এলো খুসির ঈদ.....
(এই লাইনডা মনে নাই)
তোর সোনা দানা বালাখানা
সব আমায় দিয়ে দে..........
আহ! কি মজা! আগামিকাল ঈদ! ইহা ভেবে আমি কম্পিউটারের দিকে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে যেতে ছিলাম। ওমনি পিছন থেকে বিড়ালের সুরে হুঙ্কার করে উঠল কেডা। ঠাহর করতে না করতে বুঝে আসল আইজ তো আমার নেটে বসা নিষেধ। বাসার সবাইরে আজ রাঙ্গিয়ে দিতে হবে। তাই আগে পা না বাড়ায়ে অন্যদিকে যাওয়ার ভাব করে মেহেন্দি খুজার ভান করলাম। আম্মু আমার দিকে তাকায় আছে পুরা সুচালু চোখ দিয়া।তাই টালটি মারা বাদ দিয়া মেহেন্দির টিউব নিয়া হাতের ময়দানে যুদ্ধু শুরু করলাম। যুদ্ধু শেষ করতে প্রায় রাত ২ টা। ঘুমাতে যাওয়ার আগে আম্মু আবার নতুন কইরা আমার মাথার ঘিলুর মধ্যে ঢুকায় দিল যে সকাল ৬ টাই ঘুম থেকে উঠতে হবে।
ফুনের চিক্করে গুম ভেঙ্গে উঠল। মেজাজ খারাপ হইল,আবার গড়া দিয়া সুইতে গিয়াই বুকের মধ্যে ঢাড়াম করে উঠল। লাফ মাইরা উইঠা দরজার দিকে যায়তে গিয়া খাইলাম বাড়ি। এই টা আমার প্রতিদিনকার ড্রোজ। ঘুম থেকে উঠলে মাতালের মত টায়রাই বেড়ায়। এমনিতে মাথার মধ্যে ঘুরতেছে তার উপর গোসল। কলিজা আমার শুকায় এক ছোটাক। আমার মুখ দেইখা বাথ ট্যাপও জানি কইতেছে তুমারে এতো দিনে পাইছি। এমনিতেই আমার গোসলে ভাইরাজ আছে। শীতের সময় আমাকে লাথি মাইরাও কেউ বথরুমে ঢুকায়তে পারে না। আমার জীবনের বড় রেকর্ড আমি ১ মাস গোসল না করে ছিলাম একবার(গোপন কথা ফাস করে ফেল্লাম! লজ্জা! লজ্জা!)
গোসল করে মনের দুক্কে পুরান জামাডা পরলাম আর নতুন ছেন্ডেলডা পায়ে দিয়া নতুন মনিটরের দিকে তাকায়ে ঈদের কথা মনে করলাম। এইদিকে সবাই গাড়িতে উঠে গেছে আমারে বলছে গেট লক করতে । আমার বাপে আবার এতোই উত্তেজিত ছিল যে গাড়িতে কেডা উঠছে কেডা উঠে নাই না দেইখা গাড়ি দিছে টান। আমি তো পুরা মদনের মত রাস্তার উপর দাড়ায় আছি। পাশের বাসায় কিছু লোকজন বাইরে ছিল।আমার এহেন বেজ্জতি দেখে তারা দেখলাম মুচকি হাসল। ঈদের সকালেই আমার ইজ্জত লুট হয়ে গেল। আব্বু তোতক্ষন গাড়ি থামায় ফেলছে।দ্রুতো গাড়িতে উইঠা আমি আমার মুখ বাচায়লাম।
মসজিদে গিয়া তো আমার চোখ পুরা কপাল ছাইড়া মাথায়। মহিলাদের থেকে মহিলাদের সাথে আসা আন্ডা বাচ্চাই বেশী। তই পুলাপাগো আদর করতে আমার ভালো লাগে কিন্তু চিক্কর পাইড়া কান্না ধরে তখন আমি সহ্য করতে পারি না। এই খানেও সেই অবস্থা। পুরা মসজিদ এই পুলাপাইনে মাথায় তুলছে। নামাজ শুরু হইল। সব ভুলে নামাজে মন দেয়ার চেষ্টা করলাম। সেকেন্ড সেজদা দেয়ার পর বইসা তাকায় দেখলাম সামনে একটা পিচ্চি। আমি ছুরা পড়া ভুলে ঐ পিচ্চির চকলেট খাওয়া দেখতে ছিলাম আর তখনই কানে আসল"আস্লামু আলাইকুম ওয়ারহমাতুল্লা"। বুকের মধ্যে আমার মোচড় পাইড়া উঠল। হায় হায় এ কি করলাম! মনে হইল শয়তান ছাড়া পাইয়া পইলা আমারে দিয়ে শয়তানির বওনি করল। কি আর করার সবার সাথে আমিও তাল মিলিয়ে সালাম ফিরলাম।
আসার পথে গেলাম এক বাংলাদেশীর বাসায়।তাদের বাসায়ও আবার একটা পিচ্কি আছে। আমার সমবয়সি বন্ধু না থাকায় ঐ পিচ্কিটাকে কলে করে সময় কাটাতে শুরু করলাম। কিছুক্ষন পর অনুভব করলাম আমার পায়ের নিচ দিয়া ঝরনা ধারা বইতেছে। মাথার মধ্যে চক্কর দিয়া উঠল। হায় হায় এ আমি কি করলাম!! আমার এই ভাবে ব্রেক ফেইল হইল কেমতে পিচ্চিগো লাহান!। পিচ্চির কথা মনে হইতেই মনে পড়ল আরে আমি নাতো ঐ পিচ্চি এই ঝরনা ধারার সৃষ্টি করেছে। পুরান জামার কারনে মনে বেশী দুক্কু লাগলনা।
দুপুরের খাবার এর কথা আর মনে করতে চায়না। আন্টি এমন খাওয়ান খাওয়াল মনে মনে বদনা খুজা শুরু করে দিলাম!!
বাসায় ফিরে ভাবলাম যায় একটু নেটের বান্দরগো ঈদ মরা বক জানায় আসি। প্রথমে চ্যাট রুমে ঢুকে সবাইরে খাসা একটা ঈদ মোবারক জানায়লাম। এর পর ব্লোগে এইসা দেখি আমাগো বান্দর গ্রুপের লিডার জান হাতে নিয়া পালাই বেড়াইতেছে আর সবাইরে চল্লিসার দাওয়াত দিতেছে আর আরেক বান্দরে দেখলাম তিনি নাকি লন্ডনে যাচ্ছেন তার নেট নাকি কচ্ছপের মত দ্রুত বেগে সাতরাইতেছে।
এই সব দেখে আমি আর কিছু না কইয়া ঘুমাতে যাওয়ার পরিক্লপনা করলাম। বেড রুমে যেতেই আমার ফুন আমারে ডাইকা উঠল।আমি ফুন ধইরা তো পুরা ফিট খাইলাম। আমি যার অপেক্ষায় ছিলাম সেই আমারে ঈদমোবারাক জানাইতেছে । আমরা ঝগড়া করছিলাম তই পরে আমি ছরি বলছিলাম সেই বন্ধুডারে কিন্তু সে আমার কাথার উত্তর করে নাই।তাই আমিও ভাব মাইরা কথা কইলাম। পরে শুরু হইল আমার ১৯০ ডুগ্রি মুখের মাপের ঝাড়ি। ঝাড়ি খেয়ে তো সে ছরি না কইয়া কুল পাইলনা।আমি দোড় দিয়ে গিয়া তারে আবার আমার এমএসএন এ এডড করলাম........
আর এই ভাবেই আমার বেজ্জতি ঈদ শেষ হইয়া গেল.......।
(লেখা টা বেশী বড় হওয়ার জন্য আই দুক্কিত)