somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

রাসুল মুহাম্মদ(সাঃ)

২৪ শে জুলাই, ২০০৭ সকাল ৭:০৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

এ কথা দ্বিপ্রহরের সূর্যালোকের মতো স্পষ্ট ও অবিসংবাদিত সত্য যে হজরত মুহাম্মদ(সাঃ) বিশ্ব মানবের জন্য একজন শিক্ষক এবং রহমত হিসেবে আবির্ভূত হয়েছিলেন। তাঁর এ আবির্ভাব মানব সভ্যতাকে নবজাগরণে দোলায়িত করে বিশ্বকে উপহার দিয়েছিল একটি সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ বিশ্বব্যবস্থার রূপরেখা। অতঃপর দীর্ঘ ২৩ বছর ধরে তিনি মানুষের মাঝে নির্মলচিত্তে অকৃত্রিম ভালোবাসা আর শিক্ষা বিলিয়েছেন। কালক্রমে তিনি পবিত্র জীবন সাধনায়, আধ্যাত্মিক উৎকর্ষতায় এবং সামগ্রিক শিক্ষায় শ্রেষ্ঠত্বের সুউচ্চ আসনে সেরা স্বাক্ষর রাখেন।
আল্লাহ তায়ালা বলেন, "আমি আপনাকে বিশ্ববাসীর জন্যে রহমত স্বরূপই প্রেরণ করেছি" (সুরা আম্বিয়া ১০৭)
নৈতিক চরিত্র,কর্মের আদর্শ, আধ্যাত্মিক সাফল্য, রাজনৈতিক প্রজ্ঞা, মানবতার মুক্তি, জাহেলি প্রথাগুলো উচ্ছেদ, প্রতিষ্ঠানিক বিস্তারে বাস্তব ভূমিকা সর্বোপরি একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান বাস্তবায়নে তিনি যে নবতর ব্যঞ্জনা আর অনন্য উদাহরণ স্থাপন করেছেন তাই মূলত মানবজাতির জন্য আজও একটি শিক্ষা কাঠামোর পূর্ণ মর্যাদা বহন করে। প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা বলতে আমরা যা বুঝি তা রাসুল(সাঃ) কখনো গ্রহণ করেননি। স্বয়ং স্রষ্টার কাছ থেকে শিক্ষাপ্রাপ্ত হয়ে তিনি মানবজাতিকে ন্যায়শিক্ষা দিয়েছেন। খাতা কলমে বৈজ্ঞানিক তথ্য কিংবা যন্ত্রপাতির নানা আবিষ্কার প্রত্যক্ষ উপহার দেয়া তার পক্ষে হয়তো সম্ভব হয়নি, কিন্তু তাঁর কাজ ও বাণী অধুনা বিশ্বের বিজ্ঞান ব্যবস্থায় সর্বাধিক বিজ্ঞানসম্মত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। রাসুল(সাঃ) মিরাজের মাধ্যমে মহাকাশ উড্ডয়নের শিক্ষা দিয়েছেন। ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা থেকে আরম্ভকরে ইসলামের যাবতিয় বিধিবিধান বিজ্ঞানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তাঁকে বিজ্ঞানের শ্রেষ্ঠতম শিক্ষক হিসেবে অবিস্মরনীয় করে রেখেছে।

মানুষ যেহেতু সৃষ্টিকুলের সেরা, সেহেতু মানুষের আদর্শ একটি উল্লেখ যোগ্য বিষয়। পৃথিবীতে যারা আদর্শ বিবর্জিত জীবনযাপনে অভ্যস্ত, তারাও উন্নত আদর্শের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করে। এ কথা সর্বাংশে সত্য যে, রাসুল(সাঃ) হলেন মানবজাতির জন্য আদর্শের মূর্ত প্রতীক। আদর্শ শিক্ষায় তিনি বিরল ব্যক্তিত্বের অধিকারী। পবিত্র আল কুরআনে বলা হয়েছে,'অবশ্যই রাসুলের (মুহাম্মদ) জীবনে রয়েছে তোমাদের জন্য উত্তম আদর্শ।' বস্তুত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবন থেকে আরম্ভ করে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তিনি যে আর্দশ স্থাপন করেছেন, তা আজও অদ্বিতীয় আদর্শ হিসেবে বরেণ্য। মানুষের সঙ্গে ব্যবহার, চারিত্রিক বিশুদ্ধতা, পারলৌকিক চেতনা, লেনদেনের রীতিনীতি , শ্রমিকে প্রতি ইনসাফ, অশ্লীলতা দূরীকরণে ভূমিকা, জনগণ ও রাষ্ট্রের নিরাপত্তা রক্ষায় গৃহীত পদক্ষেপসহ তাঁর সব কর্মকান্ডই একটি উজ্ঝ্বল আদর্শের দিশারি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত ও নন্দিত।
শুধু ইহকালীন জীবনই মানুষের জীবনের শেষ কথা নয়। সঙ্গত কারণেই মানবজীবনের সঙ্গে ধর্মের সম্পৃক্ততা কোনোক্রমেই আলাদা করে দেখার সুযোগ নেই। ধর্মহীন জীবন কত মারাত্নক, কত বীভৎস জাহেলি যুগ তার প্রকৃষ্ট সাক্ষ্য বহন করে। রাসুল(সাঃ) এর মাধ্যমে আল্লাহ তা'য়ালা গোটা বিশ্বের মানব জাতির জন্য একটি পূর্ণাঙ্গ জীবন বিধান উপহার দিয়েছেন। জন্ম থেকে মৃত্যু পযন্ত একটা মানুষ কি করবে আর কী করবে না তার স্পষ্ট ও বিস্তারিত নির্দেশনা এবং এসব কর্মের পরিণতি পরকালে কী হবে তদ্বিষয়ে মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন। হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহ প্রেরিত নবী বলে তাঁর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য গুলো ঐশী ও পবিত্র। তিনি সত্যবাদিতা, বিনয়- নম্রতা, কর্তব্য নিষ্ঠা, সৎ স্বভাব, উদারতা ও সর্বাধিক খোদাভীতি দিয়ে নির্মল চরিত্র গড়েছিলেন। সে অমোঘ চরিত্র অধুনা আজকের বিশ্বেও অতি প্রয়োজনীয়তার বিষয়বস্তুতে পরিণত হয়েছে। কালের প্রবাহে সামাজিক, রাজনৈতিক, বৈশ্বিক সব কিছু ভেদ করে সময়ের পরিক্ষায় তা হয়েছে উত্তীর্ণ। বদান্যতা, নম্রতা, ক্ষমার্হ দৃষ্টি আর অনাড়ম্বর অহষ্কারমুক্ত চরিত্র গঠনের মাধ্যমে তিনি সূচনা করেছিলেন এক সোনালি অধ্যায়ের।
ঐতিহাসিক জোসেফ হেল বলেন,'মুহাম্মদ (সাঃ) এমনই একজন মহান ব্যক্তি ছিলেন, তিনি না হলে বিশ্ব অসম্পূর্ণ থেকে যেত। তিনি নিজেই নিজের তুলনা। তাঁর কৃতিত্বময় ইতিহাস মানবজাতির ইতিহাসে এক আলোচিত অধ্যায় রচনা করেছে।'
মানবতার শিক্ষক হিসেবে রাসুল(সাঃ) এর মর্যাদা সবার উর্ধ্বে। মানবাধিকার বাস্তবায়নে তাঁর উচিত ঘোষণ ও গৃহীত পদক্ষেপ আজও গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রেখে চলেছে।
প্রিয় নবী হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রশাসনিক দূরদর্শিতা আমাদের বর্তমান প্রশাসনকে সুদৃঢ় ও সুসংগঠিত করতে শিক্ষা দেয়।
রাজনৈতিক ক্ষেত্রে মদিনায় রাসূল(সাঃ) রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিলেন। রাষ্ট্রের অভ্যন্তরীণ ও বহির্জগতের সব ক্ষেত্রে সুখী ও সমৃদ্ধিশালী জাতি গঠনই ছিল তাঁর নিরন্তন প্রচেষ্টা।
একজন গবেষক ও জ্যোতিবিজ্ঞানী মাইকেল এইচ হার্ট বলেন,'এ কথা নিঃসন্দেহে সত্য যে, ইতিহাসে তিনিই (মুহাম্মদ সাঃ) একমাত্র ব্যক্তি, যিনি ধর্মীয় ও রাজনৈতিক উভয় ক্ষেত্রে সর্বাধিক সফল ব্যক্তিত্ব।' অনুরূপভাবে পারিবারিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও রাসুলুল্লাহ (সাঃ) এর শিক্ষা সবার কাছে সমধিক অনুকরণীয়। পুত্র-কন্যা, স্ত্রীবর্গ,প্রতিবেশী , আত্মীয়স্বজন ও দাস-দাসীদের সঙ্গে মধুর ব্যবহারের তিনিই প্রমাণ্য মহাপুরুষ। তাঁর পারিবারিক জীবনের শিক্ষা অনুসরণে আধুনিককালেও ঘরে ঘরে শান্তির সন্ধান লাভ সম্ভব।
ইসলামের ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করলে আমরা দেখি, রাসুল(সাঃ) একটি সুদৃঢ় অর্থনীতি প্রণয়ন করেছিলেন। সুদ-ঘুষ সমূলে উৎপাটন, জাকাত , খুমস ও উশর প্রভৃতি রাজস্ব ব্যবস্থা বাস্তবায়নের মাধ্যমে তিনি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করেছিলেন। ধনীর মালে গরিবের অধিকার রয়েছে এ ঘোষণা দিয়ে তিনি দুস্থ-দরিদ্রের অর্থসঙ্কট নিরসন করেছিলেন। এতদ্বিষয় ছাড়া শ্রমনীতি, দাস প্রথা বিলোপ, মদ্যপান ও জুয়া খেলা নিষিদ্ধ,গণতন্ত্রের সুসমন্বয়, সামরিক সংগঠন ও সমর কৌশল সন্ত্রাস দমনে কার্যকর পদক্ষেপ, ব্যবসায়িক অসাধুতার উচ্ছেদ, জনকল্যাণ ও সামাজিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা, করজে হাসানা প্রভৃতি সংস্কারের মাধ্যমে তিনি যে দৃষ্টান্ত প্রতিষ্ঠা করেছেন, তা শান্তি প্রিয় মানব গুষ্ঠি সাদরে গ্রহন করেছেন এবং শান্তির সন্ধান লাভ করেছেন।
যুগপৎ ধর্মতত্ত্ব ও তাত্ত্বিক নীতি গুলোর প্রবর্তক রাসুল(সাঃ) এর জীবনের প্রতিটি মুহুর্ত ও কর্ম সবকালে সব ঘরে ঘরে অনুসরণীয় আদর্শ হিসেবে স্বীকৃত। তাঁর সুমহান চারিত্রিক আদর্শের নিবিড় প্রতিনিধিত্বশীল ও উচ্চারিত সব বাক্যই আমাদের জন্য শিক্ষার অমুল্য উপাদান।


যারা সমাজে রাষ্ট্রে শান্তি আশাকরেনা, তারা স্বাভাবিক ভাবেই এই মহামানবের সংস্কারের বিরোধীতাকরে। এবং তাকে নিয়ে ব্যঙ্গ করতেও সাহস করে। এই কুসংস্কারময় অন্তরনিয়ে যারা সমাজে বিদ্দেশ ছড়ায় তারা কখনো সমাজের জন্য একটা দেশের জন্য মঙ্গল হতে পারেনা। যারা বাংলাদেশে শান্তিপ্রিয় মুসলমানদের সাথে থেকও ইসলাম নিয়ে, মহামানবী হযরত মুহাম্মদ(সাঃ)কে নিয়ে বিদ্রুপ এবং ব্যাঙ্গ করে , এবং যারা এদের সমর্থন করে। এই ব্লগথেকে তাদের সকলের নিক ও আইপিসহ ব্যান করার জন্য সামহোয়্যারইন ব্লগ কতৃপক্ষের প্রতি অনুরোধ করছি।
এখন এরা ব্লগে এবং পরে সরাসরি দেশেও করার সাহস করবে, তাই এরা যদি সমাজের পরিচিত হয় তাহলে এদের কে কঠিন শাস্তি সহ দেশ থেকে বাহির করে দেওয়া উচিৎ।
সর্বশেষ এডিট : ২৪ শে জুলাই, ২০০৭ সকাল ৭:০৬
১১টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

আমি ভালো আছি

লিখেছেন জানা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ৮:৪৯



প্রিয় ব্লগার,

আপনাদের সবাইকে জানাই অশেষ কৃতঞ্গতা, শুভেচ্ছা এবং আন্তরিক ভালোবাসা। আপনাদের সবার দোয়া, সহমর্মিতা এবং ভালোবাসা সবসময়ই আমাকে কঠিন পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে শক্তি এবং সাহস যুগিয়েছে। আমি সবসময়ই অনুভব... ...বাকিটুকু পড়ুন

ইউরোপের বিভিন্ন দেশে আমার ড্রোন ছবি।

লিখেছেন হাশেম, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৩

বৃহত্তর প্যারিস তুষারপাত।

ফ্রান্সের তুলুজ শহরে বাংলাদেশের প্রথম স্থায়ী শহীদ মিনার।

হ্যাসল্ট, বেলজিয়াম।

ভূমধ্যসাগর তীরবর্তী ফ্রান্সের ফ্রিওল আইল্যান্ড।


রোডেসিয়াম এম রেইন, জার্মানি।

... ...বাকিটুকু পড়ুন

স্বাধীনতার সুফল কতটুকু পাচ্ছে সাধারণ মানুষ

লিখেছেন এম ডি মুসা, ০৯ ই মে, ২০২৪ রাত ১১:২৮

(১) আমলা /সরকারের কর্মকর্তা, কর্মচারীর সন্তানদের জন্য আলাদা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব হতাশাজনক। মুক্তিযুদ্ধের ১৯৭১ সালের রক্ত দেওয়া দেশের এমন কিছু কখনো আশা কি করছে? বঙ্গবন্ধু এমন কিছু কি আশা... ...বাকিটুকু পড়ুন

এলজিবিটি নিয়ে আমার অবস্থান কী!

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১০ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:১৫

অনেকেই আমাকে ট্রান্স জেন্ডার ইস্যু নিয়ে কথা বলতে অনুরোধ করেছেন। এ বিষয়ে একজন সাধারণ মানুষের ভূমিকা কী হওয়া উচিত- সে বিষয়ে মতামত চেয়েছেন। কারণ আমি মধ্যপন্থার মতামত দিয়ে থাকি। এ... ...বাকিটুকু পড়ুন

মুসলমানদের বিভিন্ন রকম ফতোয়া দিতেছে

লিখেছেন এম ডি মুসা, ১০ ই মে, ২০২৪ দুপুর ১:৩৩


আপন খালাতো, মামাতো, চাচাতো, ফুফাতো বোনের বা ছেলের, মেয়েকে বিবাহ করা যায়, এ সম্পর্কে আমি জানতে ইউটিউবে সার্চ দিলাম, দেখলাম শায়খ আব্দুল্লাহ, তারপর এই মামুনুল হক ( জেল থেকে... ...বাকিটুকু পড়ুন

×