somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাঙ্গামাটির রঙে চোখ জুড়ানো? (এক)

১৬ ই অক্টোবর, ২০০৭ বিকাল ৪:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

বিজয় কেতন চাঙমা যখন জিগাইলেন, "কেমন দেখলেন রাঙ্গামাটি?" কলিগ বন্ধু রাকেশের সোজাসাপ্টা উত্তর, "অসাধারন!" তপতীর মুখে মিষ্টি আমোদের হাসি...আর আমি কইলাম," পাহাড়ি মানুষের দুঃখ ভালোই দেখলাম।" কথাটা নিয়া অনেকেই আমার চরিত্রের সাথে মিলাইয়া নিতে পারেন, সকল সময় অল্টারনেটিভ থাকনের চেষ্টা...কুতর্কের বাড়াবাড়ি বলতে পারেন অনেকেই...রাকেশের মুখ শক্তও হইলো খানিক। কিন্তু আমি নির্বিকার চিত্তে বিজয় কেতন বাবুর বিস্মিত মুখ দেখি। তিনি আমার দিকে নির্বাক দৃষ্টি দিলেন ক্ষণকাল। বাঙালি-পাহাড়ি সম্পর্কের বেড়াজাল নিয়া তিনি ভাবিত থাকেন, সেই লেখা আমি পড়তে পারলাম নিমেষেই। তার পাহাড়ি সরলতায় যতটুক কাঠিন্য ছিলো তার সবটুক প্রকাশিত হইলো। তিনি আমারে উদ্দেশ্য কইরাই জিগাইলেন এইবার," আপনাকে কি আমি আগে কোথাও দেখেছি?"

আমার সাথে বিজয় বাবুর আগে কখনো দেখা হয় নাই...তার সাথে কস্মিনকালেও আমার পরিচয় ছিলো না। যদিও বিজয় কেতন চাঙমা নামের সাথে আগে কিঞ্চিত পরিচয় ছিলো। কল্পতরু নামের হাতীর দাঁতের বিবিধ সূচীকর্ম নির্মিতির আবরণে তিনি এক বিলুপ্ত প্রায় শিল্পের শেষ জমানার শিল্পী। কিন্তু ব্যক্তি বিজয় কেতন তার এই পরিচয়ের গন্ডী পাড় হইয়া বহুদূর গেছেন...সেই পরিচিতি আমার জানা ছিলো না। হয়তো জানাও ছিলো...কিন্তু স্মৃতি বিড়ম্বিত করে প্রায়শঃই। রাজনৈতিক আবহের থেইকা এখন একটু দূরেই থাকি। মাঝে মাঝে কোন বিশেষ মুহুর্ত গুলিতে য্যান ভাবিত মানুষরে চমকাইতে বিকল্প পঠনের অভ্যাসে কিছু বলি। মানুষ চমকায়...অপবাদের ভাগীদার হই...কেউ কেউ দম্ভের স্বরও শোনে, আর আমি রাজনৈতিক অংশগ্রহণের তাগীদ থেইকা পলাইতে স্মৃতি নষ্ট করি।

বিজয় কেতন বাবুর সাথে আমার পরিচয় হইছিলো কি না আমি জানি না। পাহাড়ি মুখগুলি আমি খুব বেশী আলাদা করতে পারি না। চৈনিক...বৈজ্ঞানিকতায় মঙ্গোলয়েড চেহারায় আমি ঐক্যের ছায়া দেখছি চিরকাল। খুব কাছের না হইলে আমার মনে হয় তারা সব একই জন। বন্ধু রূপক আর জিতেনরে পৃথক করতে আমার প্রায় ৬টা মাস গেছিলো বিশ্ববিদ্যালয়ে। অথচ বিজয় কেতন বাবুরে আমার মনে পড়ে না...তিনিও আমারে মনে করতে পারেন না। পরষ্পরের এই মনে না পড়নের মধ্য দিয়াই য্যান আমরা পরষ্পররে বেশী চিনতে পারি। পূর্ব নির্ধারিত ধারণহীনতা আমাগো মধ্যকার দূরত্ব ঘুচাইয়া একটা প্যারালাল পথের পথিকের ধারণাতেই আনে।

পাহাড়ের দুঃখবোধের ঐকতানটাই আমাগো এই মিলমিশের মূল কারন হইলেও আমরা আর সেই বিষয়ে কথা বলি না। আমরা পরিচিত মানুষগো নিয়া কথা বলতে শুরু করি। প্রায় দ্বিগুণ বয়সের বিজয় বাবু আমার বন্ধুবত গল্পে মাতেন। কখনো সুতর্কে-কখনো কুতর্কে-কখনো ঐক্যমতে আমরা চেনাজানা ইতিহাসের তথ্য সম্ভার কচলাই। তবে যাই বলতেছিলাম সব কেরম সংক্ষেপিত আলাপ হইতেছিলো...আমরা, মানে তপতী-রাকেশ-মৌসুম-আমি আর দেবর্ষী সকলের ঢাকায় পৌছানোর তাড়া ছিলো। শ্যামলী পরিবহন আর যাই করুক না করুক সময় মাইনা চলাচল করে এই সুখ্যাতি শুনাইতেছিলো আমাগো রাঙ্গামাটির আরেক বন্ধু ঈষিতা।

ভ্রমণ কাহিনী পিছন থেইকা শুরু করনের ধরণটা আমি জানি কোথায় পাইছিলাম? সেইটা মনে করতে পারি না...কিন্তু বিজয় কেতন চাঙমা'র সাথে পরিচয় না হইলে হয়তো শুরুটা অন্যভাবেই হইতো। ১১ অক্টোবর আটটটায় ব্যাগ গুছাইয়া খাওয়া দাওয়া কইরা ৯টার সময় আরামবাগের উদ্দেশ্যে যাত্রা আর ক্যাব চালকের সার্কাসমতো গাড়ি চালনায় সময় মাফিক পৌছানোটাই হইতো রাঙ্গামাটি ভ্রমণ বর্ণনের সবচাইতে চটকদার আরম্ভ। আগে কখনো সরাসরি রাঙ্গামাটি যাই নাই তাই সন্দিহান যাত্রার নিরামিষ বর্ণনা নিশ্চিত কোন পাঠকের বিরক্তি জাগাইতে আমি করতাম না। তবু রাঙ্গামাটি যাত্রা আমার ভিন্নবোধ আনে...যদিও রাঙ্গামাটি ভ্রমণ, তার সৌন্দয্য উপভোগ কোন নতুন উপলক্ষ্য নয়...

সবকিছু পাল্টে দিলেন বিজয় বাবু...
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই অক্টোবর, ২০০৭ বিকাল ৫:৪৩
২৮টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সমাধান দিন

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৯ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:৩১




সকালে কন্যা বলল তার কলিগরা ছবি দিচ্ছে রিকশাবিহীন রাস্তায় শিশু আর গার্জেনরা পায়ে হেটে যাচ্ছে । একটু বাদেই আবাসিক মোড় থেকে মিছিলের আওয়াজ । আজ রিকশাযাত্রীদের বেশ দুর্ভোগ পোয়াতে... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে গরু দুধ দেয় সেই গরু লাথি মারলেও ভাল।

লিখেছেন মোহাম্মদ গোফরান, ২০ শে মে, ২০২৪ রাত ১২:১৮


০,০,০,২,৩,৫,১৬, ৭,৮,৮,০,৩,৭,৮ কি ভাবছেন? এগুলো কিসের সংখ্যা জানেন কি? দু:খজনক হলেও সত্য যে, এগুলো আজকে ব্লগে আসা প্রথম পাতার ১৪ টি পোস্টের মন্তব্য। ৮,২৭,৯,১২,২২,৪০,৭১,৭১,১২১,৬৭,৯৪,১৯,৬৮, ৯৫,৯৯ এগুলো বিগত ২৪ ঘণ্টায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

×