পাম্পরুম থেকে বেরিয়ে ভিজতে ভিজতে আমরা লবণাক্ত ও বিস্বাদ সমুদ্রের দিকে হাঁটতে থাকি। লোনাবৃষ্টিতে সঙ্গীর কৃষ্ণকুন্তলঝাড়ের দিকে এগিয়ে যাই। চোখমুখকান ঢেকে যায় কৃষ্ণ আশীষে। এরপর চোখ বুজে মনের মাপে ভিতরদৃশ্য দেখতে দেখতে এগিয়ে যাই টিলা-ট্যাঙ্গর, নদী-হ্রদ পেরিয়ে। ক্রমে আনুপূর্ব ঘেমে উঠি। উবু হয়ে বসে পড়ি মোহনার কাছে, সমস্ত লবণ যেখান থেকে পরিবাহিত হয় বন্দরে বন্দরে। ওই বৃষ্টিশীলতার ভিতরে যে উষ্ণ-নুনতা স্বাদ থাকে, কখনো কখনো তা সুমিষ্ট ও সুপেয়ও বটে, আগে তা একদমই জানা ছিল না। নবজ্ঞানের ওই ভারে সৈকতের ভেজা বালিতে আমরা পরস্পর লীন হতে থাকি। সূচনার বৈতালিক লীনগতি ক্রমশ একতাল তিনতাল হয়ে খেমটায় এসে ঠেকে। উত্তরসমুদ্রের ঝাউগাছের ওপারে তখন ধ্বনিত হতে থাকে পণ্ডিত যশোরাজের সুমিষ্ট স্বর 'বরষা ঋতু আয়...ঋতু আয়...'। আর সিমুলটেনিয়াসলি পূর্বপ্রান্তের পাথরগুচ্ছের ধার ঘেঁষে সাজানো হার্ডড্রিঙ্কসের দোকানিরা অজয় চক্রবর্তীর কণ্ঠে কাউন্টার দিচ্ছিল 'মেঘমেদুর বরিষায়...' বাজিয়ে। এককেন্দ্রীক অথচ দ্বিমুখী এহেন সুরে বুঁদ বজ্রধর ইন্দ্র স্বীয় পুরীতে বসে তার সহস্রমুখী বজ্রাস্ত্র পৈথানে রেখে নেপথ্যে তখন অনবরত তাল ঠুকে যেতে থাকেন। সুরতালের মহামূর্ছনাজনিত ওই দূষণমধ্যে আমরা তখন লবণজলে পা ভিজানোকে গৌণ ঠাউরিয়ে আকাশঢালা জলের কাছে এমনকি গায়ের টুকরো বস্ত্রতক সঁপে দিতে উদ্বুদ্ধ হয়ে যাই।
(ক্রমশ আরো সাত কিস্তি পোস্ট করা হবে)
সর্বশেষ এডিট : ১৬ ই জুন, ২০০৮ রাত ১১:২৯