কুট্টি ভাই আর ভুট্টো ভাই যখন কলেজে পড়ত হঠাৎ একদিন প্রিন্সিপালের খাসকামরায় ডাক পড়ল দুই জিনিয়াসের ।
শুইনা তো কুট্টি অ্যান্ড ভুট্টো কোম্পানির হাঁটুতে ঠোকাঠুকি শুরু হইলো ।
'সেই দিন প্রিন্সিপালের কোয়ার্টারের ছাদে ভাংগা কমোড রাইখা আসার ফল ফলতেছে রে কুট্টি!' ভেউ ভেউ কইরা কানতে শুরু করছে ভুট্টো ভাই ।
'আরে চল! মারুক কাটুক পরাজয়ে ডরে না বীর!' বইলা "বাচপান" ছবির একটা গান শিস দিয়া ভাঁজতে ভাঁজতে রওনা কুট্টি । আসলে কুট্টি ভাইও ডরাইছিলো, কিন্তু দুইজনের একলগে টায়ার পাংচার হইলে ক্যামনে?
দুইজনেই খুব ভয়ে ভয়ে প্রিন্সিপালের রুমে ঢুকছে, ভাবছে হয় সামুরাই মার্কা একখান তলোয়ার নেহায়েত ডাবল জালিবেত নিয়া রেডি আছে মাননীয় অধ্যক্ষ ।
কীয়ের কী! একগাল হাসি হাইসা প্রিন্সিপাল 'আইজ আমার কয়েক বন্ধু আসছে এইখানে । দোস্তেরা আমার লগে বেট লাগছে আমাগো নতুন পতাকা তোলার ফ্ল্যাগ পোলটা ঠিক কতটা উঁচু? তোমরা যাও তো খাম্বার হাইটটা মাইপা আসো । আমরা দেখি জানালা দিয়া ।'
ঘাম দিয়া জ্বর ছাড়ছে কুট্টি-ভুট্টো ভাইয়ের । খাম্বা মাপতে হইবো? মুগাম্বো খুশ হুয়া ! খাম্বা মাপামাপি ইজ ইজি !!!
প্রথমেই একটা মই আর মাপনের ফিতা নিয়া গেছে খাম্বার কাছে । কিন্তুক সালার মই আর খাম্বার লগে আটকায়া থাকে না ! আশপাশে লোক জইমা যাইতেছে । দুইজনেরে ডাইকা তিনজনে মিলা মইটাকে খাড়া করছে কুট্টি ভাই ।
'ভুট্টো! জলদি ফিতা নিয়া খাম্বার মাথায় উইঠা যা! উপর থিকা ফিতাটা নামায়া দিবি । যেই রিডিং পাওয়া যাইবো সেইটাই নিশান তোলার খাম্বার হাইট! গ্যালিলিওর নয় নম্বর সুত্র!!'
'আমারে কুত্তা কামড়াইছে যে আমি খাম্বার মাথায় উঠুম মই বাইয়া? এইডা কী সামহোয়ার ব্লগের টপ বল্গার লিস্ট? আমি উঠুম না!!
'*সালা বেয়াদব! াছায় লাত্থি খাবি! প্রিন্সিপাল স্যার আমাগো দেখতেছে! আর তুই না উঠলে আমি বইলা দিমু ভাংগা কমোডের রহস্য!
এমন হুমকির মুখে না উইঠা পারা যায় না ! কিন্তু বিধি বাম! ভুট্টো ভাই (যারে অনেকে আড়ালে ডাকত "বাচ্চা হাতি") কিছুটা ওঠার পরই মই ভাইংগা পড়ছে নীচের তিনজনের উপরে । খানিকটা মুখখারাপ..আসলে ভুট্টো ভাইয়ের ঠ্যাং আর নীচের কারো ঘেঁটি ভাংগে নাই সেইটা চাইরজনের সাত জনমের ভাইগ্য ।
'কী করা যায়?' ভাবে কুট্টি ভাই । 'প্রিন্সিপাল আমাগো দায়িত্ব দিছে । কইছে দোস্তদের নিয়া জানালা দিয়া আমাগো কাজ কারবার দেখবো । ইজ্জত তো পুরা ক্যাকটাস!'
এমন সময় সময়ে পাশ দিয়া যাইতেছিল কলেজ বিল্ডিং এর যে ডিজাইন করছে সেই আর্কিটেক্ট । 'এইখানে কী সার্কাস করতেছো পুলাপাইন? তুমাগো কী কাজ কাম নাই?'
সবাই সমস্বরে বলল, 'আমরা খাম্বার হাইট মাপতেছি । অ্যাসাইনমেন্ট ।'
'ওহ! এই ব্যাপার । আমি ইকটু হেলপ করি নাইলে তোমাদের দুয়েকটা হতাহত হইবো শিওর ।' বইলা খাম্বাটা তুইলা মাটিতে শোয়াইলো সে । তারপরে ফিতা দিয়া খাম্বার এই মাথা থিকা এই মাথা মাপ নিয়া বলল 'আটগজ দুই ফুট ।' বইলা চইলা গেল ।
কুট্টি ভাই কয় "সালার ইঞ্জিলিয়ার! আমাদের কইছে খাম্বার দৈর্ঘ্য মাপতে! আর সালা মাপছে প্রস্থ!!!
এমন সময় প্যাঁ পোঁ শব্দ শুইনা সবাই পিছন ফিরা দেখে একটা অ্যাম্বুলেন্স ঢুকতেছে কলেজের গেট দিয়া ।
না ভুট্টো ভাইয়ের জন্য না । প্রিন্সিপালের খাস কামরার জানালা দিয়া ওদের খাম্বা মাপনের দৃশ্য দেইখা প্রিন্সিপাল সাবের এক দোস্তের হার্ট অ্যাটাক না হার্নিয়া কী জানি হইছে । পেট চাইপা সে মেঝের উপর গড়াগড়ি খাইতেছে আর বলতেছে--'হা! হা! হা! আর-ও-এফ-এল! হা! হা! হা! আর-ও-এফ-এল!'