somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

খোকাবাবু চর্তুথ

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭ ভোর ৫:১১
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

আমি দ্বিতীয় আর একটা খুব গুরুত্ব পূর্ণ বিষয় জানলাম। খোকার গ্রহটা একটা বাড়ির চেয়ে খুব বড় না। এটা আমার কাছে খুব আর্শ্চ্যের বিষয় ছিলনা। আমি জানি যে, বড় বড় গ্রহ যেমন পৃথিবী, জুপিটার, মার্স, ভেনাস যাদের লোকে নাম দিয়েছে, এগুলি ছাড়াও শত শত গ্রহ আছে, যেগুলি দূরবীন দিয়েও খুব সহজে দেখা যায়না। যদি কোন মহাকাশ গবেষক এরকম কোন গ্রহ আবিষ্কার করেন, তাহলে নামের বদলে তাদের একটা নম্বর দেওয়া হয়। যেমন আষ্টেরইড নম্বর ৩২৫১। আমার বিস্বাস, খোকা বি-৬১২ নম্বর গ্রহ থেকে এসেছে। এই গ্রহটি শুধু একবার ১৯০৯ সালে একজন তুর্কী মহাকাশ গবেষক দেখেছেন।
তিনি আর্ন্তজাতিক মহাকাশ গবেষনা সম্মেলনে তার আবিষ্কার উপস্থাপন করেন। কেউ তার কথা বিস্বাস করলোনা, শুধু তার পোষাকের কারনে। সাবালক মানুষ গুলি এরকমই।
বি ৬১২ গ্রহটির সৈভাগ্য। কারন এর পর থেকে এক তুর্কী একনায়ক, সে দেশের মানুষদের শুধু ইউরোপিয়ান পোষাক পরিধানের নির্দেশ দেন। এই আদেশ লংঘন কারীর শাস্তি মৃত্যুদন্ড বলে ঘোষনাও করা হয়। তুর্কী মহাকাশ গবেষক ১৯২০ সালে ইউরোপিয়ান পোষাক পরে তার আবিষ্কার পূনরায় উপস্থাপন করেন। এবং বলাই বাহুল্য, এবার সবাই তার কথা বিস্বাস করল।
আমি যে তোমাদের বি ৬১২ নম্বর গ্রহ সম্পর্কে এসব বলছি এবং তা নম্বর সহ, সেটা কেবল সাবালকদের কারনে। তারা সংখ্যা খুব পছন্দ করে। তোমরা যখন একজন নতুন বন্ধুর কথা বল, তখন তারা গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার গুলি নিয়ে কিছুই বলেনা। তারা কখনই জানতে চায়না: তার গলার সুর কেমন? কোনটা তার প্রিয় খেলা? ও কি প্রজাপতি পছন্দ করে? তারা জানতে চায়: তার বয়স কত? তারা ক'জন ভাইবোন? তার ওজন কত? তার বাবার কত টাকা আছে? এসব জানা হলেই মনে করে নতুন বন্ধুটিকে চিনতে পেরেছে। যদি বড়দের বল:
আমি খুব সুন্দর লাল টালীর ছাদ ওয়ালা একটা বাড়ি দেখেছি। ছাদে অনেক কবুতর ছিল। জানালায় সুন্দর পর্দা টানানো। তখন তারা ঐ বাড়াটার কথা কল্পনাও করতে পারবেনা। তাদেরকে বলতে হবে: আমি লাখ টাকা দামের একটা বাড়ি দেখেছি, যান! তখন তারা লাফিয়ে উঠে বলবে:
বাহ্ ! কি চমৎকার !
কিন্তু যদি বল: খোকাবাবু সত্যি সত্যিই ছিল, তার প্রমান, সে খুবই সুন্দর ছিল। হাসতো এবং একটা ভেড়া চেয়েছিল। যদি কেউ একটা ভেড়া চায়, তারমানে সে জীবন্ত। তখন তারা হাই তুলবে আর ভাববে বোকা পোলাপান। কিন্তু যদি বল: খোকাটা বি ৬১২ নম্বর গ্রহ থেকে এসেছিল। তখন খূশী হয়ে তোমাদের কথা বিশ্বাস করবে। সাবালকরা এরকমই। তাদের দোষ দিয়ে লাভ নেই। শিশুরা বড়দের প্রতি খুবই দায়ীত্বশীল হতে হয়।
আমরা যারা বুঝি জীবনটা আষলে কী, তাদের জন্য এসব সংখ্যা এবং নম্বর খুবই হাস্যকর। আষলে আমি গল্পটা রূপকথার মতই শুরু করতে চেয়েছিলাম। যেমন:
এক গ্রহে এক রাজকুমার ছিল। তার গ্রহটি তার শরীরের চেয়ে খুব বড় ছিল না। তার একজন বন্ধু খুব প্রয়োজন ছিল। যারা জীবন সর্ম্পকে সত্যিই খুব সচেতন তাদের কাছে গল্পটা এভাবে বললেই খুব সত্যি মনে হত।
আমি চাইনা লোকে আমার বই খুব হাল্কা ভাবে দেখুক। ঘটনা গুলি বলতে আমার অনেক কষ্ট হয়। ছ'বছর হল, আমার বন্ধু তার ভেড়াটি নিয়ে চলে গেছে। এখানে আমি তার কথা বলছি, যাতে আমি তাকে ভূলে না যাই। একজন বন্ধুকে ভূলেযাওয়া খুব বেদনা দায়ক। সব লোকের কপালে বন্ধু যোটেনা। আমি বড়দের মত হয়ে যেতে পারতাম, যারা শুধু সংখ্যা নিয়ে ব্যস্ত। সেই ভয়ে আমি একটা রং-তুলির বাকস, আর আঁকার জন্য পেন্সিল কিনেছি।
আমার বয়সে নতুন করে আঁকা শুরু করা যথেষ্ট কঠিন। কারন ছ'বছর বয়সের পর অজগরের ভেতর-বাহির ছাড়া আর কিছুই আমি আঁকিনি। আমি ছবিগুলি যতটা সম্ভব বাস্তব সম্মত করে আঁকার চেষ্টা করব। কিন্তু আমি যানিনা তা পারব কিনা। দু'একটা কোন রকমে চলে। কিন্তু অন্য গুলি খুব ভাল নয়। মাপ টাপোও ঠিকমত নিতে পারি না। কোথাও খোকা অনেক বড়, আবার কোন কোন যায়গায় খুব ছোট। ছবিতে তার পোশাক-আসাকের রং ঠিকমত তুলে ধরাও কঠিন। আমি যথাসাধ্য চেষ্টা করছি। কিন্তু তার পরেও কোন গুরুত্বপূর্ণ জিনিস হয়ত ভূলেও যেতে পারি। সেটা বুঝতে হবে, কারণ আমার বন্ধু আমাকে কোনকিছুর ব্যাখ্যা দেয়নি। হয়ত: সে ভেবেছে আমিও তার মতই বুদ্ধিমান। কিন্তু ছবিতে আঁকা বাকসের ছিদ্র দিয়ে, ভেড়া দেখার যোগ্যতা, আমার নেই। আমিও প্রায় বয়স্ক লোকদের মতই। সময়ের সাথে সাথে আমারোতো বয়স বেরেছে
চলবে...
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্কুলের বাচ্চাদের ভয় দেখানো উচিত হয় নাই

লিখেছেন সাড়ে চুয়াত্তর, ২২ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

ফরিদপুরে একটা গার্লস স্কুলের ১৫ থেকে ২০ জন মেয়েকে দিনে দুপুরে এক বা একাধিক ভুত এসে ভয় দেখিয়ে গেছে। আমার মতে ভুতেরা এই কাজটা ঠিক করে নাই। ক্লাস সিক্স থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

লাডাইটসঃ প্রযুক্তি যাদের চাকরি কেড়ে নিয়েছিল

লিখেছেন অপু তানভীর, ২২ শে মে, ২০২৪ সকাল ১১:০২



কর্মক্ষেত্রে আধুনিক যন্ত্রপাতি আর প্রযুক্তির ব্যবহারের একটা অর্থ হচ্ছে কিভাবে আরো কম লোকবল ব্যবহার করে আরো বেশি পরিমান কাজ করানো যায় ! আর এআই এর বেলাতে এই লোকবলের সংখ্যা... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাত্র ৯৭ রানের জন্য প্রথম টি-টুয়েন্টি সেঞ্চুরি মিস করলো শান্ত!!!

লিখেছেন ভুয়া মফিজ, ২২ শে মে, ২০২৪ দুপুর ১২:০২



বাংলাদেশের ক্রিকেট দলের ক্যাপ্টেন লর্ড শান্ত'র ব্যাডলাকের ভাগ্য খারাপ। চমৎকার খেলছিল। ১১ বলে ৩ রান করার পর হঠাৎই ছন্দ পতন। এতো কাছে গিয়েও সেঞ্চুরি মিস। কি আর করা.........আসলে শান্তর... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বর্গের নন্দনকাননের শ্বেতশুভ্র ফুল কুর্চি

লিখেছেন মরুভূমির জলদস্যু, ২২ শে মে, ২০২৪ বিকাল ৫:১৭


কুর্চি
অন্যান্য ও আঞ্চলিক নাম : কুরচি, কুড়চী, কূটজ, কোটী, ইন্দ্রযব, ইন্দ্রজৌ, বৎসক, বৃক্ষক, কলিঙ্গ, প্রাবৃষ্য, শক্রিভুরুহ, শত্রুপাদপ, সংগ্রাহী, পান্ডুরদ্রুম, মহাগন্ধ, মল্লিকাপুষ্প, গিরিমল্লিকা।
Common Name : Bitter Oleander, Easter Tree, Connessi Bark,... ...বাকিটুকু পড়ুন

হরিপ্রভা তাকেদা! প্রায় ভুলে যাওয়া এক অভিযাত্রীর নাম।

লিখেছেন মনিরা সুলতানা, ২২ শে মে, ২০২৪ সন্ধ্যা ৬:৩৩


১৯৪৩ সাল, চলছে মানব সভ্যতার ইতিহাসের ভয়াবহ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। টোকিও শহর নিস্তব্ধ। যে কোন সময়ে বিমান আক্রমনের সাইরেন, বোমা হামলা। তার মাঝে মাথায় হেলমেট সহ এক বাঙালী... ...বাকিটুকু পড়ুন

×