somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

সেইসব শৈশব-১

১৫ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭ রাত ৯:০৪
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

৬ জুলাই ১৯৮৪। কেউ একজন কি বললেন? লাইট! সঙ্গে সঙ্গে টুপ করে পশ্চিমে ডুব দিল সূর্য। ক্যামেরা! রোলিং....। কৃত্রিম নয়, শুরু হল একদম অরিজিনাল ঝম ঝম বৃষ্টি। অতঃপর... একশান! 'ওঁয়াঁ, ওঁয়াঁ ওঁয়াঁ..(ধুত্তুরি ভালই তো ছিলাম, এ কোথা এলেম আমি!)'

এ আমার আত্মজীবনী নয়, আত্মজীবনীর মত করে লেখা অসংলগ্ন প্রলাপ মাত্র। বস্তু আছে কিনা... নাহ্, সঞ্জীবের লোটাকম্বল কমবেশি সবাই পড়েছেন, তাই আর টুকলিফাই করলাম না। নিজের কথা নিজের মত করেই লিখি। এ তো আমারই কথা। বস্তু, বাস্তব সবই থাকবে আশা করি। মজা পাওয়ার দায় পাঠকের।

আমার জন্মের পর টানা তিন দিন বৃষ্টি। এ শুনে আমার একমাত্র বান্ধবী শোভা বলেছিল, আহা রে! বেচারা আকাশটা বুঝি তার সবচে স্মার্ট তারাটা হারাইল। যাই হোক, শৈশব আগে, পরে 'ওসব'।

শৈশবের বেশিরভাগ ঘটনা মায়ের মুখে শোনা। সেই শোনা কথায় সুতো বেঁধে একটা ঢলঢলে মালা তৈরির প্রয়াস আমার অনেক দিনের। আজ কিছু না ভেবেই শুরু করলাম। যেহেতু ব্লগ, তাই ঘষামাজা অনাবশ্যক।

আমার শৈশবে ওজিফা'র মায়ের ভূমিকা বেশ গৌণ। কিন্তু শৈশবের কথা ভাবতে গেলে সেই প্রয়াত বৃদ্ধার চেহারাই সবার আগে ভেসে ওঠে। কারণ আমার জন্মের পরদিন ভোরেই ষাটোর্ধ্ব ওজিফা'র মা মাথাভর্তি বৃষ্টি নিয়ে ছুটতে ছুটতে বলেছিলেন, 'আফার হুত (পুত্র) অইছে, আফার হুত অইছে'। সেই 'আফা' মানে আমার মা যে অফিসের স্টোরকিপার ছিলেন (এখন এসিসট্যান্ট অফিসার), ওজিফার মা ছিলেন সেই অফিসের একজন আয়া। আমি বড় হয়ে বৃদ্ধাকে আরও অনেক বছর শক্তসমর্থ অবস্থায় দেখেছি। তাকে আমার কখনও কান্ত মনে হতো না। তিনি কবে মারা গেছেন বলতে পারবো না। তবে এখনও কল্পনায় সেই পুকুর পাড়ের জঙ্গলে ছেয়ে যাওয়া মাটির সরু পিচ্ছিল রাস্তায় বৃদ্ধার উচ্ছাস স্পষ্ট দেখি।

বয়স তখন দুইয়ের একটু বেশি। তখন মা'কে মনে হতো পৃথিবীর সবচে নিষ্ঠুর নারী। বিছানায় শুয়ে চেঁচিয়ে গলা ফাটাতাম। কিন্তু রান্নাঘর থেকে মা ফিরেও তাকাতেন না। কারণ? কারণ আমি নাকি বড় হয়ে গেছি! ঐ বয়সে এক রাতের একটা দৃশ্য শুধু মনে আছে। বিছানায় উবু হয়ে জানালা দিয়ে বাইরের রান্নাঘরে মাকে দেখছিলাম আর চেঁচাচ্ছিলাম, 'দুদ্দা দে..'। সাড়া না পেয়ে এক সময় ক্লান্ত হয়ে গিয়েছিলাম। কান্ত হয়েও তাকিয়ে ছিলাম উনুনের পাশে বসে থাকা মায়ের দিকে। মায়ের মুখে কমলা আগুণের প্রতিফলন। কী সুন্দর! নিজেকে মনে হয় মকবুল ফিদা হুসেন। দৃশ্যটা এত চমত্কার রঙে মনের ভেতর এঁকেছি কী করে!
(চলবে)
৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শ্রান্ত নিথর দেহে প্রশান্তির আখ্যান..... (উৎসর্গঃ বয়োজ্যেষ্ঠ ব্লগারদের)

লিখেছেন স্বপ্নবাজ সৌরভ, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৪২



কদিন আমিও হাঁপাতে হাঁপাতে
কুকুরের মত জিহবা বের করে বসবো
শুকনো পুকুর ধারের পাতাঝরা জামগাছের নিচে
সুশীতলতা আর পানির আশায়।

একদিন অদ্ভুত নিয়মের ফাঁদে নেতিয়ে পড়বে
আমার শ্রান্ত শরীর , ধীরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের ব্লগার ভাবনা: ব্লগাররা বিষয়টি কোন দৃষ্টিকোন থেকে দেখছেন?

লিখেছেন লেখার খাতা, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪১


ছবি- আমার তুলা।
বেলা ১২ টার দিকে ঘর থেক বের হলাম। রাস্তায় খুব বেশি যে জ্যাম তা নয়। যে রোডে ড্রাইভ করছিলাম সেটি অনেকটা ফাঁকা। কিন্তু গাড়ির সংখ্যা খুব কম।... ...বাকিটুকু পড়ুন

সাপ, ইদুর ও প্রণোদনার গল্প

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ০৯ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৪৪

বৃটিশ আমলের ঘটনা। দিল্লীতে একবার ব্যাপকভাবে গোখরা সাপের উৎপাত বেড়ে যায়। বৃটিশরা বিষধর এই সাপকে খুব ভয় পেতো। তখনকার দিনে চিকিৎসা ছিলনা। কামড়ালেই নির্ঘাৎ মৃত্যূ। বৃটিশ সরকার এই বিষধর সাপ... ...বাকিটুকু পড়ুন

বাড়ির কাছে আরশিনগর

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ০৯ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৫০


বাড়ির কাছে আরশিনগর
শিল্পকলা একাডেমির আশেপাশেই হবে চ্যানেলটার অফিস। কিছুক্ষণ খোঁজাখুঁজি করল মৃণাল। কিন্তু খুঁজে পাচ্ছে না সে। এক-দু'জনকে জিগ্যেসও করল বটে, কিন্তু কেউ কিছু বলতে পারছে না।

কিছুদূর এগোনোর পর... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

×