somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

(আপডেট) ব্যান্ডউইথ এর দাম ৮০ হাজার টাকার সময়ে ৩৪৫ টাকা ছিলো এখন ৪/৫ হাজার টাকার সময়েও ৩৫০ টাকা

২৬ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ব্যান্ডউইথ এর দাম ৮০ হাজার টাকা থেকে কমে বর্তমানে ৮ হাজার টাকা মতান্তরে ৪/৫ হাজার টাকা । তারপরও প্রতি গিগা ইন্টারনেট এর দাম ৮০ হাজার টাকার সময়ে ৩৪৫ টাকা ছিলো এখন ৪/৫ হাজার টাকার সময়েও ৩৫০ টাকা :
অনেক তো ভুগেছি ,আসুন এবার তাদের ভোগাই ।


স্থান: আপনার মোবাইল
সময়: রবিবার সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ১ টা।
কি করতে হবে : রবিবার ১০টা-১টা গনহারে পরিচিতজনদের মিসড কল দেয়া
কারন এবং এতে কি লাভ : মোবাইল অপারেটরদের ইন্টারনেট প্যাকেজের দাম কমাতে বাধ্য করা মূল উদ্দেশ্য । (বিস্তারিত নিচে )

ভুমিকা -
২০০৬ সালে গ্রামীনফোন বাংলাদেশে মোবাইল ইন্টারনেট সেবা EDGE শুরু করার আগ পর্যন্ত ডায়াল আপ কানেকশনই মূল ভরসা ছিলো । VSAT এর মাধ্যমে এতদিন দিয়ে যাওয়া ধীরগতির ইন্টারনেট সার্ভিস কিছুটা গতি পায় ২০০৬ সালে , যখন বাংলাদেশ যুক্ত হলো ISCC(International Submarine Cable Consortium) এর SEA-ME-WE-4 কেবলে । ব্যান্ডউইডথের দামও তখন ছিলো অবিশ্বাস্য রকমের বেশী – প্রতি মেগাবিট ব্যান্ডউইডথের দাম ছিলো ৮০০০০ হাজার টাকা,ইন্টারনেট তখনো তরুনদের হাতে সহজলভ্য হয় নি, গনমানুষের কাছেও না । ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতি মেগাবিট ব্যান্ডউইডথের দাম কমিয়ে দেন ২৭০০০ টাকায় । এর পরপরই ‘ডিজিটাল বাংলাদেশের’ প্রতিশ্রুতি দিয়ে ক্ষমতায় আসে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার । ইন্টারনেট সার্ভিস তৃনমূল পর্যায়ে ছড়িয়ে দেবার প্রত্যাশায় তারা এক এক ধাপে ব্যান্ডউইডথের দাম কমানো শুরু করে । ২৭০০০ টাকা থেকে তারা ২০০৯ সালে প্রতি মেগাবিট ব্যান্ডউইডথের দাম কমিয়ে আনে ১৮০০০ টাকায়, পরবর্তীতে ২০১২ সালে আবারো কমিয়ে আনে ৮০০০ টাকায় । একইসাথে পরবর্তীতে প্রতি মেগাবিট ব্যান্ডউইডথের দাম ৮০০০ থেকে ৫০০০ টাকায় নামিয়ে আনার পরিকল্পনার কথা জানিয়েছে BTRC .

কেন দাম কমাচ্ছে ?
ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ার উদ্দেশ্যে ইন্টারনেট সার্ভিস তৃনমূলে পৌঁছে দেয়ার কথা সরকার বলছে । একইসাথে সরকার জানাচ্ছে বাংলাদেশ SEA-ME-WE-4 সাবমেরিন কেবলে যুক্ত থেকে ৪৪.৬ গিগাবিট ব্যান্ডউইডথ পেলেও ব্যবহার হচ্ছে মাত্র ১৫ গিগাবিট ব্যান্ডউইডথ । তাছাড়া ২০১৩ সালের জুনে আরো ৯৬ গিগাবিট ব্যান্ডউইডথ যুক্ত হতে যাচ্ছে । এই বিশাল পরিমানের ব্যান্ডউইডথ যেন অব্যবহৃত না থাকে, সেই জন্য এবং আই এস পি (ISP) ও মোবাইল অপারেটরদের চাপে সরকার দাম কমিয়েছে ।

এই কমদামে বিক্রি করা ব্যান্ডউইডথের সুফল কি আমরা পাচ্ছি ?

না । আপনাদের মনে থাকার কথা , ২০০৬ সালে EDGE সার্ভিস চালু করা গ্রামীনফোনের ইন্টারনেট খরচ এখনো সেই আগেরমতই আছে । ২০০৯ সালের ১ জিবি ইন্টারনেটের প্যাকেজের দাম এখনো ৩৫০ টাকাই আছে ।এর মাঝে সরকার ঠিকই দুই দফায় দাম কমালেও তারা কমায় নি । একই কথা খাটে বাংলালিংক,এয়ারটেল,রবি সহ অন্যান্য অপারেটরদের ক্ষেত্রেও । সবাই .০২ কিলোবাইট / পয়সা হিশাবে আমাদের কাছ থেকে ইন্টারনেটের চার্জ নিচ্ছে । আপনারা খেয়াল করুন, প্রতি ১০ মেগাবাইট ইন্টারনেটের প্যাকেজ এয়ারটেলের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ১০ টাকা (ভ্যাট ছাড়া)পড়বে , অথচ একই কোম্পানী ভারতে (টুজি নেটওয়ার্কে) ১০ রুপীতে (বাংলাদেশী ১৪.৮০ পয়সা) ১২৫ মেগাবাইট ইন্টারনেট দিচ্ছে ! একইভাবে বাংলাদেশের গ্রামীনফোনের মূল কোম্পানি টেলিনরের ভারতীয় অংশ ইউনিনর ৯ রুপিতে (বাংলাদেশি ১৩.৩০ পয়সা) ৬০ মেগাবাইট ইন্টারনেট দিচ্ছে ! বাংলালিঙ্কও চালাচ্ছে ১০ মেগাবাইট ১০ টাকার প্যাকেজ, রবিও সেই একই ডাকাতি চালিয়ে যাচ্ছে । এভাবেই সরকার দাম কমিয়ে গেলেও আমজনতা কোনো রেহাই তো পাচ্ছেই না, বরঙ অন্য দেশের তুলনায় আমাদের কাছ থেকে দামও বেশী রাখা হচ্ছে ।

শুধু ইন্টারনেটের খরচই বেশি ?
না । আমরা এত উচ্চমুল্যে ইন্টারনেটের নামে যা কিনছি আমাদের কষ্টার্জিত পয়সায়,তার স্পীড নিয়ে কে সন্তুষ্ট ? গ্রামীনফোনের এভারেজ স্পীড থাকে ১০-১৯ কেবিপিএস , বাংলালিংকের অবস্থা আরো খারাপ । রবি কি দিচ্ছে তা কেউই বলতে পারছেনা , এয়ারটেলও তার ব্যতিক্রম নয় । অথচ টু-জি কানেকশনের স্পীড ৩৮৪ কিলোবিট পার সেকেন্ড পর্যন্ত হতে পারে, আমরা টাকা দিয়ে কতটুকু পাচ্ছি ? একইসাথে প্রতিদিন বিভিন্ন মোবাইল অপারেটর দিনে-রাতে গাদাগাদা স্প্যাম ম্যাসেজ পাঠাচ্ছে । কখনো ‘ভালো মুসলিম পাত্রীর খবর’ জানাতে (বাংলালিংক) , কখনো ‘আমি রেশমা,বন্ধু হতে ডায়াল করো **** নাম্বারে’ (এয়ারটেল) ইত্যাদি বিব্রতকর ম্যাসেজ । তাছাড়া সরকার ১০ সেকেন্ড পালস রেট নির্ধারন করে দেয়ার পর কল ড্রপের ( হুট করে কানেকশন কেটে যাওয়া ) পরিমান বেড়ে গেছে ! দরকারে কাস্টোমার কেয়ারে ফোন দিতে হলেও টাকা কাটছে, অথচ বাংলাদেশ সরকার ২০১০ সালের আগস্টে সব টেলিকম কোম্পানীকে নির্দেশ দিয়েছিলো- ১২১ নাম্বারে টোল ফ্রি রাখতে,অর্থাত এই নাম্বারে ফোন করা হলেও যেন টাকা কাটা না হয় । সেই নির্দেশও কি এরা মেনেছে ? বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে টিভি-পত্রিকা ছেয়ে ফেলার দিকে এদের যত মনোযোগ , ঠিক ততই অনীহা ইউজারদের সুবিধা দেখার ক্ষেত্রে ।

কি করতে চাচ্ছি -
আমরা অফলাইনের শান্তিপ্রিয় মানববন্ধনে বিশ্বাস রাখতে পারছি না । যারা এভাবে দিনের পর দিন লুটপাট চালিয়ে যাচ্ছে, তারা আমাদের শান্তিপূর্ন মানববন্ধনে কান দেবে – এটা আশা করা যায় না । সুতরাং আগ্রাসী ভুমিকা নিতেই হয় । তাই আমরা ঠিক করেছি , নির্দিষ্ট একটি তারিখে নির্দিষ্ট সময়ে আমরা সবাই মোবাইল অপারেটরদের নেটওয়ার্ক ব্যস্ত রাখবো , কিন্তু এক পয়সাও খরচ করবো না ।
আর সেই উপায় হলো মিসড কল ।
একটি নির্দিষ্ট তারিখে পিক আওয়ারে আমরা সবাই যদি গনহারে পরিচিতজনদের মিসড কল দেয়া শুরু করি , তবে মোবাইল অপারেটরদের বি টি এস ব্যস্ত থাকবে ঠিকই,কিন্তু যেহেতু আমাদের কারও কোনো খরচ করতে হচ্ছে না, তাই আমাদের কোনো ক্ষতি হবে না । যা ক্ষতি হবার হবে কোম্পানীর,কারন সেই সময় আমরা তাদের নেটয়ার্ক ব্যবহার করেছি ঠিকই কিন্তু কোন টাকা দিচ্ছিনা! আমরা অনেক মানুষ যদি একত্রিত হতে পারি,তবে কোম্পানীর ক্ষতিটা নেহায়েত কম না । যদি ৫০০০ হাজার মানুষ ইভেন্টে যোগ দিন এবং প্রত্যেকে তিনঘন্টায় মাত্র ২০ টা মিসড কল করেন , তিনঘন্টায় ১ লাখ মিসড কল হচ্ছে , যেগুলোর অপারেটরদের নেটওয়ার্ক ব্যবহার করলো ঠিকই – কিন্তু কোনো ইনকাম করলো না,বরঞ্চ তাদের সেলুলার ট্র্যাফিক বিজি করে রাখছে ! তাছাড়া এই সংখ্যা যদি আরো বিশাল হয়,তবে আমাদের দাবীর প্রতি তাদের কর্নপাত করতেই হবে । আমরা জানি , এই সংখ্যাটা ২০০০০ ছাড়িয়ে যেতে পারে , ক্ষতিটা আক্ষরিক অর্থেই বেশি হবে ।

জয়েন আস !
- যেহেতু সরকার খরচ কমিয়েছে,সুতরাং যৌক্তিকভাবেই কম খরচে ইন্টারনেট সার্ভিস চাই ।
- স্প্যাম ম্যাসেজের অবসান চাই ।
- ভালো নেটওয়ার্ক চাই ।
-
সম্পূর্ন অনলাইনে এই প্রতিবাদ, এর জন্য আপনার রাস্তায় থাকা দরকার নেই । আপনি আপনার বাসায় বসেই,অফিসে থেকেই অথবা যাত্রা পথেও আমাদের সাথে সংযুক্ত হতে পারেন । আপনি সিলেট থাকতে পারেন , আপনি ঢাকায় থাকতে পারেন , আপনি ভোলায় থাকতে পারেন – কিন্তু আপনি একইসাথে বাকি সবার সাথে এই অভিনব প্রতিবাদে অংশ নিতে পারেন । আপনি অফলাইনে বা অনলাইনে আপনার বন্ধুদের সাথে কথা বলুন , সবাইকে জানান - আমরা এইভাবে আর ডাকাতি দেখতে পারি না । সবাইকে জানান,এবার আমরা তাদের গাঁট কাটবো । সবাই বোঝান – অপারেটরদের না ভোগালে তারা আমাদের কথা শুনছে না । সবাইকে বলুন – প্রিন্ট মিডিয়া বিজ্ঞাপনের টাকা উপার্জন করে অপারেটরদের কাছে জিম্মি ,আমাদের ভোগান্তির কথা কখনোই ছাপাবেনা, তারা আমাদের পক্ষে অপারেটরদের উচ্চমূল্যের ইন্টারনেট নিয়ে কখনোই বলবে না ।
আমরা ফেসবুককেই বেছে নিয়েছি সবার সাথে একত্রিত হবার স্থান হিসেবে , এখান থেকেই শুরু হবে সেই প্রতিবাদের ভাষার..... যা অপারেটরদের বাধ্য করবে সার্ভিস চার্জ কমাতে ।

শুধু নির্দিষ্ট দিনে নির্দিষ্ট কয়েকটি ঘন্টা আপনি মিসড কল করে যান, ২০...৩০...৫০ টি ।যত বেশি মিসডকল করবেন, আমাদের কাছে অপারেটরদের মাথা নত করার সম্ভাবনা ততই বাড়বে ।

অনেক তো ভুগেছি ,আসুন এবার তাদের ভোগাই ।এই ধরনের অন্যায়ের প্রতিবাদে আমাদের অনলাইনের কিছু ভাই ব্রাদার একটা ইভেন্টের আয়োজন করেছে :) জয়েন করতে পারেন

সর্বশেষ এডিট : ২৭ শে জানুয়ারি, ২০১৩ সকাল ১০:১৫
১০টি মন্তব্য ৩টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

জুমার নামাজে এক অভূতপূর্ব ঘটনা

লিখেছেন সাব্বির আহমেদ সাকিল, ১০ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০



মসজিদের ভেতর জায়গা সংকুলান না হওয়ায় বাহিরে বিছিয়ে দেয়া চটে বসে আছি । রোদের প্রখরতা বেশ কড়া । গা ঘেমে ভিজে ওঠার অবস্থা । মুয়াজ্জিন ইকামাত দিলেন, নামাজ শুরু... ...বাকিটুকু পড়ুন

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। হরিন কিনবেন ??

লিখেছেন শাহ আজিজ, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫৯



শখ করে বন্য প্রাণী পুষতে পছন্দ করেন অনেকেই। সেসকল পশু-পাখি প্রেমী সৌখিন মানুষদের শখ পূরণে বিশেষ আরো এক নতুন সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। এবার মাত্র ৫০ হাজার টাকাতেই... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঠিক কোন বিষয়টা মৌলবাদী পুরুষরা শান্তি মত মানতে পারে???"

লিখেছেন লেখার খাতা, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৭


ছবি - গুগল।


ফেসবুক আর ইনস্টাগ্রাম এখন আর শুধু সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম নয়, রোজগার এর একটি চমৎকার প্ল্যাটফর্মও। একটু স্মার্ট এবং ব্রেন থাকলে ফেসবুক/ইনস্টাগ্রাম থেকে রোজগার করে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আধখানা ভ্রমন গল্প!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১০ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:৩৯


২০০২ সাল বান্দারবানের রিগ্রিখ্যাং-এর এই রিসোর্ট আজ সকালেই আমরা আবিস্কার করলাম! পাহাড়ের এত উপরে এই মোড়টাতে একেবারে প্রকৃতির মাঝে এমন একটা রিসোর্ট থাকতে পারে তা আমরা সপ্নেও কল্পনা করিনি।... ...বাকিটুকু পড়ুন

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না

লিখেছেন সোনাবীজ; অথবা ধুলোবালিছাই, ১১ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:০৫

অহনা বলেছিল, তুমি হারাবে না
অহনা বলেছিল, আমি জানি আমি তোমাকে পেয়েছি সবখানি
আমি তাই নিশ্চিন্তে হারিয়ে যাই যখন যেখানে খুশি

অহনা বলেছিল, যতটা উদাসীন আমাকে দেখো, তার চেয়ে
বহুগুণ উদাসীন আমি
তোমাকে পাওয়ার জন্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

×