somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

তাঁর জন্য ভালবাসা যিনি সারাজাহানের জন্য আল্লাহর রহমত - ৩

২৬ শে জুলাই, ২০০৭ সকাল ১১:২৭
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

প্রথম পর্বঃ কে তিনি
দ্বীতিয় পর্বঃ কেন তাঁকে ভালবাসতে হবে?
===================
মানবতার বন্ধু তিনি - কল্যাণ ও সমগ্র সৌন্দর্যের বিমূর্ত প্রতীক। রহমত, ভালবাসা, করুণা, দয়া ও মানুষের প্রতি শুভকামনার পরিপূর্ণ সমাবেশ ঘটেছে তাঁর চরিত্রে। তিনি আদমের সন্তানদের শ্রেষ্ঠতম - আল্লাহর বাণীবাহকদের সর্দার। হেরা গুহার অন্ধকারে তাঁর কাছে কুরআনের নূর পাঠানো হয়েছে মানবতাকে মূর্খতার আঁধার থেকে বের করে জ্ঞানের আলোয় উদ্ভাসিত করতে।
===================
কি দাবী তাঁর ভালবাসার?

তাঁকে - সল্লাল্লাহু আলায়হি ওআ সাল্লাম - ভালবাসা এজন্য ঈমানের এক অপরিহার্য দাবী। কিন্তু এ ভালবাসার প্রমাণ দিতে হবে কিভাবে? আল্লাহ্ তাআলা তাঁর মহান কিতাবে ইরশাদ করেছেন, “(হে নবী) আপনি বলুন! যদি তেমরা আল্লাহকে ভালবাস তবে আমার অনুসরণ করো, তাহলে আল্লাহও তোমাদের ভালবাসবেন।” রসূলুল্লাহ - সল্লাল্লাহু আলায়হি ওআ সাল্লাম - বলেছেন, তোমরা ঈমানদার হতে পারবেনা যদিনা তোমাদের কামনা-বাসনাকে আমার আনীত বিধানের অনুগত করে দাও। তাঁকে ভালবাসা হলো তাঁর অনুসরণ করা; তাকে ভালবাসা হলো তাঁর নির্দেশের সামনে নিজের মতামত বা অন্য কোন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির মতামতকে নির্দ্বিধায় ত্যাগ করা। আল্লাহ্ তাআলা ইরশাদ করেছেন, “না! আপনার রবের কসম! তারা কখনোই ঈমানদার হতে পারবেনা যতক্ষণ না তারা নিজেদের মধ্যে মতবিরোধপূর্ণ বিষয়ে আপনাকে বিচারক মানবে; আর আপনার সিদ্ধান্তের ব্যাপারে হৃদয়ে কোন দ্বিধা রাখেনা এবং আপনার সিদ্ধান্তের সামনে পরিপূর্ণভাবে আত্মসমর্পণ করে।” (আন-নিসা; ৪:৬৫)

ইমাম ইবন রজব আল-হাম্বলী রসূলের প্রতি ভালবাসার দাবী নিম্নোক্ত ভাষায় ব্যক্ত করেছেন: “আল্লাহর রসূলের জন্য ভালবাসা দু’পর্যায়ে প্রকাশ করা হয়।”

“প্রথম পর্যায়ের ভালবাসা হচ্ছে ব্যক্তিগতভাবে ফরজ। এ ভালবাসার দাবী হচ্ছে রসূলুল্লাহ – সল্লাল্লাহু আলায়হি ওআ সাল্লাম – আল্লাহর কাছ থেকে যা নিয়ে এসেছেন তাকে মুহব্বত, আনন্দ, মর্যাদা ও আনুগত্যের সাথে গ্রহন করা, অন্য সব উৎসের – তা যাই হোকনা কেন – কোন হিদায়াত গ্রহন না করে। এর পরের কাজ হলো তিনি তাঁর রবের কাছ থেকে যা পেশ করেছেন উত্তমভাবে তার অনুসরণ করা; তিনি যা ওয়াজিব করেছেন তাকে গ্রহন করা, যা হারাম করেছেন তা থেকে বিরত থাকা; তার দীনের সর্বাত্মক সহযোগিতা করা এবং যারা এর বিরোধীতা করে তাদের বিরুদ্ধে সর্বশক্তি প্রয়োগ করে সংগ্রাম করা। এর সবগুলোই একজনের ঈমানের অঙ্গ, যা তার মাঝে থাকা জরুরী এবং এগুলোর অনুপস্থিতি মূলতঃ তার ঈমানের অপূর্ণতা।”

তাঁর প্রতি ভালবাসার আরো দাবী এই যে, ভালবাসার দাবীদার শুধুমাত্র ফরজ-ওআজিব-ই নয় বরং জীবনের সবক্ষেত্রেই ভালবাসার পাত্রের অনুসরণ করবে, যদিও এটা তার উপর জরুরী নয়। এটা দ্বীতিয় পর্যায়ের ভালবাসা। এ সম্পর্কে ইমাম ইবন রজব (রঃ) বলেছেনঃ “দ্বীতিয় পর্যায়ের ভালবাসা প্রথম পর্যায়ের চেয়ে উন্নততর [যদিও এটা ঈমানের জরুরী অঙ্গ নয়]। এ পর্যায়ের ভালবাসার দাবী হলো একজন ভালবাসার দাবীদার রসূলের তৈরী করা দৃষ্টান্তের অনুসরণ করবে উত্তমভাবে এবং ব্যক্তিগত আচার-ব্যবহার, নফল কাজ, খাওয়া, পানকরা, পোষাক, স্বামী-স্ত্রীর সাথে আচরণ, এবং সুন্দর ও উত্তম মু‘আমালাতের সবক্ষেত্রে তাঁর সুন্নতের যথাযথ অনুসরণ করবে। এর আরো দাবী হলো তাঁর (সঃ) জীবন এবং সময় সম্পর্কে জানা। এ পর্যায়ের ভালবাসার আরো দাবী এই যে, ভক্তি, শ্রদ্ধা, সম্মান ও মর্যাদা বোধের কারণে তাঁর নাম নেয়া হলে হৃদয় শিহরিত হবে; হৃদয়ের অন্তর্গত ভালবাসার অভিব্যক্তি হিসেবে তাঁর প্রতি সালাত ও সালাম পাঠানো হবে প্রায়শঃই। এ ভালবাসার আরো দাবী হলো তাঁর কথা (হাদীস) শোনা এবং তাঁর কথাকে সৃষ্টিজগতের আর সবার কথার উপর প্রাধাণ্য দেয়া।”
সর্বশেষ এডিট : ১২ ই আগস্ট, ২০০৭ রাত ৩:৫৮
২টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

৫০১–এর মুক্তিতে অনেকেই আলহামদুলিল্লাহ বলছে…

লিখেছেন বিচার মানি তালগাছ আমার, ০৩ রা মে, ২০২৪ বিকাল ৩:০০



১. মামুনুল হক কোন সময় ৫০১-এ ধরা পড়েছিলেন? যে সময় অনেক মাদ্রাসা ছাত্র রাজনৈতিক হত্যাকান্ডের শিকার হয়েছিল। দেশ তখন উত্তাল। ঐ সময় তার মত পরিচিত একজন লোকের কীভাবে মাথায় আসলো... ...বাকিটুকু পড়ুন

ঝিনুক ফোটা সাগর বেলায় কারো হাত না ধরে (ছবি ব্লগ)

লিখেছেন জুন, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ৮:০৯

ঐ নীল নীলান্তে দূর দুরান্তে কিছু জানতে না জানতে শান্ত শান্ত মন অশান্ত হয়ে যায়। ১৯২৯ সালে রবার্ট মোস নামে এক ব্যাক্তি লং আইল্যান্ড এর বিস্তীর্ণ সমুদ্র... ...বাকিটুকু পড়ুন

'চুরি তো চুরি, আবার সিনাজুরি'

লিখেছেন এমজেডএফ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


নীলসাধুকে চকলেট বিতরণের দায়িত্ব দিয়ে প্রবাসী ব্লগার সোহানীর যে তিক্ত অভিজ্ঞতা হয়েছিল তা বিলম্বে হলেও আমরা জেনেছি। যাদেরকে চকলেট দেওয়ার কথা ছিল তাদের একজনকেও তিনি চকলেট দেননি। এমতাবস্থায় প্রায়... ...বাকিটুকু পড়ুন

বরাবর ব্লগ কর্তৃপক্ষ

লিখেছেন নীলসাধু, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২২

আমি ব্লগে নিয়মিত নই।
মাঝে মাঝে আসি। নিজের লেখা পোষ্ট করি আবার চলে যাই।
মাঝেমাঝে সহ ব্লগারদের পোষ্টে মন্তব্য করি
তাদের লেখা পড়ি।
এই ব্লগের কয়েকজন ব্লগার নিজ নিক ও ফেইক... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছাঁদ কুঠরির কাব্যঃ অপেক্ষা

লিখেছেন রানার ব্লগ, ০৩ রা মে, ২০২৪ রাত ১১:২৩



গরমের সময় ক্লাশ গুলো বেশ লম্বা মনে হয়, তার উপর সানোয়ার স্যারের ক্লাশ এমনিতেই লম্বা হয় । তার একটা মুদ্রা দোষ আছে প্যারা প্রতি একটা শব্দ তিনি করেন, ব্যাস... ...বাকিটুকু পড়ুন

×