somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ, তাইলে পাকিস্তান লজ্জা পায় কেন?? আত্মসমর্পনে লজ্জা লাগে না , লজ্জা লাগে ক্ষমা চাইতে??

১৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ দুপুর ১২:৩৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

লজ্জা নাকি নারীর ভূষণ, তাইলে পাকিস্তান লজ্জা পায় কেন?? পৌরুষ্য দেখাইয়া নির্লজ্জ মানুষ হত্যার পর বাঙালির লাঠির বাড়িতে কুপোকাত, আত্মসমর্পনে লজ্জা লাগে না , লজ্জা লাগে ক্ষমা চাইতে?? পুরা সৈয়দ বংশ, রিকশা চালাইলে মানসম্মান যায় কিন্তু চুরি করলে মানসম্মান যায়না । যেন ব্যাপারটা এমন !! প্রতিশ্রুতির ৩৩ বছর পর আজও বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চায়নি পাকিস্তান !!

ভারতের রাজধানী দিল্লিতে ১৯৭৪ সালের এপ্রিল মাসে ত্রিপক্ষীয় এক আলোচনায় পাকিস্তান এই প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল যে, ’৭১-এর বর্বরতার জন্য বাংলাদেশের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চাইবে তারা। বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান-এই তিন দেশের ওই আলোচনায় আরও সিদ্ধান্ত হয়, সুনির্দিষ্ট যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনাসদস্যকে ফিরিয়ে দিলে পাকিস্তান সরকার বাংলাদেশকে স্বীকৃতিও দেবে।
আলোচনার এ সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে যুদ্ধাপরাধী ওই ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনা কর্মকর্তার বিচার করেনি বাংলাদেশ। বরং পাকিস্তানে ফেরত পাঠিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের মহাফেজখানার বিভিন্ন দলিলপত্র ঘেঁটে এ তথ্য পাওয়া যায়।
দিল্লিতে ওই প্রতিশ্রুতির পর ৩৩ বছর কেটে গেলেও ’৭১-এর বর্বরতার জন্য পাকিস্তানের কোনো সরকার বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চায়নি। স্বীকৃতি দিয়েছে অনেকটা বাধ্য হয়ে।
২০০২ সালের ২৯ জুলাই পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট জেনারেল (অব·) পারভেজ মোশাররফ বাংলাদেশ সফরে এসে সাভার ্নৃতিসৌধের শোক বইয়ে লিখেছিলেন, ‘একাত্তরের বাড়াবাড়ি দুঃখজনক।’ তখন বার্তা সংস্থা বাসস ও ইউএনবির বরাত দিয়ে ৩০ জুলাই প্রথম আলোয় ছাপা হয়েছিল যে, পারভেজ মোশাররফ লিখেছেন, ওই সময়কার ঘটনাপ্রবাহের যে বেদনা, তার অংশীদার পাকিস্তানিরা। শোক বইয়ে পারভেজ মোশাররফ বাংলাদেশের জনগণের প্রতি আহ্বান রাখেন, ‘বড় মনের পরিচয় দিয়ে আসুন আমরা অতীতকে মাটিচাপা দিই। আসুন একত্রে সামনের দিকে এগোই।’ কিন্তু কোথাও ক্ষমা চাওয়ার কথা নেই।
সাবেক রাষ্ট্রদূত ও বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ল অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্সের (বিলিয়া) পরিচালক ওয়ালিউর রহমান এ বিষয়ে প্রথম আলোকে বলেন, যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ১৯৫ জন পাকিস্তানি সেনাকে চিহ্নিত করা হয়েছিল। এটা তৎকালীন পাকিস্তান সরকারও মেনে নেয়। ইচ্ছে করলে তাদের বিচার সেই সময়ে বাংলাদেশেই করা যেত। কিন্তু তখনকার পরিস্থিতি বিচার-বিশ্লেষণ করে ও পাকিস্তান সরকারের অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে ওই যুদ্ধাপরাধীদের পাকিস্তান সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয় শর্ত সাপেক্ষে। বাংলাদেশের কাছে পাকিস্তান ক্ষমা চাইবে-এটি ছিল মুখ্য বিষয়। পাশাপাশি ওই অপরাধীদের বিচার করবে। কিন্তু কোনো প্রতিশ্রুতিই তারা রাখেনি। তিনি বলেন, এখনো ওই সব অপরাধীর বিচারের সুযোগ রয়েছে। তা হলে এটা প্রতিষ্ঠিত হবে যে, যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্ভব।
আইন বিশেষজ্ঞ ড· শাহ্‌দীন মালিকও এ বিষয়ে একই মত দেন।
মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক গবেষক মেজর (অব·) এ এস এম শামসুল আরেফিন এ বিষয়ে বলেন, পাকিস্তান রাষ্ট্র হিসেবে আজও বাংলাদেশের কাছে ক্ষমা চায়নি, যা অত্যন্ত দুঃখজনক। যদিও বিভিন্ন সময় পাকিস্তানের বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠক ’৭১-এর বর্বরতার জন্য ক্ষমা চেয়েছেন। এমনকি পাকিস্তানের ক্ষমা চাওয়া উচিত বলেও সরকারের প্রতি আহ্বান রেখেছেন। তিনি বলেন, এ ঘটনার মধ্য দিয়ে প্রমাণিত হয়, এ বিষয়ে পাকিস্তানের ভেতরেই জনমত আছে।
প্রসঙ্গত, ২০০২ সালের ২ আগস্ট পাকিস্তানের ৫১টি সংগঠন ’৭১-এর নৃশংসতার জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চায়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো হিউম্যান রাইটস কমিশন অব পাকিস্তান, অ্যাকশনএইড পাকিস্তান।
মার্কিন মহাফেজখানা থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, ১৯৭৩ সালের ১৭ এপ্রিল বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের এক যৌথ ঘোষণায় বলা হয়, যুদ্ধবন্দীদের বিষয়ে মানবিক দৃষ্টিভঙ্গিতে বিবেচনা করা হবে। পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি না দেওয়ায় যুদ্ধবন্দীদের বিষয়ে আলোচনায় সরকারি পর্যায়ে ভারত ও পাকিস্তানের সঙ্গে বাংলাদেশের অংশ নেওয়া সম্ভব ছিল না। এ অবস্থায় মানবিক কারণে ওই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তবে যেসব পাকিস্তানি সেনোর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের (১৯৫ জন) অভিযোগ ছিল, তারা এর আওতায় ছিল না।
জানা গেছে, ১৯৭৪ সালের ৫ থেকে ৯ এপ্রিল দিল্লিতে পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আজিজ আহমেদ, ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী সর্দার শরণ সিং ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড· কামাল হোসেন আলোচনায় অংশ নেন। অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে আলোচনায় ১৯৫ যুদ্ধবন্দীর বিষয়টি গুরুত্ব পায়।
আলোচনায় বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড· কামাল হোসেন বলেন, আন্তর্জাতিক আইন ও জাতিসংঘের ঘোষণা অনুযায়ী ওই ১৯৫ জন সুস্পষ্টভাবে যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা এবং মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করেছে। পাকিস্তানের প্রতিমন্ত্রী বলেন, যদি কোনো অপরাধ সংঘটিত হয়ে থাকে, তাহলে তাঁর সরকার এ জন্য দুঃখিত এবং ঘটনাকে ঘৃণা করে।
এ অবস্থায় তিন মন্ত্রী পুরো পরিস্থিতি উপমহাদেশের সমস্যা সমাধানের সদিচ্ছার আলোকে দেখে তার ভিত্তিতে সমাধানের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। মন্ত্রিদের আলোচনায় একমত পোষণ করা হয় যে, পাকিস্তান বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আমন্ত্রণে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফর করবেন। ওই সফরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী অতীতে সংঘটিত ভুল ক্ষমা করে তা ভুলে যাওয়ার জন্য বাংলাদেশের জনগণের কাছে আবেদন করবেন।
বাংলাদেশের জনগণের কাছে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার প্রতিশ্রুতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের পরারাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশ অভিযুক্ত ১৯৫ পাকিস্তানি সেনার বিচারকাজ আর এগিয়ে নেওয়া হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সিদ্ধান্ত হয়, অন্যান্য যুদ্ধবন্দীর সঙ্গেই ওই ১৯৫ জনকেও ফেরত পাঠানো হবে, যা পরবর্তী সময়ে বাস্তবায়নও করা হয়।
বাস্তবতা হলো, আলোচনা ও এর সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন হয়নি।

তথ্যসূত্রঃ প্রথম আলো
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই ডিসেম্বর, ২০০৭ দুপুর ১২:৪০
৯টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×