somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খোকাবাবু অষ্টম

১১ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সকাল ১১:৫৫
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খোকার ফুলটা চেনার সময় এসেছে। ওর গ্রহে সব সময়ই ফুল ছিল। খুব সাধারণ ফুল। একটি মাত্র চাড়া থেকে বেড়ে উঠা পাপড়ি দলের সমুষ্টি। তাদের বিশেষ কোন ভূমিকাও ছিল না এবং কাউকে বিরক্তও করত না। কোন এক ভোরে ঘাসের ফাঁকে ফোটে থাকত, আবার সন্ধ্যায় ঝরে পরত। কিন্তু সেই ফুলটি কোন একটা বীজ থেকে অঙ্কুরুদগম করে মাটিতে শেকর গজিয়ে বসেছে। কোথা থেকে এসে কে যানে! অন্য ফুল থেকে অনেক ভিন্ন এই ফুলটা। খোকা ভাল করে পাহাড়া দিচ্ছিল। কে যানে এটা কোন নতুন জাতের বটগাছও হতে পারে। কিন্তু দিন কয়েকের মধ্যেই চাড়াগাছে একটা কলি ধড়ল। খুব বড় একটা কলি দেখে খোকা খুব খূশী। এর থেকে নিশ্চই খুব সুন্দর একটা ফুল ফোটবে। কিন্তু ফুলটি তার সবুজ সাঝঘরে তখনো সাঝ-গোজ শেষ করতে পারেনি। অনেক ভেবে-চিন্তে সে তার রং বাছাই করল। ধীরে-সুস্থে কাপড় পড়ল। একে একে পাপড়ি গুলি সাজাল। ভেরেন্ডা ফুলের মত যবুথবু হয়ে, সৌন্দর্য্যের পূর্ণ বিকাশের আগে, বের হতে চায়না সে। কারণ সে চায়, লোকে দেখে তাকে পছন্দ করুক। তার এই রুপ চর্চায় বেশ কয়েক দিন কেটে গেল। এবং তার পর কোন এক ভোরে, ঠিক স্যূর্যোদয়ের সময় সে বের হল।
এত যত্নে যে নিজেকে সাজিয়েছে, বাইরে এসে সেই কিনা হাই তুলে বলছে:
ওহ্ ! মাফ করবেন, মাত্রতো ঘুম ভাঙ্গল, এখনো ক্লান্ত।
খোকা তার বিমুগ্ধ ব্যাকুলতা চেপে রাখতে পারল না:
কত্ত সুন্দর আপনি!
তাই না?
ভদ্র ভাবে জবাব দিয়ে ফুলটি বলল:
এবং আমি সূর্য্যের সারথী হয়ে জন্মেছি।
খোকা বুঝতে পারল ফুলটি খুব বিণয়ী নয়, তবে বেশ মায়াবী।
একটু পরেই ফুলটি আরো বলল: মনে হয় নাস্তার সময় হয়েছে
দয়া করে আমার কথাটা ভাবার সময় হবে আপনার?
একটু অবাক হল খোকা! তারপর স্বচ্ছ জল এনে দিল ফুল গাছটার গোড়ায়। এভাবে অতি অল্পক্ষনেই ফুলটি তার ঠাট্রা-মস্কারা দিয়ে খোকাকে সন্দিহান করে তুলল। যেমন একদিন তার চরটা কাঁটার কথা খোকাকে বলতে গিয়ে বলল:
বাঘ আসুক, তাদের তীক্ষ্ণ দাঁত বের করে। তবেই দেখবে মজা, আমার চারটা কাঁটাই তাদের জন্য যথেষ্ট।
আমার গ্রহে কোন বাঘ নেই। আর বাঘ কখনো ঘাষ খায় বলে শুনিনি। জানাল খোকা।
আমি কোন ঘাষ নই। মাফ করবেন, বাঘের ভয় আমার নেই। কিন্তু হাওটা খুব লাগছে। একটু বেড়া দেয়া যায় না? ফুলের হেয়ালী।
বাতাসেই কষ্ট হয়! একটা উদ্ভীদের জন্য ব্যাপারটা কোন ভাল লক্ষন নয়। খোকা ভাবল ফুলটা খুব সহজ নয়।
সন্ধ্যায়র সময় আমাকে একটা কাঁচের পাত্র দিয়ে ঢেকে দেবেন। এখানে অনেক শীত আর সব কিছু খুব এলোমেলো। আমাদের বাড়ি...
কিন্তু সে থেমে গেল। একটা বীজ হয়ে সে এল। তবে অন্য দেশ সর্ম্পকেতো তার কিছু জানার কথা নয়। এমন একটা ডাহা মিথ্যা বলে খুব লজ্জা পেল ফুলটি। দু'তিন বার কেশে কথা ঘুরিয়ে দিল যাতে খোকা মিথ্যাটা ধরতে না পারে:
আমার বেরাটা?
আমি সেটাই আনতে যাচ্ছিলাম। আপনি আমার সঙ্গে কথা বলাতে থেমে যেতে হল।
ফুল আর একটু কাশল। যাতে খোকা ভাবে আহা বেচারী শীতে কষ্ট পাচ্ছে। এখনই তার বেরাটা দিয়ে দিই।
এমনি করে ফুলটার প্রতি গভীর ভালবাসা থাকা সত্বেও খোকার মন সন্দিহান হয়ে উঠলো। ফুলটির সব হেয়ালীপনা খুব গুরুত্ব সহকারে ভেবেছে, আর তাতে শুধু দুঃখই পেয়েছে খোকা।
ওর কথা শোনা আমার উচিৎ হয়নি। একদিন কথায় কথায় বলল খোকা। ফুলের কথা শুনতে হয়না। ফুলকে শুধু দেখতে হয় আর ঘ্রান নিতে হয়। আমার গ্রহটা সুগন্ধে মৌ মৌ করত। কিন্তু ফুলটাকে আমি এমন কিছুই দিতে পারিনি। বাঘের ব্যাপারটা আমাকে এত বিরক্ত করে ছিল। কিন্তু আমার ধৈর্য্য ধরাই উচিৎ ছিল।
আমাকে খোকা বলল:
আমার পক্ষে তখন এত কিছু বোঝা সম্ভব ছিলনা। তার কথায় নয়, তার কর্ম দিয়ে তাকে বিচার করা উচিৎ ছিল আমার। তার রুপের ঝলক আর মন মাতানো সুবাশ ছিল শুধু আমারই জন্য। আমার তাকে ছেড়ে আসা ঠিক হয়নি। তার সব হেয়ালীপনার আড়ালে যে অনুভূতি প্রবন মনটা ছিল, তার সন্ধান করা, আমার উচিৎ ছিল। ফুল গুলি অনেক সময় খুব স্ববিরোধী হয়। কিন্তু তার ভালবাসা বোঝার মত জ্ঞান তখন আমার ছিলনা।
্রলবে...
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

আকুতি

লিখেছেন অধীতি, ১৮ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৪:৩০

দেবোলীনা!
হাত রাখো হাতে।
আঙ্গুলে আঙ্গুল ছুঁয়ে বিষাদ নেমে আসুক।
ঝড়াপাতার গন্ধে বসন্ত পাখি ডেকে উঠুক।
বিকেলের কমলা রঙের রোদ তুলে নাও আঁচল জুড়ে।
সন্ধেবেলা শুকতারার সাথে কথা বলো,
অকৃত্রিম আলোয় মেশাও দেহ,
উষ্ণতা ছড়াও কোমল শরীরে,
বহুদিন... ...বাকিটুকু পড়ুন

ক- এর নুডুলস

লিখেছেন করুণাধারা, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৫২



অনেকেই জানেন, তবু ক এর গল্পটা দিয়ে শুরু করলাম, কারণ আমার আজকের পোস্ট পুরোটাই ক বিষয়ক।


একজন পরীক্ষক এসএসসি পরীক্ষার অংক খাতা দেখতে গিয়ে একটা মোটাসোটা খাতা পেলেন । খুলে দেখলেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্প্রিং মোল্লার কোরআন পাঠ : সূরা নং - ২ : আল-বাকারা : আয়াত নং - ১

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:১৬

বিসমিল্লাহির রাহমানির রাহিম
আল্লাহর নামের সাথে যিনি একমাত্র দাতা একমাত্র দয়ালু

২-১ : আলিফ-লাম-মীম


আল-বাকারা (গাভী) সূরাটি কোরআনের দ্বিতীয় এবং বৃহত্তম সূরা। সূরাটি শুরু হয়েছে আলিফ, লাম, মীম হরফ তিনটি দিয়ে।
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×