somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

একসাথে দুই

১৫ ই অক্টোবর, ২০০৭ রাত ১:৩৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

সেই দু-ভাইয়ের কথা মনে আছে? কদিন আগে তিন রহস্যের গপ্পো দিয়েছিলাম। আরো দুটি এডভেঞ্চার নিয়ে এবারে বানানো হল, একসাথে দুই। আরেকটি ই-বুক এডভেঞ্চার। বইয়ের মাঝখান থেকে এক খামচি তুলে দিলাম। মূল বইয়ের লিঙ্ক পোস্টের নিচের দিকে। ঈদের ছুটিতে আরাম করে জমিয়ে পড়েন।

----------------------------------------------
আকমল উত্তরটা দিল তাড়াতাড়িই। বলল, 'দেখেশুনে মনে হচ্ছে ড্রাইভারটা। অতুলকে খুন করে টাকাগুলো নিয়ে পালিয়েছে। বোধহয় লোভ সামলাতে পারেনি। কিংবা আগে থেকেই এধরনের মতলব ছিল। সুযোগের অপেক্ষায় ছিল।'
শান্ত প্রশ্ন করল, 'ও থাকে কোথায় ?'
আকমল বলল, 'আগারগাঁয়ে কোথায় যেন। আমি বাড়ি চিনি না, তবে একদিন তালতলার কাছে গাড়ি রেখে কি কাজে গিয়েছিল। মিনিট দশেকের মধ্যেই ফিরেছে। মনেহয় মুল রাস্তার কাছেই।'
শান্ত বলল, 'ওর বাড়িতে কে কে থাকে ?'
আকমল বলল, 'বউ থাকে শুধু। পুলিশ ওকে এ্যারেষ্ট করেছে গতকালই। সে বলছে হালিম সকালে বের হওয়ার পর আর ফেরেনি। কিন্তু জানেনই তো, এরা কখন কোথায় বিয়ে করে ঠিক নেই। হয়ত অন্য কোথাও সংসার পেতেছে। তাকে পেলেই সমাধান হবে মনে হচ্ছে।'
'হুঁ' বলে চুপ করে গেল শান্ত।
কিছু একটা ভাবছে। কিছু একটা গড়মিল পেয়েছে কোথাও। এই ভঙ্গি কমলের খুব পরিচিত। নিশ্চয়ই প্রশ্ন করে যা পেতে চেয়েছিল সেটা পায়নি। অথবা যা পেয়েছে সেখানে একের সাথে অন্যের মিল নেই।
আকমল ইতস-ত করছে। কি যেন বলবে বলবে করছে। বলবে কিনা ঠিক করতে পারছে না। শান্ত তাকে যেন কোন গুরুত্বই দিচ্ছে না। বিষয়টা একটু অস্বাভাবিক মনে হল কমলের কাছে। সাধারনত কেউ সামনে থাকলে তারসাথে খুব আগ্রহ নিয়ে কথা বলে সবসময়। বিরক্ত হলেও সেটা প্রকাশ করে না।
এর ক্ষেত্রে সেটা হচ্ছে না কেন ?
আকমল পকেটে হাত ঢুকিয়ে একটা সিগারেটের প্যাকেট বের করল সে। সোনালী রঙের নতুন প্যাকেট। হাতে কিছুক্ষন নাড়াচাড়া করল। তারপর আসে- করে খুক করল। শান্ত তাকাতে প্যাকেটটা বাড়িয়ে ধরল।
'সিগারেট ?'
'না, ধন্যবাদ। আমি স্মোক করি না।' হেসে জানাল শান্ত।
সে অপ্রস'তভাবে সিগারেটের প্যাকেটটা রেখে দিল টেবিলে।
নিজেও ধরাল না, লক্ষ্য করল কমল।
ওর হাতটা কি সামান্য কাঁপছে ? ঠিক ধরতে পারল না সে। তবে লোকটা যে একেবারে স্বাভাবিক আছে তাও মনে হল না। হয়ত ভুলতে পারছে না ঘটনার কথা। হয়ত সে যত সহজভাবে বলল কোম্পানী তত সহজভাবে নেয়নি বিষয়টা। যদি এত সহজভাবে নিত তাহলে তাকে গোয়েন্দার কাছে আসতে হত না।
চল্লিশ লক্ষ টাকা অনেক টাকা। তাকে দোষী করলে, যদি ক্ষতিপুরন করতে হয় তার বহুবছরের বেতন একসাথে করতে হবে। হয়ত বাকী জীবন বিনাবেতনে কাজ করতে হবে।
তেমন কোন নিয়ম আছে না-কি ? হঠাৎ করেই কমলের মনে হল কথাটা। যদি টাকা না পাওয়া যায় তাহলে কোম্পানী তার কি করতে পারে ? সে যখন চুরি করেনি। তার যতটুকু করার ছিল সে ঠিকমতই করেছে। টাকা উঠিয়ে দিয়েছে। তারপর কোম্পানীরই অন্য কাজ করতে গেছে।
'একটা কথা।' ইতস-ত করল আকমল।
সোজা তার দিকে মুখ তুলে তাকাল শান্ত, 'বলুন।'
আকমল ইতস-ত করে বলল, 'আমার কোম্পানীর ডিরেক্টরদের সাথে যদি একটু কথা বলেন। মানে ওনারা, বড়লোক মানুষ- বোঝেনই তো। সহজ বিষয়কেও জটিল করে তুলতে চান। আপনার যথেষ্ট পরিচিতি রয়েছে-'
'আমার কথা বলার বিষয় কি?' যথেষ্ট অবাক হয়েই জানতে চাইল শান্ত।
আকমল আগের মতই ইতস-তভাব বজায় রেখে হাত কচলে বলল, 'এই মানে- যদি বলেন যে আপনি বিষয়টি দেখছেন তাহলেও হয়। একটু আস্বস- করা আরকি-'
একটু সময় নিল শান্ত উত্তর দিতে। বলল, 'বেশ, আমি একটু খোঁজ নেই আগে।'
হাঁটুর ওপর হাত রেখে ওঠার প্রস'তি নিল আকমল। বলল, 'আমি আজ উঠি তাহলে। একেবারে যন্ত্রের মত ব্যস- থাকতে হয় সারাদিন। কোনদিকে একটু সময় দিতে পারিনা। দিনের আলো দেখার সময় পর্যন্ত পাই না।'
'আপনার সেই কাজ হয়েছে ঠিকমত ?' হঠাৎ করেই যেন প্রশ্নটা করল শান্ত।
'কোন কাজ ?'
'যে কাজের জন্য আপনি গাড়ি ছেড়ে গেলেন।'
উঠে দাঁড়িয়েছে আকমল। বলল, 'না, তারসাথে দেখা হয়নি। ও হ্যাঁ, আপনার কাজের জন্য তো ফি দিতে হয়। আমি আপনাকে টুয়েন্টি থাউজেন্ড পে করব ভাবছি কাজটার জন্য। আশা করছি কালকেই দিতে পারব। আর ওদের দুজনের ছবি। আর কিছু লাগবে ?'
'আপনার কন্ট্যাক্ট নাম্বারটা দরকার হতে পারে।'
আকমল পকেট থেকে একগোছা কার্ড বের করল। কমল দেখল বিভিন্নজনের নানারকম কার্ড। নিজের একটা কার্ড বের করে শান্তর দিকে এগিয়ে দিল।
টেবিল থেকে তার জিনিষপত্র উঠিয়ে নিল।
তারপর বাইরে চলে গেল।
কমল একবার তার যাওয়ার দিকে একবার শান্তর দিকে তাকাল।

----------------------------------------------

ফ্রি ডাউনলোডের জন্য একসাথে দুই
৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। ভারতে পচা রুটি ভাত ও কাঠের গুঁড়ায় তৈরি হচ্ছে মসলা

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৩০

আমরা প্রচুর পরিমানে ভারতীয় রান্নার মশলা কিনি এবং নিত্য রান্নায় যোগ করে খাই । কিন্তু আমাদের জানা নেই কি অখাদ্য কুখাদ্য খাচ্ছি দিন কে দিন । এর কিছু বিবরন নিচে... ...বাকিটুকু পড়ুন

One lost eye will open thousands of Muslims' blind eyes

লিখেছেন জ্যাক স্মিথ, ১৫ ই মে, ২০২৪ রাত ২:২৭



শিরোনাম'টি একজনের কমেন্ট থেকে ধার করা। Mar Mari Emmanuel যিনি অস্ট্রেলীয়ার নিউ সাউথ ওয়েলসের একটি চার্চের একজন যাজক; খুবই নিরীহ এবং গোবেচারা টাইপের বয়স্ক এই লোকটি যে... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাফসান দ্য ছোট ভাই এর এক আউডি গাড়ি আপনাদের হৃদয় অশান্ত কইরা ফেলল!

লিখেছেন ব্রাত্য রাইসু, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫২

রাফসান দ্য ছোট ভাইয়ের প্রতি আপনাদের ঈর্ষার কোনো কারণ দেখি না।

আউডি গাড়ি কিনছে ইনফ্লুয়েন্সার হইয়া, তো তার বাবা ঋণখেলাপী কিনা এই লইয়া এখন আপনারা নিজেদের অক্ষমতারে জাস্টিফাই করতে নামছেন!

এই... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাঁচতে হয় নিজের কাছে!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৫ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৮

চলুন নৈতিকতা বিষয়ক দুইটি সমস্যা তুলে ধরি। দুটিই গল্প। প্রথম গল্পটি দি প্যারবল অব দ্যা সাধু।  লিখেছেন বোয়েন ম্যাককয়। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় হার্ভার্ড বিজনেস রিভিউ জার্নালের ১৯৮৩ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবর সংখ্যায়। গল্পটা সংক্ষেপে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমার অন্যরকম আমি এবং কিছু মুক্তকথা

লিখেছেন জানা, ১৫ ই মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৭:০৬



২০১৯, ডিসেম্বরের একটি লেখা যা ড্রাফটে ছিল এতদিন। নানা কারণে যা পোস্ট করা হয়নি। আজ হঠাৎ চোখে পড়ায় প্রকাশ করতে ইচ্ছে হলো। আমার এই ভিডিওটাও ঐ বছরের মাঝামাঝি সময়ের।... ...বাকিটুকু পড়ুন

×