পৃথিবীতে বহু জিনিস মানুষের ক্ষতিসাধন করিবার নিমিত্ত তৈরী হইয়াছে এই বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নাই। তবে আমাকে ভিখারী বানানোও যে তাহাদের সৃষ্টির কারন সেই বিষয় আমার নিকট পরিস্কার ছিলনা। কম্পিউটার তৈরী হইল, বড়ই উত্তম কথা। কিন্তু তাহার প্রেমে পড়িয়া আমার যে বহু অর্থ ব্যয় হইয়া গেল সেই ঘটনা উত্তম হইতে পারে না। এই প্রেমে শিখিলাম প্রচুর, কাজে লাগাইতে পারিলাম কম।
আসিল ইন্টারনেট, বড়ই উপযোগী পদার্থ। ভাল কথা, জ্ঞানের দরজা খুলিয়া গেল। কিন্তু তাহার সাথে সাথে ইয়াহু ম্যাসেঞ্জার নামক অপদার্থটিকে তৈয়ারী করিয়া আমার বিরুদ্ধে যে ষড়যন্ত্র রচিত হইয়া ছিল তাহা বুঝিলাম সাইবার ক্যাফের মালিকদিগের কূটিল হাসিতে। বুঝিলাম, তবে জলপানি আর টিউশনির দ্বারা সঞ্চিত অর্থসকল ফুরাইয়া যাইবার পড়ে।
আরেক গুরুত্বপূর্ণ ষড়যন্ত্র, থুক্কু, আবিস্কার হইয়াছিল বহু পূর্বেই কিন্তু আমি তাহাতে মজি নাই। মজি নাই বলিয়াই বহু দিন ঐ বস্তু গৃহে প্রবেশাধিকার পায় নাই। এইবার ষড়যন্ত্রে জড়িত হইল আপন ভ্রাতৃদেব। মাতাকে পটাইয়াই বস্তুটিকে গৃহে আনিতে সমর্থ হইল। আর আমি সারা দিনে আট-নয় ঘন্টা তাহাতে আরেক ষড়যন্ত্রীর সহিত গুটুর গুটুর করিয়া মাসের শেষে লম্বা কল লিস্টের প্রমান সহ প্রায় চারি হাজার টাকার বিল পাইলাম।
প্রতিজ্ঞা করিয়াছিলাম আর কোনমতেই কোন ফাঁদে পা দিবনা। কি আর বলিব সবই আমার অদৃষ্ট,শেষ জীবনে ভিক্ষা করিতে হইবে তাহা সেইখানে লেখা রহিয়াছে। আমার হইতে বহু দুরে বসিয়া অপরিচিত আরেকজন নিজের গাঁটের পয়সা খরচে আমার পিছনে লাগিয়াছে কে জানিত। এত খাটিয়াছে, ফল পাইবেই। তাহার রচিত প্রোগ্রাম "অনুমানের" মাধ্যমে আমার ভিতর এক্সিকিউট হইয়া গেল। অতঃপর যে নেশা লাগিয়াছে তাহা ভয়ঙ্কর। এখন এইরূপ বোধ হয় যে, ভাত না খাইলে চলিবে কিন্তু ইহা না হইলে চলিবে না। কার্যালয়ে সরকারী তহবিল ভাঙ্গিয়া চলে তাহা খারাপ নয়। তাই এতদিন ফাঁদ মনে হয় নাই, কিন্তু এইবার বাড়ি ফিরিয়া রাতদিন পাতায় পাতায় ঘুরিয়া দাদার হাত হইতে যেই বিল গ্রহণ করিতে হইল তাহা যে আমার প্রতি সাঃ ইনের ষড়যন্ত্রের ফল সেই বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নাই।
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭ দুপুর ২:৫৫