somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্ষকের জন্য কোনো সমবেদনা, সহমর্মিতা নয়, ধর্ষকের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি

২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ধর্ষণ একটি পাশবিক, বর্বর কাজ। ধর্ষণের ঘটনা প্রতিটি দেশ, সমাজের জন্য ভয়ঙ্কর। মানব আকৃতির হলেও সব মানুষ 'মানুষ' হয় না, অনেকের মনে 'পশুত্ব' থাকে। এই পশুত্বের কারণে তারা বিভিন্ন রকম জঘন্য কাজ করে।

মানুষরূপি পশুদের মধ্যে ধর্ষক শ্রেণী সবচেয়ে নিকৃষ্ট। ধর্ষক প্রতিটি দেশের জন্য বিপদজ্জনক। ধর্ষক কোনো মানুষ নয়, মানুষের আকৃতিতে পশু। তাদের মনে পশুত্ব লুকিয়ে থাকে। একজন মানুষের মনে মনুষ্যত্ববোধ থাকে। একজন পশুর মনে মনুষ্যত্ববোধ নয়, পশুত্ববোধ থাকবে, এটিই স্বাভাবিক।

ধর্ষণের জন্য মেয়েদের চলাফেরা, পোশাক-আশাকের দোষ দেওয়া হয়। এটি একটি কুচিন্তা এবং এই কুচিন্তাটি মানুষের মনে বহুকাল ধরে বাসা বেধে মানুষের বিবেককে নষ্ট করছে। ধর্ষকের কাছে নিজের মা, বোনও যৌন চাহিদা মেটানোর জিনিস। ধর্ষক কোনো পোশাক, কোনো চেহারা, কোনো শরীরের ভিত্তিতে কাউকে ধর্ষণের জন্য বেছে নেয় না। বিপরীতলিঙ্গের মানুষকে তারা বেছে নেয়। মেয়েদেরকে দেখলেই তাদের পশুত্ব জেগে ওঠে।

মেয়েদেরকে ধর্ষণের জন্য দায়ী করা হয় পোশাক-আশাক, চলাফেরার জন্য। কোনো মেয়েই চাইবে না, তাদের শরীর অন্য কেউ দেখুক, তাদের চলাফেরা দেখে কেউ উত্তেজিত হোক।

পরিবার, শিক্ষালয় থেকে শুরু করে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানে ধর্ষণের শিকার হয়। কেউ বাবা, ভাই, চাচা কিংবা নিকট আত্মীয়ের কাছে ধর্ষণের শিকার হয়, অনেকে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ধর্ষণের শিকার হয়; কেউবা নিজ কর্মস্থলে ধর্ষণের শিকার হয়। পথে-মাঠে ধর্ষণের ঘটনা খুব বেশি জানা যায়।

ধর্ষককে মানসিক, সরাসরিভাবে অনেকে সাহায্য করে। তারাও একেকজন ধর্ষক, তারাও ধর্ষণের জন্য সমানভাবে দায়ী। ধর্ষক সমাজের কিছু বিবেকহীন মানুষদের কারণে ধর্ষণ করতে সাহস পায়, উৎসাহ পায়।

ধর্ষণের জন্য আমরা এত প্রতিবাদ করি, এত মিছিল করি; এত মানববন্ধন করি। কিন্তু কেউ ধর্ষকের প্রাপ্য শাস্তি কী, ধর্ষক কীভাবে ধর্ষণ করার জন্য সাহস পাচ্ছে, এই ব্যাপারে ভাবি না। এরই কারণে আমরা প্রতিদিন ধর্ষণের ঘটনার সম্মুখিন হই।

আমরা ধর্ষককে মানসিকভাবে সাহায্য করি। আমরা মেয়েদের পোশাক-আশাক, চলাফেরাকে দায়ী করে, ধর্ষককে সাহস দেয়; আবার ধর্ষককে তার প্রাপ্য শাস্তি না দিয়ে সহানুভূতি দেখিয়ে, ধর্ষককে ধর্ষণ করতে উৎসাহ দেই। কিন্তু আমরা কোনোভাবেই বোঝার চেষ্টা করি না যে, ধর্ষণ ধর্ষিতার জন্য একটি দুর্ঘটনা মাত্র। ধর্ষণের জন্য ধর্ষিতা দায়ী নয়। বরঞ্চ দায়ী ঐ নরপিশাচগুলো, যারা ধর্ষণ করে, যারা ধর্ষণে সহযোগিতা করে, যারা ধর্ষকদের সমর্থন দেয়; যারা ধর্ষকদের সাহস এবং উৎসাহ দেয়।

মেয়েরা শারীরিকভাবে ধর্ষণ হওয়ার পর, আমরাই তাদেরকে মানসিকভাবে ধর্ষণ করি। আমাদের এবং মেয়েদেরকে বুঝতে হবে যে, ধর্ষণ শুধুমাত্র মেয়েদের জন্য একটি দুর্ঘটনা। তাদেরও অন্যদের মতো স্বাভাবিকভাবে, সুন্দরভাবে বাঁচার অধিকার আছে।

যৌন শিক্ষা কোনো পাপ না। এটি আমরা পাপে রূপান্তরিত করেছি। প্রথমে পরিবার থেকে মেয়েদেরকে যৌন শিক্ষা বিষয়ে জ্ঞান এবং সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। এরপর শিক্ষালয়ে যৌন শিক্ষা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করতে হবে এবং পাঠ্যপুস্তকে যৌন শিক্ষা নামক একটি অধ্যায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।

ধর্ষণের জন্য শুধুমাত্রই ধর্ষক দায়ী। তাই মেয়েদেরকে ধর্ষণের জন্য দোষ দেওয়া, এই চিন্তাটি মাথা থেকে বের করে ফেলতে হবে এবং আমাদের বিবেককে জাগ্রত করতে হবে।

ধর্ষককে আমরা উপযুক্ত শাস্তি দিতে পারি না। খুনের শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হলেও খুন বন্ধ হয় না। কারণ শাস্তি দিয়ে কোনো অন্যায় বন্ধ করা যায় না। যারা পশুর মতো পাশবিক আচারণ করে, তাদের কখনোই দৃষ্টিভঙ্গী বদলায় না।

ধর্ষকের একটি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রাপ্য। ধর্ষকের জন্য কোনো সহানুভূতি, সমবেদনা, ভালোবাসা; কিংবা কয়েক বছরের জেল নয়, ধর্ষকের জ্ঞান রেখে সকলের সামনে ধর্ষকের যৌন ক্ষমতা নষ্ট করে দিতে হবে। এটিই ধর্ষকের জন্য দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি, যা থেকে ধর্ষকসহ সাধারণ মানুষও ধর্ষণ করার ব্যাপারে ভয় পায়। নতুন কোনো ধর্ষকের সৃষ্টি হবে না, খবরের কাগজ খুললেই প্রতিদিন ধর্ষণের খবর চোখে পড়বে না।
সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ দুপুর ১২:০৬
৩টি মন্তব্য ২টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

টাকা ভাংতি করার মেশিন দরকার

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৯:১০

চলুন আজকে একটা সমস্যার কথা বলি৷ একটা সময় মানুষের মধ্যে আন্তরিকতা ছিল৷ চাইলেই টাকা ভাংতি পাওয়া যেতো৷ এখন কেউ টাকা ভাংতি দিতে চায়না৷ কারো হাতে অনেক খুচরা টাকা দেখছেন৷ তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

বেলা ব‌য়ে যায়

লিখেছেন বাকপ্রবাস, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩০


সূর্যটা বল‌ছে সকাল
অথছ আমার সন্ধ্যা
টের পেলামনা ক‌বে কখন
ফু‌টে‌ছে রজনীগন্ধ্যা।

বাতা‌সে ক‌বে মি‌লি‌য়ে গে‌ছে
গোলাপ গোলাপ গন্ধ
ছু‌টে‌ছি কেবল ছু‌টে‌ছি কোথায়?
পথ হা‌রি‌য়ে অন্ধ।

সূর্যটা কাল উঠ‌বে আবার
আবা‌রো হ‌বে সকাল
পাকা চু‌ল ধবল সকলি
দেখ‌ছি... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ২৩ শে মে, ২০২৪ রাত ৮:১৪


কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায়
আমার বাবা-কাকারা সর্বমোট সাত ভাই, আর ফুফু দুইজন। সবমিলিয়ে নয়জন। একজন নাকি জন্মের পর মারা গিয়েছেন। এ কথা বলাই বাহুল্য যে, আমার পিতামহ কামেল লোক ছিলেন।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×