somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

নারীরা পুরুষদের জামাতে ইমামতি করতে পারবেন না, ইসলামেরর এ ধারা ন্যায়সঙ্গত নয়

১৪ ই জুলাই, ২০০৭ দুপুর ১:২৯
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

ইসলামে নারীদেরকে ইমামাতি করতে দেয়া হয় বলে লিখেছেন সাদিক আলম আর তার বিপরীতে নারীদের ইমামতি জায়েজ নয়, বলে লিখেছেন আশরাফ রহমান নিউইয়র্ক কোন এক অতি নামীদামী(!) বাংলা পত্রিকার রেফারেন্স টেনে। কোরান হাদিসের ব্যখ্যা আর অপব্যখ্যার জণ্জালে আমাদের মতো সাধারন মানুষদের নাভিশ্বাস হবার মতো অবস্থা। কিন্তু আমরা সাধারণ মানুষরা সুফি, আলেম নই, ইরানের মোল্লাতন্ত্রে আমাদের চোখ ধাঁধায় না, আমাদের তো এমনি হবার কথা! এর পেছনে একটাই কারণ। আমরা কোন কিছুরই অন্ধ অনুসারী নই। আমরা নিজেদের বিবেক, শিক্ষা ও বুদ্ধিবৃত্তি ব্যাবহার করেই চলি। আমরা বুশের কর্মকান্ডকে ঘৃনা করি, ইসরাইলী আগ্রাসনকে নিন্দা করি, আবার হামাজের কর্মকান্ডকেও সমালোচনা করতে দ্বিধা করি না। আমাদের চোখ খোলা বলেই তা করতে পারি, কোনটা ন্যায়, কোনটা অন্যায়, তার বিচারে অন্ততপক্ষে: যথাসাধ্য চেষ্টা থাকে আমাদের।

আশরাফ সাহেবের কথায় আমি। মেয়েদেরকে পুরুষদের জামাতে ইমামতি করতে দেয়া জায়েজ নয় কেন? এর কারণ কি? এর পেছনে কি ধর্মীয় ব্যাখ্যা? একজন মহিলা সেরকম ধর্মীয় শিক্ষায় শিক্ষিত হয়ে ও নিজের বিশ্বাসের বলে মুসলমান হিসেবে সে যোগ্যতা অর্জন করেন, তাহলে নারী হয়েছেন বলেই কেন তাকে অযোগ্য ঘোষনা করা হবে?

তারপরও যদি আশরাফ সাহেব কোন উপযুক্ত ব্যাখ্যা ছাড়াই একে ধর্মের অনুশাসন বলে চালিয়ে দেবার চেষ্টা করেন, তাহলে বলবো ধর্মের এই অনুশাসন ন্যায়সঙ্গত ও সময়োপযোগী নয়। এর সাথেই সাধারণ ধার্মিক আর মৌলবাদীদের পার্থক্য। মৌলবাদীরা কোন কিছু না ভেবেই ধর্মের প্রতিটি অনুশাসনকে অন্ধভাবে মানায় বদ্ধপরিকর। সেখানে তারা তাদের বিবেক বুদ্ধিকেও ব্যবহার করার ক্ষমতা রাখেন না। যারা বিবেক আর বুদ্ধির ব্যাবহারের ক্ষমতা না রাখে, তারা সহজেই যান্ত্রিক রোবটে পরিনত হয়। মানবিক চিন্তা থেকে দুরে সরে এরা আর মানুষ থাকে না। আর যারা মানুষ নয়, তারা কি করে ধার্মিক হতে পারে, তা আমার জানা নেই। ধর্মতো একমাত্র মানুষের জন্যেই।

এদের চিন্তা ভাবনাতেও সততা নেই। রসুলুল্লাহর চার বিবি, বা চার বিয়ে করার অধিকারের কথা তোলা হয়, তখন তারা তোলেন সে সময়ের সমাজে মেয়েদের করুন অবস্থার কথা। সেখানে বিয়ে করে চারজন মেয়েকে একটি সন্মানীয় অবস্থায় আনা হচ্ছে, এটাই বা কম কি? মেনে নিলাম যুক্তির খাতিরে। “এই যুক্তি দাঁড় করানোর জন্যে তারা সে সময়ের সমাজকে বিচারে ধরছেন অথচ এ সময়ের সমাজকে বিবেচনায় ধরে ধর্মের কিছু অনুশাসনের সময়োপযোগী ব্যখ্যায় তারা একেবারেই আগ্রহী নয়”। একবার তারা তাদের বিচারে সময়কে অক্ষমাত্রা হিসেকে ধরেছেন, আবার পরেরবার তারা তাদের যুক্তির ও শক্তির সুবিধা বজায় রাখার প্রয়াসে সময়কে বিচারেই ধরতে চাইছেন না। এটা চুড়ান্ত সুবিধাবাদী নগ্নতা ও অসৎ। আমাদের মতো সাধারণ ধর্মের লোকদের কাছে হয়তো আশা করা যেতে পারে, কিন্তু ওনাদের মতো মহা অলেমরা এতোটা অসৎ কি করে হন?

মোদ্দা কথা হচ্ছে এই যে, “মেয়েরা জামাতে ইমামতি করার অধিকার রাখেন না”, এ অনুশাসন যদি ইসলামে থেকে থাকে, তাহলে তা ভুল ও অন্যায় এ অনুশাসন। প্রতিটি রাজাই চায় যে, তার প্রজারা রাজার করা প্রতিটি নিয়মই মেনে চলে। কয়জন প্রজা তা করে? প্রতিটি ধর্মই তার অনুসারীদের কাছে একশো ভাগ আনুগত্য দাবী করে। কয়জন তা করে? আশরাফ সাহেবরা করতে পারছেন? করতে পারছেন না। তাহলে তাদের ব্যখ্যায় সততা থাকতো। তারা পৃথিবীর নানা ধরণের অন্যায়কে, হত্যাকে অর্থহীন রেফারেন্স টেনে ন্যয় বলে প্রকাশ করায় প্রয়াসী হতো না। অথচ “সততা” ইসলামে আরো অন্যান্য ধর্মের মতোই অতি প্রাথমিক মূলমন্ত্র। এই সততাকে যখন ধুলায় লুন্ঠিত করা হয়, তখন কোথায় থাকে ধর্ম? রাজাকার,আল কদরের কুকর্মকে যখন ধামাচাপা দেয়া হয়, তখন কোথায় থাকে ধর্ম? নিজের সুবিধা বজায় রাখার জন্যে মেয়েদেরকে যখন ধর্মের কথা বলে অবদমিত করা হয়, তখন কোথায় থাকে ধর্ম? সেভাবেই “মেয়েরা জামাতে ইমামতি করার অধিকার রাখেন না” এটা ধর্মের যদি হয়েও থাকে, তা কখনোই “এ সময়ের ধর্মের কথা নয়”। এই সব ধর্মান্ধরা এ ধরণের অনুশাসনকে তাদের সুবিধাবাদী চরিত্রের হাতিয়ার হিসেবেই ব্যাবহার করে।
৭১টি মন্তব্য ০টি উত্তর পূর্বের ৫০টি মন্তব্য দেখুন

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

শাহ সাহেবের ডায়রি ।। শেষ মুহূর্তে রাইসির হেলিকপ্টারে কী ঘটেছিল

লিখেছেন শাহ আজিজ, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ৯:৩২

ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসিকে বহনকারী হেলিকপ্টারটি বিধ্বস্ত হওয়ার আগে কী ঘটেছিল, সে সম্পর্কে এখন পর্যন্ত খুব কমই জানা গেছে। এবার এ ঘটনার আরও কিছু তথ্য সামনে এনেছেন ইরানের প্রেসিডেন্টের চিফ... ...বাকিটুকু পড়ুন

ছেলেবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনারই মেরেছে এমপি আনারকে।

লিখেছেন ...নিপুণ কথন..., ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১০:৪৮


ঝিনাইদহ-৪ আসনের সরকারদলীয় এমপি আনোয়ারুল আজিম আনার হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ছিল তারই ছোটবেলার বন্ধু ও ব্যবসায়িক পার্টনার আক্তারুজ্জামান শাহীন!

এই হত্যার পরিকল্পনা করে তা বাস্তবায়নের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল আরেক... ...বাকিটুকু পড়ুন

আজকের কিছু উল্টা পালটা চিন্তা !

লিখেছেন সাহাদাত উদরাজী, ২২ শে মে, ২০২৪ রাত ১১:১০

১।
কলকাতা গিয়ে টুকরা টুকরা হল আমাদের এক সন্ত্রাসী এমপি, কলকাতা বলা চলে তার ২য় বাড়ি, জীবনে কতবার গিয়েছেন তার হিসাব কেহ বের করতে পারবে বলে মনে করি না, কলকাতার অলিগলি... ...বাকিটুকু পড়ুন

মাটির কাছে যেতেই..

লিখেছেন নতুন নকিব, ২৩ শে মে, ২০২৪ সকাল ৮:৫৬

মাটির কাছে
যেতেই..


ছবি কৃতজ্ঞতাঃ https://pixabay.com/

ঠিক যেন
খা খা রোদ্দুর চারদিকে
চৈত্রের দাবদাহ দাবানলে
জ্বলে জ্বলে অঙ্গার ছাই ভস্ম
গোটা প্রান্তর
বন্ধ স্তব্ধ
পাখিদের আনাগোনাও

স্বপ্নবোনা মন আজ
উদাস মরুভূমি
মরা নদীর মত
স্রোতহীন নিস্তেজ-
আজ আর স্বপ্ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

পর্ণআসক্ত সেকুলার ঢাবি অধ্যাপকের কি আর হিজাব পছন্দ হবে!

লিখেছেন প্রকৌশলী মোঃ সাদ্দাম হোসেন, ২৩ শে মে, ২০২৪ দুপুর ২:২৭



ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তায় অনুষ্ঠিত একটা প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জিতেছে বাংলাদেশি নারীদের একটা রোবোটিক্স টিম। এই খবর শেয়ার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপিকা। সেখানে কমেন্ট করে বসেছেন একই বিশ্ববিদ্যালয়ের আরেকজন... ...বাকিটুকু পড়ুন

×