্তব্য গুলো বেশ ইন্টারেস্টিইং মনে হত।যেমন একবার এক লোক বলছিল আরেক জনকে(যিনি গরুর ক্রেতা) গরু তো না যেন বাছুর কিনছেন।
আরেক বার মনে পড়ে ,সেবার গরুর খুব দাম পড়েছিল। তো আমাদের বাসার সামনে এক আংকেল একটা গুরু কিনে নিয়ে এসেছেন।গরুটা সাইজে একটু ছোট ছিল।তাই দেখে পাশের বাসার আংকেল ঐ আংকেল কে বলছেন,"ভাইসাবের খাসীডা তো মাশাল্লা সুন্দর হইছে।কত দিয়া কিনলেন?কোন হাট থাইকা কিনছেন?"এইটা শুনে তো সেই আংকেল চরম বিব্রত হলেন।আংকেলের মুখ চোয়ালে ঝুলে পড়ল।সে এক দেখার মত দৃশ্য।
আবার মাঝে মাঝে গরুর হাটে কিছু হাতির মত গরু দেখা যায়।যাদের ক্রেতারা তাদের সব গুলো দাঁত বের করে গরুর সাথে ছবি তুলতে চান।
আরেকবার গরু কিনে আসছিলাম আমি আর আমার ভাইয়া ।আমাদের সাথে ছিল এক রাখাল বালক।হটাৎ তার হাত থেকে গরু ছুটে গেল।গরুটা বেশ রাগী ছিল।যাকে পাচ্ছে তার দিকেই শিং নিয়ে তেড়ে আসছে।আশ পাশের মানুষ জন আতঙ্কিত হয়ে পড়ছে।ব্যাপারটা নিয়ে অবশ্যই আমার দুঃখ পাওয়া উচিৎ ছিল।তখন ছোট ছিলাম তাই কিনা যানি না, মনে মনে চাচ্ছিলাম গরুটা যেন না ধরা পড়ে।তবে অনেক ক্ষয়-ক্ষতি লোকমনে আতঙ্কের সৃষ্টি করে আমাকে হতাশ করে সবাই মিলে গরুটা ধরে ফেলল।আমাদের পাশের বাসার মতি আঙ্কেলকে যখন কে গরু তাড়া করছিল বেচার লাফ দিয়ে পুকুরে পড়ল।আমি খুবই মর্মাহত হবার চেষ্টা করছিলাম আর প্রাণ প্রণে হাসি আটকে রাখার চেষ্টা করছিলাম।

সব সময়ই কুরবানীর ঈদকে ঘিরে একটা বাড়তি উত্তেজনা কাজ করত আমার মনে।গরু কিনে আনার পর তাকে খাওয়ানো,গোসল করানোর সব কিছুর মাঝেই যেন একটা অন্য রকম মজা পেতাম।ঈদের দিন যখন সেই গরুটাকেই জবাই দিতে হত আসলেই তখন মনটা অনেক খারাপ হয়ে যেত।নামাজ পড়ার পরই শুরু হয় গরু জবাই করা।তারপর গরু কাটা কাটি।মাংস ভাগা-ভাগি।এই জিনিসটা কেন যেন আমি খুব উতসাহ নিয়ে করতে পারতাম না।তারপর সবার বাসায় মাংস নিয়ে যাওয়া।এই কাজটা অবশ্য খুব আগ্রহ নিয়ে করতাম।এই ঈদে সমস্ত দিনটাই ব্যায় হয় গরু-ছাগলের পিছনে,তাই ঈদের দিনে ঘুরা ঘুরি আমার অনেক কম হয়।বলতে গেলে হয়ই না।ঈদের এই আমেজ আমাদের বাসায় কিছুদিন থাকে,ঈদের পর মামার-খালার বাড়িতে দাওয়াত থাকে প্রায় প্রতি দিন।আত্মীয় সজনদের বাসায় বেড়ান হয়।সব কিছু মিলিয়ে বেশ মজায় ঈদের দিন কাটে।

এবারের ঈদটা আমার জন্য একটু অন্য রকম হবে।গত কুরবানীর ঈদের সময় আমার প্রিয় বন্ধু রানা মারা যায়।রানা ঈদের পরদিন বাড়ি গিয়েছিল।রানা সাঁতার ভাল জানত না।তারপরও সে পুকুরে নেমেছিল গোসল করার জন্য।এভাবেই পানিতে ডুবে রানা মারা যায়।আমার ঈদের দিনের পুরোটা সময় ঘিরেই রানা থাকতো। এবার ঈদে হয়তো রানা আকাশ থেকে আমাকে দেখবে।বড় সার্থপরের মত সে এবার একা একা ঈদ করবে।আর মুচকি মুচকি হাসবে।রানা তোকে আমি অনেক মিস করব রে এবার।তুই ভাল থাকিস।

সবাইকে ঈদ মোবারক
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ রাত ৯:০৮
৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???

লিখেছেন স্বপ্নের শঙ্খচিল, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ২:১৯

তীব্র তাপদাহ চলছে : আমরা কি মানবিক হতে পেরেছি ???



আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের হুমকির মুখে আছি,
আমাদেরও যার যার অবস্হান থেকে করণীয় ছিল অনেক ।
বলা হয়ে থাকে গাছ না কেটে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ব্যবহারে বংশের পরিচয় নয় ব্যক্তিক পরিচয়।

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১০:১৫

১ম ধাপঃ

দৈনন্দিন জীবনে চলার পথে কত মানুষের সাথে দেখা হয়। মানুষের প্রকৃত বৈশিষ্ট্য আসলেই লুকিয়ে রাখে। এভাবেই চলাফেরা করে। মানুষের আভিজাত্য বৈশিষ্ট্য তার বৈশিষ্ট্য। সময়ের সাথে সাথে কেউ কেউ সম্পূর্ণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

বন্ধুর বউ কে শাড়ি উপহার দিলেন ব্যারিস্টার সুমন। বাটার প্লাই এফেক্ট এর সুন্দর উদাহারন।

লিখেছেন নাহল তরকারি, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:০৭



এক দেশে ছিলো এক ছেলে। তিনি ছিলেন ব্যারিস্টার। তার নাম ব্যারিস্টার সুমন। তিনি একজন সম্মানিত আইনসভার সদস্য। তিনি সরকার কতৃক কিছু শাড়ি পায়, তার জনগণের মাঝে বিলি করার জন্য।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×