somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নীহা, একজন আধুনিক মেয়ে..(২)

১৭ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭ দুপুর ১২:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


তুমি আমার মা নও

মা তুই শান্ত হ। কী হয়েছে তোর।
সরি, আই হ্যাভ টেকেন এ ডিসিশন, আই উইল নেভার কল ইউ ম্যাম।

তুমি আমার অভিভাবক। তোমার মেয়ে আমি। এই পর্যন্ত। আমি তোমাকে মা বলে স্বীকার করি না।

মানে কী যা তা বলছিস। তুই একমাত্র আপন। আমার একমাত্র সুখ। এছাড়া আমার আর কে আছে?

এখন নেই কিন্তু এক সময় ছিল।

মানে?

মানে এখন তোমার বয়স নেই তাই অনেকেই তোমার কাছে আসছে না। তোমার চেয়ে সুন্দরী বয়সকম সমাজকর্মীর অভাব নেই। তাই তুমি আমার দিকে ঝুকে পড়ছো তোমার বাকি জীবনের আশ্রয়স্থলকে নিরাপদ রাখতে চাইছো।

তুই কার সঙ্গে কথা বলছিস তা কি মনে আছে। আমি তোর মা।

না তুমি আমার মা নও। মা দাবী করার মতো কোন কাজ তুমি করো নি। তোমাকে আজ আমার কথা শুনতেই হবে। আমার মনে কত ক্ষোভ জমা আছে, কত কষ্ট জমে আছে। তুমি কোন দিন জানতে চাওনি। যখন জানতে চাইছো। আজ তোমাকে শুনতেই হবে।

ছোট বেলার কথা মনে আছে। আমি সারাদিন কাঁদতাম। রহিম কাকার মেয়ে আমার সাথে খেলতে চাইতো কতো বাহানা করতো। অথচ তুমি বাসায় আসলে আর কোন কান্না নেই। তোমার কোলে শুয়ে পড়তাম। সেই সময়টা তুমি দিনের পর দিন, রাতের পর রাত বাইরে কাটিয়েছো। তোমার দেশপ্রেম। দেশের গরীব মানুষের জন্য তোমার সে কী ভালবাসা। যার জন্য তুমি মেয়ের ভালোবাসাকে বিসর্জন দিলে। তোমার কোলে মাথা রেখে যখন তোমার মেয়ে থাকার কথা তখন তুমি বাইরে কক্সবাজার, সিলেট, বরিশালে। মাতৃত্বকে দাবীয়ে রেখে নিজের শরীরকে তুলে দিয়েছো অন্যের হাতে। বিনিময় তোমার দেশের গরীব মানুষের জন্য সাহায্য পেয়েছো। গুলশানে তোমার বাড়ি হয়েছে। নাম খ্যাতি, স্ট্যাটাস হয়েছে।

কিন্তু তোমার মেয়ে যে মা হারা। বাবাকে সে পায়নি। মায়ের ব্যক্তি স্বাধীনতার মূল্য দিয়েছে তার মেয়ে। নিজেকে বাবা শূন্য রেখে। বাবার আদর বঞ্চিত হয়ে। তুমি বাবার অনুপস্থিতি টের পাওনি। সেখানে অন্য কেউ এসে তোমার চাওয়া পুরণ করেছে। কিন্তু আমার শূণ্যতা তো পূরণ হয় নি। আমি তো বলতে পারিনি, বাবা তুমি আমার জন্য রং পেন্সিল নিয়ে এসো। তোমাকে একটি ফুল একে দেব। আমার মাথায় হাত বুলিয়ে বাবাও বলেনি, মা লী মা আমার। আমার রাগ ভাঙাতে কোন দিন বলেনি চল মা তোকে পৃথীবির সেরা জামাটাই কিনে দিবো।

জীবন একটাই। সেটাকে যেভাবে যত খুশি ভাবে ভোগ করা যায়। যেন কোন অংশ বাদ না পরে। তুমি আধুনিক মেয়ে। তোমার জীবন শুধু ঘরে বসে চার দেয়ালে বন্দি হয়ে কাটবে তা হয় না। জীবনের নানা রং তোমাকে হাতছানি দিয়ে ডাকছে। তাই তুমি তোমার ‘উপভোগ’ ‘স্টাটাস’ ‘সম্মৃদ্ধি’ টাকেই দেখেছ। এবং সেটাকে নিজের করে পেতে চেয়েছো। স্নেহ, মায়া মমতা, ভালবাসা, বন্ধন এগুলো তোমার কাছে অর্থহীন মনে হয়েছে।

তুমি তো তোমার ‘উপভোগ’ ‘স্টাটাস’ ‘সম্মৃদ্ধি’ সব পেয়েছো। এখন আর কি চাও। আমার কাছে তোমার কী সুখ থাকতে পারে?

আমি জানি এটা তোমার সুখ না। এটা তোমার নির্ভরতা। দিন সবার এক যায় না। তোমার আগের জৌলুস নেই। শরীরের চাহিদাও নেই। বয়সের কারনে নষ্টালজিক হচ্ছো। তাই আমার দিকে ঝুকে পড়া। আমাকে আকড়ে ধরে তুমি তোমার নির্ভরতাকে নিশ্চিত করতে চাইছো। তাই আমাকে নিয়ে তোমার উদ্বেগ। তোমার প্রশ্ন। তাই আমাকে কিছু বলতে চাইছো। কিন্তু আমি জানি তুমি কী বলবে।

যে মেয়ের বাবা নেই। মা অধিকাংশ সময় বাড়ির বাইরে রাত কাটায়। মেয়ে একা থাকে। যাকে ভাল মন্দ শাসন করার কেউ নেই। সে মেয়ের কাছ থেকে তুমি কি আশা করতে পারো।

আমার জীবনেও তো রোমাঞ্চ আছে। আছে প্রচুর জিজ্ঞাসা। প্রথম যে দিন আমার ‘মিন্স’ হয় সেদিনের কথা তোমাকে বুঝাতে পারবোনা। কতটা ভয় পেয়েছি। তুমি তখন ইন্ডিয়াতে। বাসায় যারা কাজ করে তারা সবাই আমার বয়সে বড়। কাউকে কিছু বলতে পারিনি। সারা শরীরে জ্বর। পুরো এক সপ্তাহ যে আমি কী ভাবে কাটিয়েছি, সে কী কষ্ট তা আমি বুঝেছি। কারো সাথে শেয়ার করতে পারিনি। রহিম কাকার মেয়ে ছাড়া। এক সময় নিজের ভিতরে একটা চাহিদা শুরু হয়। সে এক অন্য রকম অনুভুতি। যা ভাষায় বোঝানো যায় না। শুধু অনুভব করা যায়।

আমার অন্যান্য অনুভূতিতো ভোতা। সেখানে এই অনুভূতিটা প্রবল হয়ে দেখা দিলো। সে সময়ের একটি ঘটনা আমার ভিতরটাকে সম্পুর্ণ পাল্টে দিলো। হয়তো তোমার মনে থাকার কথা। আমি গিয়েছিলাম রাঙামাটি। স্কুল থেকে ৫ দিনের শিক্ষা সফর। হঠাৎ আমাদের কিছু মেয়ে অসুস্থ হওয়ায় আমরা ২ দিন পরেই ফিরে এলাম। রাতে বাসায় ফিরতে সমস্যা হবে বিধায় আমারএকই ক্লাসের ১ বান্ধবী ও তার কাজিন আমাদের বাসায় চলে এলো। তুমি বাসায় নেই। রাতে বন্ধু বান্দব মিলে আড্ডা দিলে যা হয়। এক সময় খেয়াল চাপলো ছবি দেখার। চলে গেলাম কম্পিউটারের কাছে। আমি আর আমর বন্ধু রীমন। কম্পিউটার ওপেন করলাম। অটোপ্লেতে যে ছবিটি শুরু হলো তা দেখে তো আমি লজ্জায় নেই। থ্রি এক্স ছবি। সাথে সাথে বন্ধ করে দেই।

আমার কম্পিউটারে থ্রী এক্স ছবি আসবে কোত্থেকে? রহিম কাকাকে জিজ্ঞেস করলাম আমার রুমে কেউ ঢুকেছে কিনা। সে কিছুই জানে না। রহিম কাকার মেয়েকে জিজ্যেস করলাম। সে আমাকে দিল এক গোপন তথ্য। এই আমি প্রথম জানলাম আমি বাড়িতে না থাকলে মাঝে মাঝে মুহীন আঙ্কেল আমাদের বাড়িতে আসে। রাতে থাকে।

এর পর রীমনের সাথে আমার সখ্যতা গড়ে উঠে। এ বিষয়ে আলাপ হয় ফোনে প্রচুর কথা হয়। বিভিন্ন ধরনের এক্স ছবি নিয়ে আলোচনা হয়। এক পর্যায় নিজেদের লজ্জা ভেঙ্গে যায়। একদিন ও আমার বাসায় আসে। ১১টা দিকে আসে। একথা ও কথা বলি দুপুরে বাহির থেকে চাইনিজ নিয়ে আসি। খেয়ে দেয়ে দুজনে একসাথে গল্প শুরু করি। আবারো সেই এক্স আলোচনা। ও উত্তেজিত হয়। আমাকে জড়িয়ে ধরে। আমার ঠোটে চুমু খায়। আমি প্রথম প্রথম না বলেছি। কিন্তু অনুভূতির জোর আমাকে পরাস্ত করে। আমিও এক সময় সুখ অনুভব করি। .....



৪টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে

লিখেছেন মহাজাগতিক চিন্তা, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ১১:০২



ইউটিউব হুজুর বললেন, মৃত্যুর আগে ইবলিশ ঈমান নিয়ে টানাটানি করে। তখন নাকি নিজ যোগ্যতায় ঈমান রক্ষা করতে হয়। আল্লাহ নাকি তখন মুমিনের সহায়তায় এগিয়ে আসেন না। তাই শুনে... ...বাকিটুকু পড়ুন

মহিলা আম্পায়ার, কিছু খেলোয়ারদের নারী বিদ্বেষী মনোভাব লুকানো যায় নি

লিখেছেন হাসান কালবৈশাখী, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:০৯



গত বৃহস্পতিবার ২৫ এপ্রিল প্রাইম ব্যাংক ও মোহামেডানের ম্যাচে আম্পায়ার হিসেবে ছিলেন সাথিরা জাকির জেসি। অভিযোগ উঠেছে, লিগে দুইয়ে থাকা মোহামেডান ও পাঁচে থাকা প্রাইমের মধ্যকার ম্যাচে নারী আম্পায়ার... ...বাকিটুকু পড়ুন

জানা আপুর আপডেট

লিখেছেন আরাফআহনাফ, ২৯ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৫৭

জানা আপুর কোন আপডেট পাচ্ছি না অনেকদিন!
কেমন আছেন তিনি - জানলে কেউ কী জানবেন -প্লিজ?
প্রিয় আপুর জন্য অজস্র শুভ কামনা।



বি:দ্র:
নেটে খুঁজে পেলাম এই লিন্ক টা - সবার প্রোফাইল... ...বাকিটুকু পড়ুন

×