somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নিয়মের যাতাকলে গড়ে ওঠা অনিয়মের শেকল

১২ ই নভেম্বর, ২০০৭ দুপুর ১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাষ্ট্র বিষয়টা নিয়া প্রশ্ন তুলতে গিয়া অনেক সময় অহেতুক সময়ক্ষেপন মনে হয়...আধুনিক যুগের প্রারম্ভে যখন জাতি রাষ্ট্রের শুরু তখনও কি মানুষ এইরম প্রশ্ন তুলতো?
...............................................................


রাষ্ট্র বিষয়ক চিন্তার ক্ষেত্রে আমার উপলব্ধ হয় শাসকেরা নিজেগো মতোন ডিজাইনেই রাষ্ট্রের সংজ্ঞা নির্ধারন করছে, ক্ষমতা আর সমতার বন্টন করছে, সীমানা চৌকিদারীর দায়িত্বকৌশল বিবেচনা করছে...আমার মতোন সাধারন মানুষ যারা রাষ্ট্ররে খোলাচোখে দেখতে পাই না (চোখ বন্ধ কইরা ভাবতে হয়!), তাগো কাছে চিরকাল রাষ্ট্র কনসেপ্ট নিয়া প্রশ্ন থাকে...বাংলাদেশ রাষ্ট্রের ভূমিকা, তার মান-ইজ্জত আর সংবিধান সমুন্নত রাখা নিয়াও আমার সকল অহেতুক প্রশ্নই আছে...

এই জাতি রাষ্ট্রেরও শুরু পৃথিবীর অধিকাংশ রাষ্ট্রীয় সংগঠনের মতোনই...সময় বিভাজনে শত্রুর চরিত্র হয়তো পাল্টাইছে...পাল্টাইছে রনকৌশল...কিন্তু শেষ পর্যন্ত রাষ্ট্রের ক্ষমতা হাতবদলের শ্রেণী পাল্টায় নাই কোনখানেই...বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পর ঠিক যাগো হাতে ক্ষমতা যাওনের কথা ছিলো, যাগো হাতে সংবিধান রচনার দায়িত্ব অর্পিত হওনের কথা ছিলো, যাগো নির্বাহী প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত প্রদানকারী হওনের কথা ছিলো তারাই সেইসব পাইছে...আর তাই একটা রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পরও একটা দেশে কখনোই জনগণ কোন ধরণের নীতিনির্ধারণের পরিমাপক ফ্যাক্টর হয় নাই।

গোষ্ঠীর বিচারে যেই সিদ্ধান্ত ঠিক মনে হইছে, ঠিক সেইসব সিদ্ধান্তই নিয়ম হিসাবে সামনে চইলা আসছে...তয় উন্নত পুঁজিতান্ত্রিক রাষ্ট্রসমূহের সাথে কিছুটা পার্থক্য পরিলক্ষিত হয় এক্সপ্রেশনের বেলায়। পুঁজিতন্ত্র বিকাশের আগেই এই দেশে পুঁজির মালিকানা বন্টনের অভ্যাস শুরু করতে হইছে সারাবিশ্বের সাথে তাল মিলাইয়া চলতে গিয়া...আর এই অভ্যাসের যেই সংস্কৃতি সেইখানে স্তরে স্তরে রইয়া গেছে পুরানাকালের সামন্তীয় মনোবৃত্তি...যেই কারনে এই দেশে সকালে আমরা জানি না কোন নিয়ম চাপাইয়া দেওয়া হইবো বিকালের সেশনে...

একটু বিস্তারিত বর্ণনায় গেলে কওন যায়, যারা আমাগো নির্বাহী আর আইনী প্রশাসনের ক্ষমতার শাসন করনের ভার পায়...বা যাগো কাঁধে ন্যস্ত হয় আমাগো নিয়ম-শৃঙ্খলা রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব...তারা জনপ্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হইলেও পূর্বোক্ত সংস্কৃতির চর্চ্চার কারনে হইয়া উঠে শাসক...যেই শাসক ছিলো এককালে জমিদারেরা...নিয়মের খাতা কলম যারা কুক্ষীগত কইরা রাখছিলো...যারা উপর থেইকা দেখতে জানে কিন্তু কখনোই নিজেরে নিয়মের অন্তর্গত ভাবে না।

ঠিক সেইরমই শাসকগোষ্ঠীরা এই দেশে সাধারন মানুষের মনস্তাত্ত্বিক অবস্থার কথা না ভাইবাই মুক্তিযুদ্ধের বিরোধীতাকারীগো অপরাধের বিচার না কইরা বরং সাধারন ক্ষমা ঘোষণা করে...নিজেগো প্রয়োজনে তারা লঘুপ্রজাতির যুদ্ধাপরাধীগো নিজেগো শাসন শাসন খেলার সাথী বানাইয়া ফেলে...জনগণের সামাজিক সাংস্কৃতিক উপলব্ধির পড়োয়া না কইরা যুদ্ধাপরাধীগো সামাজিক ভাবে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করে। যুদ্ধাপরাধীগো সামাজিক ভাবে খালি পুনর্বাসন না...বন্ধুস্থানীয় চরিত্র চিত্রনের নজীরও সকল শাসক প্রতিনিধিরই প্রকটভাবেই আছে।

দেশে এখন তোলপাড় চলতাছে যুদ্ধাপরাধের বিচার করণের দাবীতে...ভাবতেই কষ্ট হয় ৩৬ বছর পরেও একটা দেশে যুদ্ধাপরাধী কারা আর তার ক্যানো বিচার করতে হইবো এই বিষয়ে যুক্তির অবতারণা করতে হয়। রাষ্ট্র তার স্বভাবমতোন নিয়মের দোহাই দ্যায়...সীমাবদ্ধতার কথা কয়। কিন্তু এইখানেই আমার রাষ্ট্র সম্পর্কীত প্রশ্ন আবার উজ্জীবিত হয়...এই প্রশ্ন রাষ্ট্রের অপারগতা কিম্বা ব্যর্থতা নিয়া না, এই প্রশ্ন রাষ্ট্রের উদ্দেশ্য নিয়া তৈরী হওয়া সংশয়ের প্রশ্ন।

রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া কিম্বা রাষ্ট্রের বর্তমান শাসক প্রতিনিধিগো সমর্থক খবরের কাগজের ভূমিকা আর রাষ্ট্রের বিভিন্ন অংশীদারী সংগঠনের প্রতিনিধিগো বক্তব্য আমার কাছে কেরম গন্ধযুক্ত বোধ হয়। যেনো তারা চায় জনগণ যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে যেই চাপা ক্ষোভ পুইষা রাখে তার বিচ্ছুরন ঘটাক...তারা ফাইটা পরুক বিদ্রোহে...তারপর শুরু হোক যুদ্ধাপরাধীগো বিচারের প্রক্রিয়া...খুব ভালো শোনায় এই পর্যন্ত। কিন্তু তারপরই রাষ্ট্রের ভূমিকা আবার ধোঁয়াটে হয়...তারা এই বিচারের দায়ভার নিতে চায় না। রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যাওয়া অপরাধীগো দায়ভার নিতে হইবো সাধারন মানুষরে! যারা রাষ্ট্রের ক্ষমতার সাংবিধানিক অংশীদারী থাকনের পরও কোনরম নিয়মে নাই...কেবল অনিয়মে আছে...

আমার মনে হয় দেশের শাসকেরা এতোকাল যুদ্ধাপরাধীগো সামাজিক ভাবে যেই পুনর্বাসন প্রক্রিয়া শুরু করছে...তারই রেশ টাননের আরেক নতুন খেলা খেলাইতে চায় এইবার। ঠিক যেমনে এই দেশে গোলাম আযম নাগরিকত্ব পায়, ঠিক যেমনে এই দেশে চিহ্নিত রাজাকাররা জনপ্রতিনিধি হিসাবে নির্বাচিত হয় তারই ধারাবাহিকতায় যুদ্ধাপরাধীগো আইনীভাবেও পুনর্বাসনের এক গভীর ষড়যন্ত্র চলতাছে...

আমাগো যারা শাসক তারা নিয়ম চাপাইতে জানে...আমাগো যারা নিয়ন্ত্রক তারা নিয়মের অনিয়মতান্ত্রিক ব্যবহার করতে জানে...তারা যুদ্ধাপরাধীগো এতোকাল রক্ষা কইরা গেছে...এইবারে তাগো প্রতিষ্ঠিত করবার চায় বইলাই আমার কাছে প্রতিভাত হইতেছে! অনিয়মের নিয়মে কখনো অপরাধের শাস্তি মেলে না...সাধারন মানুষ নির্যাতিত হয়...শারিরীক আর মানসিক...দুইভাবেই। শাসকগোষ্ঠির এই অপরাধ আমার কাছে যুদ্ধাপরাধীগো সমান অপরাধই মনে হয়। এইখানে আইসা জামায়াত, আওয়ামি, বিএনপি আর সুশীল মানুষগো কোন পার্থক্য থাকে না...সব ভেদ ঘুচে যায়...
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যমদূতের চিঠি তোমার চিঠি!!!!

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:০৮

যমদূতের চিঠি আসে ধাপে ধাপে
চোখের আলো ঝাপসাতে
দাঁতের মাড়ি আলগাতে
মানুষের কী তা বুঝে আসে?
চিরকাল থাকার জায়গা
পৃথিবী নয়,
মৃত্যুর আলামত আসতে থাকে
বয়স বাড়ার সাথে সাথে
স্বাভাবিক মৃত্যু যদি নসিব... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×