শূন্য হাতে আমাদের জন্ম। ভালো-মন্দের সরু পথটার বাইরে দুর্লভ নিশ্চিত ঠিকানায় দাঁড়িয়ে থাকি অপেক্ষা নিয়ে জীবন শুরু করার জন্য।
কিন্তু পৃথিবী থেকে বিদায় নেবার সময় একটা সম্পূর্ণ জীবনের ভাল-মন্দের ভারে আমরা পূর্ণ হয়ে ফিরে যাই। অনেক পাওয়ার মাঝে থেকে যায় কিছু না পাওয়া.. কিছু হারিয়ে যাওয়া। সবচেয়ে বেশি হারাই কিন্তু আমাদের নিজেদেরকেই।
কজন মানুষ পারে দৃ্ঢতা নিয়ে নিজেকে ভাল মানুষ ভাবতে? এটা ঠিক ভাল মানুষ নিজেও জানেনা সে ভাল কারন এটাই তার সহজাত বা ন্যাচারাল স্বভাব। তারপরো আমি বিশ্বাস করি তাদের ভালো থেকে খারাপকে আলাদা করে চেনার এবং আলাদা করে রাখার এক অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে।
আমি একবার ঠিক করেছিলাম (এখনো করার চেষ্টা করি) প্রতিদিন অন্তত: একটা ভালো কাজ করবো। আমার প্রায়ই মনে হয় এ যেন জোর করে ভালো হবার চেষ্টা। স্বভাবজাত আর জোর করে হবার মাঝে ফাঁকটা বড় চোখে লাগে।
আমি নিখুত/ পারফেক্ট যে নই সেটা বেশ জানি আর আমার চারপাশের সবাই সেটা হৃষ্ট চিত্তে মনে করিয়ে দেন। কারো কাছে আমার গায়ের রঙটা পছন্দ নয়, কারো কাছে আমার কথা। এইতো সেদিন একজন মত দিল লেখাটা যেন ছেড়ে দেই কারন এটা আমাকে দিয়ে হবে না। আগে অভিমান করতাম। ঈশ্বর যে আমার সেইসব ননস্টপ নালিশ আর অভিযোগ শুনতে শুনতে চরম বিরক্ত তাতে সন্দেহ নেই।
কিন্তু বাইবেলের সেই বানী আমার চেতনাগুলোকে বদলে দিলঃ
man looks on the outward appearance, but god looks on the heart
আমরা নিজেদের বাইরেরটা শ্রেষ্ঠ করার জন্য দিনরাত খাটছি কিন্তু নিজের ভেতরে ভালো করে কখনো কি দেখেছি? ভেবে দেখেছি কি হদয়ের শুদ্ধতাকে নিচে নামাতে নামাতে হারিয়ে ফেলতে বসেছি।
এখন সহজে বন্ধু হওয়া যা্য়, ভালোবাসার মানুষও জুটে অনেক কিন্তু শ্রদ্ধা করা যায় এমন মানুষের যে বড় আকাল। নিজেকে নিজে আমরা শ্রদ্ধা করার মতো সাহস রাখতে পারিনা, পারিনা বিশ্বাসের ভরসাটুকু ধরে রাখতে। তাই সম্পর্কগুলো ভেসে যায় কচুরীপানা ফুলের মতো।
মানুষ প্রযুক্তি-ঞ্জানের ছোয়ায় প্রাপ্তির আকাশ ছুয়ে ফেলছে কিন্তু আকাশ ছুতে গিয়ে হারিয়ে ফেলছে অন্তর আত্নার শেকড়। ক্ষয়ে যাচ্ছে শুদ্ধতার শ্বেত পাথর