বাঁধ মানে না মন/ শেখ জলিল
কার গতি সবচেয়ে বেশি? ঢেউয়ের, বাতাসের, শব্দের নাকি আলোর? উত্তর আসবে- নিশ্চয়ই আলোর। বাতাস ঝড় হয়ে সবকিছু উড়িয়ে নিয়ে যেতে পারে, টর্নেডো হয়ে চুরমার করতে পারে বাড়িঘর কিংবা ঢেউ সুনামি হয়ে লন্ডভন্ড করতে পারে লোকালয়ের সমস্ত স্থাপনা। তীব্রনিনাদ শব্দ সহসাই স্তব্ধ করতে পারে আমাদের শ্রবণশক্তিতে। সমস্ত অন্ধকার সরিয়ে সূর্যের আলো প্রায় ৮ মিনিটে পৌঁছতে পারে আমাদের পৃথিবীতে। কিন্তু এ সমস্তের ঊর্ধেও একটি গতির কাছে সবকিছু হার মেনে যায়। আর তা হলো আমাদের সকলের মনের গতি।
দু'চোখ বন্ধ করে একটু ভাবলেই আমরা পাড়ি দিতে পারি যোজন যোজন মাইল- যা আলোর গতির চেয়েও হাজার হাজার গুণ বেশি। এই যে মনের গতি যার উদসারণ আমাদের হৃদয় থেকে, উপলব্ধি থেকে তার কাছেও আমরা পরাভূত হই বারবার। না চাইলেও অনেক সময় আমাদের চলে যেতে হয় সুদূর অতীতে কিংবা আগামী ভবিতব্যে। যান্ত্রিক সময়ের জটিলে একটু সময়ের জন্য হলেও আমরা থমকে দাঁড়াই হৃদয়ের অনুভূতির কাছে- যাকে একমাত্র মন দিয়েই উপলব্ধি করা যায়।
এইতো সেই আমাদের মন, আমাদের ভালোবাসার, কষ্ট পাবার একমাত্র মাধ্যম- যার পূজারী পৃথিবীর প্রতিটি মানুষ। যখন হৃদয় চঞ্চলা হরিণীর মতো দৌড়ায়, তখন আমাদের এ অবুঝ মনকে বোঝানো যায় না কোনোমতে। সমস্ত বাঁধন ছিন্ন করে চলে যেতে চায় একমাত্র ভালোবাসার মানুষের কাছে। সাত সমুদ্র, তের নদীও এর কাছে কোনো বাধাই যেন নয়। বধা নয় সুবিশাল মরুভূমি, সুউচ্চ পাহাড় কিংবা পর্বতশ্রেণীও। যুগ যুগ সময়ও হঠাৎ থমকে দাঁড়ায় এক নিমেষের স্মৃতিতে। মন আর বাঁধ মানে না। তাইতো মাঝে মাঝে আঁতকে উঠি গান শুনে- হাত বান্ধিব, পাও বান্ধিব, মন বান্ধিব কেমনে? তোমরা যে বোঝাও গো সখি, মনে কী মানে..
০৮.১০.২০০৭