somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষার মান : সমস্যা ও উত্তরণের উপায়। পর্ব- ৩; শিক্ষার মানের অধোগতির কারনসমূহ - ১

০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭ রাত ১২:১৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এর আগের পর্ব দুটিতে (বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষার মান : সমস্যা ও উত্তরণের উপায়। পর্ব- ১ ও ২) এ আলোচনা করেছিলাম আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সূচকগুলির আলোকে বাংলাদেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অবস্থা। এই পর্বে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষা মানের অবনতির প্রধান প্রধান কারনসমূহ নিয়ে আলোচনা করব। আজ থাকল এর প্রথম পর্ব।

শিক্ষার মানের অধোগতির প্রধান কারণসমূহ
পরিস্থিতি সার্বিক বিবেচনায় হতাশাজনক মনে হলেও এর মধ্যেও যথাযথ আন্তরিকতার মাধ্যমে উন্নতির প্রভূত সুযোগ রয়েছে। কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয় তা হচ্ছে না। কেন এই অবস্থা ? নজর দেয়া যাক শিক্ষার মানের অধোগতির প্রধান কারণগুলির দিকে -

# শিক্ষার মানের সূচকের অধোগতি এর প্রধান কারণ সমূহ হিসাবে চিহ্নিত করা যায় নিম্নোক্ত বিষয়গুলিকে -
- বিশ্ববিদ্যালয়সমুহের অ-পর্যাপ্ত তহবিল
- শিক্ষকদের স্বল্প বেতন ও গবেষণায় উদাসীনতা
- গবেষণা উপযোগী গবেষণাগারের প্রকট অভাব
- শিক্ষক রাজনীতি ও রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগ
- ছাত্র রাজনীতি
- বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতা ও উদ্যোগের অভাব
- মানসম্পন্ন জার্নাল এর অভাব
- বে-সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্থান

এখন আসুন এই কারনগুলিকে একটু বিস্তারিতভাবে আলোচনা করি -

# বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের অ-পর্যাপ্ত তহবিল

দেশের পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অ-লাভজনক প্রতিষ্ঠান। বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর নয়। ছাত্র-ছাত্রীপ্রদত্ত টিউশন ফি ব্যতীত বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আয়ের কোন উৎস নাই। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে তাই নির্ভর করতে হয় সরকারী বরাদ্দের উপর যা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন কর্র্তৃক মূলত নিয়ন্ত্রিত। তহবিল সংকটের কারণে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি শিক্ষা মান এর উন্নয়ন করতে পারছে না একথা নির্দ্বিধায় বলা যায়। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে অর্থনৈতিকভাবে স্বনির্ভর করা না গেলে বা সরকার যদি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মান উন্নয়নে যথেষ্ট পরিমানে অর্থ বরাদ্দ না করে তবে অদূর ভবিষ্যতে এ সংকট দূর হবার কোন লক্ষণও নাই।

এ ক্ষেত্রে পাকিস্তানের উদাহরণ দেয়া যেতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার মান উন্নয়নে সম্প্রতি সেখানে বৈপ্লবিক পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে । বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বরাদ্দ বাড়ানো হয়েছে পূর্বের কয়েকগুণ, কোন কোন ক্ষেত্রে ২০-২৫ গুণ পর্যন্ত। টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে দক্ষ মানবসম্পদ সৃষ্টির ক্ষেত্রে এরূপ পদক্ষেপ ছাড়া কোন বিকল্প নেই। ইতিপূর্বে মালয়েশিয়াতেও একই রকম উদ্যোগে সফলতা লাভ করা গেছে।

অপর্যাপ্ত পাঠাগার সুবিধা, গবেষণা অনুপযোগী গবেষণাগার, ক্লাস রুমের সংকট, শিক্ষা উপকরণের গুণগত মানের অভাবসহ সবকিছুর মূলেই রয়েছে তহবিল সংকট। এর কারণেই অনেক সময় উদ্যমী গবেষকও হতোদ্যম হয়ে পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয়গুলিকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসকগণও কোন কার্যকরী ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারছেন না। তবে এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপরে নিজস্ব চেষ্টার অনুপস্থিতিও লক্ষণীয়।

# শিক্ষকদের স্বল্প বেতন ও গবেষণায় উদাসীনতা

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষার মানের অধোগতির অন্যতম একটি প্রধান কারণ হচ্ছে শিক্ষকদের স্বল্প বেতন। জাতির শ্রেষ্ঠ মেধাবী ছাত্রটি যখন অনেক স্বপ্ন নিয়ে দেশের সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠগুলির শিক্ষক হিসাবে কর্মজীবনে প্রবেশ করে তখনই তাকে মুখোমুখি হতে হয় রূঢ় বাস্তবতার। একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিককে বেতন ভাতা হিসাবে যা প্রদান করা হয় তা সম্মানজনকভাবে বেঁচে থাকার জন্য একেবারেই অপ্রতুল। গবেষণা বা এ জাতীয় কাজের প্রয়োজনীয় তত্ব উপাত্ত সংগ্রহের কথা বাদ দেয়া ছাড়া অধিকাংশ সময় তার সামনে কোন বিকল্প থাকেনা ।

অর্থনৈতিকভাবে পঙ্গু কারো পক্ষে যেমন সৃষ্টিশীল কোন কিছু উপহার দেয়া সম্ভব নয় ঠিক তেমনি ভাবে অর্থনৈতিকভাবে অস্বচ্ছল একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক হারিয়ে ফেলেন তার উদ্যম, তার মেধার হয় নির্লজ্জ অপচয়।

জীবিকা নির্বাহের জন্য তাকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকতার পাশাপাশি অন্য কিছু করার চেষ্টা করতে হয়। এর অবশ্যাম্ভাবী ফসল হিসাবে আসে গবেষণায় উদাসীনতা। ছাত্ররা বঞ্চিত হয় একজন বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকের কর্মময়তা থেকে, নতুন জ্ঞান সৃষ্টির পথ হয় রুদ্ধ। আর সার্বিকভাবে এর বিরূপ প্রতিক্রিয়া পড়ছে শিক্ষার মানের উপর।

অর্থনৈতিক কারণ ছাড়াও সাম্প্রতিক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকগণের গবেষণায় উদাসীনতা একটি প্রকট সমস্যা হিসাবে উদ্ভূত হয়েছে। সিনিয়র শিক্ষকদের গবেষণা কর্মকান্ডে অনুপস্থিতি সংক্রমিত হচ্ছে জুনিয়র শিক্ষকদের মাঝে। ফলে সীমিত সামর্থ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্রয় করা মূল্যবান গবেষণা যন্ত্রপাতি দিন দিন ব্যবহার না করায় নষ্ট হয়ে যাচ্ছে, যা পরবর্তী গবেষণা কার্যকে আরো অসম্ভব করে তুলছে। অতীতে বিশ্ববিদ্যালয়সমূহের শিক্ষকদের গবেষণাকর্ম দেশ ও জাতিকে আন্দোলিত করলেও বর্তমানে এরূপ শিক্ষক বা গবেষণাকর্মের কথা খুব কমই শোনা যায়।

# গবেষণা উপযোগী গবেষণাগারের প্রকট অভাব

গবেষণা হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণ। গবেষণাই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সাধারন এটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের পার্থক্য গড়ে দেয়। কিন্তু বর্তমান সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে গবেষণা উপযোগী গবেষণাগার এর প্রকট অভাব পরিলতি হচ্ছে। বিদ্যমান গবেষণাগার এ আন্তর্জাতিকমানের গবেষনা করা নিতান্তই আকাশ কুসুম কল্পনা।
অধিকাংশ গবেষণাগারই অসম্পূর্ণ এবং অনেক ক্ষেত্রে ব্যবহার অনুপযোগী ও অপ্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিতে সমৃদ্ধ। শিক্ষার মান উন্নয়নে এই সকল গবেষনা ও গবেষনাগার কোন ভূমিকা রাখতে পারছেনা। আর যেহেতু গবেষনা কর্মের গুণগতমান আশানুরূপ নয় তাই দেশে আন্তর্জাতিকমানের জার্নাল এর প্রকাশনাও হচ্ছে খুবই সীমিত আকারে। দেশীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণ বিদেশী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকগণের সাথে তাদের গবেষণা কর্ম নিয়ে আলাপ আলোচনা করে গবেষণা কার্যক্রম এগিয়ে নিয়ে যাবারও সুযোগ পাচ্ছেন না।

# শিক্ষক রাজনীতি

কিছুটা দুঃখজনক হলেও সত্যি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার মান অবনতির জন্য বর্তমানে প্রচলিত ধারার শিক্ষক রাজনীতিও একটি প্রধান কারণ। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকগণ জাতির সূর্য সন্তান, জাতির বিবেক। তাদের রাজনৈতিক মতাদর্শ থাকবে, তারা এর চর্চা করবেন সেটাই স্বাভাবিক। দেশ ও জাতির বিভিন্ন ক্রান্তিলগ্নে তারা তাদের রাজনৈতিক প্রজ্ঞা দিয়ে সঠিক পথের সন্ধান দেবেন সেটাই কাম্য। কিন্তু অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় শিক্ষক রাজনীতির নামে বর্তমানে যা চলছে তা অনেক ক্ষেত্রেই শিক্ষকদের ঐক্যবদ্ধ করার চেয়ে তাদের বহুধাবিভক্ত করছে।

শিক্ষক ও ছাত্র স্বার্থ বিবর্জিত তথা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার সাথে সম্পর্কহীন অনেক ক্ষেত্রে শিক্ষকদের অংশগ্রহণ শিক্ষক রাজনীতির মূল সুরকেই নষ্ট করছে। জাতীয় রাজনীতির দেউলিয়াপনা আজ শিক্ষক রাজনীতিকে গ্রাস করতে বসেছে। এর ফলে একাডেমিক কাজে শিক্ষকদের অংশগ্রহণ কমে যাচ্ছে, গবেষণায় সময় দেবার পরিবর্তে রাজনীতি নিয়েই মেতে থাকছেন কিছু সংখ্যক শিক্ষক।

শিক্ষকদের এই সকল কর্মকান্ডের ফলে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির শিক্ষা কার্যক্রম দারুণভাবে ব্যহত হচ্ছে। শিক্ষক রাজনীতির টানাপোড়েনে বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থিতিশীলতা এখন একটি স্বাভাবিক বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। শিক্ষকদের অর্থনৈতিক অস্বচ্ছলতাও তাদের রাজনীতিতে ব্যাপকভাবে জড়িয়ে পড়ার একটি কারণ।

শিক্ষক রাজনীতির কারণে বেড়েছে দলীয়করণের প্রবণতা ও রাজনৈতিক বিবেচনায় শিক্ষক নিয়োগের সংখ্যা যার ফলে দিনে দিনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি হারিয়েছে শুধুমাত্র শিক্ষাদানে আত্মনিবেদিত এক সমৃদ্ধ শিক্ষকমন্ডলী থেকে। উন্নত বিশ্বেও যে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি শিক্ষার উঁচু মানের কারণে সমাদৃত সেখানে কোথাও এই ধারার শিক্ষক রাজনীতির উপস্থিতি নেই। শিক্ষা ও গবেষণায় ব্যস্ত শিক্ষকমন্ডলী এই ধরণের রাজনীতির কথা কল্পনাও করতে পারেন না।

আগামী পর্বে ছাত্র রাজনীতিসহ অন্যান্য যে সকল বিষয় শিক্ষার মানের ক্রমাবনতিতে ভূমিকা রাখছে সেগুলি আলোচনার আশা রাখি।
সর্বশেষ এডিট : ০৯ ই সেপ্টেম্বর, ২০০৭ রাত ১২:৪০
১৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

অপরূপের সাথে হলো দেখা

লিখেছেন রোকসানা লেইস, ১৪ ই মে, ২০২৪ রাত ১:৩৫



আট এপ্রিলের পর দশ মে আরো একটা প্রাকৃতিক আইকন বিষয় ঘটে গেলো আমার জীবনে এবছর। এমন দারুণ একটা বিষয়ের সাক্ষী হয়ে যাবো ঘরে বসে থেকে ভেবেছি অনেকবার। কিন্তু স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমরা কেন এমন হলাম না!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ৯:৪১


জাপানের আইচি প্রদেশের নাগোইয়া শহর থেকে ফিরছি৷ গন্তব্য হোক্কাইদো প্রদেশের সাপ্পোরো৷ সাপ্পোরো থেকেই নাগোইয়া এসেছিলাম৷ দুইটা কারণে নাগোইয়া ভালো লেগেছিল৷ সাপ্পোরোতে তখন বিশ ফুটের বেশি পুরু বরফের ম্তুপ৷ পৃথিবীর... ...বাকিটুকু পড়ুন

অভিমানের দেয়াল

লিখেছেন মোঃ মাইদুল সরকার, ১৪ ই মে, ২০২৪ সকাল ১১:২৪




অভিমানের পাহাড় জমেছে তোমার বুকে, বলোনিতো আগে
হাসিমুখ দিয়ে যতনে লুকিয়ে রেখেছো সব বিষাদ, বুঝিনি তা
একবার যদি জানতাম তোমার অন্তরটাকে ভুল দূর হতো চোখের পলকে
দিলেনা সুযোগ, জ্বলে পুড়ে বুক, জড়িয়ে ধরেছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

আমাদের গ্রামে মুক্তিযুদ্ধের প্রস্তুতি

লিখেছেন প্রামানিক, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩১



২৬শে মার্চের পরে গাইবান্ধা কলেজ মাঠে মুক্তিযুদ্ধের উপর ট্রেনিং শুরু হয়। আমার বড় ভাই তখন ওই কলেজের বিএসসি সেকেন্ড ইয়ারের ছাত্র ছিলেন। কলেজে থাকা অবস্থায় তিনি রোভার স্কাউটে নাম... ...বাকিটুকু পড়ুন

বিকেল বেলা লাস ভেগাস – ছবি ব্লগ ১

লিখেছেন শোভন শামস, ১৪ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৪৫


তিনটার সময় হোটেল সার্কাস সার্কাসের রিসিপশনে আসলাম, ১৬ তালায় আমাদের হোটেল রুম। বিকেলে গাড়িতে করে শহর দেখতে রওয়ানা হলাম, এম জি এম হোটেলের পার্কিং এ গাড়ি রেখে হেঁটে শহরটা ঘুরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×