রয়টার্সে ছোট্ট একটা সংবাদ। আজ ১৪ ডিসেম্বর পোল্যান্ড ছোট বড় সব শহরের স্কুল শিশুরা বাংলাদেশের ঘরবাড়ীর অনুকরণে ছোট ছোট মডেল ঘরবাড়ী বানাবে। তারপর এই মডেলগুলি জাতীয়ভাবে নিলামের মাধ্যমে বিক্রয় করা হবে যার সমন্বয় করছে পোলিশ মিডিয়া, পোলিশ হিউম্যানিটারিয়ান অর্গানাইজেশন এবং পরিবেশবাদী সংগঠনগুলি। উদ্যোগটির নাম "হেল্প বাংলাদেশ : শিশুদের জন্য শিশু" । ১৪ ই ডিসেম্বর বেছে নেয়া হয়েছে কেননা আজ শেষ হচ্ছে বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক বালি সম্মেলন।
নিলাম থেকে প্রাপ্ত অর্থ দেওয়া হবে বাংলাদেশী শিশুদের যারা সিডর আক্রান্ত, যাদের স্কুল বিধ্বস্ত এবং যারা এই প্রাকৃতিক দূর্যোগের ভয়াবহতার শিকার। শিশুদের একই সাথে জলবায়ু পরিবর্তন এবং এর ভয়াবহতা সম্পর্কে সচেতন করার জন্য কি চমত্কার একটি প্রক্রিয়া। এর সাথে সাথে তাদের ভিতর একটা মানবতাবাদী মনকে গড়ে তোলা হচ্ছে একটি উত্সবের আঙ্গিকে। আজ পোল্যান্ডে শিশুদের কোন ক্লাস নেই, ওরা আরো মহত কিছু করার জন্য একটি দিনকে উত্সর্গ করেছে। অথচ পোল্যান্ড এখনো উন্নত দেশ নয়, গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে হুমকিতে থাকা দেশেরও একটি নয়। তারপরও শিশু মনসে সচেতনতা সৃষ্টির কি চমত্কার প্রয়াস। হয়ত অনেক বেশী টাকা সংগৃহীত হবেনা কিন্তু এই উদ্যোগ, এই সচেতনতা অমূল্য।
পক্ষান্তরে বাংলাদেশ গ্লোবাল ওয়ার্মিং বা জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে সবচাইতে হুমকির মধ্যে থাকা একটি দেশ। প্রতিনিয়ত হাজার প্রাণের বিনিময়ে মুল্য দিতে হচ্ছে বাংলাদেশের ভৌগোলিক অবস্থানগত পাপের। আর এই বিষয়ে সচেতনতা? শুন্যের কোঠায়, সচেতনতা সৃষ্টির উদ্যোগ? সেও প্রায় শুন্যের কোঠায়। আমরা সচেতন নই, কিন্তু অনাগত প্রজন্ম যাদের একটা মারাত্মক ঝুকির মধ্যে রেখে যাচ্ছি, তাদেরকে সচেতন না করাটা একটা অন্যায়। এই অন্যায়ের জন্য আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম আমাদেরকে ধিক্কার দেবে, ক্ষমা করার কোন কারন নেই।
নতুন বছরে সারা বাংলাদেশে নব উদ্দীপনায় শিশুরা তাদের ক্লাস শুরু করবে। আমরা কি তাদের সিডর আক্রান্ত ভাই বোনদের সাহায্যের জন্য, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সচেতনতা সৃষ্টির জন্য জাতীয়ভাবে এরকম একটা দিনের আয়োজন করতে পারি না?
কেউ কি এই বার্তাটি পৌছে দেবেন, আমাদের সন্তানদের কাছে, তাদের স্কুলের কাছে আর মিডিয়ার কাছে? শিশুরা না হয় শিশুদের জন্যই একটা দিনকে বেছে নিল শিশুসুলভ কর্মময়তার জন্য, সেই সাথে জেনে রাখলো ভবিষ্যত কঠিন সময়কে। আমি নিশ্চিত সচেতন হলে ওরাই একদিন এই সোনার দেশটিকে বাঁচাবে।
কেউ কি আছেন??