somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

এবং সেনাবাহিনী ...

২২ শে আগস্ট, ২০০৭ রাত ২:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ঢাবিতে সংঘঠিত ঘটনাটি দুঃখজনক, তবে আমার কাছে আশ্চর্যজনক নয়। ইতিপূর্বেও সেনাবাহিনীর সদস্য কর্তৃক সাধারণ মানুষের সাথে প্রভুসুলভ আচরণ করার ঘটনা আমি নিজ চোখে দেখেছি।

এরা আমাদের কী মনে করে? পিপিলিকা, তেলাপোকা কিংবা কেচোঁ?

বিগত জোট সরকারের আমলে অপারেশন ক্লিনহার্ট চলাকালে আমার শহরে সেনা টহল ছিল নিয়মিত। তখন সেনাবাহিনীর আচরণে শহরের তরুণ-যুবারা ছিল অতিষ্ঠ। আমার এক বন্ধুর বাবা তার জন্য বিদেশ থেকে খুব দামি একটি মোবাইল সেট পাঠিয়েছিলেন। তো আমরা বন্ধুরা সবাই মিলে এক বিকেলে কলেজ মাঠে বসে গল্প করছিলাম। এ সময় কলেজের পাশ দিয়ে যাবার কালে সেনাবাহিনীর একদল চৌকস দলের নজর পড়ে আমাদের দিকে। সরাসরি চার্জ- ‌‌‌‌"এই ছেলেরা কী কর তোমরা?" ‌" জী আমরা বন্ধুরা গল্প করছি।" সাথে সাথে ধমক " যাও, বাসায় যাও।" আমরা ফিরছিলাম। হঠাত এক সেনাসদস্যের চোখে পড়ল আমার বন্ধুর হাতে থাকা মোবাইল সেটটির দিকে। তিনি হুংকার ছাড়লেন " এই ছেলে দাঁড়া!" শুরু করলেন তুই-তোকারি। অথচ আমরা সবাই অনার্স লেভেলের স্টুডেন্ট। তড়িত প্রশ্ন- " তুই এই সেট কোথায় পেলি?" বন্ধু জবাব দিল - বাবা পাঠিয়েছে। আবার হুংকার- " তুই স্টুডেন্ট। এতো দামি জিনিস ব্যবহার করিস কেন? ভাং এটাকে।" আমাদের তো আক্কেলগুড়ুম। বলে কি? আমার বন্ধুরতো চোখ উল্টে যাবার দশা। সে বললো- "আমি ভাংতে পারবো না। এটা আমার খুব সখের জিনিস।" টাস্। চড়ের শব্দে আমরা সবাই চমকে উঠলাম। ইতিমধ্যে আশেপাশে বেশ লোকজন জড় হয়েছে। সবার সামনেই আমার বন্ধুকে চড় মারলো ওই মহান! সেনাসদস্য। তার চোখে পানি এসে গেল। আশপাশে দাঁড়িয়ে যারা মজা দেখছিল সবাই আমাদের চিনে, আমরা সবাইকে চিনি। আবার হুংকার " পা দিয়ে মাড়িয়ে ভাং নয়তো তোর পোন্দে দিমু এটা"। এবার আর বন্ধু বাড়াবাড়ি করলো না। বাবার পাঠানো তার সখের সেটটিকে নিজ পায়ে মাড়িয়ে গুঁড়ো গুঁড়ো করলো। সেটের শোক সে কাটিয়ে উঠেছিল দু'দিনেই। কিন্তু লোকসম্মুখে তাকে যেভাবে চড় মারা হল তা' সে আজো ভুলতে পারে নি। হয়তো পারবেও না। আত্মসম্মান খুব খারাপ জিনিস।

এমন কয়েক শতাধিক ঘটনা তখন সেনাবাহিনীর সদস্যরা আমাদের শহরে ঘটিয়ে ফেলেছিল। যার অধিকাংশই ছিল সাধারণ মানুষের কাছে অত্যাচারের মতো।

কিছুক্ষণ আগে আমার সেই বন্ধু ঢাকা থেকে ফোন করলো। "দোস্ত দেখেছিস আমাদের গর্বিত সেনা সদস্যদের কীভাবে ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত করা হলো? উচিত শিক্ষা হয়েছে"। আমিও ভাবি ঠিক তাই। উচিত শিক্ষাই। কিন্তু এভাবে কতোদিন?

সেনাবাহিনী দেশের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা রক্ষাকারী বাহিনী। সর্বোচ্চ সম্মানিত বাহিনীও বটে। সেই সেনাবাহিনী যদি পুলিশের চেয়ে নিম্নতর আচরণ করে তাহলে তাদের ওজনটা যেন আর থাকছে না। দু'বছর আগেও সেনাবাহিনীর গাড়ি কোন রাস্তা দিয়ে গেলে মানুষ হতচকিত হয়ে উঠতো। কিন্তু এখন? উহু!

সেনাবাহিনীর প্রতি অনুরোধ। আপনারা নিজেদের সম্মান ও সমীহের স্তরেই রাখুন। নয়তো দেশের সর্বোচ্চ দুর্যোগপূর্ণ অবস্থায় আপনারা দেশের মানুষের কোন উপকারেই আসতে পারবেন না।
১২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

স্মৃতিপুড়া ঘরে

লিখেছেন আলমগীর সরকার লিটন, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ সকাল ১১:৩০



বাড়ির সামনে লম্বা বাঁধ
তবু চোখের কান্না থামেনি
বালিশ ভেজা নীরব রাত;
ওরা বুঝতেই পারেনি-
মা গো তোমার কথা, মনে পরেছে
এই কাঠফাটা বৈশাখে।

দাবদাহে পুড়ে যাচ্ছে
মা গো এই সময়ের ঘরে
তালপাতার পাখাটাও আজ ভিন্নসুর
খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে... ...বাকিটুকু পড়ুন

গরমান্ত দুপুরের আলাপ

লিখেছেন কালো যাদুকর, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ দুপুর ১:৫৯




মাঝে মাঝে মনে হয় ব্লগে কেন আসি? সোজা উত্তর- আড্ডা দেয়ার জন্য। এই যে ২০/২৫ জন ব্লগারদের নাম দেখা যাচ্ছে, অথচ একজন আরেক জনের সাথে সরাসরি কথা... ...বাকিটুকু পড়ুন

রাজীব নূর কোথায়?

লিখেছেন অধীতি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৩:২৪

আমি ব্লগে আসার পর প্রথম যাদের মন্তব্য পাই এবং যাদেরকে ব্লগে নিয়মিত দেখি তাদের মধ্যে রাজীব নূর অন্যতম। ব্যস্ততার মধ্যে ব্লগে কম আসা হয় তাই খোঁজ-খবর জানিনা। হঠাৎ দু'একদিন ধরে... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা বৃষ্টির জন্য নামাজ পড়তে চায়।

লিখেছেন নূর আলম হিরণ, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ বিকাল ৪:৩৮



ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষার্থী গত বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে বৃষ্টি নামানোর জন্য ইসতিসকার নামাজ পড়বে তার অনুমতি নিতে গিয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এটির অনুমতি দেয়নি, যার জন্য তারা সোশ্যাল... ...বাকিটুকু পড়ুন

=তুমি সুলতান সুলেমান-আমি হুররাম=

লিখেছেন কাজী ফাতেমা ছবি, ২৮ শে এপ্রিল, ২০২৪ রাত ৮:৩৬



©কাজী ফাতেমা ছবি

মন প্রাসাদের রাজা তুমি, রাণী তোমার আমি
সোনার প্রাসাদ নাই বা গড়লে, প্রেমের প্রাসাদ দামী।

হও সুলেমান তুমি আমার , হুররাম আমি হবো
মন হেরেমে সংগোপনে, তুমি আমি রবো।

ছোট্ট প্রাসাদ দেবে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×