somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

জাপানীজ ওয়াইফ কেন বিশ্বসেরা !! (৯) B-):):P

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৪:৪৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

শিরোনাম দেখেই বুঝা উচিত এই পোষ্টটি পোলাপানদের জন্য নয়; যাদের বৌ আছে, মানে যারা বিবাহিত তাদের জন্য। সুতরাং পোলাপানদের ভিতরে ঢোকার কাম নাই, যাও! পড়তে বস ...!!!:| তবে যারা বিয়ের জন্য মনে মনে পাত্রী খুজছেন তারা জাপানীজ পাত্রীদের বায়োডাটা দেখতে পোষ্টটি পড়ে দেখতে পারেন! ;)

প্রচলিত আছে - অষ্ট্রেলিয়ার বাড়ী, আমেরিকার গাড়ী আর জাপানীজ নারী যার দখলে থাকে সে দুনিয়ার সব চেয়ে সুখি বা সফল মানুষ! বাড়ী-গাড়ীর কথা জানিনা, তবে জাপানে আসার আগেই জাপানীজ নারীদের অনেক সুখ্যাতি শুনেছি। “জাপানীজ ওয়াইফ” নামে একটা সিনেমা পর্যন্ত আছে! স্বভাবতই জাপানীজ গৃহিণীদের ব্যাপারে জানার কৌতুহল ছিল।

জাপানীজ ওয়াইফ ভাল না মন্দ তা এক কথায় বলা মুশকিল! তাছাড়া এক এক জনের পছন্দও এক এক রকম। আমি বরং আমার অব্জারবেশন অনুযায়ী জাপানীজ ওয়াইফদের কিছু কমন ক্যারেক্টারিস্টিকের কথা বলি..
.
যারা ওয়াইফদের উপর সংসার পরিচালনা এবং বাচ্চাকাচ্চা পালনের পুরা দায়িক্ত ছেড়ে দিয়ে ঝাড়া হাত পা থাকতে চান তাদের জন্য জাপানীর ওয়াইফ পারফেক্ট! আপনার ওয়াইফ বাজার করা থেকে শুরু করে, রান্নাবান্না করা, সুন্দর করে ঘর গুছিয়ে রাখা, আপনার গোছলের পানি রেডি রাখা, আপনার অগোছাল কাপড় চোপড় পরিস্কার করে সাজিয়ে রাখা সহ সব ধরনের কাজ করে রাখবে। শুধু করে রাখবে বললে কম হবে, সংসারটা এমন ভাবে গুছিয়ে রাখবে যেন সব কিছুতে কিছুটা হলেও শিল্পের ছোয়া থাকবে! B-)

জাপানীজ কালচারে বাচ্চা লালল পালন পুরাপুরি মায়ের উপর। আমার বাচ্চার ডেকেয়ারে বাচ্চা দিতে ৯৫% এর উপরে মায়েরা আসে, বাকি যা ৫% বাবারা আসে তার অধিকংশই বিদেশীরা। মিটিংয়ে অসংখ্য মহিলার মাঝে নিজেকে কেমন যেন ক্যাবলা ক্যাবলা লাগে।/:) জাপানীজ মহিলারা খুবই পরিশ্রমী। সাইকেলের সামনে পিছনে দুইটা আর বুকের সাথে ঝুলান একটা বাচ্ছা নিয়ে মহিলাদের সাইকেল চালানোর দৃশ্য এখানে নৈমত্তিক ব্যাপার। বাবা কাজে ব্যস্ত থাকে, সেটাই একমাত্র কারন নয়; অনেক সময় দেখা যায় স্বামী-স্ত্রী তাদের বাচ্চা কাচ্চা নিয়ে রাস্তায় চলতে মহিলা বাচ্চা সহ ব্যাগ সামলাচ্ছে আর পুরুষটা হাতে একটা পত্রিকা নিয়ে হেলে দুলে যাচ্ছে!X(( জাপানীজ মেয়েরা বাচ্চা পালনের জন্য আসলেই অনেক কষ্ট করে। তবে ওরা নাকি ছেলেমেয়েদের টেককেয়ার করে যতটা না মমতা থেকে তার চেয়ে বেশী ডিউটি পালনের জন্য। যারা বুঝতে পারে যে সে এই ডিউটি সঠিক ভাবে পালন করতে পারবে না, সেক্ষেত্রে সে বিয়েও করে না। অবশ্য জাপানীজ ওয়াইফরা তাদের হাজব্যান্ডের সাথে সেক্সও দায়িক্ত পালনের এটিচিউডে করে কি না সে বিষয়ে কিছু জানি না।:P

আমাদের দেশের ছেলেরা যে বাসার কাজে হেল্প করে, রান্না-বান্নায় সাহায্য করে, বাচ্চাকে টেককেয়ার করে সেসব গল্প আমার স্ত্রীর কাছ থেকে শুনে তার জাপানীজ কলিগরা যেন আকাশ থেকে পড়ে! হেসে কুটি কুটি হয় ...কি জানি, আমাদের ব্যাক্কল মনে করে কি না! :-/ তবে মুখে খুব সুনাম করে। তবে জাপানেও অবস্থা পাল্টাচ্ছে, উপরে যা বললাম তার ব্যতিক্রমও ইদানিং আধুনিক দম্পতিদের মধ্যে দেখা যায়।

কি? আফসোস হচ্ছে?? কেন যে একটা জাপানীজ মাইয়া বিয়া করলাম না!! যারা এখনো বিয়া করেন নাই তারা ট্রাই মারতে পারেন!;) জাপানীজ মেয়েরা জাপানীজ ছেলেদের তুলনায় বিদেশীদের বেশী পছন্দ করে। আর আপনার যদি কোন ভাবে একটু আমেরিকার ছোয়া থেকে থাকে তাইলে তো আর কথাই নেই। উপরে বর্ণিত সকল সুযোগ সুবিধা আপনার হাতের মুঠোয়! তবে ভাইজান একখান শর্ত আছে; আপনার বেতন মোটা অঙ্কের হতে হবে যার পুরাটা আবার স্ত্রীর একাউন্টে জমা হতে হবে:((। সত্যি কথা বলতে কি, জাপানীজ মেয়েরা নাকি ছেলে পছন্দের প্রধান ক্রাইটেরিয়া ধরে ছেলের কেমন টাকা পয়সা আছে। (আমাদের দেশেও হয়ত তাই... তবে এদেরটা প্রকাশ্যে, আমাদেরটা গোপনে ;) )। অনেক মেয়ে অকপটে স্বীকার করে সে পড়াশুনা শিখছে, নাচ-গান শিখছে জাস্ট পয়সাওয়ালা একটা ছেলের সাথে বিয়ে হওয়ার জন্য। X((

জাপনীজ ওয়াইফদের মধ্যে মজার একটা কালচার আছে, এরা চায় না যে তাদের স্বামীরা খুব তাড়াতাড়ি অফিস থেকে বাড়ি ফিরুক! যার স্বামী যত রাত করে বাসায় আসে তার মানে তার স্বামী তত বড় চাকুরে। :| এর অবশ্য দুইটা কারন শোনা যায়, প্রথমতঃ সত্যিই আগের জেনারেশনের পুরুষরা অফিসে অনেক বেশী সময় দিত, তাই তাদের বাসায় ফিরতে দেরী হতো। এখনকার জেনারেশন আগের মত কাজ না করলেও সেই কালচারটা ধরে রেখেছে। তাই তাদের কাজ না থাকলেও অফিসে বসে কাজের ভান দেখায় বা অন্য মহিলার সাথে আড্ডা মারে বা বারে গিয়ে মদ খায় বা অন্য কারো সাথে ডেটিঙয়ে যায়। জাপানে পরকিয়া এবং বসদের দ্বারা যৌন নিপীড়ন (?) ব্যাপক। দ্বিতীয়তঃ জাপানীর হাজব্যান্ডরা বাসায় এসে ওয়াইফদের এত বেশী প্রভুত্ত ফলায় যে ওয়াইফরা চায় স্বামী যতক্ষন বাইরে থাকে ততক্ষনই তাদের শান্তি! তা সে বাইরে অন্য মেয়ে নিয়ে থাকলেও থাকুক গা... !!X((

সময় হলো বিজ্ঞাপন বিরতীর; সাথে থাকুন, শীঘ্রই ফিরে আসব মূল আলোচনায় ;)
----------------------------------------------------------
সাধারণ জাপানিজদের আচার ব্যবহার নিয়ে লেখা আমার পূর্বের ব্লগ গূলোঃ
জাপানিজঃ আজব এক জাতি !!!

গাড়ীর হর্ন ঃ জাপানীজ স্টাইল !!! :) (২)

নিরবাচনী প্রচারণা ঃ জাপানীজ স্টাইল (৩)

ময়লা ফেলা ঃ জাপানীজ স্টাইল (৪) :-* :-/

জাপানীজ ওন্সেন বা গন গোছল (৫)

জাপানিজদের ধর্ম পালন (৬)

জাপানীজদের কুকুর প্রীতি এবং আদিম নিসংসতা! (৭)

এবার জাপানের ইউনিভার্সিটির পরিবেশ নিয়ে কিছু বলি (৮)
-------------------------------------------------------------

এতক্ষন শুধু জাপানীজ ওয়াইফদের নিয়ে বলছি; এবার জাপানীজ মেয়েদের নিয়ে কিছু বলি; নইলে যেসব ভায়েরা জাপানীজ পাত্রী খুজতে পোষ্টে ঠুকেছেন তারা নাখোস হবেন।:-* আমি অবশ্য তাদের খুব আশার বানী শোনাতে পারব বলে মনে হয় না:((। হয়তবা আমার রুচি-ই খারাপ, নয়ত বাংলাদেশের অনেক ছেলেকে দেখেছি জাপানীজ মেয়েদের প্রতি মুগ্ধ! কিন্তু আমার কেন জানি জাপানীজ মেয়েদের মোটেও পছন্দ হয় না। না ভাই; ব্যাপারটা আঙ্গুর ফল টক এর মত নয়; আমি বিয়ের আগে আসলেও জাপানীজ মেয়েদের পছন্দ করতাম বলে মনে হয় না। তবে আমাকে যদি একটা জাপানীজ মেয়েকে সাজিয়ে গুছিয়ে পুতুলের মত ড্রয়িং রুমে রাখার কথা বলা হয় সেটা ঠিক আছে, কিন্তু একটা মেয়েকে সঙ্গিনী হিসাবে পছন্দ করার মত তেমন কিছু আমি জাপানীজ মেয়েদের মধ্যে দেখি না। আবার সেই একই কথা বলতে হয়, এদের সব কিছু মনে হয় আরটিফিসিয়াল, ইমোশনের খুব অভাব। চোখেমুখে কোন এক্সপ্রিশন নেই। মেয়েদের শারীরিক সোন্দরয্যের মধ্যে একমাত্র গায়ের রঙ ছাড়া কিছু নেই। আবার এরা এমন ভাবে সাজুগুজু করে থাকে যে বুঝার উপায় নেই কোনটার বয়স ৪০ আর কোন টার ২০! আমার এই অব্জারভেশন একটু শহর কেন্দ্রিক মেয়েদের বেলায় প্রযোজ্য, গ্রামের মেয়েরা একটু অন্যরকম হতে পারে। আসলে জাপানের মেয়েদের অধিকংশ মেয়েলি জিনিষ এখানকার ছেলেদের মধ্যে চলে গেছে!:P জাপানের ছেলে গুলোর মধ্যে “পুরুষ মানুষ” ব্যাপারটা খুব কম। ছেলেরা মেয়েদের মত ব্যাগ ব্যবহার করে, ভ্রু প্লাগ করে, গহনা পরে, ফেসিয়াল করে ... অনেক সময় চেহারা এতটা চেঞ্জ করে যে দূর থেকে বোঝার উপায় থাকে না ওটা আসলে মেয়ে না ছেলে!

অনেক বাংলাদেশী বিভিন্ন কারনে জাপানে বিয়ে করে স্থায়ী হয়েছেন; জাপানীজ বিয়ে করলে এখানে নাগরিকত্ব পাওয়া সহজ হয়। তারা তাদের সংসারে কেমন আছেন সেটা বলা মুশকিল তবে আমার বিবেচনায় দুই বিপরীত কালচারের দুজন মানুষের সংসার সুখের হওয়ার কোন কারন নেই। তবে এপরযন্ত যত টুকু শুনেছি জাপান থেকে বিয়ে করে নিয়ে বাইরে গিয়ে বসবাস করে তাদের সংসার খুব সুন্দর হয়! B-)
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ বিকাল ৫:১১
৫৭টি মন্তব্য ৫৩টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ব্লগার'স ইন্টারভিউঃ আজকের অতিথি ব্লগার শায়মা

লিখেছেন অপু তানভীর, ০৪ ঠা মে, ২০২৪ রাত ১১:০৫



সামুতে ব্লগারদের ইন্টারভিউ নেওয়াটা নতুন না । অনেক ব্লগারই সিরিজ আকারে এই ধরণের পোস্ট করেছেন । যদিও সেগুলো বেশ আগের ঘটনা । ইন্টারভিউ মূলক পোস্ট অনেক দিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

লিখেছেন নতুন নকিব, ০৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

...এবং উচ্চতায় তুমি কখনই পর্বত প্রমাণ হতে পারবে না

ছবি কৃতজ্ঞতাঃ অন্তর্জাল।

ছোটবেলায় মুরব্বিদের মুখে শোনা গুরুত্বপূর্ণ অনেক ছড়া কবিতার মত নিচের এই লাইন দুইটাকে আজও অনেক প্রাসঙ্গিক বলে মনে হয়।... ...বাকিটুকু পড়ুন

লালনের বাংলাদেশ থেকে শফি হুজুরের বাংলাদেশ : কোথায় যাচ্ছি আমরা?

লিখেছেন কাল্পনিক সত্ত্বা, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:১৪



মেটাল গান আমার নিত্যসঙ্গী। সস্তা, ভ্যাপিড পপ মিউজিক কখনোই আমার কাপ অফ টি না। ক্রিয়েটর, ক্যানিবল কর্পস, ব্লাডবাথ, ডাইং ফিটাস, ভাইটাল রিমেইনস, ইনফ্যান্ট এনাইহিলেটর এর গানে তারা মৃত্যু, রাজনীতি,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমেরিকার গ্র্যান্ড কেনিয়ন পৃথিবীর বুকে এক বিস্ময়

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪১


প্রচলিত কিংবদন্তি অনুসারে হাতে গাছের ডাল আর পরনে সাধা পোশাক পরিহিত এক মহিলার ভাটাকতে হুয়ে আতমা গ্র্যান্ড কেনিয়নের নীচে ঘুরে বেড়ায়। লোকমুখে প্রচলিত এই কেনিয়নের গভীরেই মহিলাটি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

চুরি! চুরি! সুপারি চুরি। স্মৃতি থেকে(১০)

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ০৫ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৪


সে অনেকদিন আগের কথা, আমি তখন প্রাইমারি স্কুলে পড়ি। স্কুলে যাওয়ার সময় আব্বা ৩ টাকা দিতো। আসলে দিতো ৫ টাকা, আমরা ভাই বোন দুইজনে মিলে স্কুলে যেতাম। আপা আব্বার... ...বাকিটুকু পড়ুন

×