somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খোকাবাবু পঞ্চম

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:০৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

খোকার গ্রহ, সেখান থেকে তার বিদায় এবং এখানে আসার কাহিনী সর্ম্পকে, প্রতিদিন নতুন কিছু আবিষ্কার করছিলাম। তার কথা গুলিই আমার মনে একটা ছবি তৈরী করল। এভাবে তৃতীয় দিনে বটগাছের করুন কাহীনি শোনলাম। সেটা ভেড়াটার কারণেই। অনেকটা অপ্রাসংগিক ভাবেই খোকা আমার কাছে জানতে চাইল, যেন কোন জটিল অংকের সমাধান খুজছে:
এটাতো ঠিক যে, ভেড়া সব রকমের ঘাষই খায়?
হ্যাঁ, এটা ঠিক।
খুব ভাল, আমি এতে খুব খুশী।
আমি বুঝতে পারলাম না, ভেড়া সব রকমের ঘাষই খায়, সেটা এত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হল কেন? খোকা আবার বলল:
তাহলে ভেড়াতো বটগাছও খায়।
খোকাবাবুকে বোঝালাম: বটবৃক্ষ কোন ঘাস নয়। সেটা মসজিদের মিনারার চেয়েও উচু একটা বৃক্ষ। একপাল হাতিও একটা গাছ খেয়ে শেষ করতে পারবে না। হাতির কথাটা শুনে সে একটু হাসল।
হাতিগুলি একটার উপর আরেকটা দ্বারাতে হবে। তার পর জ্ঞানী লোকের মত বলল:
বটবৃক্ষওতো একসময় ঘাষের মতই ছোট ছিল।
তা বটে, কিন্তু তোমার ভেড়া বট গাছের চারা খাবে কেন?
ঠিক আছে, দেখা যাবে।
যেন দিবালোকের মত পরিস্কার। কিন্তু আমি খুব মনোযোগ না দিলে ব্যাপারটা বুঝতেই পারতাম না।
অন্য সব গ্রহের মত খোকাবাবুর গ্রহেও ভাল-মন্দ দু'রকমের গাছই ছিল। যার কারণে ভাল-মন্দ দু'রকমের বীজও ছিল। কিন্তু বীজতো সংগোপনে মাটির বুকে ঘুমিয়ে থাকে। একদিন সুযোগ মত আড়মোড়া দিয়ে জেগে উঠে। ধীড়ে, অতি সন্তর্পনে, কঁচি পাতাটি মেলে ধরে স্যূর্যের আলোতে। যদি মূলা বা গোলাপ গুচ্ছ হয়, তবে নির্দিধায় বাড়তে দেয়া যায়। কিন্তু আগাছা বা ক্ষতিকারক বৃক্ষের চাড়া হলে, চেনা মাত্রই তা অঙ্কুরেই উপড়ে ফেলা উচিৎ। খোকাবাবুর গ্রহ এমন ক্ষতিকারক বটবৃক্ষের বীজে ভরা ছিল। বটগাছ অঙ্কুরেই মূলসহ তুলে না ফেললে আর কখনই তোলাযায় না। একটা গাছই পুরো গ্রহটা দখল করে নেয়। শিকর দিয়ে গ্রহটা ছিন্ন-ভিন্ন করে ফেলে। খোকার গ্রহের মত এমন ছোট একটা গ্রহে দু'একটা বটগাছ হলেই গ্রহটা চূড়মার হয়ে যাবে।
নিয়মানুবর্তিতার ব্যপার। নিজের প্রাতক্রিয়া শেষ করে, গ্রহের প্রাতকৃয়ায় হাত দিতে হয়। এটাই নিয়ম। প্রতিদিন মনোযোগ দিয়ে সবগুলি অঙ্কুর দেখতে হয়। গোলাপ গুচ্ছের পাশে বটের চাড়া দেখলেই তুলে ফেলতে হয়। সেটা খুব সহজ নয়। কারণ: খুব কঁচি অবস্থায় সব অঙ্কুর দেখতে একই রকম লাগে। কাজটা একটু একঘেয়ে বটে তবে পরিশ্রম লাগেনা করতে।
একদিন খোকা আমাকে বলল: এখন যা বলব, ভাল করে তার একটা ছবি আঁক। যাতে তোমার গ্রহের বাচ্চারা বুঝতে পারে। কোনদিন ভ্রমনে গেলে সেটা তাদের কাজে লাগতে পারে। কোন কোন কাজ একটু দেরীতে করলে কোন ক্ষতি নেই। কিন্তু বটগাছ অঙ্কুরে তুলে ফেলাই ভাল। না হলে বড় রকমের ক্ষতি হতে পারে। আমি একটা গ্রহ চিনতাম। সেখানে খুব অলস একজন লোক থাকতো। সে তিনটা বটগাছের চাড়া তুলতে ভূলেগেছে।
খোকার বর্ননা অনুযায়ী আমি সে গ্রহের ছবিটা এঁকে দিলাম। আমি কোন নীতিবাদীর সুরে কথা বলতে চাই না। তবে এইটুকু বলব যে, বটবৃক্ষের ভয়ঙ্করতা সর্ম্পকে কেউই তেমন কিছু যানেনা। পথ ভূলে কেউ একটা ছোট গ্রহে চলে এলে, এবং সেখানে কোন বটগাছ থাকলে যে কি বপদ, সেই কথা ভেবে এই একটি বারের মত আমার নীরব দর্শকের ভূমিকা ত্যাগ করলাম। আমি বলছি: ছোট্ট বন্ধুরা, বটগাছ থেকে সাবধান হও! বন্ধুরা আমার, তোমাদেরকে একটা বিপদ সর্ম্পকে অবহিত করছি। এই বিপদ তোমার আমার, আমাদের সকলের। এবং এই জন্য আমি অনেক কষ্ট করে এই ছবিটা এঁকেছি। এছবি থেকে তোমরা যা শিখতে পারবে, তাতেই আমার শ্রম সার্থক হবে। তোমাদের মনে প্রশ্ন যাগতে পারে; এই বইয়ে বটগাছের ছবির মত এত সুন্দর ছবি আর নাই কেন? জবাবটা খুবই সহজ, চেষ্টা করেছি, কিন্তু পারিনি। বটগাছের ছবিটা আঁকার সময়, আমি তার গুরুত্ব খুব বেশী পরিমানে অনুধাবন করেছি। চলবে...
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭ বিকাল ৩:৩৯
১৬টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

কোরআন কী পোড়ানো যায়!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৮

আমি বেশ কয়েকজন আরবীভাষী সহপাঠি পেয়েছি । তাদের মধ্যে দু'এক জন আবার নাস্তিক। একজনের সাথে কোরআন নিয়ে কথা হয়েছিল। সে আমাকে জানালো, কোরআনে অনেক ভুল আছে। তাকে বললাম, দেখাও কোথায় কোথায় ভুল... ...বাকিটুকু পড়ুন

সেঞ্চুরী’তম

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:১৪


লাকী দার ৫০তম জন্মদিনের লাল গোপালের শুভেচ্ছা

দক্ষিণা জানালাটা খুলে গেছে আজ
৫০তম বছর উকি ঝুকি, যাকে বলে
হাফ সেঞ্চুরি-হাফ সেঞ্চুরি;
রোজ বট ছায়া তলে বসে থাকতাম
আর ভিন্ন বাতাসের গন্ধ
নাকের এক স্বাদে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইরানের প্রেসিডেন্ট কি ইসরায়েলি হামলার শিকার? নাকি এর পিছে অতৃপ্ত আত্মা?

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২০ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:৩৯


ইরানের প্রেসিডেন্ট হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত হয়ে নিহত!?

বাঙালি মুমিনরা যেমন সারাদিন ইহুদিদের গালি দেয়, তাও আবার ইহুদির ফেসবুকে এসেই! ইসরায়েল আর।আমেরিকাকে হুমকি দেয়া ইরানের প্রেসিডেন্টও তেমন ৪৫+ বছরের পুরাতন আমেরিকান হেলিকপ্টারে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ভণ্ড মুসলমান

লিখেছেন এম ডি মুসা, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:২৬

ওরে মুসলিম ধর্ম তোমার টুপি পাঞ্জাবী মাথার মুকুট,
মনের ভেতর শয়তানি এক নিজের স্বার্থে চলে খুটখাট।
সবই যখন খোদার হুকুম শয়তানি করে কে?
খোদার উপর চাপিয়ে দিতেই খোদা কি-বলছে?

মানুষ ঠকিয়ে খোদার হুকুম শয়তানি... ...বাকিটুকু পড়ুন

আসবে তুমি কবে ?

লিখেছেন সেলিম আনোয়ার, ২০ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১:৪২



আজি আমার আঙিনায়
তোমার দেখা নাই,
কোথায় তোমায় পাই?
বিশ্ব বিবেকের কাছে
প্রশ্ন রেখে যাই।
তুমি থাকো যে দূরে
আমার স্পর্শের বাহিরে,
আমি থাকিগো অপেক্ষায়।
আসবে যে তুমি কবে ?
কবে হবেগো ঠাঁই আমার ?
... ...বাকিটুকু পড়ুন

×