যথাসময়ে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন অনুষ্ঠানের জন্য নির্বাচন কমিশন প্রস্তত রয়েছে বলে মনে করছে বাংলাদেশ সফররত ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রতিনিধি দল।
Published : 11 Sep 2013, 12:12 PM
ইইউ রাষ্ট্রদূত উইলিয়াম হানার নেতৃত্বে এই প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বুধবার সকালে প্রাক নির্বাচন প্রস্তুতি নিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেন।
প্রায় এক ঘণ্টার এই বৈঠকে ১০ মিলিয়ন ইউরোর জাতীয় পরিচয়পত্র প্রকল্প, ভোটার তালিকা হালনাগাদ করাসহ সার্বিক বিষয়ে আলোচনা হয় বলে বৈঠকের পর সাংবাদিকদের জানান তিনি।
হানা বরেন, “ইসির সঙ্গে আমাদের অনেক বছর ধরে বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে কাজ চলছে। এগুলোর ধারাবাহিকতা ও তাদের কার্যক্রম নিয়ে আমরা সন্তুষ্ট।”
দশম সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচন কমিশনের প্রস্তুতি ও সার্বিক পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বাংলাদেশে এসেছে ইউরোপীয় ইউনিয়নের এই প্রতিনিধি দলটি।
এ বিষয়ে হানা সাংবাদিকদের বলেন, “আমাদের সঙ্গে ফলপ্রসূ আলোচনা হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, নির্বাচন কমিশন প্রস্তুত। তাদের অনেক নির্বাচন প্রস্তুতির কাজ রয়েছে। সব কিছু এগোচ্ছে।”
আগামী নির্বাচনে ইইউর পর্যবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে সদরদপ্তর থেকেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে বলে রাষ্ট্রদূত জানান।
উইলিয়াম হানা বলেন, “নির্বাচনে ইইউ অনেক পর্যবেক্ষক মোতায়েন করে। আমরা এখানকার আলোচনার পর সার্বিক বিষয়ে ইইউ সদর দপ্তরে প্রতিবেদন পাঠাব। সেখান থেকেই পর্যেবেক্ষক পাঠানোর বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে।”
নির্বাচন কীভাবে হবে তা নিয়ে দেশের প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের দূরত্ব ঘোঁচাতে সংলাপ আয়োজনে ইইউ ভূমিকা রাখবে কি না জানতে চাইলে বিষয়টি এড়িয়ে যান হানা।
তিনি বলেন, “কীভাবে নির্বাচন আয়োজন করা হয়, কীভাবে সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করা যায়- তা নিয়ে ইসির সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।”
‘তফসিলের পর আমন্ত্রণ’
প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ বৈঠকের পর সাংবাদিকদের বলেন, আসন্ন দশম জাতীয় নির্বাচনে ইইউর বড় একটি পর্যবেক্ষক দল আসবে। এ বিষয়ে প্রতিনিধি দলের সঙ্গে কমিশনের আলোচনা হয়েছে।
“সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন করাই আমাদের লক্ষ্য। তারাও তা-ই চান। তফসিল ঘোষণার পর আমরা নির্বাচন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে বিদেশি পর্যেবেক্ষকদের আমন্ত্রণ জানাব। ইইউ প্রতিবারের মতো এবারো পর্যকবেক্ষক পাঠাবে। তার আগে ইইউর সঙ্গে একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হবে বলেও জানান সিইসি।
রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করলেও ইইউ প্রতিনিধিরা কমিশনের সঙ্গে ‘একেবারেই কারিগরি বিষয়ে’ বৈঠক করেছে বলে সিইসি জানান।
তাছাড়া ‘কোনো পরামর্শ বা তাগিদ দিয়ে কিছু বলার’ এখতিয়ারও সফররত এই প্রতিনিধি দলের নেই বলে মনে করেন সিইসি।
কাজী রকিব আশা করছেন, সবার অংশগ্রহণে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য দলগুলোর মধ্যে থেকেই রাজনৈতিক সমঝোতার উদ্যোগ আসবে।
“আমরা তো রেফারি। ওইসব বিষয়ে আমাদের না জড়ানোই ভাল। রাজনৈতিক দলের শীর্ষ ও পুরনো নেতারা জনগণের পালস বুঝে এগিয়ে আসবেন আশা করি। আমরা নির্বাচনের জন্য প্রস্তুত।”
ইইউর আট প্রতিনিধি ছাড়াও ইসি সচিব মোহাম্মদ সাদিক, অতিরিক্ত সচিব সিরাজুল ইসলাম বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।