মাত্র নয় মাস । সেই নয় মাসের তুলনায় তার পরিসংখ্যান অনেক লম্বা । কিন্তু মাত্র নয় মাসেই সব ঘটেছিল । মাত্র নয় মাসে আমরা হারিয়েছি প্রায় ৩০ লক্ষ মানুষ, এক কোটির বেশী মানুষ হয়েছে শরনার্থী, ২ লক্ষ মহিলার সম্ভ্রম লুট সহ অনেক ক্ষতি । আর অবশেষে মাত্র নয় মাসে স্বাধীন রাষ্ট্র । এই দেশ কোথাও থেকে টুপ করে পড়েনি কিংবা কারো স্বপ্নে পাওয়া দেশ নয় । এদেশের ইতিহাস, ঐতিহ্য সংগ্রাম অনেক পুরোনো ধাপে ধাপে আমরা ১৯৭১ এসে স্বাধীন হয়েছি । মুক্তিযুদ্ধে আমরা বিজয়ী হয়েছি । কিন্তু আমরা হেরে গেছি একটি জায়গা, যে পরাজয়ের গ্লানি আজও আমাদের দেশ শুধু পশ্চাদপদই করছে । যে শক্তি আমাদের হারিয়েছে আজু সেই ক্ষতি আমরা পুষিয়ে উঠতে পারিনি ।
তা হলো বুদ্ধিজীবিদের হত্যা ।
মানুষ কতটা নীচ, প্রতিহিংসা পরায়ন এবং নৃশংস হয় । যুদ্ধে পরাজয় অবধারিত জেনে পাকিস্থানী আর্মী এবং তাদের এদেশীয় অনুচরেরা স্বাধীন দেশটি যেন মাথা তুলে দাড়াতে না পারে সেই ব্যবস্থাই করল । তারা বুদ্ধিজীবিদের ধরে ধরে নিয়ে নৃশংসভাবে হত্যা করল ।
যারা এই বাংলাদেশের স্বপ্ন লালন করেছিল, ধাপে ধাপে বাংলাদেশের সোপান রচনা করছিল, যে মানুষ গুলো মুলত বাংলাদেশের গঠনের দায়িত্ব নিত ঠিক সেই মানুষ গুরোকেই এইসব দেশী নেকড়ে জামাতী-রাজাকার-আল-বদরেরা হত্যা করল । যাদের স্বপ্নে ছিল সুন্দর স্বাধীন সোনার বাঙলা তাদেরকেই হারিয়ে বাংলাদেশ স্বাধীন হলো । স্বাধীন বাংলাদেশ পুর্ণগঠনে তাই সেই শূন্যস্থা শূন্য রয়ে গেল । আমরা পিছিয়ে পড়লাম ।
তাই এই নৃশংস ঘৃণ পরিকল্পিত হত্যার বিচার করতে হবে । আজ বুদ্ধিজীবি হত্যা মামলার নথি কিংবা কোন প্রমাণ খুজে পাওয়া যায় না ।তারা সরিয়ে পেলেছে । যাতে তাদের বিচার প্রক্রিয়া বাধা গ্রস্ত হয় ।
কিন্তু সময়, সাক্ষীদেবে , এদেশের মানুষ সাক্ষী দেবে , আমরা যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করবই করবো ।
নইলে মুক্তিযুদ্ধের বিজয় এই পরাজয়েল কাছে ধীরে ধীরে ম্লান হয়ে যাবে । সেই ষড়যন্ত্রই চলছে ।