ঢাকা থেকে লঞ্চে পটুয়াখালী এবং সেখান থেকে বাসে কুয়াকাটা। এটাই আমার প্রথম লঞ্চ ভ্রমন। কনকনে ঠান্ডায় লঞ্চের ডেকে বসে গীটার নিয়ে গান গাওয়ার একটা ক্ষুদ্র প্রচেষ্টা আর হৈচৈ মিলিয়ে এক মজার কান্ড। ঐ সময়ের অনুভুতি মনে হয় বলে বোঝানো যাবে না (ক্লোজআপহাসি) । আমাদের লঞ্চ ছেড়েছিল রাত ৯ টায়। রাতের নিস্তব্ধতা আর কুলকুল পানির শব্দ মিলিয়ে এক অদ্ভুত অবস্থা।
পটুয়াখালী তে ৪-৫ টা ফেরী পার হয়ে শেষ পর্যন্ত কুয়াকাটা। বাস যাত্রাটা সত্যি খুব ভয়ঙ্কর ছিল। যারা fantasy kingdom magic carpet এ চড়েননি তারা এই বাস যাত্রাতেই তা অনুভব করতে পারবেন।
সারাদিন সৈকতে বসে জেলেদের মাছ ধরা আর আমার বাঁদর বন্ধুদের বাঁদরামি দেখতে দেখতে দিনটা পার হল।
ভোর বেলা ঝাউ বন থেকে দেখা সূর্যোদয়....গোল জ্বলন্ত থালাটা যেন সমুদ্র গর্ভ থেকে উদয় হয় হঠাতই....নিজেকে উন্মুক্ত করেই ছড়িয়ে দেয় তার সোনালী আলো। উফফফফফ্ মনে পড়লেও গা কাটা দেয়!!!
ভ্যানে করে আমরা কুয়াকাটা ঘুরলাম। সেখানকার দেখার মত একটা জায়গা হল শুটকি-পল্লী। বিশাল জায়গা জুড়ে শুধু মাছ শুকানো হচ্ছে। এমনকি হাঙ্গরের শুটকিও পাওয়া যায়..সেগুলো বিদেশে পাঠানো হয়। ঢুকতেই বিশ্রী একটা গন্ধের ধাক্কা অনেককেই কাত করে দেয় শুটকি পল্লী তে।
বিকেলে আবার সৈকতে খুটি গাড়লাম সূর্যাস্ত দেখতে। দেখতে দেখতে কখন যে থালাটা লুকিয়ে গেল আবার সমুদ্রের বুকে....
সেখানকার কিছু ছবি আপনাদের সাথে শেয়ার করছি। সব দিতে পারলাম না ৫০০ kb বেশী সাপোর্ট করে না।
ছবিতে গাছ ধরে আমার ব্ন্ধুরা চিতকার করছিল.."বাবুজি মুঝে ছোড়েকে মাত জাইয়ে" আমরা ফাইজলামি করছিলাম। প্রথম ছবিটা হাঙ্গরের শুটকির। যারা এখনও দেখেননি কুয়াকাটা তারা সময় পেলে অবশ্যই একবার যাবেন।
ঢাকায় আসার পর প্রায় ২ থেকে তিন দিন আমাদের একটা সমস্যা দেখা দিয়েছিল। যখন ঘুমাতে যেতাম মনে হত খাট আমার ছোটবেলার দোলনার মত দুলছে। লঞ্চের দুলুনি ভালই ভুগিয়েছে। আমার এক বন্ধু তো পরদিন সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে ভেবেছিল ও এখনও লঞ্চে....ওদের বাসার পানির পাম্প এর আওয়াজকে ভেবেছিল লঞ্চের ভটভট শব্দ।
যাই হোক....ওখানে এবং সেন্টমারটিনে একবার না গেলে হয়তো এই জীবনের অনেক কিছুই দেখা বাকি থাকবে। তাই দেরি না করে একবার ঘুরে আসুন।
সর্বশেষ এডিট : ১৮ ই মার্চ, ২০০৮ বিকাল ৫:০০