somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ওষুধের নিরাপদ ব্যবহার

২৬ শে জুলাই, ২০০৭ সকাল ১০:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :


অনেকের ধারণা - ওষুধ নিরাপদ বস্তু। রোগ প্রতিরোধ প্রতিকারে মানুষ ওষুধ ব্যবহার করে । সঠিক সময় সঠিক মাত্রায় সঠিক ওষুধটি প্রয়োগ করলে আমরা অল্প ওষুধেই সুফল পেয়ে থাকি এবং সুস্থ হয়ে উঠি । ওষুধের রোগ সারানোর অপূর্ব মতাকে শুধু আমরা ধর্তব্যের মধ্যে নিয়ে থাকি । কিন্তু রোগ সারানোর পাশাপাশি ওষুধ আমাদের শরীরে মারাÍক তিকর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে। কোন কোন সময় তিকর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া বা বিষক্রিয়া বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে এবং ফলশ্রুতিতে মানুষ মারাও যেতে পারে । এই বিপজ্জনক পরিস্থিতি উদ্ভব হয় বেশির ভাগ েেত্র ওষুধের দায়িত্বজ্ঞানহীন অযৌক্তিক যথেচছা ব্যবহারের ফলে । আমাদের মনে রাখা উচিত, ওষুধ সাধারণ ভোগ্য পণ্যের মত কোন পণ্য নয় । ওষুধ দেওয়া বা নেওয়ার েেত্র বিশেষ সাবধানতা অবলম্বন করা অত্যাবশ্যকীয় এক পূর্বশর্ত । উন্নত বিশ্বে ওষুধ ক্রয় বিক্রয়ের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয় । ইচছা করলেই কেউ ওষুধের দোকান থেকে প্রেসক্রিপশন ছাড়া যেকোন ওষুধ কিনতে পারে না । আমাদের দেশে ওষুধ ক্রয় বিক্রয়ে কোন নিয়ন্ত্রণ নেই । তার কারণে মানুষ প্রেসক্রিপশন ছাড়াই যেকোন পরিমাণে সব রকম ওষুধ কিনতে পারে । আমাদের মনে রাখা উচিত শরীরে সব ওষুধের তিকর প্রভাব সমান নয় । ওষুধের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিতকরণ স¤্পর্কে কোন ওষুধ প্রদান ও ব্যবহারে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং ফার্মাসিস্ট এর সুস্পষ্ট পরামর্শ থাকা বাধ্যতামুলক । বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক বা ফার্মাসিস্টদের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ গ্রহণ বিপজ্জনক হতে পারে । তাই উন্নত বিশ্বে এ জাতীয় ওষুধ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন ছাড়া ক্রয় বিক্রয় কোন মতেই স¤ভব নয় । এন্টিবায়োটিক, হৃদরোগ, রক্তচাপ, ডায়বেটিসের ওষুধ, ঘুমের ওষুধ, আসক্তি সৃষ্টিকারী ওষুধ, ট্রাংকুইলাইজার, মৃগী রোগের ওষুধসহ আরো অসংখ্য ওষুধ এই শ্রেণ ীভূক্ত । এমন কিছু ওষুধ আছে দৈনন্দিন জীবনে যেগুলোর ব্যবহার ব্যাপক হলেও তুলনামুলক ভাবে নিরাপদ । এ সব ওষুধ কিনতে প্রেসক্রিপশনের দরকার হয় না, কাউন্টারে গেলেই নগদ পয়সা দিয়ে যে কেউই এসব ওষুধ কিনতে পারে । এসব ওষুধকে ওভার দি কাউন্টার ড্রাগ বলা হয় । প্যারাসিটামল, এন্টাসিড, ভিটামিন, এন্টিহিস্টামিন, অ্যাসপিরিণ জাতীয় ওষুধ এই শ্রেণীভূক্ত । রোগীকে ওষুধের তিকর প্রভাব এবং বিপজ্জনক পরিস্থিতি থেকে রা করার জন্যই ওষুধের এই শ্রেণী বিভাগ এবং ক্রয় বিক্রয়ে নিয়šন্ত্রণ আরোপ করা হয় ।

ওষুধ শরীরের জন্য বহিরাগত একটি রাসায়নিক পদার্থ এবং প্রত্যেকটি বহিরাগত রাসায়নিক পদার্থেরই শরীরের বিরূপ প্রতিক্রিয়া, তিকর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াসহ বিষক্রিয়া থাকা স্বাভাবিক । ওষুধের যুক্তিসঙ্গত প্রয়োগের মাধ্যমে এই তিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোকে যথাস¤ভব নন্যনতম রেখে রোগীকে সর্বোচচ মাত্রায় সুফল প্রদানের প্রচেষ্টাই চিকিৎসা বিজ্ঞানের আসল ল্য । একটি ওষুধের রিস্ক বেনিফিট অনুপাত যত কম হবে রোগীর জন্য তত মঙ্গল । কোন কোন ওষুধের েেত্র রিস্ক বেনিফিট অনুপাত ব্যবধান কম হওয়া সত্ত্বেও ওষুধ হিসাবে এগুলোর কোন বিকল্প থাকে না বলে রোগীর জীবন রার জন্য এসব ওষুধ আবশ্যক হয়ে পড়ে । এসব ওষুধ ব্যবহারের ফলে রোগী পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ায় মারাÍকভাবে তিগ্রস্থ হয় । বিভিন্ন প্রকার ক্যানসার রোগে ব্যবহৃত ওষুধগুলো এই শ্রেণ ীভূক্ত ।

বর্তমান বিশ্বে এন্টিবায়োটিকের অপব্যবহার বা যথেচছা ব্যবহার আমাদের প্রতিনিয়তই অন্য এক ধরনের ভয়ংকর বিপদ এবং ঝুকির দিকে ঠেলে দিচেছ । গত ষাট দশক ধরে এন্টিবায়োটিককে সংক্রামক রোগের প্রতিকারে ম্যাজিক বুলেট হিসাবে গণ্য করে আসা হচেছ । এন্টিবায়োটিক আবিস্কারের পর থেকে এক দিকে যেমন লকোটি লোকের জীবন রা করা গেছে তেমনি এসব ওষুধের বিষক্রিয়া, বিরূপ প্রতিক্রিয়া, অপব্যবহার ও অপপ্রয়োগের ফলে ভোগাšিত ছাড়াও কত লোককে জীবন দিতে হয়েছে তার সঠিক পরিসংখ্যান আমাদের হাতে নেই । সংক্রামক রোগের চিকিৎসা শুরু করার পূর্বে চিকিৎসককে জীবাণু তত্ত্বীয় পরীার মাধ্যমে নির্ণয় করতে হয় রোগী কোন জীবাণু দ্বারা সংক্রামিত এবং সে জীবাণু বা জীবাণুগুলোর কোন কোন এন্টিবায়োটিকের প্রতি অধিক মাত্রায় সংবেদনশীল । এ ধরনের পরীা স¤পন্ন না করেই যত্রতত্র যখন তখন বিভিন্ন মাত্রায় যুক্তিহীন এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের ফলে অনেক জীবাণু ইতোমধ্যে এন্টিবায়োটিকের কার্যকারিতা রোধ করে বা ধ্বংস করে সফল চ্যালেঞ্জার হিসাবে টিকে থাকার দতা এবং মতা অর্জন করেছে । জীবাণুর এই রেসিট্যান্স বা প্রতিরোধ মতা অর্জন আগামী শতাব্দীর চিকিৎসা বিজ্ঞানের জন্য এক ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ হিসাবে আবির্ভুত হবে। পর্যাপ্ত সংখ্যক নতুন নতুন কার্যকর এন্টিবায়োটিক আবিস্কৃত না হলে এই ভয়াবহ চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় মানব সভ্যতাকে সমুহ বিপদের সম্মুখীন হতে হবে । এন্টিবায়োটিক ওভার দি কাউন্টার(ঙঞঈ) ড্রাগ নয়, প্রেসক্রিপশন ড্রাগ । সুতরাং এর নিরাপদ ও সফল কার্যকারিতা লাভের জন্য এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের পুর্বে সর্বপ্রকার সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে । এন্টিবায়োটিক অতিমাত্রায় ব্যবহার যেমন তিকর, কম মাত্রায় গ্রহণও তেমনি বিপজ্জনক । একটি বা দুটো প্যারাসিটামল খেলে ব্যথা সারে বলে এমনটা মনে করার কোন কারণ নেই যে একটি বা দুটো এন্টিবায়োটিক খেলে সংক্রামক রোগ সারবে । প্রত্যেক সংক্রামক ব্যাধির জন্যই চিকিৎসক প্রদত্ত নির্বাচিত ওষুধটি নির্ধারিত মাত্রায় নির্দিষ্ট সময়ের ব্যবধানে নির্দিষ্ট দিনের জন্য গ্রহণ করতে হবে । এর কমও নয় বেশিও নয় । নির্ধারিত মাত্রায় কম ওষুধ খেলে জীবাণু নির্মুল হবে না । ওষুধ স¤পর্কে সঠিক সিদ্ধাšন্ত গ্রহণে অম হলে রোগীর ভোগাšিত ছাড়াও তিগ্রস্থ হওয়ার স¤ভাবনা অনেক । বাংলাদেশে এন্টিবায়োটিকের অপব্য স¤পর্কে একটি সুন্দর উক্তি রয়েছে । বলা হয়ে থাকে ঃ অহঃরনরড়ঃরপং ধৎব ৎধৎবষু ধঢ়ঢ়ৎড়ঢ়ৎরধঃবষু ঢ়ৎবংপৎরনবফ ধহফ ড়ভঃবহ রহধঢ়ঢ়ৎড়ঢ়ৎরধঃবষু ফরংঢ়বহংবফ রহ ইধহমষধফবংয. বাংলাদেশে চিকিৎসকদের সর্ব¯্তরে এন্টিবায়োটিক ব্যবহারে আরেক ধরনের অযৌক্তিক প্রবণতা পরিলতি হয় । কম দামী ন্যারো ¯েপকট্রাম(ঘধৎৎড়ি ংঢ়বপঃৎঁস) এন্টিবায়োটিক কার্যকর হওয়া সত্ত্বেও ইচছাকৃত ভাবে রোগীকে ব্রোড ¯েপকট্রাম(ইৎড়ধফ ংঢ়বপঃৎঁস) এন্টিবায়োটিক প্রদান করা হয় । এ প্রসঙ্গে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের মন্তব্য ঃ অ পধহহড়হ ংযড়ঁষফ হবাবৎ নব ঁংবফ ঃড় শরষষ ধ সড়ঁংব. শিশু ও মহিলাদেও ওপর ওষুধের তিকর প্রভাবের কথা বিবেচনা করে ওষুধ প্রদান বাঞ্চনীয় । শিশু ও মহিলাদের ওষুধ প্রয়োগের সময় আমরা ভুলে যাই, শিশুদের বাড়ন্ত শরীরের অঙ্গ প্রত্যঙ্গ এবং বিভিন্ন ডেলিকেট সিস্টেমগুলো আকার ও কর্মমতার দিকে থেকে পরিপুর্ণতা লাভ করে না বলে ওষুধের বিপদ ও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার কারণে শিশুরা বেশি তিগ্রস্থ হয় । পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শিশুদের খুব বেশি অনভিপ্রেত ওষুধ প্রদান করা হয়ে থাকে এবং এর ফলে শিশুর জীবন বিপন্ন হয়ে পড়ে । বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, শিশুদের প্রদত্ত দুই তৃতীয়াংশ ওষুধই অপ্রয়োজনীয় বা খুব সামান্যই প্রয়োজনীয় । পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে অধিকাংশ শিশুর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার কারণ হিসাবে হাসপাতালে আসার আগে ব্যবহৃত মাত্রাতিরিক্ত ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াকে দায়ী করা হয়েছে । আমরা প্রায়শই শিশুদের প্রকৃত সমস্যা বুঝতে পারিনা । শিশুরা অসুস্থ হলে আমরা দুশ্চিন্তাগ্রস্থ হয়ে পড়ি এবং অধিকাংশ েেত্র সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধাšন্ত গ্রহণে ব্যর্থ হই। ওষুধ স¤পর্কে আমাদের ধারণা একপেশে । আমাদের ধারণা ওষুধ রোগ সারায় কিšতু ওষুধ যে রোগ সৃষ্টি করতে পারে তা আমরা খুব কমই উপলব্ধি করতে পারি । অসুখ বিসুখে শিশুদের ওপর নির্বিচারে ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে তি সাধন কোন মতেই বাঞ্চনীয় হতে পারে না । শিশুরা সাধারণত ডায়রিয়া, কফ, ঠান্ডা লাগার মত কয়েকটি সাধারণ রোগে বেশি ভুগে থাকে । সনাতনী ধারনা থেকে শিশুদের এসব রোগে যেসব ওষুধ প্রয়োগ করা হয় তার অধিকাংশই অপ্রয়োজনীয় ও অকার্যকর । আমাদের মনে রাখা প্রয়োজন, এসব রোগগুলো সাধারনত ভাইরাস সংক্রামনের ফলে সৃষ্টি হয় এবং ভাইরাসের বিরুদ্ধে কার্যকর কোন ওষুধ নেই । সর্দি, কাশি বা ঠান্ডা লাগলেই শিশুদের নির্বিচারে এন্টিহিস্টামিন প্রদান করা হয় । এন্টিহিস্টামিন জাতীয় ওষুধগুলোয় ঘুমের প্রভাব থাকার কারণে শিশুরা এ ধরণের ওষুধ খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে এবং বাবা মা নিশ্চিত হয় এই ভেবে তাদের শিশু সুস্থ হয়ে উঠছে । এ ধারণা ঠিক নয় । শিশুদের ওপর এন্টিহিস্টামিন বা সেডেটিভ জাতীয় ওষুধের সুদরপ্রসারী প্রভাব বা প্রতিক্রিয়া মোটেই কাঙ্খিখত নয় । এসব ওষুধের বিরূপ প্রতিক্রিয়ার কারণে শিশুদের পেশী নিয়š্ত্রণ, সমন্বয় এবং ভারসাম্যে মারাÍক সমস্যা দেখা দেয়। কাশি হলেই আজকাল কফ মিকচার প্রদান করা হয় । এসব কফ মিকচার সিউডোএফিড্রিন থাকে । এই যৌগটি শিশুদের দুঃস্বপ্ন ছাড়াও ঘুমের মারাÍক ব্যাঘাত সৃষ্টি করে ।
মহিলাদের শাররিক গঠন ও বিন্যাস পুরুষদের মত নয় । শারীরিক গঠন, ওজন, অপুষ্টিজনিত নানা সমস্যা, হরমোনের প্রভৃতি ধরন ও কর্মকান্ডের ভিন্নতার কারণে মহিলাদের শরীরে ওষুধের মোটাবলিজম ও প্রতিক্রিয়া পুরুষের চেয়ে ভিন্ন । ওষুধের প্রতি সহনশীলতা, কার্যকারিতাও স্বাভাবিকভাবে আলাদা । ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া, বিষক্রিয়া ও অন্যান্য তিকর প্রভাবের কারণে গর্ভবতী ও দুগ্ধবতী মায়েদের ওষুধ প্রদানের েেত্র বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হয় । শিশু, গর্ভবতী ও দুগ্ধবতী মায়েদের ওপর পর্যাপ্ত গবেষণা ও কিনিক্যাল ট্রায়াল স¤পাদনে সীমাবদ্ধতা থাকার কারণে বিশ্বজুড়ে এখনো দ্বিধা-দ্বন্ধ, অনুমান ও নিজস্ব চিšাভাবনার ওপর ভিত্তি করে প্রয়োজনীয় তথ্য ছাড়াই চিকিৎসা বিজ্ঞানীদের ওষুধের ছাড়পত্র দিতে হচেছ । ফলে শিশু ও মহিলাদের ওপর ওষুধের বিশেষ করে নতুন আবিস্কৃত ওষুধের তিকর প্রভাব দেখা গেছে । পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া ও বিষক্রিয়ার কথা গুর€ত্ব সহকারে বিবেচনায় না এনেই বিশ্বজুড়েই গর্ভবতী মহিলাদের ব্যাপকহারে অপ্রয়োজনীয় ও তিকর ওষুধ প্রদান করা হয়ে থাকে । ওষুধ জীবনরাকারী বস্তু হলেও এর যুক্তিহীন প্রয়োগ জীবনের জন্য বিপর্যয়ের ডেকে আনতে পারে । গর্ভবতী ও দুগ্ধবতী মহিলাদের ওষুধ প্রয়োগের কারণে বিরূপ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার ফলে শুধু মা নয়, শিশুরা ও মারাÍক ভাবে তিগ্রস্থ হতে পারে । কার্যকারিতা ও নিরাপত্তার দিক থেকে কোন ওষুধ স¤পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য না পাওয়া পর্যন্ত শিশু ও মহিলাদের বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের ওসব ওষুধ প্রদান করা বাঞ্চনীয় নয় ।
রোগ প্রতিরোধ ও প্রতিকারে ওষুধের অবদানকে খাটো করে দেখার কোন অবকাশ নেই । ঠিকমত ওষুধ গ্রহণ না করলে অনেক রোগ বিশেষ করে সংক্রামক রোগগুলো জটিল আকার ধারন করতে পারে । এটাও মনে রাখা উচিত সব রোগের জন্য ওষুধ অত্যাবশ্যক নয় । রোগ সৃষ্টি বা প্রতিকার নয়, রোগের প্রতিরোধই চিকিৎসা বিজ্ঞানের কাম্য । জনমনে ওষুধ স¤পর্র্কে সচেতনতা সৃষ্টির ল্েয প্রচার মাধ্যম গুলোতে বিশেষকরে রেডিও, টেলিভিশনে ওষুধের যুক্তিসঙ্গত ব্যবহার স¤পর্র্কে প্রয়োজনীয় তথ্য প্রচার করা আবশ্যক । সবার জন্য স্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণে ওষুধের অযৌক্তিক ব্যবহার বন্ধ করার ব্যাপারে পদপে গ্রহণে সরকারের এগিয়ে আসা উচিত ।
ওষুধের নিরাপদ ব্যবহার নিশ্চিত করণে কিছু প্রয়োজনীয় পরামর্শ ঃ
এক। শুধু প্রয়োজনেই ওষুধ সেবন করুন । অপ্রয়োজনে কখনোই ওষুধ সেবন করবেন না । অন্যকেও অপ্রয়োজনে ওষুধ গ্রহণে নিরুৎসাহিত করুন । এমনকি অপ্রয়োজনে ভিটামিনও খাবেন না । মনে রাখবেন, ওষুধ শরীরের জন্য একটি বহিরাগত বস্তু । ওষুধ শুধু রোগ সারায় না, রোগ সৃষ্টি ছাড়াও ওষুধ মারাÍক তিকর পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া এবং বিষক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে ।
দুই । খেয়াল-খুশির বশবতী হয়ে যখন তখন ওষুধ খাবেন না । প্রয়োজনে ওষুধ খাওয়া শুরু করলে যখন তখন ওষুধ খাওয়া বন্ধ করবেন না । চিকিৎসকের পরামর্শ মোতাবেক ওষুধ সেবন করবেন । সময়মত, পর্যাপ্ত পরিমাণে, নির্দিষ্ট সময়ের জন্য নির্দিষ্ট মাত্রায় ওষুধ সেবন করুন। ওষুধের ডোজ নিয়ে প্রায় ভুল হয়। প্রায় দেখা যায়, ড্রাগষ্টোর থেকে ভুল ডোজের ওষুধ সরবরাহ করা হয় । যেমন, ৫০০ মিলিগ্রাম ডোজের পরিবর্তে ২৫০ মিলিগ্রাম বা ২৫০ মিলিগ্রামের পরিবর্তে ৫০০ মিলিগ্রাম ডোজের ওষুধ সরবরাহ করা হয়। মাঝে মাঝে রোগী বা রোগীর অ্যাটেন্ডেন্ট ওষুধের ডোজ নিয়ে ভুল করেন । এই ভুল রোগীর জন্য তিকর বা বিপজ্জনক হতে পারে ।
তিন। সুস্থবোধ করলেও ওষুধের নির্দিষ্ট কোর্স সমাপ্ত করুন । কোন মতেই কোর্স সমাপ্ত না করে ওষুধ খাওয়া বন্ধ করবেন না । সংক্রামক রোগের েেত্র কোর্স সমাপ্ত না করলে পরবর্তীতে মারাÍক বিপর্যয় দেখা দিতে পারে ।
চার। বেশী মাত্রায় বেশী ওষুধ খেলে বেশী ফলাফল পাওয়া যাবে - এ ধারণাটি ঠিক নয় । মনে রাখবেন, বেশী ওষুধ শুধু পয়সাই নষ্ট করে না, পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া এবং বিষক্রিয়ার মাধ্যমে আপনাকে শারীরিকভাবেও তিগ্রস্থ করবে । আবার নির্দিষ্ট মাত্রার কম ওষুধ খেলে অসুখ সারবেনা ।
পাঁচ । রোগ এবং ওষুধের ব্যাপারে চিকিৎসক এবং ফার্মাসিষ্টগণই বিশেষজ্ঞ । আপনি এ দ'ুয়ের কোন স¤প্রদায়্রদায়ভুক্ত না হলে রোগ এবং ওষুধের ব্যাপারে কোন ঝুঁকিপুর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন না ।
ছয় । শিশুরা অসহায় । শিশুরা রোগাক্রান্ত হয় যেমন সহজে, মারাও যায় তেমন অধিক । শিশুদের ব্যাপারে ঝুঁকি না নিয়ে এবং কালপেণ না করে সব রোগের েেত্র শিতি, অভিজ্ঞ, প্রগতি ও যুক্তিবাদী চিকিৎসকের পরামর্শ নিন । শিশুকে নিজের খেয়াল খুশিমত ওষুধ খাওয়াবেন না ।
সাত । গর্ভবতী মহিলাদের বেলায় ওষুধ গ্রহণ বা প্রদানের েেত্র সতর্ক হতে হবে । কারণ ওষুধের পার্শ্ব-প্রতিক্রিয়া বা বিরুপ প্রতিক্রিয়ার কারণে গর্ভজাত সন্তানের তি ও জীবন বিপন্ন হতে পারে ।
আট । কোন কোন সাধারণ রোগের েেত্র আÍচিকিৎসা গ্রহণযোগ্য হলেও নিয়ন্ত্রণহীন আÍচিকিৎসা তির কারণ হতে পারে । যেমন, ব্যাথাবেদনা বা জ্বর নিয়ন্ত্রণের জন্য মাত্রাতিরিক্ত প্যারাসিটামল ব্যবহার লিভার ও কিডনী ধ্বংসের কারণ হতে পারে ।
নয় । অননুমোদিত দোকান থেকে ওষুধ কিনবেন না । ওষুধের গায়ে খুচরা বিক্রয় মুল্য, ব্যাচ নম্বর, এক্সপায়ার ডেট্ ঠিক আছে কী না দেখে ওষুধ কিনুন । ভুয়া, নকল, ভেজাল ও তিকর ওষুধ হতে সাবধান । কেনার আগে নিশ্চিত হোন, আপনি গুণগত মান স¤পন্ন ওষুধ কিনছেন । ড্রাগ ষ্টোরে ওষুধ সরবরাহকারীগণ ক্রেতার অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে মাঝে মাঝে প্রেসক্রিপশনে প্রদত্ত অত্যাবশ্যকীয় ওষুধের পরিবর্তে অপ্রয়োজনীয় ওষুধ প্রদানে বেশী উৎসাহী হয় । মাঝে মাঝে এ রকমও দেখা যায়, বিক্রেতাগণ প্রেসক্রিপনে প্রদত্ত কোন বিশেষ ওষুধ ষ্টোরে বা সরবরাহ নেই বলে অন্য ব্র্যান্ডের কম গুণগতমান স¤পন্ন ওষুধ বিক্রি করতে চায় । মনে রাখবেন, ভিটামিনের চেয়ে এন্টিবায়োটিক আপনার সুস্থতার জন্য অধিক প্রয়োজনীয় । ড্রাগ ষ্টোরে ওষুধ বিক্রেতাদের এই অশুভ এবং অনৈতিক মানসিকতা সর্ম্পর্কে সচেতন থাকুন ।
দশ । ওষুধের সাথে দেয়া লিফ্লেটে প্রদত্ত তথ্যাবলী আপনার কাজে আসতে পারে । তাই লিফ্লেটটি সংরণ করুন এবং ভালোভাবে পড়ূন ।
এগারো । ইনজেক্শনের েেত্র ডিস্পোজেবল সিরিঞ্জ নিরাপদ । চিকিৎসক বা ক¤পাউন্ডারকে ডিস্পোজেবল সিরিঞ্জ ব্যবহারের অনুরোধ জানান । দরকার হলে নিজে একটি আসল ডিস্পোজেবল সিরিঞ্জ কিনে নিন । নকল বা ব্যবহৃত ডিস্পোজেবল সিরিঞ্জ সম্পর্কে সতর্ক থাকুন । বহু ব্যবহৃত সিরিঞ্জের মাধ্যমে বহু মারাÍক রোগ সংক্রামিত হয় । আপনি হয়তো জানেন না, নকল ও ব্যবহৃত ডিস্পোজিবল সিরিঞ্জ রিপ্যাক হয়ে আবার বাজারে বিক্রি হয় ।
বার । অন্যের ওষুধ সেবন করবেন না বা আপ
০টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

পুরনো ধর্মের সমালোচনা বা ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত করেই নতুন ধর্মের জন্ম

লিখেছেন মিশু মিলন, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৭:১৫

ইসলামের নবী মুহাম্মদকে নিয়ে কটূক্তির অভিযোগে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মামলায় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী তিথি সরকারকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। একইসঙ্গে তাকে এক বছরের জন্য সমাজসেবা অধিদপ্তরের অধীনে প্রবেশনে পাঠানোর... ...বাকিটুকু পড়ুন

ডেল্টা ফ্লাইট - নিউ ইয়র্ক টু ডেট্রয়ট

লিখেছেন ঢাকার লোক, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:২৬

আজই শ্রদ্ধেয় খাইরুল আহসান ভাইয়ের "নিউ ইয়র্কের পথে" পড়তে পড়তে তেমনি এক বিমান যাত্রার কথা মনে পড়লো। সে প্রায় বছর দশ বার আগের ঘটনা। নিউ ইয়র্ক থেকে ডেট্রিয়ট যাবো,... ...বাকিটুকু পড়ুন

ল অব অ্যাট্রাকশন

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৪৫

জ্যাক ক্যান ফিল্ডের ঘটনা দিয়ে লেখাটা শুরু করছি। জ্যাক ক্যানফিল্ড একজন আমেরিকান লেখক ও মোটিভেশনাল স্পিকার। জীবনের প্রথম দিকে তিনি হতাশ হয়ে পড়েছিলেন। আয় রোজগার ছিলনা। ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অর্থ ছিলনা।... ...বাকিটুকু পড়ুন

চরফ্যাশন

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১৬ ই মে, ২০২৪ সকাল ১০:৫৯



নয়নে তোমারি কিছু দেখিবার চায়,
চলে আসো ভাই এই ঠিকানায়।
ফুলে ফুলে মাঠ সবুজ শ্যামলে বন
চারদিকে নদী আর চরের জীবন।

প্রকৃতির খেলা ফসলের মেলা ভারে
মুগ্ধ হয়েই তুমি ভুলিবে না তারে,
নীল আকাশের প্রজাতি... ...বাকিটুকু পড়ুন

নতুন গঙ্গা পানি চুক্তি- কখন হবে, গ্যারান্টি ক্লজহীন চুক্তি নবায়ন হবে কিংবা তিস্তার মোট ঝুলে যাবে?

লিখেছেন এক নিরুদ্দেশ পথিক, ১৬ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৫:২৬


১৬ মে ঐতিহাসিক ফারাক্কা দিবস। ফারাক্কা বাঁধ শুষ্ক মৌসুমে বাংলাদেশে খরা ও মরুকরণ তীব্র করে, বর্ষায় হঠাৎ বন্যা তৈরি করে কৃষক ও পরিবেশের মরণফাঁদ হয়ে উঠেছে। পানি বঞ্চনা এবং... ...বাকিটুকু পড়ুন

×