somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তাঁর জন্য ভালবাসা যিনি সারাজাহানের জন্য আল্লাহর রহমত - শেষ পর্ব

০৩ রা সেপ্টেম্বর, ২০০৭ সকাল ১০:৫৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্বঃ কে তিনি

দ্বীতিয় পর্বঃ কেন তাঁকে ভালবাসতে হবে?

৩য় পর্বঃ কি দাবী তাঁর ভালবাসার

===============================
মানবতার বন্ধু তিনি - কল্যাণ ও সমগ্র সৌন্দর্যের বিমূর্ত প্রতীক। রহমত, ভালবাসা, করুণা, দয়া ও মানুষের প্রতি শুভকামনার পরিপূর্ণ সমাবেশ ঘটেছে তাঁর চরিত্রে। তিনি আদমের সন্তানদের শ্রেষ্ঠতম - আল্লাহর বাণীবাহকদের সর্দার। হেরা গুহার অন্ধকারে তাঁর কাছে কুরআনের নূর পাঠানো হয়েছে মানবতাকে মূর্খতার আঁধার থেকে বের করে জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করতে।
===============================

কি লাভ তাঁকে ভালবেসে?
ঈমানের প্রকৃত স্বাদ আস্বাদন করা মুমিন মাত্রেরই আকাংখা। আর এর প্রকৃত মধূময় স্বাদ আস্বাদন করেছে তারা যারা রসূলুল্লাহকে (সঃ) ভালবেসেছে আন্তরিকতা ও সন্তুষ্টির সাথে।

ইমাম মুসলিম ও হাদীসের অন্যান্য সংকলকরা আব্বাস (রাঃ) ইবন আব্দুল মুত্তালিব থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি রসূলুল্লাহকে বলতে শুনেছেন, “সে-ই ঈমানের সুমিষ্ট স্বাদ আস্বাদন করতে পেরেছে যে আল্লাহকে রব্ব, ইসলামকে দীন এবং মুহাম্মদকে (সঃ) রসূল হিসেবে পেয়ে সন্তুষ্ট হয়েছে।”

ইমাম বুখারী ও মুসলিমের আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করা এক হাদীসের উদ্ধৃতি আমরা আগে পেশ করেছি যেখানে রসূলুল্লাহ্ (সল্লাল্লাহু আলায়হি ওআ সাল্লাম) বলেছেন, “তিনটি গুন এমন যার মাঝে ওগুলো বর্তমান সেই মূলতঃ ঈমানের স্বাদ আস্বাদন করেছে: (১) ঐ ব্যক্তি যার কাছে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল জগতের সবকিছুর চেয়ে প্রিয়; (২) ঐ ব্যক্তি যে শুধু আল্লাহর ওআস্তে কাউকে ভালবাসে; এবং (৩) ঐ ব্যক্তি যে ঈমান থেকে কুফরীতে ফিরে যাওয়াকে তেমন ঘৃণা করে যেমন ঘৃণা করে সে আগুনে নিক্ষিপ্ত হওয়াকে।”

যে যাকে ভালবাসে সে তার সাথে থাকে, তার সাথে থাকার আকাঙ্খী থাকে; এবং তার সাথে থাকতে পারলে নিজকে ধন্য মনে করে। রসূলুল্লাহকে – সল্লাল্লাহু আলায়হি ওআ সাল্লাম – ভালবাসলে তাঁর সাথেই থাকার ব্যবস্থা করবেন আল্লাহ্। ইমাম বুখারী ও মুসলিম আবদুল্লাহ ইবন মাসউদ থেকে – আল্লাহ্ সন্তুষ্ট হোন তার উপর – বর্ণনা করেছেন, “এক ব্যক্তি রসূলুল্লাহর (সঃ) কাছে এসে বলল, হে আল্লাহর রসূল! এক ব্যক্তি কোন সম্প্রদায়কে ভালবাসে কিন্তু তাদের সাথে মিলিত হতে পারছেনা। এ ব্যক্তি সম্পর্কে আপনি কি বলেন? রসূলুল্লাহ্ (সঃ) বললেনঃ যে ব্যক্তি যাকে ভালবাসে সে (পরকালে) তার সাথেই থাকবে।”

তাঁর প্রতি ভালবাসা সেদিনও আমাদের জন্য পাথেয় হবে যেদিন সৎকাজের সংগ্রহ ছাড়া আর কোন পাথেয় কারো থাকবেনা। ইমাম বুখারী ও মুসলিম আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণনা করেছেন যে তিনি বলেন, “এক বেদুঈন (মরুচারী গ্রাম্য আরব) রসূলাল্লাহকে (সঃ) বললোঃ কিয়ামত কখন হবে? তিনি বললেনঃ এজন্য তুমি কি পাথেয় সংগ্রহ করেছো? সে বললোঃ আল্লাহ ও তার রসূলের প্রতি ভালবাসা।” অন্য বর্ণনায় বলা হয়েছেঃ “সে বললো, (নফল) রোজা, নামাজ, সদকা, ইত্যাদি খূব বেশী সংগ্রহ করতে পারিনি, তবে আমি আল্লাহ ও তাঁর রসূলকে ভালবাসি।”

শেষকথা
আল্লাহর রসূল মুহাম্মদকে – আল্লাহর করুণা ও শান্তি বর্ষিত হোক তাঁর উপর – ভালবাসতে হবে। কারণ তাঁর মাধ্যমে মানব সভ্যতার প্রতি মহাঅনুগ্রহ দেখিয়েছেন মহামহিম দয়ালু আল্লাহ। তাঁর দেখানো পথেই শুধু আমাদের জন্য দুনিয়া এবং আখিরাতের কল্যাণ নিহিত রেখেছেন আমাদের বরকতময় প্রতিপালক। তাই আসুন! তাঁর প্রতি ভালবাসাকে আর সব ভালবাসার উপর প্রধান্য দেই; তাঁর শেখানো পন্থায় জীবন যাপন করি; তাঁর আনীত বিধান এবং শিক্ষাকে বুলন্দ করতে প্রাণান্তকর চেষ্টায় নিবেদিত হই। রসূলের (সঃ) শিক্ষার বিপরীত অথবা তাঁর শেখানো পন্থায় অনুপস্থিত বন্দেগীর এমন সব পথ পরিহার করি। এ প্রচেষ্টাতেই শুধু সাফল্য। আর এ কাজের ব্যর্থতার অনিবার্য পরিণতি হলো ধ্বংস ও আযাব। মহান আল্লাহ্ সাবধান করেছেন এ ব্যাপারে। তিনি বলেছেন (তাঁর কালামের তরজমা), “(হে নবী!) আপনি বলে দিন, যদি তোমাদের পিতারা, সন্তানেরা, ভাইয়েরা, স্ত্রীরা, আত্মীয়-স্বজনরা, সেই সম্পদ যা তোমরা উপার্জন করেছো, সেই ব্যবসা যার ক্ষতির তোমরা আশংকা করো, এবং তোমাদের সেই বসত-বাড়ি যা তোমরা পসন্দ করো তোমাদের কাছে আল্লাহ্ ও তাঁর রসূল এবং তাঁর রাস্তায় জিহাদ করার চেয়ে বেশী প্রিয় হয় তাহলে তোমরা অপেক্ষা করো আল্লাহ তার নির্দেশ (আযাব) নিয়ে আসা পর্যন্ত। আর আল্লাহ (এ ধরনের) ফাসিকদের সঠিক পথের দিশা দান করেননা।” (আত-তওবা; ৯:২৪)
৭টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×