somewhere in... blog
x
ফোনেটিক ইউনিজয় বিজয়

ধর্মীয় রাজনীতি-

২১ শে জুন, ২০০৭ সন্ধ্যা ৬:৩৬
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :

রাজনীতিতে বিশুদ্ধতার বাতাস আনবে ধর্মীয় রাজনৈতিক দলেরা- সৎ ও যোগ্য প্রার্থী আন্দোলনের জনক জামায়াতে ইসলামী বাংলাদেশের বক্তব্য ছিলো এমনই- তবে তাদের সৎ এবং যোগ্য এবং যুদ্ধাপরাধী নির্বাচিত এবং অনির্বাচিত সাংসদ ও নেতাদের সততার মাত্রাটা ঠিক নেই- তারাও দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্ত হয়েছেন-

তবে আমার কাছে ধর্মীয় রাজনৈতিক দল কোনো উৎকৃষ্ট বিকল্প মনে হয় না- বরং আমার মনে হয় এটার গ্রহনযোগ্যতা সীমিত- আমি কোনো ভাবেই রাজনৈতিক মত প্রকাশের জায়গাটাতে একটা সাম্প্রদায়িক দলকে কার্যকর দেখতে আগ্রহী না- রাজনৈতিক মতাদর্শের বিকল্প হিসেবে কোনো ধর্মীয় আদর্শ আসতে পারে না সামনে- ধর্ম এবং রাজনীতির পটভুমিতে ব্যবধান আছে এবং বর্তমানের দেশগুলোর ভাষিক ঐক্য এবং সাংস্কৃতিক ঐক্যের জায়গাটাতে ধর্মীয় অনুভুতির খিচুরী অগ্রহনযোগ্য এবং এটা বিষাক্ত করে তুলবে আবহাওয়া-

ইসলাম সব শেষে একটা ধর্ম- পক্ষে বিপক্ষে তর্ক করে ধর্মের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করা সম্ভব না- যদিও বিভিন্ন কারণে ইসলামকে সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্ম বানানোর একটা উদ্যোগ ক্রিয়াশীল তবে ধর্মান্ধতার ব্যধিগ্রস্ত মানুষের সাম্প্রতিক সংখ্যাধিক্য আমাকে পীড়া দেয়-

যারা ইসলামের চর্চা করছে তারা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ সন্তান এমনটা বিবেচনা করা হয়তো সেই ধার্মিক ব্যক্তির সান্তনার বিষয় হতে পারে তবে তার ব্যক্তিগত বিশ্বাস আসলেই কোন কিছুর শ্রেষ্ঠতার পরিচায়ক হতে পারে না।
ধর্ম আর বিজ্ঞানের সীমারেখাও স্পষ্ট, মোটা দাগের পার্থক্যটা কুযুক্তি দিয়ে মুছে ফেলা সম্ভব না। ধর্ম অন্ধ বিশ্বাস আর সমর্পনের ভেতর দিয়ে এখটা নির্দিষ্ট জীবন যাপনের সংস্কৃতি- যেখানে সমর্পনের কোনো বিজ্ঞানভিত্তিক ব্যাখ্যা নেই- যে মানুষটা ৭ বছর বয়েসে নামাজের চর্চা শুরু করেছে এবং ১০ বছর বয়েসে নির্যাতিত হওয়ার ভয়ে ক্রমাগত নামাজ পড়েই যাচ্ছে তার ধর্মানুভুতির জায়গাটাতে একটা ভয়ঙ্কর ইশ্বরের উপস্থিতি অস্বীকার করা যায় না- এটা একটা অভ্যস্ততা হয়ে দাঁড়ায় অবশেষে-
একটা বিখ্যাত হাদীস আছে- (সাদিক আশে পাশে থাকলে আওয়াজ দিয়ে উঠবে এটা তেমন বলিষ্ঠ হাদিস নয়) তোমার সন্তানের বয়েস যখন ৭ বছর তাকে নামাজের জন্য উপদেশ দাও- তার বয়েস যদি ১০ বছর হয় তবে তাকে বাধ্য করো নামাজ পড়তে- ধর্ম জোরজবরদস্তির বিষয় না-
ধর্মের বিষয়ে কোনো জোরজবরদস্তি চলবে না এমন বক্তব্য দেওয়া ইসলামে একটা ৭ বছরের বাচ্চাকে উপদেশ দেওয়া এবং ১০ বছর বয়েসে শাররীক নির্যাতনের সাম্ভাব্যতার পথ খুলে রাখাটা আমার কাছে কাম্য নয়-

ধর্মীয় আচারের বিধিতে পার্থক্য থাকবেই- বৈপিরীত্ব থাকবেই- এটাই স্বাভাবিক- এমন কি মুহাম্মদ নিজেই সবার জন্য একই সমাধান দিয়ে যেতে পারেন নি- তাৎক্ষনিক বিবেচনায় নেওয়া সিদ্ধান্তগুলোর জন্য একই সমস্যার জন্য একাধিক বিধান দিয়ে গিয়েছে মুহাম্মদ- কোরানের নির্দেশনায় সীমিত আকারে ( উমরের বদান্যতায় )১১৪টা সুরায় রক্ষিত বক্তব্য নিয়েও ধর্ম ব্যবসায়ীরা ব্যবসা করতে তৎপর- তাদের কাছে কুরানের বক্তব্যের তুলনায় এটার পণ্যায়ন গুরুত্বপূর্ন বিষয়- ব্যবসায়িক পণ্য হিসেবে ধর্ম বিশ্বাস সবসময়ই একটা নিরাপদ ব্যবসা-
প্রথমত এই ব্যবসাতে কোনো পূঁজি লাগে না- আর ২য়ত ব্যর্থতার কোনো সম্ভবনা নেই এখানে- ক্ষতিবিহীন ব্যবসা এটা- যদি ইপ্সিত ফলাফল না আসে তাহলে ব্যবসায়ী অম্লান বদনে বলতে পারেন আসলে ইশ্বরের অভিপ্রায় ছিলো না টাই এটা ঘটে নি- সৃষ্টিকর্তার স্থানীয় এজেন্ট হিসেবে কাজ করার সুবিধাটা এখানেই-

২০০১ সালের পর নির্বিষ ইসলাম বা সুফিজম সম্প্রচারের একটা রাষ্ট্রীয় উদ্যোগ গ্রহন করেছে আমেরিকা- এ জন্য তারা পর্যাপ্ত অর্থ বরাদ্দ দিয়েছে- সাদিক তার সহনশীল আত্মিক এবং বৌদ্ধিক নবীত্ব সম্বলিত নয়া সুফিজমের চর্চা করতে পারলে হয়তো আরব দেশীয় ধর্মের স্পিরিচুয়ালিটির জায়গা থেকে শুধু ইহুদি আর খ্রীষ্টানদের সাথেই ঐক্যবদ্ধ করে তুলতে পারতো না বরং একই সাথে বৌদ্ধদের সাথে বুদ্ধিবৃত্তিক সংযোগ স্থাপন করতে পারতো- তবে সাদিক সম্ভবত এই ব্যবসার সুযোগটা গ্রহন করতে পারবে না এখন- ধর্মীয় মোল্লাতে এবং ব্যবসায়িক সুফিতে এখন বাজার ভর্তি হয়ে গেছে-

যারা কোরাণের বৈজ্ঞানিকতা প্রমাণে ব্যস্ত তারাও পয়সা কামানোর ধান্দা থেকে এই যন্ত্রনা হজম করছে- বিষয়টঅ অর্থনৈতক উপযোগিতা না থাকলে কেউই এই অকাজে সময় নষ্ট করতো না- মূলত বিষয়টা অর্থনৈতিক- আদর্শিক যন্ত্রনা থেকে উদ্ভুত কোনো বিষয় না এটা- এবং এই বৈজ্ঞানিকতার ঝুলি সামনে নিয়ে ভিক্ষা করছে কতিপয় নির্বোধ-

এরা একটা পর্যায়ে গিয়ে ফ্যানাটিক হয়ে উঠে- তখন খোদ নিজের ধর্মের মানুষদেরও হত্যা করতে বদ্ধপরিকর হয় এরা-
মুসলিম ব্রাদারহুডের আদর্শে বলীয়ান মানুষেরা অহেতুক কত মুসলিম হত্যা করেছে- অমিসলিমদেরটা না হয় ধর্মীয় দৃষ্টি কোণ থেকে সিদ্ধ প্রমাণ করা যাবে- কিন্তু মুমিন হত্যায় পরিনামে ব্যক্তির মুসলমানিত্ব খারিজ হয়ে যায়০ এবং কে প্রকৃত মুমিন- কে মুত্তাকি এটার সিদ্ধান্ত দেওয়ার ভার সৃষ্টিকর্তার- এবং ১৪০০ বছর আগে মুহাম্মদ নিজেও এমন কিছু মানুষকে মুত্তাকি ঘোষণা দিয়েছে তবে তার আত্মার ভুত যেহেতু কারো উপর ভার করা সম্ভব না তাই ধরে নিতে হচ্ছে এই সময়ে কে প্রকৃত মুমিন আর কে মুত্তাকি এটা বিষয়ে সিদ্ধান্ত দেওয়ার অধিকার কোনো প্রতিষ্ঠান বা ব্যক্তির নেই-

একই নীতিতে কোনো মুসলিম তার নিজ ধর্মের মানুষের সাথে শিংস আচরণ করতে পারে না- প্রতিটা মুসলিম এক একজন সাম্ভাব্য মুত্তাকি ধরে নিলে কোনো মুসলিম অন্য কোনো মুসলিমকে আঘাত করা মাত্রই তার মুসলমানিত্ব দুর্বল হয়ে যায়- আদর্শিক বিচারে বোমাবাজি- জবাই করা- হাত পা কাটা এসব বিষয় নিয়ে উন্মাদনার কাজটাও করে অর্ধ শিক্ষিত মানুষেরা- তবে ধর্মের মুল আদর্শ যে আসলে মানুষের হৃদয়বৃত্তি। মানুষের অনুভব এই সহজ সত্য অনুভব করেছে লক গানের গায়কেরা- তারা অনায়াসেই বলতে পারছে- যার কথা হৃদয়ে বাজে তাকে ডাকার জন্য ভাষা কোনো সমস্যা না- বরং হৃদয়াবেগটাই গুরুত্বপূর্ণ- ডাকার মতো ডাকলে নিজের দিলেই তার সাড়া পাওয়া যাবে-
বাংলাদেশের ধর্মীয় রাজনৈতিক সংগঠনগুলো আদর্শ কোনো সংগঠন না আমার কাছে- প্রথমত এরা সাম্প্রদায়িকতা ছড়াচ্ছে এবং দ্বীতিয়ত এরা সহিংস আর সহিংস বলেই এটা ইসলামি নামধারী সর্ববৃহত অমুসলিমদের সংগঠন।
১৩টি মন্তব্য ০টি উত্তর

আপনার মন্তব্য লিখুন

ছবি সংযুক্ত করতে এখানে ড্রাগ করে আনুন অথবা কম্পিউটারের নির্ধারিত স্থান থেকে সংযুক্ত করুন (সর্বোচ্চ ইমেজ সাইজঃ ১০ মেগাবাইট)
Shore O Shore A Hrosho I Dirgho I Hrosho U Dirgho U Ri E OI O OU Ka Kha Ga Gha Uma Cha Chha Ja Jha Yon To TTho Do Dho MurdhonNo TTo Tho DDo DDho No Po Fo Bo Vo Mo Ontoshto Zo Ro Lo Talobyo Sho Murdhonyo So Dontyo So Ho Zukto Kho Doye Bindu Ro Dhoye Bindu Ro Ontosthyo Yo Khondo Tto Uniswor Bisworgo Chondro Bindu A Kar E Kar O Kar Hrosho I Kar Dirgho I Kar Hrosho U Kar Dirgho U Kar Ou Kar Oi Kar Joiner Ro Fola Zo Fola Ref Ri Kar Hoshonto Doi Bo Dari SpaceBar
এই পোস্টটি শেয়ার করতে চাইলে :
আলোচিত ব্লগ

মৃত্যু ডেকে নিয়ে যায়; অদৃষ্টের ইশারায়

লিখেছেন সায়েমুজজ্জামান, ১৭ ই মে, ২০২৪ সকাল ৮:৩৯

১৯৩৩ সালে প্রখ্যাত সাহিত্যিক উইলিয়াম সমারসেট মম বাগদাদের একটা গল্প লিখেছিলেন৷ গল্পের নাম দ্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট ইন সামারা বা সামারায় সাক্ষাৎ৷

চলুন গল্পটা শুনে আসি৷

বাগদাদে এক ব্যবসায়ী ছিলেন৷ তিনি তার... ...বাকিটুকু পড়ুন

ফিরে এসো রাফসান দি ছোট ভাই

লিখেছেন আবদুর রব শরীফ, ১৭ ই মে, ২০২৪ দুপুর ২:৩৮

রাফসানের বাবার ঋণ খেলাপির পোস্ট আমিও শেয়ার করেছি । কথা হলো এমন শত ঋণ খেলাপির কথা আমরা জানি না । ভাইরাল হয় না । হয়েছে মূলতো রাফসানের কারণে । কারণ... ...বাকিটুকু পড়ুন

কুমীরের কাছে শিয়ালের আলু ও ধান চাষের গল্প।

লিখেছেন সোনাগাজী, ১৭ ই মে, ২০২৪ বিকাল ৩:৪০



ইহা নিউইয়র্কের ১জন মোটামুটি বড় বাংগালী ব্যবসায়ীর নিজমুখে বলা কাহিনী। আমি উনাকে ঘনিষ্টভাবে জানতাম; উনি ইমোশানেল হয়ে মাঝেমাঝে নিজকে নিয়ে ও নিজের পরিবারকে নিয়ে রূপকথা বলে... ...বাকিটুকু পড়ুন

সভ্য জাপানীদের তিমি শিকার!!

লিখেছেন শেরজা তপন, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ৯:০৫

~ স্পার্ম হোয়েল
প্রথমে আমরা এই নীল গ্রহের অন্যতম বৃহৎ স্তন্যপায়ী প্রাণীটির এই ভিডিওটা একটু দেখে আসি;
হাম্পব্যাক হোয়েল'স
ধারনা করা হয় যে, বিগত শতাব্দীতে সারা পৃথিবীতে মানুষ প্রায় ৩ মিলিয়ন... ...বাকিটুকু পড়ুন

রূপকথা নয়, জীবনের গল্প বলো

লিখেছেন রূপক বিধৌত সাধু, ১৭ ই মে, ২০২৪ রাত ১০:৩২


রূপকথার কাহিনী শুনেছি অনেক,
সেসবে এখন আর কৌতূহল নাই;
জীবন কণ্টকশয্যা- কেড়েছে আবেগ;
ভাই শত্রু, শত্রু এখন আপন ভাই।
ফুলবন জ্বলেপুড়ে হয়ে গেছে ছাই,
সুনীল আকাশে সহসা জমেছে মেঘ-
বৃষ্টি হয়ে নামবে সে; এও টের... ...বাকিটুকু পড়ুন

×