somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাজধানীতে বেড়েই চলেছে বাড়ি ভাড়া৷ জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়ে ঢাকায় থাকা ভাড়াটিয়াদের এ সমস্যার যেন কোনো প্রতিকার নেই৷

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:৩৩
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজধানীতে বেড়েই চলেছে বাড়ি ভাড়া৷ জীবিকার তাগিদে বাধ্য হয়ে ঢাকায় থাকা ভাড়াটিয়াদের এ সমস্যার যেন কোনো প্রতিকার নেই৷ বেশির ভাগ ক্ষেত্রে তাঁরা স্থানীয় হওয়ায় বাড়িওয়ালাদের দাপটের কাছে অসহায় থাকেন ভাড়াটিয়ারা

ছোট্ট একটি রুমে গাদাগাদি করে থাকে চার সদস্যের একটি পরিবার৷ তাঁদের উপার্জনের একমাত্র উৎস গার্মেন্টসে চাকরি করা রোমানার রোজগার৷ দুই হাজার টাকার এই রুমের ভাড়া বছর না ঘুরতেই হয়েছে চার হাজার টাকা৷ আর এখন, বাড়ির মালিক ভাড়া বাড়াতে আবারো চাপ দিচ্ছেন৷ না হলে বাসা ছেড়েও দিতে বলছেন৷ এবার কি করবেন রোমানা?
কাঁঠালবাগানে দুই রুমের ছোট্ট একটি মেসে সাইদুর, ইকবাল ও রানাসহ ১০ জন থাকেন মাত্র ১৬ হাজার টাকায়৷ আইন থাকলেও মালিক কোনো চুক্তিই করেনি তাঁদের সঙ্গে৷ তাই তিনি সুবিধা অনুযায়ী ভাড়া বাড়িয়ে যাচ্ছেন৷ অনেকটা বাধ্য হয়েই মুখ বুজে মালিকের সব অত্যচার সহ্য করছেন তাঁরা৷ কিছু ভাড়াটিয়া আবার জানালেন, ছয় মাসেই ভাড়া বাড়াতে চাইছেন অনেক মালিক৷ কিন্তু তাঁদের বেতন তো বাড়ছে না!
মালিকদের দাবি করা বাড়তি ভাড়া দিতে রাজি না হওয়ায় অনেককেই বাধ্য হয়ে বাসা ছাড়তে হচ্ছে৷ আর এই খালি বাসায় যখন নতুন ভাড়াটিয়া আসেন, তখন তাঁদেরও গুনতে হচ্ছে আগের ভাড়াটিয়ার চেয়ে অনেক বেশি ভাড়া৷ তবে বাড়ির মালিকরা বলছেন ভিন্ন কথা৷ তাঁদের ভাড়া বাড়ানো নিয়ে যেন অজুহাতের শেষ নেই৷ রফিকুল ইসলাম ও আবদুল কাদেরসহ কয়েকজন বাড়িওয়ালা বলছিলেন, কেন তাঁরা ভাড়া বাড়াতে ইচ্ছুক৷
১৯৯১ সালের বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, দুই বছর আগে ভাড়া বাড়ানো যায় না৷ যায় না জামানত নেয়া৷ এর জন্য ভাড়াটিয়া ও মালিকপক্ষকে চুক্তিবদ্ধ হতে হয়৷ আইনে এ সব কথা থাকলেও, তার তোয়াক্কা করছেন না অনেক বাড়ির মালিক৷ কনজুমার অ্যাসোসিয়েশন অফ বাংলাদেশ সংক্ষেপে ক্যাবের সভাপতি কাজী ফারুক বললেন, ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে আইন অনুযায়ী চুক্তিবদ্ধ হওয়ার কথায়৷ এক্ষেত্রে ভাড়া নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে রশিদ দিতে হয়৷ কিন্তু বাস্তবে তো তা হচ্ছে না৷
ক্যাবের আরেক কর্মকর্তা জামিল চৌধুরী জানান, ভাড়া বাড়ানোর একটা নিয়ম আছে৷ ক্যাবের পক্ষ থেকেও অনেক সময় এটা প্রচার করা হয়৷ কিন্তু কে শোনে কার কথা?
অনেক ভাড়াটিয়া জানান, গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে বাসা বা ফ্ল্যাটের ক্ষেত্রে ভাড়াটিয়াদের কাছ থেকে লাখ লাখ টাকা অগ্রিমও নেয়া হয়৷ তাঁরা বলেন, বাড়িওয়ালারা ভাড়াটিয়াদের সঙ্গে বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত কোনো চুক্তি করেন না৷ দেন না ভাড়া নেয়ার ছাপানো রশিদও৷ বাসা ছেড়ে দিতে যে পরিমাণ সময় দেওয়ার কথা, তা নোটিশের মাধ্যমে জানান না৷ সবই হয় মৌখিকভাবে অথবা সাদা কাগজের ফর্দের মাধ্যমে৷ আইনজীবীরা বলছেন, আইনি ঝামেলায় পড়তে হতে পারে এ কারণে, বাড়িওয়ালারা লিখিত কোনো কিছুই করেন না৷ আবার কর ফাঁকি দেওয়ার উদ্দেশ্যেও বাড়ি ভাড়া সংক্রান্ত কোনো প্রমাণ রাখেন না বাড়িওয়ালারা৷ এমন পরিস্থিতিতে বাড়ি ভাড়া আইনকে ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দেন আইনবিদরা৷ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মনজিল মোরশেদ বলেন, কমিশন গঠন করে এলাকা ভেদে বাড়ি ভাড়া নির্ধারণ করা দরকার৷
ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়া আর বাসা পাল্টানোর ঝামেলা এড়াতে ভাড়াটিয়ারা বাড়িওয়ালাদের অত্যাচার ও বেআইনি পদক্ষেপ সহ্য করে নেন৷ এছাড়া, বিরোধে জড়ালে লাঞ্ছিত হওয়ার ভয়ও থাকে৷ এ জন্য তাঁদের মেনে নিতে হয় বাড়িওয়ালার সব অন্যায়৷ এর বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নিতে গিয়ে নতুন করে হয়রানির শিকার হতে হবে ভেবে সেদিকেও অগ্রসর হন না ভাড়াটিয়াদের কেউ কেউ৷ তবে ভয় না পেয়ে বাড়ির মালিক আইন না মানলে মামলা করার পরামর্শ দিয়েছেন আইনজীবী শিরিন চৌধুরী৷
বাড়ি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকর করতে ২০১০ সালের ২৬শে এপ্রিল জনস্বার্থে একটি রিট করেন বেসরকারি সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের সভাপতি অ্যাডভোকেট মনজিল মোরশেদ৷ রিট আবেদনের শুনানিতে আদালতকে তিনি বলেন, ঢাকা সিটি করপোরেশনের নির্ধারিত মানসম্মত ভাড়ার তালিকা অনুসারে ভাড়া আদায়ে সরকার কোনো কার্যকর পদক্ষেপ নিচ্ছে না৷ এ আইন অনুসারে বিধিমালা প্রণয়নের বিধান থাকলেও, তা করা হয়নি৷ ফলে বাড়ির মালিকের বেআইনি কর্মকাণ্ডে ভাড়াটিয়ারা অমানবিক পরিস্থিতির সম্মুখীন হচ্ছেন৷ কিন্তু এখনও এই রিটটির নিষ্পত্তি হয়নি৷ সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আইনটি সংশোধন করা হলে মালিকপক্ষের একতরফা আচরণ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব৷

লেখাটি "http://www.dw.de/" থেকে কপি করা।
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

কর কাজ নাহি লাজ

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ১৬ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১২:৩৪


রাফসান দা ছোট ভাই
ছোট সে আর নাই
গাড়ি বাড়ি কিনে সে হয়ে গেছে ধন্য
অনন্য, সে এখন অনন্য।

হিংসেয় পুড়ে কার?
পুড়েপুড়ে ছারখার
কেন পুড়ে গা জুড়ে
পুড়ে কী জন্য?

নেমে পড় সাধনায়
মিছে মর... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×