somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

টাইগারদের জলপাই ট্রেনিং

১৯ শে আগস্ট, ২০০৭ বিকাল ৫:৫৮
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

পত্রিকা খুললেই আমি সাধারণত চলে যাই খেলার পাতায়। খেলা আমাকে টানে, সেই সুবাদে খেলার সংবাদ।
উত্পল শুভ্র গং যেভাবে হাবলাবুল আর আশারফুল বাহিনীকে আগলে রাখেন চিল শকুনের থাবা থেকে, পারলে মাঠে গিয়ে খেলে দিয়ে আসেন- এইসব দারুণ রসালো প্রতিবেদন পড়তে কার না ভাল লাগে!
সর্বোপরি ছোটোবেলা থেকে গড়ে উঠা অভ্যাস। বাসায় সকালে পত্রিকা আসা মাত্র পাতা ভাগাভাগি। বড়দের জন্য প্রথম পাতা,বিশ্ব পাতা আর বিনোদন পাতা ছেড়ে দিতে হয়। আমাদের জন্য বরাদ্দ লেখাপড়ার পাতা আর না হয় খেলার পাতা। এভাবেই প্রতিদিন সকালে ক্রীড়া সাংবাদিকদের সাহিত্য পড়া রুটিনে ঢুকে গেছে। সকাল বেলার খাবার খেলার পাতা।

ইদানিং এই খেলার পাতা আমাকে আরো বেশি টানে।

কারণটা আর কিছুই না, বাঙ্লার দামাল কামাল, ক্রিকেটের সোনার ছেলেরা জলপাই মামাদের কাছ থেকে কমান্ডো ট্রেনিং নিচ্ছে, তার দৈন্যন্দিন বিবরণ পড়া।
জাতীয় ক্রিকেট দল এখন আর্মি ট্রেনিং নিচ্ছে, সিলেটে। যেনোতেনো ট্রেনিং না, কমান্ডো ট্রেনিং!

রাতে ঘুম হয় না। কখন আজকের দৈনিকের অনলাইন সংস্করণ বের হবে আর আমি খেলার পাতা খুলে টাইগারদের আর্মি ট্রেনিংয়ের বিশদ বিবরণ পড়ব সেই ভেবে আমার জিবে জল এসে যায়।
হঠাত ভুল করে ঘুমিয়ে গেলে স্বপ্নে দেখি তামিম ইকবালকে। পুরোদস্তুর যুদ্ধংদেহী। জলপাই পোষাকে, হাটু ডুবানো বুটে, পেট কামড়ানো বেঢপ বেল্টে, মাথা বাঁচানো হেলমেটে, বুক-বাহু-ডানায় প্লাস্টিকের সবুজ পাতার আড়ালে তামিমকে ভুলে কমরেড বলে সম্ভাষন করে ফেলি। এমনিতেই বল পিটানোয় জুড়ি নেই, তারউপর এখন দেখি হাতে রাইফেল, তার ডগায় বেয়নেট। থতমত খেয়ে ঘুম ভেঙ্গে যায়।
সিলেটের দুর্গম গিরি পথে টাইগাররা এক নয় দুই নয় দশ দশটি কেজি বয়ে পনেরো মিনিটে আট আটটা পাহাড় ডিঙ্গাচ্ছে, আমার রাত চারটের সময় ঘুম কাতর চোখে কমান্ডো গেমসের কথা মনে পড়ে।
সাবাশ বাঘের বাচ্চা বাঘ, সাবাশ।
সাবাশ ক্রিকেট কমান্ডো , সাবাশ।
সাকিবুল হাসান যদি সেনানী হতেন তাহলে নির্ঘাত জাতিসংঘের শান্তিমিশনে যোগ দিয়ে কোনো নিপীড়িত নির্যাতিত দেশের স্বাধীনতার সূর্য এক হাতেই এনে দিতেন। এই না হলে অলরাউন্ডার! জেনুইন কমান্ডোরা পর্যন্ত তার পার্ফর্মেন্সে ঈর্ষায় জ্বলে মরছে।
আশারফুল আশরাফুল বোধহয় দুনিয়ার একমাত্র সিল (sea air land) এই ত্রিমাত্রিক কারিশমা সম্পন্ন ক্যাপ্টেন হতে যাচ্ছেন। অভিন্দন আশরাফুল। দুনিয়ার একমাত্র কমান্ডো ক্যাপ্টেন!
ক্রিকেটের এই উন্নয়নের জোয়ারে সেদিন বেশি দূরে নেই যখন শুধু ডিম্বাকৃতি খটখটে মাঠে নয়, ঝোপজঙ্গলে, নিঝুপ দ্বীপে 'সারভাইবাল ফিজি আইল্যান্ড' মার্কা রিয়েলিটি ক্রিকেট খেলা হবে। খেলোয়াড়রা হেলিকপ্টার থেকে সমুদ্রে ডাইব দিয়ে ক্যাচ আউট করবে ব্যাটসম্যানকে। কমান্ডো স্টাইলে ইরাক দখলের মত টেষ্ট খেলা হবে মরুর বুকে।
তখন দেখবেন আশরাফুল কেমন ক্যাপ্টেন!

এই অল এটাক কমান্ডো ট্রেনিংয়ের পর তাকে আর ক্যাপ্টেন পদে রাখা সমীচিন বোধ হয় না। আসুন আমরা তার রাংক বাড়িয়ে দেই, তার জার্সির কলারে তাঁরা ঠুঁকে দেই। আজ থেকে আশরাফুল ক্যাপ্টেন-মেজর-কর্ণেল পেরিয়ে একেবার হাতে খড়ি ওয়ালা জেনারেল!
আশরাফুল, দা সিপাহ্সালার!!
মাশরাফি তরতরিয়ে পাহাড়ের চূড়ায় উঠে ইতিমধ্যেই সবাইকে হুংকার দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনিই হচ্ছেন শৃঙ্গ বিজয়ী ফার্ষ্ট ফাষ্ট বোলার। একে টাইগার তার উপর পর্বতারোহী। হুশিয়ার!
চল্ চল্ চল্
উর্ধ গগণে বাজে মাদল
নিম্নে উতলা ধরণি তল।
অন্যদের খবরা খবর জানি না। তবে সবাই মাশাল্লাহ এক একটা রাম্বো হয়ে উঠছেন, সেটা বললে উ্যতুক্তি করা হবে না। কিংবা টার্মিনেটর।
সোলজার সোলজার
মিঠি বাতয়ে বোল কার, দিল মেরা চুরা লে গেয়া..
সকাল ছয়টা থেকে রাত আটটা পর্যন্ত কমান্ডো ট্রেনিং। এক একটা কিলিং মেশিন তৈরি হচ্ছে ওখানে। অষ্ট্রেলিয়ার আধিপত্যের দিন শ্যাষ।
নিউজিল্যান্ডের শ্যেন বন্ড পুলিশ হতে পারে, মাগার আমাদের একশো কিলোমিটারের এনামুল হকও এখন কমান্ডো, মাশরাফির পেস তো বাদই দিলাম।
আমাদের আছে কমান্ডো ব্যাটসম্যান, কমান্ডো বোলার, কমান্ডো কীপার। সর্বোপরি কমান্ডো ফিল্ডার। বল জলে-স্হলে-অন্তরীক্ষে যেখানেই যাক, কপালে তার বাঁচণ নাই।
জয় আক্ষরিক অর্থেই এরা ছিনিয়ে আনবে। আমরা আর হারবো না।
সাবাশ জলপাই ট্রেনিং।
ত্রিশ ফুট উপর থেকে পানিতে ফাল দিয়ে পড়া, গেরিলা যুদ্ধের টানটান মানষিক পরীক্ষা- হোক পাষাণ পরাণ তবু জয় হোক জলপাই ট্রেনিংয়ের।

খালি একটাই ভয়, এই লম্ফঝম্ফের ফাঁকে আমাগো টাইগাররা আবার না ক্রিকেট খেলাটাই ভুইলা যায়! সাধু মহাসাবধান!!

৫টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

যে ভ্রমণটি ইতিহাস হয়ে আছে

লিখেছেন কাছের-মানুষ, ১৮ ই মে, ২০২৪ রাত ১:০৮

ঘটনাটি বেশ পুরনো। কোরিয়া থেকে পড়াশুনা শেষ করে দেশে ফিরেছি খুব বেশী দিন হয়নি! আমি অবিবাহিত থেকে উজ্জীবিত (বিবাহিত) হয়েছি সবে, দেশে থিতু হবার চেষ্টা করছি। হঠাৎ মুঠোফোনটা বেশ কিছুক্ষণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।

লিখেছেন মঞ্জুর চৌধুরী, ১৮ ই মে, ২০২৪ ভোর ৬:২৬

আবারও রাফসান দা ছোট ভাই প্রসঙ্গ।
প্রথমত বলে দেই, না আমি তার ভক্ত, না ফলোয়ার, না মুরিদ, না হেটার। দেশি ফুড রিভিউয়ারদের ঘোড়ার আন্ডা রিভিউ দেখতে ভাল লাগেনা। তারপরে যখন... ...বাকিটুকু পড়ুন

মসজিদ না কী মার্কেট!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৮ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৩৯

চলুন প্রথমেই মেশকাত শরীফের একটা হাদীস শুনি৷

আবু উমামাহ্ (রাঃ) হতে বর্ণিত। তিনি বলেন, ইহুদীদের একজন বুদ্ধিজীবী রাসুল দ. -কে জিজ্ঞেস করলেন, কোন জায়গা সবচেয়ে উত্তম? রাসুল দ. নীরব রইলেন। বললেন,... ...বাকিটুকু পড়ুন

×