somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

আপনি কি আজকের যায়যায়দিনে শফিক রেহমানের 'একটি নেড়ি কুকুরের ইন্টারভিউ' লেখাটি পড়েছেন?

০৪ ঠা অক্টোবর, ২০০৭ বিকাল ৩:২৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি বাংলাদেশের একটি নেড়ি কুত্তা। আমার অবস্থান এতোই নিচে যে, আমাকে কুকুরও বলা হয় না। বলা হয় কুত্তা। আর নাম? আমার কোনো নাম নেই। বলা হয় নেড়ি। খাদ্য ও পুষ্টির অভাবে আমার গায়ের অনেক লোম ঝরে গিয়েছে। আমাকে ন্যাড়া দেখায়। তাই বোধহয় আমার নাম নেড়ি।
সম্প্রতি আমি জেনেছি আমেরিকায় ট্রাবল (ঃৎড়ঁনষব বা ঝামেলা) নামে একটি মলটিজ (গধষঃবংব) জাতীয় কুকুরকে তার পালক মিজ লিওনা হেমসলি ১২ মিলিয়ন ডলার (প্রায় ৮৪ কোটি টাকা) তার উইলে দিয়ে গিয়েছেন। পরলোকগত মিজ হেমসলি ছিলেন একজন বিত্তশালী হোটেল মালিক। তার মৃত্যুর পর বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বিত্তশালী কুকুর হয়েছে ট্রাবল।
আমি ট্রাবলের সৌভাগ্যকে ঈর্ষা করি না। বরং তাকে অভিনন্দন জানাই এবং কামনা করি বাংলাদেশে এ ধরনের আমেরিকান কালচার আরো আসুক, যাতে আমার মতো কুত্তা বা কুকুররা ভবিষ্যতে বড় সম্পদের মালিক হতে পারে। ভেবেছিলাম, আমেরিকান ফুড কালচারের বড় ইম্পোর্টার প্রথম আলো-ডেইলি স্টারের মালিক লতিফুর রহমান, যিনি গুলশানে দুটি রেস্টুরেন্ট, পিৎজা হাট ও কেএফসির ব্রাঞ্চ খুলেছেন তিনি হয়তো তার অপার ঔদার্য দেখিয়ে বাংলাদেশের কুকুরদের জন্য ভবিষ্যতে কিছু করবেন। কিন্তু হাউ স্যাড! আলো-স্টারের সুদীর্ঘ কালের প্রটেকশন সত্ত্বেও তারও নাম চলে এসেছে সন্দেহভাজন দুর্নীতিবাজদের সর্বশেষ লিস্টে।
আমেরিকান লিওনা হেমসলি এবং বাংলাদেশি লতিফুর রহমানদের মধ্যে তফাতটা রয়েই যাবে। যেমন রয়ে যাবে আমেরিকান কুকুর ও বাংলাদেশি কুকুরদের মধ্যে।
আমেরিকান কুকুরের সঙ্গে বাংলাদেশি কুকুরের প্রধান তফাত হলো বিত্ত। আমেরিকান মানুষরা বিত্তশালী। তারা মৃত্যুর পরও তাদের পোষা কুকুর যেন ভালো থাকে সে জন্য উইল করে ডলার দিয়ে যান। মায়ামি হেরাল্ড (১৫.০১.০৩)-এর মতে, ২৭% আমেরিকান তাদের উইলে কুকুরকে কিছু দান করে যান। আমেরিকানদের মতো যারা বাংলাদেশে ধনী হচ্ছিলেন তারা হয়তো এই দৃষ্টান্ত অনুসরণ করতেন। কিন্তু তাদের অনেকে এখন জেলে অথবা পলাতক। দুদক, এনবিআর, সমন্বয় কমিটি প্রভৃতির ভয়ে। অন্যরা মুখ খুলছেন না। নিষ্ক্রিয় হয়ে আছেন। সুতরাং উইলে কুকুরের টাকা পাওয়ার সম্ভাবনা এখন সুদূর পরাহত।
আমার সমস্যা সেটা নয়। ভবিষ্যৎ নিয়ে আমার চিন্তা করার সময় নেইÑ বর্তমানে কোনো রকমে বেচে থাকাটাই আমার সমস্যা। আমার প্রয়োজন এখনই।
মামলাদেশে এখন আটক, গ্রেফতার, মামলা, রিট, পিটিশন, জামিন, আপিল, শোন অ্যারেস্ট, লিভ টু আপিল, কোয়ার্টার-হাফ-ফুল বেঞ্চ এসবই একমাত্র খবর। পত্রিকা খুললেই কেবল মামলা আর মামলা। কোনো সাংবাদিকই লিখছে না যে, খাবার-দাবারের দাম খুব বেড়ে যাওয়ার ফলে সাধারণ মানুষ এখন কম খাচ্ছে আর তার ফলে ডাস্টবিনে আমরা আরো কম খাবার পাচ্ছি। কোনো সাংবাদিকই আজ পর্যন্ত আমাদের এই অনাহারের কথা রিপোর্ট করেনি। খাবার অভাবে আমরা অপুষ্টিতে ভুগছি। রোগাশোগা হয়ে যাচ্ছি। আমাদের সাইজও ছোট হয়ে যাচ্ছে। যদিও সাধারণ কুকুরের গড় আয়ু ১২ বছরÑ আমরা বাংলাদেশি কুকুররা তার অনেক আগেই মারা যাচ্ছি।
এই রমজান মাসে আমি একটু পুলকিত থাকতাম। কারণ ইফতার মাহফিলের যে কালচার বাংলাদেশে পলিটিকাল পার্টিগুলো চালু করেছিল তার ফলে মজার মজার ছোলা-বুট-পেয়াজু-বেগুনি-জিলাপিসহ খাবারের অনেক উচ্ছিষ্ট শামিয়ানার বাইরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকতো। কিছু ইফতার মাহফিলে এসবের সঙ্গে বিরিয়ানির প্যাকেটও দেয়া হতো। আমি ভেজিটারিয়ান নই। মাংসই বেশি পছন্দ করি। পরিত্যক্ত বিরিয়ানির প্যাকেটে মুরগি অথবা খাসির হাড়গুলো আমার খুবই পছন্দ। এসব বেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন। ডাস্টবিনের খাবারে তো ময়লা লেগে যায়।
অতীতে রাজনৈতিক দলগুলো ধারাবাহিকভাবে বহু ইফতার পার্টির আয়োজন করতো। কিন্তু এই রমজানে পার্টিগুলোর তেমন কোনো মিলাদ মাহফিল তো হলোই নাÑ এমনকি সংস্কারপন্থী বলে যারা পরিচিত হয়েছেন তারাও কিছু করলেন না। তাদের ফান্ডের অভাব কেন যে হলো বুঝলাম না। সংস্কার সম্পূর্ণ হওয়ার আগেই তাদের ফান্ডের অভাব হওয়ার কারণ হতে পারে কোনো দুর্নীতি। দুদক সেটা ইনভেস্টিগেট করে হয়তো দেখবে। কিন্তু আমার সমস্যা তাতে মিটবে না। আমি এই রমজানে ইফতারি পাচ্ছি না। আমি খুব হতাশ হয়ে পড়েছি।
ফখরুদ্দীন সাহেব যখন চিফ অ্যাডভাইজর হয়েছিলেন তখন আমি খুব খুশি হয়েছিলাম। আমি ভেবেছিলাম রমনা থানার উল্টো পিঠে বাংলাদেশের যে বিখ্যাত ফখরুদ্দীন বাবুর্চি আছেন তিনিই হয়েছেন চিফ অ্যাডভাইজর। ফখরুদ্দীন বাবুর্চি আমার খুবই প্রিয়। তার ওই কারখানা থেকে সবচেয়ে বেশি কাচ্চি বিরিয়ানি সারা ঢাকায় সাপ্লাই করা হয়। আমি প্যাকেটের গন্ধ শুকেই বুঝতে পারি কোনটা কোন বাবুর্চির বিরিয়ানি। ১১ জানুয়ারির পর ভেবেছিলাম ফখরুদ্দীন বাবুর্চি যখন চিফ অ্যাডভাইজর তখন আমার এবং কুকুর সম্প্রদায়ের পোয়া বারো। রাজধানী এবং সারা দেশে খানাপিনা অনেক বেড়ে যাবে। ফখরুদ্দীন বাবুর্চি সারা দেশের মানুষকে খালেদা জিয়ার বিএনপির মতো ডাল-ভাতের নয়Ñ কাচ্চি বিরিয়ানি খাওয়ানোর কর্মসূচি নেবেন। মুরগি-খাসির হাড়গোড় আমরাও অনেক পাবো।
কিন্তু হায়! পরে জানলাম বিখ্যাত বাবুর্চি ফখরুদ্দীন নন, অখ্যাত ড. ফখরুদ্দীন হয়েছেন চিফ অ্যাডভাইজর। তার ক্রেডেনশিয়াল বা যোগ্যতা তিনি ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে ডলারের কাছাকাছি ছিলেন এবং সেই যোগ্যতার ফলে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হয়েছিলেন। তিনি টাকার নোট ছাপতে পারেন। কিন্তু নোট কি খাওয়া যায়? তিনি কেয়ারটেকার সরকারের প্রধান হওয়াতে আমার কোনো লাভই হয়নি।
এখন তার আমলে সব ব্যাংকে অলস টাকার পাহাড় তৈরি হচ্ছে। বিদেশ থেকে রেমিটান্স কমে যাচ্ছে। দেশে পূজি বিনিয়োগ হচ্ছে না। ফলে সব শ্রেণীর মানুষের মধ্যে খানাপিনা কম হচ্ছে। আর তার ফলে আমার খানাও কমে গেছে।
আমি যে আমার কষ্টের কথা সেনাপ্রধান জেনারেল মইন উ আহমদকে বলবো সেই ভরসাও পাচ্ছি না। পাকিস্তানের সেনাপ্রধান ও প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফ একজন কুকুরপ্রেমী। তিনি ক্ষমতা দখল করার পর তার কোলের মধ্যে দুই হাতে দুটি ছোট সাইজের কলি জাতীয় কুকুর নিয়ে প্রেস কনফারেন্স করেছিলেন। সেই ফটো সারা দুনিয়ায় ছাপা হয়েছিল। আমিও দেখেছিলাম এবং খুব খুশি হয়েছিলাম। আমাদের তো সব সময় পথেই দেখে মানুষ অভ্যস্তÑ বলা হয় পথের কুকুর। সেই কুকুর, একটি নয় দু’দুটি ছিল পাকিস্তানের জাদরেল জেনারেলের কোলে! আল্লাহ তাকে দীর্ঘ জীবন দেন। তিনি যেন পুনর্নির্বাচিত হন।
আমাকে বলতেই হচ্ছে জেনারেল মইন উ আহমেদ আমাকে খুব হতাশ করছেন। তিনি বারবার বলছেন, বাংলাদেশের সেনাবাহিনী ক্ষমতা দখলে ইচ্ছুক নয়। তার মানেটা কি? তার মানে তিনি দেশের প্রেসিডেন্ট কোনো দিনই হবেন না। ফলে তার সঙ্গে বাংলাদেশের কোনো কুকুরেরই প্রেসিডেন্টের কোলে চড়ার সৌভাগ্য হবে না। বাংলাদেশের কুকুর জাতির জন্য এর চেয়ে বড় দুঃসংবাদ আর কি হতে পারে? আমি এই কষ্টে কেবল উঃ আঃ-ই করতে পারি।
বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার ক্ষমতায় আসার আগে এবং পরে বৃটিশ অ্যামবাসাডর আনোয়ার চৌধুরী বাংলাদেশের পলিটিক্সে বড় ভূমিকা রেখেছেন ও রাখছেন। সম্প্রতি বারিধারাতে তার বাড়িতে কিছু ইফতার পার্টি হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সদস্যরা ছাড়াও পলিটিশিয়ান, বিজনেসম্যান, এনজিও একজিকিউটিভ, জার্নালিস্টরা সব গিয়েছিলেন। আমি যেতে পারিনি। বৃটিশ এক কম্পানি গ্রুপ ফোর সিকিউরিটি পুরো বারিধারায় খুব টাইট সিকিউরিটি ব্যবস্থা চালু রেখেছে। সেই সিকিউরিটি পেরিয়ে আমি দূতাবাস রোডে যেতে পারিনি। ফলে বৃটিশ হাই কমিশনারের উচ্ছিষ্ট ইফতারি আমি খেতে পারিনি। কিন্তু সে জন্য নয়। আমি তার আচরণে দুঃখ পাচ্ছি অন্য কারণে। তিনি বাংলাদেশের মানব দরদিÑ কিন্তু গত কয়েক বছরে তার আচরণে সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হয়ে গিয়েছে যে, তিনি কুকুর দরদি নন। তিনি বাংলাদেশের মানুষ সম্পর্কে অনেক কথাই বলেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের কুকুর সম্পর্কে একটি কথাও বলেননি।
আমার দৃঢ় বিশ্বস, তিনি কুকুর বিষয়ে একেবারেই অজ্ঞ। তিনি কি জানেন তারই দেশের হিজ মাস্টার্স ভয়েস নামে কম্পানির বিশ্ববিখ্যাত লোগোতে যে কুকুরটির ছবি ব্যবহার করা হয় তার নাম কি ছিল? আমি তাকে বলে দিচ্ছি। তার নাম ছিল নিপার (ঘরঢ়ঢ়বৎ)। তিনি হয়তো এটাও জানেন না, এইচএমভির সেই বিখ্যাত লোগোটি এখন বদলে যাচ্ছে। রঙিন নিপারের ছবি এখন হয়ে আছে ব্ল্যাক অ্যান্ড হোয়াইট। হলোই বা শাদা কালো। তবু বৃটেনে কুকুর জাতি যে বহুল সমাদৃত সেই সত্যটা প্রতিষ্ঠিত থেকে যাচ্ছে।
বৃটিশরা কুকুরকে এতো ভালোবাসে যে, তারা তাদের প্রধানমন্ত্রীকে কুকুরের সঙ্গেও তুলনা করে। যেমন দ্বিতীয় মহাযুদ্ধে জার্মানদের বিরুদ্ধে উইনস্টন চার্চিলের তেজস্বী সব বক্তৃতার পরে তাকে বুলডগ-এর সঙ্গে তুলনা করা হতো। আর সম্প্রতি ইরাক অভিযানে আমেরিকান জর্জ বুশের খুবই অনুগত হওয়ায় টনি ব্লেয়ারকে মনিবের পদলেহী পুডল (চড়ড়ফষব)-এর সঙ্গে তুলনা করা হতো।
বৃটেনে মানুষ পেটালে আইনত যে শাস্তি হয়, তার চেয়ে বেশি শাস্তি হতে পারে কুকুর পেটালে। বৃটেনের পথে পেচ্ছাপ করলে মানুষের শাস্তি হয়। কিন্তু কুকুররা মাইনর বা মেজর যে কাজটিই পথে করুক না কেন, তার জন্য তাদের শাস্তি হয় না। শাস্তি হয় তার মনিব মানুষদের। সেই শাস্তি যেন না পেতে হয় সেজন্য কুকুরপালকদের কেউ কেউ হাতে নাইলনের গ্লাভস পরে নেন এবং কুকুর তার কর্ম সম্পাদনের পর পালক সযতেœ মল তুলে একটি ডিসপোজেবল ব্যাগে ভরেন।
কুকুরের প্রতি বৃটিশদের এই ধরনের মানবিক আচরণের কথা আমি জানি। তাই আনোয়ার চৌধুরী যখন বাংলাদেশে আসেন তখন আমি ভেবেছিলাম, তিনি এ দেশের কুকুরদের পক্ষে কিছু বলবেন। সেটা তিনি বলেননি। বোঝাই যায় তিনি যতোই বৃটিশ হন না কেনÑ আসলেই তিনি একজন বাংলাদেশি যিনি অর্ডিনারি সব বাংলাদেশির মতো শুধুই পলিটিক্সে উৎসাহী। আমি জানি, এই দেশে তার রাষ্ট্রদূত থাকার মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমি হার ম্যাজেস্টি কুইন এলিজাবেথকে অনুরোধ করছি তিনি যেন এর পরে একজন রিয়াল ডগ লাভার রিয়াল বৃটিশকে এ দেশে হাই কমিশনার করে পাঠান।
তবে আনোয়ার চৌধুরী তার দত্তক দেশে ফিরে যাওয়ার আগে আমার জন্য একটা উপকার করতে পারেন। বৃটেনের বিভিন্ন স্থানে কুকুরদের সাময়িকভাবে থাকা ও নিরাপত্তার জন্য পেন (চবহ) বা কুকুর হোটেল আছে। ঢাকায় বৃটিশ সরকারের বৈদেশিক সাহায্য সংস্থা ডিএফআইডিকে তিনি নির্দেশ দিতে পারেন কিছু ফান্ড রিলিজ করে অন্তত রাজধানীর কুকুরদের জন্য একটা র‌্যাডিসন অথবা ওয়েস্টিন হোটেলের মতো বড় কুকুর হোটেল বা পেন বানিয়ে দিতে।
আমি আমার নিরাপত্তা বিষয়ে খুব উদ্বিগ্ন।
সরকার সমর্থক দৈনিক প্রথম আলো গত ২৬ সেপ্টেম্বরে প্রথম পৃষ্ঠায় বাহারি গ্রাফিক্স ছেপে সেকেন্ড লিড নিউজে বলেছে, দেশের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভালো হয়েছে। প্রথম আলো দাবি করেছে, ৫৮.৯% মানুষ তাই মনে করে। কিন্তু আমি আমার পথের অভিজ্ঞতা থেকে দেখছি অবস্থার অবনতি হয়েছে। অজ্ঞান পার্টি-মলম পার্টির হাতে ইউনিভার্সিটি টিচার মারা গিয়েছে। আর প্রতিদিনই বহু মানুষ অজ্ঞান পার্টি-মলম পার্টির হাতে টাকা-রিস্ট ওয়াচ-মোবাইল ফোন খোয়াচ্ছে। বাধা দিতে গেলে এরা আহত হচ্ছে। ভিকটিমরা এসব ঘটনার খুব কমই থানায় রিপোর্ট করছেন। কারণ তারা জানেন তাতে কোনো লাভ হবে না।
আমি অবশ্য অজ্ঞান পার্টি-মলম পার্টির ভয়ে ভীত নই। আমার টাকাও নেই, ঘড়িও নেই, মোবাইলও নেই। তাই তারা আমার কাছে আসে না। তাছাড়া তারা এটাও জানে মানব ভিকটিমদের মতো আমি দুর্বল নই। আমার সবল দাত আছে। আমি ওদের কামড়ে দিতে পারি। মামলাদেশের মানুষ গুলিকে ভয় পায় না বলে স্লোগান দেয়। কিন্তু তারা কুকুরের কামড়কে খুব ভয় পায়।
তাহলে আমি কেন আনোয়ার চৌধুরীকে বলছি কুকুরদের জন্য একটা পেন বানাতে?
কারণ কোরিয়ানরা। বৃটিশরা যেমন কুকুরদের পুষতে ভালোবাসেÑ কিছু কোরিয়ান তেমন কুকুরের মাংস খেতে ভালোবাসে। রাজধানীর বনানী ও গুলশান এলাকায় বেশ কিছু কোরিয়ান বাস করে। ঈদের ছুটিতে বহু মানুষ ঢাকা ছেড়ে গ্রামের বাড়িতে চলে যায়। ঢাকা শহরের সেই নির্জনতার সুযোগে কোরিয়ানরা কুকুর ধরার চেষ্টা করতে পারে। আমি তাদের হাত থেকে বাচতে চাই।
বৃটিশ হাই কমিশনার যদি এটা করতে ব্যর্থ হন তাহলে আমি সরকারকে অনুরোধ করবো ঈদের আগে কুকুরদের জন্য কিছু স্পেশাল ট্রেন, লঞ্চ ও কোচের ব্যবস্থা করে দিন। আমি সেই রকম ট্রেন-লঞ্চ-কোচে মফস্বলে গিয়ে ঈদের ছুটি নিরাপদে কাটাতে চাই। সরকার যদি এই ব্যবস্থাটি করেন তাহলে তারা যেন এটাও লক্ষ্য রাখেন মানব পরিবহনের টিকেট না পেয়ে অথবা চড়া দামে কিনতে না পেরে মানুষ যেন এই স্পেশাল কুকুর পরিবহনে উঠতে না পারে।
সরকার যদি আরো সদয় ও দূরদর্শী হন তাহলে ঈদের পরে একটি কুকুর মন্ত্রণালয়ও খুলতে পারেন। এই মন্ত্রণালয়ের জন্য নতুন সব নিয়ম-কানুন করতে হবে। তবে এই নিয়ম-কানুন লেখালেখির ভার সংবিধান বিশেষজ্ঞ ও আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন উকিলটিকে দেবেন না। ভাদ্র-আশ্বিন মাসে কিছু কুকুর পাগল হয়ে যায়। আমি হইনি। কিন্তু ওই উকিল গত বছরের এই সময়ে পলটন ময়দানে গিয়ে শেখ হাসিনার পাশে বসে মহাজোট করেছিলেন। আর এই বছরে তিনি শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়ার প্রকাশ্য বিচার দাবি করেছেন। আসলেই তিনি ক্ষমতার লোভে পাগল হয়ে গিয়েছেন। এই পাগল উকিলকে নয়Ñ কুকুর মন্ত্রণালয়ের বিধি ব্যবস্থা লেখার ভার দিন ব্যারিস্টার রফিক-উল হককে। তিনি একজন ঠা-া, সুস্থ ও সাহসী মানুষ।
সরকারের নেপথ্যে যারা আছেন তাদের প্রতি একজন দেশপ্রেমিক কুকুর হিসেবে আমি বলতে চাই দেশের অর্থনৈতিক কর্মকা- আবার সচল করার জন্য বাস্তবমুখী পদক্ষেপ নিন। জিনিসের দাম বাড়লেও মানুষের যদি কাজ থাকে তাহলে দেশে শান্তি থাকবে। কিন্তু যদি কাজ না থাকে আর দাম যদি বেড়েই চলে তাহলে দেশে শান্তি থাকবে না।
শেখ মুজিবুর রহমান সরকারের পতন ঘটার অন্যতম কারণ ছিল তৎকালীন ভ্রান্ত অর্থনীতি, যার প্রবক্তা ছিলেন চার ইকনমিস্ট। এরা সবাই পরবর্তীকালে বিদেশে সচ্ছল জীবন যাপন করেছেন কিন্তু ডুবিয়ে গেছেন দেশকে। সেই রকম ভুল যেন এখন আর না হয় সে বিষয়ে সতর্ক থাকার জন্য অনুরোধ করছি। আমি দেখছি অর্থনীতি বিষয়ে এই দেশের হোলসেলার সিপিডির প্রধান কর্মকর্তা এখনই বিদেশে, সুইটজারল্যান্ডের জেনিভাতে পাড়ি দিচ্ছেন। অর্থনৈতিক দায়িত্ব নিয়ে নয়Ñ কূটনৈতিক দায়িত্ব নিয়ে তিনি যাচ্ছেন। এই সুইটজারল্যান্ডেই প্রায় বিশ বছর ছিলেন শেখ মুজিবের সেই চার ইকনমিস্টের একজন, যিনি এখন ফিরে এসে রবীন্দ্র সঙ্গীতের চর্চা করছেন। জানি না তার প্রিয় রবীন্দ্র সঙ্গীত কোনটি? ‘তোরা যে যা বলিস ভাই, আমার সোনার হরিণ চাই’? জেনিভামুখী সিপিডির এই বিদায়ী প্রধান কর্মকর্তা বিশ বছর পরে কি করবেন আমি জানি না।
তবে আমি ঘেউ ঘেউ করে অবশ্যই বলবো যাদের ব্যবসা-বাণিজ্য-শিল্পে নিজস্ব বাস্তব অভিজ্ঞতা আছে অবিলম্বে তাদের উপদেশ নিন। বই পড়া ইকনমিস্ট যারা ওয়ার্ল্ড ব্যাংকে চাকরি করেছেন অথবা যারা বিদেশে চাকরিতে আগ্রহী তাদের ওয়ার্ল্ড ব্যাংক ও বিদেশে পাঠিয়ে দিন। তারা সেখানেই ভালো থাকবেন। তাদের অনুপস্থিতিতে এবং অনুপদেশে বাংলাদেশ ভালো থাকবে।
তাহলে যদি প্রশ্ন করেন পরবর্তী কাকে কেয়ারটেকার সরকারের চিফ অ্যাডভাইজর করা উচিত? আমি বলবো ফখরুদ্দীনকে। তবে ড. ফখরুদ্দীন নয়Ñ বাবুর্চি ফখরুদ্দীনকে।
এই বা. ফখরুদ্দীন জানেন কিভাবে একটি সফল ব্যবসা চালাতে হয়। তিনি জানেন কিভাবে এনবিআরকে ট্যাক্স দিয়েও ব্যবসা লাভজনক করতে হয় এবং মানুষের জন্য কাজ সৃষ্টি করতে হয়। এই বা. ফখরুদ্দীন ওয়ার্ল্ড ব্যাংককে চেনেন নাÑ তিনি বাংলাদেশকে চেনেন।.....বাকিটুক লিংককে পড়ুন
http://www.jaijaidin.com/details.php?nid=35110
সর্বশেষ এডিট : ০৪ ঠা অক্টোবর, ২০০৭ বিকাল ৩:৩২
৩০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কুরসি নাশিন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৫


সুলতানি বা মোগল আমলে এদেশে মানুষকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছিল৷ আশরাফ ও আতরাফ৷ একমাত্র আশরাফরাই সুলতান বা মোগলদের সাথে উঠতে বসতে পারতেন৷ এই আশরাফ নির্ধারণ করা হতো উপাধি... ...বাকিটুকু পড়ুন

বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন আর আদর্শ কতটুকু বাস্তবায়ন হচ্ছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৯ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৭

তার বিশেষ কিছু উক্তিঃ

১)বঙ্গবন্ধু বলেছেন, সোনার মানুষ যদি পয়দা করতে পারি আমি দেখে না যেতে পারি, আমার এ দেশ সোনার বাংলা হবেই একদিন ইনশাল্লাহ।
২) স্বাধীনতা বৃথা হয়ে যাবে যদি... ...বাকিটুকু পড়ুন

---অভিনন্দন চট্টগ্রামের বাবর আলী পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ী---

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৯ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:৫৫





পঞ্চম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্ট জয় করেছেন বাবর আলী। আজ বাংলাদেশ সময় সকাল সাড়ে ৮টায় এভারেস্টের চূড়ায় ওঠেন তিনি।

রোববার বেসক্যাম্প টিমের বরাতে এ তথ্য... ...বাকিটুকু পড়ুন

সকাতরে ঐ কাঁদিছে সকলে

লিখেছেন হাসান মাহবুব, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৩:২৯

সকাতরে ওই কাঁদিছে সকলে, শোনো শোনো পিতা।

কহো কানে কানে, শুনাও প্রাণে প্রাণে মঙ্গলবারতা।।

ক্ষুদ্র আশা নিয়ে রয়েছে বাঁচিয়ে, সদাই ভাবনা।

যা-কিছু পায় হারায়ে যায়,... ...বাকিটুকু পড়ুন

বসন্ত বিলাসিতা! ফুল বিলাসিতা! ঘ্রাণ বিলাসিতা!

লিখেছেন নাজনীন১, ১৯ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৪:০৯


যদিও আমাদের দেশে বসন্ত এর বর্ণ হলুদ! হলুদ গাঁদা দেখেই পহেলা ফাল্গুন পালন করা হয়।

কিন্তু প্রকৃতিতে বসন্ত আসে আরো পরে! রাধাচূড়া, কৃষ্ণচূড়া এদের হাত ধরে রক্তিম বসন্ত এই বাংলার!

ঠান্ডার দেশগুলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

×