পাকিস্থানে পুলিশ এবং সামরিক বাহিনী সহ সকল নিরাপত্তা বাহিনীর নির্যাতন নতুন কিছু নয়। দীর্ঘ দিন যাব ক্ষমতায় থেকে সামরিক বাহিনী প্রকৃতপক্ষে নিজেদেরকে সামন্তপ্রভুর পর্যায়ে নিয়ে এসেছে। তাদের অত্যাচারের কথা প্রবাসী পাকিস্থানীরাও উচ্চারন করতে ভয় পায় - পাছে কোন ভাবে বিষয়টা দেশে চলে যায়। তাহলে তাদের মোটাদাগে খেশারত দিতে হবে।
সাজিয়ার ঘটনা প্রবাহ যখন পশ্চিমা মিডিয়াতে ব্যাপক প্রচার পায় - তখন মোশাররফ বিষয়টাকে ব্যক্তিগত ভাবে গ্রহন করেন। এই বছরের শুরুতে ক্যানাডার প্রধানমন্ত্রী আফগানিস্থানে সফরে গেলে হামিদ কারজাই পাকিস্থানের সীমান্তে যথাযথ এন্টিটেররিজম এক্টিভিটি না নেওয়ায় পাকিস্থানী সরকারের বিরুদ্ধে নালিশ করলে জেনারেল মোশাররফ দ্রুত বেলুলিস্থানের উজিরিস্থানে সেনাবাহিনী কার্য্যক্রমকে বেগবান করার নির্দেশ দেন। সাথে সাথে আমেরিকান হেলিকাপ্টার গানশীপ এবং মিশাইলগুলো ট্রাইবাল বাহিনীর উপর পড়তে থাকে। উপায়ন্তর না দেখে নবাব বুকতি পাহাড়ে আশ্রয় নেন। এদিকে পাকিস্থান ট্রাইবাল মিলিটেন্টদের মেরে ছবি উঠিয়ে পশ্চিমা মিডিয়াতে প্রচার করতে থাকে যে, একটুর জন্য আল-কায়দার ২ নং বা ৩নং নেতাকে মারা গেল না। অবশেষে নবাব বুকতিকে একদিন মিশাইলের আঘাতে মরতে হলো। সপ্তাহ খানেক পর সকল পশ্চিমা সাংবাদিকদের হতবাক করে পাকিস্থান উজিরিস্থানের ট্রাইবাল যোদ্ধাদের সাথে একটা শান্তিচুক্তিতে স্বাক্ষর করে - যাতে পাকিস্থানী সামরিক বাহিনী উজিরিস্থানসহ সকল সীমান্তবর্তী অঞ্চল থেকে দ্রুত সরে যাবে। এতে সবচেয়ে হতবাক হয়েছেন - ক্যানাডার বর্তমান প্রধানমন্ত্রী হারপার। কারন মাত্র কয়েকমাস আগে উনি মোশাররফের হাতে হাত রেখে “ওয়ার অন টেররের” সাফল্য কামনা করেছিলেন।
একটা বিষয় আশা করি আমাদের কাছে পরিষ্কার, ওয়ার অন টেররের ছত্রছায়ায় মোশাররফ তার ব্যক্তিগত শত্রু এবং বেলুচিস্থানের অধিকার আদায়ের মুখপাত্রকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দিতে সক্ষম হয়েছে। একজন ন্যায়ের পক্ষাবলম্বনকারী - যিনি একজন অসহায় নির্যাতিত মানুষের পক্ষে কথা বলেছিলেন - সে “টেররিষ্ট” তকমা নিয়ে মাটির নীচে আর অন্যায় পক্ষাবলস্বনকারী একজন মিথ্যাবাদী এবং বিশ্বের স্বৈরশাসকদের অন্যতম জেনারেল যথারীতি বেঁচে আছেন এবং নিশ্চিত ভাবে আরো অনেক অন্যায় করবেন। আর যারা “ওয়ার অন টেররের” নামে একজন কুলাঙ্গার সামরিক শাসককে বন্ধুতের ছায়ায় বসিয়ে রেখেছেন - তাদের ভাবা উচিৎ, পাকিস্থানের প্রত্যেকটা মানুষ জানে বুকতি কে আর জেনারেল মোশাররফ কে।
যখনই এই কথাগুলো শুনছিলাম - ভাবছিলাম আমরা কত ভাগ্যবান। একটা আলাদা দেশের মালিক আমরা - যা মোশাররফের নাগালের লক্ষ কোটি মাইল দূরে।
আর ভাবি কখনও কি বেলুচিস্থানের মানুষ আমাদের মতো পাকি শাসন থেকে মুক্তি পাবে?
(একজন পাকিস্থানী ক্যানাডিয়ানের ভাষ্যের অনুলিখন - একজন পাকিস্থানী ক্যানাডিয়ানের ভাষ্যের অনুলিখন - মূল লেখাটি সদালাপ ডট কম এ সেপ্টেম্বর ১৭, ২০০৬ প্রকাশিত))
আলোচিত ব্লগ
শাহ সাহেবের ডায়রি ।। সীমানা পিলার
বৃটিশ কর্তৃক এদেশে ম্যাগনেটিক পিলার স্থাপনের রহস্য।
ম্যাগনেটিক পিলার নিয়ে অনেক গুজব ও জনশ্রুতি আছে, এই প্রাচীন ‘ম্যাগনেটিক পিলার' স্থাপন নিয়ে। কেউ কেউ এটিকে প্রাচীন মূল্যবান ‘ম্যাগনেটিক’ পিলার... ...বাকিটুকু পড়ুন
মাথায় চাপা ভূত ভূত ভূতং এর দিনগুলি
এই যে চারিদিকে এত শত কাজ কর্ম, ঝামেলা ঝক্কি, ক্লান্তি শ্রান্তি সব টপকে আমার মাথায় আজও চাপে নানান রকম ভূত। এক ভূত না নামতেই আরেক ভূত। ভূতেদের... ...বাকিটুকু পড়ুন
আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (দ্বিতীয় অংশ)
আত্মস্মৃতি: কাঁটালতা উঠবে ঘরের দ্বারগুলায় (প্রথমাংশ)
আমাদের সদ্য খনন করা পুকুরটা বৃষ্টির পানিতে ভেসে গেল। যা মাছ সেখানে ছিল, আটকানোর সুযোগ রইল না। আমি আর দুইবোন শিউলি ও হ্যাপি জালি... ...বাকিটুকু পড়ুন
নিজের পাসওয়ার্ড অন্যকে দিবেন না ;)
কথায় আছে যে পাসওয়ার্ড এবং জাঙ্গিয়া অন্যকে দিতে নেই । মানুষ হিসাবে, বন্ধু হিসাবে প্রেমিক/প্রেমিকা হিসাবে অথবা আজ্ঞাবহ হওয়ার সুবাদে আমরা অন্যকে ব্যবহার করতে দিই বা দিতে বাধ্য হই।... ...বাকিটুকু পড়ুন
শৈল্পিক চুরি
বহুদিন ধরে ভেবেও বিষয়টা নিয়ে লিখব লিখব করে লিখা হচ্ছে না ভয়ে কিংবা সঙ্কোচে!
কিসের ভয়? নারীবাদী ব্লগারদের ভয়।
আর কিসের সঙ্কোচ? পাছে আমার এই রচনাটা গৃহিনী রমনীদের খাটো... ...বাকিটুকু পড়ুন