সালাম সাহেব একজন কোটিপতি। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে তার যে মোট কতগুলো ব্যবসা প্রতিষ্ঠান আছে, সেটা তিনি নিজে, তার বিশ্বস্ত ম্যানেজার আজিজ সাহেব, বডিগার্ড রহিম আর নাইটগার্ড করিম ছাড়া অন্য কেউই সঠিকভাবে জানে না। এরা তিনজনেই সালাম সাহেবের অত্যন্ত বিশ্বস্ত। আজিজ গত 15 বছর ধরে, রহিম 12 বছর আর করিম 10 বছর ধরে অত্যন্ত নিষ্ঠার সাথে তাদের দায়িত্ব পালন করে আসছে।
গত শনিবার ভোর পাঁচটার ফ্লাইটে জরুরী একটা কাজে সালাম সাহেবের আমেরিকা যাওয়ার কথা ছিল। ম্যানেজার আজিজ সাহেব আগের দিন রাতেই বিমানের টিকেট কনফার্ম করে রেখেছিল। কিন্তু সমস্যা বাঁধালো করিমের স্বপ্ন। সে স্বপ্নে দেখল, যে ফ্লাইটে করে সালাম সাহেবের ফ্লাই করার কথা, সেই প্লেনটা ক্র্যাশ করেছে। কাজেই সকাল বেলা সে অত্যন্ত সংকোচের সাথে সালাম সাহেবকে তার স্বপ্নের কথাটা জানালো এবং তাকে অনুরোধ করল, তিনি যেন ঐ ফ্লাইটে না গিয়ে পরবর্তী কোন ফ্লাইটে করে যান।
সালাম সাহেব এমনিতে নাস্তিক টাইপের মানুষ - স্বপ্নটপ্ন একেবারেই বিশ্বাস করেন না। কিন্তু সেদিন কি মনে করে করিমের কথা অনুযায়ী তিনি ঠিকই ফ্লাইটটা বাতিল করে পরের দিনের ফ্লাইটটাতে বুকিং দিলেন। আর কি আশ্চর্য! সেদিন দুপুর বেলাতেই বিবিসি থেকে জানানো হল, সেই প্লেনটি আসলেই ক্র্যাশ করেছে এবং তার 210 জন যাত্রীর মধ্যে 188 জনই মারা গেছে এবং যারা বেচে আছে, তাদের অবস্থাও আশংকাজনক।
সালাম সাহেব প্রথমে খবরটা বিশ্বাসই করতে পারলেন না। পরে যখন দেখলেন সিএনএন এবং আল-জাজিরা থেকেও একই সংবাদ বলা হচ্ছে, তখন বিশ্বাস না করে তার আর কোন উপায় রইল না। সংবাদটা দেখে অনেকক্ষণ পর্যন্ত তিনি বিমূঢ় হয়ে বসে রইলেন। তবে সেটা কি মৃত্যুর হাত থেকে ফসকে বেরিয়ে যেতে পারার কারণে, না স্বপ্নে দেখা বিষয় সত্যে পরিণত হওয়ার মতো অবৈজ্ঞানিক ঘটনা প্রত্যক্ষ করে, সেটা ঠিক বুঝা গেল না।
বিকেল বেলা একটু ধাতস্থ হয়ে তিনি ম্যানেজার আজিজ সাহেবকে ডাকলেন এবং কঠোর স্বরে বললেন, আজ রাতের মধ্যেই তুমি করিমকে চাকরি থেকে বিদায় করে দাও। তার পাওনা যা আছে সব মিটিয়ে দাও। আর তার পরিবর্তে নতুন একজনের ব্যবস্থা কর। ... আর হ্যাঁ, ভালো কথা, তার কারণেই আজ আমি মৃত্যুর হাত থেকে বেচে গেছি। কাজেই তাকে আমার পক্ষ থেকে এই এক লক্ষটাকা দিয়ে দিও।
প্রশ্ন হল, সালাম সাহেব করিমকে চাকরি থেকে বহিষ্কারের নির্দেশ দিয়েছিল কেন?
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০০৭ বিকাল ৫:৪৪